ট্রেনের সূচি লণ্ডভণ্ড, দুর্ভোগ by সিরাজুস সালেকিন
টানা
অবরোধ-হরতালে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ প্রায়। দু-একটি গাড়ি দিনের বেলা
ছেড়ে গেলেও আতঙ্কে যাত্রী উঠছেন খুবই কম। তাই দূরপাল্লার যাত্রীদের একমাত্র
ভরসা ট্রেন। কিন্তু ট্রেনেও এখন সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার নিশ্চয়তা মিলছে
না। সকালের ট্রেন কখনও স্টেশনে আসছে বিকালে। সন্ধ্যারটি আসছে পরের দিন
সকালে। এমন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। শিডিউল নিয়ন্ত্রণে আনতে
সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও চলছে সংশ্লিষ্ট রুটের ট্রেন। কেউ কেউ দিনভর অপেক্ষা
করছেন। আবার কারও ট্রেনের অপেক্ষায় রাত কাটছে স্টেশনে। যাত্রীও কমে গেছে
অনেক রুটে। ট্রেনের সঠিক তথ্য দিতে পারছে না স্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্র।
তথ্যের সন্ধানে সবাই ভিড় করছেন স্টেশন ম্যানেজারের রুমে। গতকাল কমলাপুর
রেলস্টেশনে সরজমিনে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। রাতে স্টেশনে অবস্থান করে দেখা
গেছে মধ্য রাতের পর যেসব ট্রেন স্টেশন ছাড়ার কথা ওই সব ট্রেনের যাত্রীরা
বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সময় মতো ট্রেন না ছাড়ায় যাত্রীরা স্টেশনে বসেই সময়
কাটান। রাতে স্টেশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা না থাকায় যাত্রীরা সঠিক
নির্দেশনাও পান না সময়মতো।
স্টেশনসূত্র জানায়, বুধবার কোন ট্রেনই সঠিক সময়ে ছাড়েনি। বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায়। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না আসায় তাদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। সবচেয়ে বেশি বিলম্ব করছে দূরের রুটের ট্রেনগুলো। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর শেষ পর্যন্ত ছাড়েনি চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী। এই ট্রেনটি কমলাপুর ছাড়ার কথা ছিল সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে। স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্র্তী জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে মহানগর প্রভাতী বুধবার সকালে ঢাকা ছাড়েনি। ওই ট্রেনের যাত্রীদের সুবর্ণ এক্সপ্রেসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর ছাড়ার কথা বিকাল ৩টায়। কিন্তু ওই সময়ে কমলাপুর রেল স্টেশনে এসে পৌঁছায়নি। সুবর্ণ এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষমাণ বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম জানান, তিন ঘণ্টা থেকে শুনছেন ট্রেন আসবে। কিন্তু আসলে কখন আসবে সে তথ্য কেউ দিতে পারছে না। রংপুর এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী শফিকুল ইসলাম রাহাত। পেশায় বেসরকারি কোম্পানির নিরীক্ষক। অফিসের জরুরি কাজে রংপুরে যাবেন। সকাল ৯টায় রংপুর এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছাড়ার কথা। কিন্তু দুপুর দেড়টা নাগাদ তা প্লাটফরমে এসে পৌঁছায়নি। রাহাত অভিযোগ করেন, একটু পর পর ডিসপ্লেতে ট্রেনের তথ্য আপডেট হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই বিলম্বের পরিমাণ আধা ঘণ্টা করে বাড়ছে। রংপুর এক্সপ্রেসের আরেক যাত্রী শামসুল ইসলাম জানান, ৩ দিন আগে টিকিট কেটেছেন তিনি। তার সিট ২ নম্বর বগিতে। কিন্তু ট্রেনে উঠতে গিয়ে দেখেন ওই বগিটি নেই। ময়মনসিংহগামী ঈশা খাঁ এক্সপ্রেসের যাত্রী সুফিয়া বেগম জানান, তার ট্রেন সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১টা পর্যন্ত তা ছাড়েনি। তিনি অভিযোগ করেন, প্লাটফরমের গেটে গার্ডদের কড়াকড়ির কারণে বাইরে খাবার আনতে বাইরে যেতে পারছেন না। এজন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। মহানগর গোধূলি ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ার কথা ছিল বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে। কিন্তু অনুসন্ধান কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে কমলাপুর পৌঁছবে। এরপর সেটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করবে। ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছার কথা ৬টা ২০ মিনিটে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ট্রেনটি কখন পৌঁছবে কিছু বলতে পারেনি অনুসন্ধান কেন্দ্র। আখাউড়াগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনটিও প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। বুধবার ছুটি থাকলেও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকা এসেছে গতকাল। সন্ধ্যা ৬টায় দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছেছে। শিডিউল ঠিক করার জন্য ছুটির দিনে ট্রেন ছাড়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানান। স্টেশনের দেয়ালে টানানো সময় অনুযায়ী ছাড়েনি চট্টলা এক্সপ্রেস। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে। তবে যাত্রী ছিল খুবই কম।
টিকিট কাউন্টারগুলোতে ঘুরে দেখা যায় সেখানে আগের মতো ভিড় নেই। অগ্রিম টিকিটেরও চাপ নেই। রেলে নাশকতার কারণে ও যাত্রী কমে যাওয়ায় বগির সংখ্যা কমানো হয়েছে। সাধারণত যাত্রার ৪দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দু’দিন আগেই টিকিট ফুরিয়ে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ যাত্রার আগ মুহূর্তেই সিট পাচ্ছেন যাত্রীরা বলে জানালেন স্টেশন মাস্টার। তিনি জানান, ট্রেনে এখন পর্যাপ্ত টিকিট আছে। শুধু বৃহস্পতিবারের টিকিট পাওয়া সমস্যা। কিছুদিন থেকে ট্রেনেও যাত্রী কমে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঝুঁকি নিয়ে কেউ ভ্রমণ করছেন না। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি নাশকতার ঘটনায় ট্রেনের শিডিউল ধরে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। বগি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে কয়েকটি ট্রেনের বগিও কমাতে হয়েছে।
স্টেশনসূত্র জানায়, বুধবার কোন ট্রেনই সঠিক সময়ে ছাড়েনি। বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায়। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না আসায় তাদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। সবচেয়ে বেশি বিলম্ব করছে দূরের রুটের ট্রেনগুলো। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর শেষ পর্যন্ত ছাড়েনি চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী। এই ট্রেনটি কমলাপুর ছাড়ার কথা ছিল সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে। স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্র্তী জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে মহানগর প্রভাতী বুধবার সকালে ঢাকা ছাড়েনি। ওই ট্রেনের যাত্রীদের সুবর্ণ এক্সপ্রেসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর ছাড়ার কথা বিকাল ৩টায়। কিন্তু ওই সময়ে কমলাপুর রেল স্টেশনে এসে পৌঁছায়নি। সুবর্ণ এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষমাণ বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম জানান, তিন ঘণ্টা থেকে শুনছেন ট্রেন আসবে। কিন্তু আসলে কখন আসবে সে তথ্য কেউ দিতে পারছে না। রংপুর এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী শফিকুল ইসলাম রাহাত। পেশায় বেসরকারি কোম্পানির নিরীক্ষক। অফিসের জরুরি কাজে রংপুরে যাবেন। সকাল ৯টায় রংপুর এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছাড়ার কথা। কিন্তু দুপুর দেড়টা নাগাদ তা প্লাটফরমে এসে পৌঁছায়নি। রাহাত অভিযোগ করেন, একটু পর পর ডিসপ্লেতে ট্রেনের তথ্য আপডেট হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই বিলম্বের পরিমাণ আধা ঘণ্টা করে বাড়ছে। রংপুর এক্সপ্রেসের আরেক যাত্রী শামসুল ইসলাম জানান, ৩ দিন আগে টিকিট কেটেছেন তিনি। তার সিট ২ নম্বর বগিতে। কিন্তু ট্রেনে উঠতে গিয়ে দেখেন ওই বগিটি নেই। ময়মনসিংহগামী ঈশা খাঁ এক্সপ্রেসের যাত্রী সুফিয়া বেগম জানান, তার ট্রেন সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১টা পর্যন্ত তা ছাড়েনি। তিনি অভিযোগ করেন, প্লাটফরমের গেটে গার্ডদের কড়াকড়ির কারণে বাইরে খাবার আনতে বাইরে যেতে পারছেন না। এজন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। মহানগর গোধূলি ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ার কথা ছিল বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে। কিন্তু অনুসন্ধান কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে কমলাপুর পৌঁছবে। এরপর সেটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করবে। ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছার কথা ৬টা ২০ মিনিটে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ট্রেনটি কখন পৌঁছবে কিছু বলতে পারেনি অনুসন্ধান কেন্দ্র। আখাউড়াগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনটিও প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। বুধবার ছুটি থাকলেও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকা এসেছে গতকাল। সন্ধ্যা ৬টায় দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছেছে। শিডিউল ঠিক করার জন্য ছুটির দিনে ট্রেন ছাড়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানান। স্টেশনের দেয়ালে টানানো সময় অনুযায়ী ছাড়েনি চট্টলা এক্সপ্রেস। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে। তবে যাত্রী ছিল খুবই কম।
টিকিট কাউন্টারগুলোতে ঘুরে দেখা যায় সেখানে আগের মতো ভিড় নেই। অগ্রিম টিকিটেরও চাপ নেই। রেলে নাশকতার কারণে ও যাত্রী কমে যাওয়ায় বগির সংখ্যা কমানো হয়েছে। সাধারণত যাত্রার ৪দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দু’দিন আগেই টিকিট ফুরিয়ে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ যাত্রার আগ মুহূর্তেই সিট পাচ্ছেন যাত্রীরা বলে জানালেন স্টেশন মাস্টার। তিনি জানান, ট্রেনে এখন পর্যাপ্ত টিকিট আছে। শুধু বৃহস্পতিবারের টিকিট পাওয়া সমস্যা। কিছুদিন থেকে ট্রেনেও যাত্রী কমে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঝুঁকি নিয়ে কেউ ভ্রমণ করছেন না। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি নাশকতার ঘটনায় ট্রেনের শিডিউল ধরে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। বগি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে কয়েকটি ট্রেনের বগিও কমাতে হয়েছে।
No comments