থামতে একদিন হবেই, আগেই থামুন by কাজী সিরাজ
অবরোধ-হরতাল,
সহিংসতা-নাশকতা, বন্দুকযুদ্ধ-ক্রসফায়ার ইত্যাকার শ্বাসরুদ্ধকর এবং
বিভীষিকাময় বিষয়গুলো যখন শান্তিপ্রিয় জনগণকে চরম আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা ও গভীর
হতাশার মধ্যে নিমজ্জমান রেখেছে, তখন জাতীয় সংলাপের একটি প্রস্তাব জাতীয়
রাজনীতিকে হঠাৎই যেন একটা দোলা দিয়ে গেল। সংলাপের কথা বলা হচ্ছে অনেক আগে
থেকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত দশম সংসদ নির্বাচনের আগে জাতিসংঘ
মহাসচিবের দূত তারানকো সাহেবের সেই দূতিয়ালী এবং তার উপস্থিতিতে বিবদমান
পক্ষসমূহের মধ্যে কিছু কথাবার্তা-সংলাপের কথা মিডিয়ায়ও এসেছিল। কিন্তু সেই
সংলাপ শেষ পর্যন্ত 'সংলাপে' পর্যবসিত হয়েছিল। ফলে নির্বাচনটি হয়ে গেল
সম্পূর্ণ একপক্ষীয়ভাবে 'আমরা আর মামুরা'দের মধ্যে। জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ,
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ অনেক বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্র ও
উন্নয়ন সহযোগী সেই নির্বাচনকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা
করেনি। তারা এখনো তাদের সেই মনোভাব পরিবর্তন করেনি। শুধু তাই নয়, দ্রুততম
সময়ের মধ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে
সরকার ও প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে অর্থবহ সংলাপের প্রস্তাবও তারা দিয়ে
চলেছে অবিরাম। কিন্তু সরকার তা আমলেই নিচ্ছে না। ৯ ফেব্রুয়ারি নাগরিক
উদ্যোগের নামে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনকল্পে একটা জাতীয় সংলাপ আয়োজনের
জন্য প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত হয় ৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে 'নাগরিক
ঐক্যের' উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে। প্রস্তাবটি সাবেক প্রধান
নির্বাচন কমিশনার ডক্টর শামসুল হুদার স্বাক্ষরে পাঠানো হলেও তাতে
উদ্যোক্তারা কিছু ভুল করেছেন বলে মনে হয়। যে সংগঠনের ব্যানারে গোলটেবিল
বৈঠকটি হয়েছে তা কোনো অরাজনৈতিক সংগঠন নয়- একটি পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক দল গঠন
বা একটি সমন্বিত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ভ্রূণ বা উদ্যোগ বলেই তা বিবেচিত।
সাবেক ডাকসু ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক
মাহমুদুর রহমান মান্না এর আহ্বায়ক। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও গণফোরামের সভাপতি
ড. কামাল হোসেনও উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছিলেন ডাকসুর আরেক সাবেক
সহ-সভাপতি ও শাসক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুরও।
ফলে একে পরিপূর্ণ নাগরিক উদ্যোগ বলতে চাননি সমালোচকরা। রাজনীতিবিদরা নাগরিক
সমাজের বাইরের লোক নন ঠিক, কিন্তু এ ধরনের একটি উদ্যোগের সঙ্গে পরিচিত
রাজনৈতিক নেতারা জড়িত থাকলে তার নিরপেক্ষ নাগরিক চরিত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়েই
যায়। যদি একে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে 'তেতো' বের করার দুষ্টবুদ্ধি বা কু-মতলব
কারও থাকে, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। সরকার সে সুযোগই নিয়েছে। তবে আমি মনে
করি, উদ্যোগটি সৎ ও নির্মোহ। বর্তমান শ্বাসরুদ্ধকর জাতীয় পরিস্থিতিতে এ
ধরনের একটি উদ্যোগ গ্রহণ সময়ের দাবি। সে দাবি তারা মিটিয়েছেন। তাদের
প্রস্তাব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পেয়েছে বিষয়টির
গুরুত্ব বিবেচনায়। সরকারের সর্বোচ্চ মহল- খোদ প্রধানমন্ত্রী কঠোর মনোভাব
নিয়ে এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে
দিয়ে তিনি বলেছেন, 'খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ?' গত ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বোমায় দগ্ধদের দেখতে গিয়ে তিনি এ কথা
বলেন। এতে সংলাপের জন্য নাগরিক প্রস্তাব সম্পর্কে সরকারের মনোভাব ও
অবস্থান স্পষ্ট হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রস্তাবটি সরাসরি নাকচ না
করলেও পারতেন। সরকার বা দলের অন্য কাউকে দিয়ে নিজেদের কথাটা জানিয়ে
গণপ্রতিক্রিয়াটা যাচাই করতে পারতেন। এ বিষয়েও প্রস্তাবের উদ্যোক্তাদের একটা
ভুল হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এদের মতে, ডক্টর কামাল হোসেন, মাহমুদুর
রহমান মান্না, সুলতান মুহাম্মদ মনসুর প্রমুখের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর
মনোভাব দীর্ঘদিন ধরেই নেতিবাচক। সোজা বাংলায় প্রধানমন্ত্রী এদের মোটেই
পছন্দ করেন না। এরা এক সময় ডাকসাইটে আওয়ামী লীগার ছিলেন। ড. কামাল হোসেন তো
ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের
সভানেত্রী হওয়ার পেছনে যে ক'জন মুখ্য ভূমিকা পালন করেন ড. কামাল ছিলেন
তাদের অন্যতম। বিচারপতি আবদুস সাত্তারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলসমূহের সমর্থিত
আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে এই ধারণা
প্রতিষ্ঠিত যে, দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চাসহ বিভিন্ন মতাদর্শগত কারণে
তিনি আওয়ামী লীগ ছাড়তে বাধ্য হন। 'জো হুজুরের' রাজনীতি করাও তার মতো
ব্যক্তিত্বের পক্ষে সম্ভব ছিল না। দলত্যাগের পর থেকেই দুজনের পারস্পরিক
সম্পর্ক বৈরী। বাকি দুজন দলের ভালোর জন্য সংস্কার চেয়েছিলেন। তা পছন্দ হয়নি
দলনেত্রীর। ওয়ান-ইলেভেন-পরবর্তীকালে সংস্কারের মূল ও প্রকাশ্য প্রস্তাবক
আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক (মরহুম), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রমুখ ক্ষমতার
অংশীদারিত্বের লোভে ও মোহে ক্ষমা চেয়ে বশ্যতা স্বীকার করলেও উল্লিখিত দুজন
তা করেননি। দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা না হলেও তাদের আর সাংগঠনিক সম্পাদক
পদে রাখা হয়নি। সম্পর্কটা তো খারাপ থাকারই কথা। প্রধানমন্ত্রী যাদের পছন্দ
করেন না বা যাদের ওপর কোনো না কোনো কারণে ক্ষুব্ধ, সংলাপ প্রস্তাবের
উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তারা যুক্ত আছেন দেখলে সেই প্রস্তাব পড়ে দেখার আগেই যে
প্রধানমন্ত্রী ছুড়ে ফেলে দেবেন তা বোধহয় উদ্যোগ গ্রহণের প্রাক্কালে ভাবা
হয়নি- যদিও উদ্যোগটি সৎ ছিল বলে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা
বলছেন, এ ধরনের একটি প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের কাছে গ্রহণযোগ্য
ব্যক্তিদের মাধ্যমে উত্থাপন করাই যুক্তিযুক্ত। তাহলে প্রস্তাবকের নাম দেখেই
মন্ত্রী-নেতাদের চুল খাড়া হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতির উদ্ভব হয় না। এদের নাম
উদ্যোগের পেছনে যুক্ত না থাকলেই এমন একটি সংলাপের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী
লুফে নিতেন তেমন কথা বলছি না। তবে তার রি-অ্যাকশনটা এমন কড়া হতো না বলে মনে
হয়। শুধু নাগরিক সমাজের উদ্যোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা
এই উদ্যোগ থেকে সরে গেছেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি উদ্যোক্তাদের যে সংবাদ সম্মেলনের
দৃশ্য দেখা গেছে তাতে রাজনৈতিক নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। ১৩ জনের যে কমিটি
করা হয়েছে তাতেও কোনো রাজনৈতিক দলের কাউকে রাখা হয়নি। এটাকে এখন স্রেফ
নাগরিক উদ্যোগই বলতে হবে। বর্তমান এই অসহনীয় পরিস্থিতির কবল থেকে শুধু
নাগরিক সাধারণকে রক্ষার জন্যই নয়, রাষ্ট্রের কল্যাণেও বিবদমান পক্ষসমূহকে
আলোচনার টেবিলে বসিয়ে শান্তিপূর্ণ একটা সমাধানের পথ বের করার উদ্যোগ গ্রহণ
খুবই জরুরি। উল্লেখ্য, ক'দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ প্রায় একই ধরনের একটি
উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তিনি এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তার গায়ে বিএনপির গন্ধ আছে। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরাও এখন দলীয়ভাবে বিভক্ত। কেউ আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, কেউ বিএনপি বুদ্ধিজীবী। এত বড় বিদ্বান-পণ্ডিতরাও এখন দলবাজিতে জড়িয়ে গিয়ে মানুষকে হতাশ করছেন। দেশের চেনাজানা বুদ্ধিজীবীদের নাম শুনলে কিংবা টিভি পর্দায় চেহারা দেখলেই মানুষ বলে দিতে পারেন তিনি বিএনপি বুদ্ধিজীবী নাকি আওয়ামী বুদ্ধিজীবী। এমনকি কোনো আলোচনায়-বিতর্কে কে কি বলবেন তা-ও বলে দিতে পারেন দর্শক-শ্রোতারা। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের প্রস্তাবটি মার খেয়েছে তার সম্পর্কে দলীয় সম্পৃক্ততার ধারণার কারণে। কিন্তু ডক্টর শামসুল হুদা, ডক্টর আকবর আলি খান, ডক্টর শাহদীন মালিক প্রমুখ কোনো দলীয় কাদায় এখন পর্যন্ত পা দেননি। এরা কোন দলের পক্ষে কাজ করছেন তা বলা যাবে না। তবে তাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর একটা সমালোচনা খুবই যথার্থ বলেই মনে হয়। তারা বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনকে সংলাপে বসা বা সংলাপের আয়োজন করার জন্য চিঠি দিয়েছেন কিন্তু বর্তমান সহিংসতা-নাশকতার নিন্দা করেননি, যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের এই জঘন্য অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত হওয়ার কোনো আহ্বান জানাননি। নাগরিক সাধারণ তো উদ্যোক্তাদের বলতেই পারে যে, আগে তো আগুন, পেট্রলবোমা, গুলি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচানোর জন্য এগুলো থামানোর ব্যবস্থার কথা বলুন; প্রথম বাক্যে এটা বলে পরে এর মূল কারণ ঘুচিয়ে ভবিষ্যতে রাজনীতির নামে এসব মানুষ মারার যজ্ঞ যাতে না চলে তার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করার কথা বলুন। আশা করতে চাই, নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সমঝোতা ও সংলাপের মাধ্যমে আসল রাজনৈতিক অসুখ সারানোর উদ্যোগ গ্রহণকারীরা এ ব্যাপারে মুখ খুলবেন এবং সন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হবেন। এই লেখা প্রেসে যাওয়ার আগে জানা গেল, উদ্যোক্তারা সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নাশকতা বন্ধের জোরালো দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের প্রতি। এতে তাদের শুভ উদ্যোগের পক্ষে জনমত আরও প্রবল হবে।
নাগরিক উদ্যোগের সূচনায় কিছুটা ত্রুটির কথা বলা হলেও এর পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করেছে মনে হয় না। কিন্তু এই ব্যাপারে সরকারি মহলের প্রতিক্রিয়া সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছে না। মানুষ বর্তমান শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি চায়। এটা তো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সরকার ব্যর্থ। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে তাদের বার বার তারিখ ঘোষণা এবং লম্বা লম্বা কথা সব ফাঁকা আওয়াজে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে বিএনপি নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয় বলে ঘোষণা দিলেও নাশকতা অব্যাহত আছে ২০ দলের ডাকা টানা অবরোধ ও হরতালের ছাতার নিচে থেকেই। তারা বিএনপিকে ডিফেইম করে জনগণের কাছে পচিয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে সরকারই সব নাশকতা করাচ্ছে বলে যা বলছে তার পক্ষে সবল কোনো যুক্তি নেই। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ কিছু জায়গায় পেট্রলবোমা হামলা, বোমা তৈরি, বোমা তৈরির মালামাল উদ্ধার, গ্রেফতার ও বোমাবাজের পক্ষে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে থাকলেও বেশি অভিযোগ ছাত্রদল-যুবদল ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে। নাশকতায় এ পর্যন্ত ছাত্রদল-যুবদলের গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা ১০২ এবং জামায়াত-শিবিরের ৮৪। সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ আংশিক সত্য বলে ধরে নিলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সহিংসতা-নাশকতার দায় এড়াতে পারে না। যারা নাশকতা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা তারা বলছেন না। তাদের দল বা অঙ্গদলের লোকেরা নাশকতার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণিত হলে কিংবা হাতেনাতে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে তাদের অনাপত্তির কথাও তারা বলছে না এবং দলীয় লোকদের এসব অপকর্মে জড়িত না হওয়ার প্রকাশ্য কোনো নির্দেশও দিচ্ছে না। ফলে সব কিছুই রহস্যময় থেকে যাচ্ছে। সহিংসতা, নাশকতা হচ্ছে, নিরীহ মানুষ দগ্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে, বার্ন ইউনিটে যন্ত্রণাকাতর মানুষ কাতরাচ্ছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে, সংঘর্ষেও মানুষ মারা যাচ্ছে- এটাই বাস্তব, এটাই সত্য। ১৩ ফেব্রুয়ারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী অবরোধের ৩৯ দিনে নিহতের সংখ্যা ৮৭। এর মধ্যে পেট্রলবোমা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৫২ জন, ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ১৯ জন, সংঘর্ষে ১৩ জন এবং অন্যান্য ৩ জন। যানবাহনে আগুন ও ভাঙচুরের সংখ্যা ১০৮৪, রেলে নাশকতা হয়েছে ১১ দফা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে নিঃশেষ না করে থামতে চাইছে না। কিন্তু এটা একটা অসম্ভব চিন্তা। জনগণের মধ্যে দুই দলের অবস্থানই এমন যে, কাউকে নিঃশেষ করে দেওয়া সম্ভব নয়। বরং 'রাজায় রাজায় যুদ্ধে উলু খাগড়ারই প্রাণ' যাবে। তাতে তাদের কী লাভ হবে? সাধারণ মানুষ কেন বলির পাঁঠা হবে? এভাবে চলবে না, চলতে পারে না। গণপ্রতিরোধের মুখে পড়ে অথবা বিবেকের দংশনে কিংবা ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে তাদের উভয়কে থামতে একদিন হবেই, আগেই থামেন না কেন? না থামলে আন্দোলনকারী এবং নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষ উভয়কেই এর দায় নিতে হবে।
এই সময়ে নাগরিক সমাজের প্রস্তাব তাই সর্বত্র গুরুত্বসহকারে বিবেচিত হচ্ছে। সর্বত্র এখন এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনুকূল জনমতও গড়ে উঠছে। সরকারের উচিত হবে নেতিবাচক অবস্থান পরিবর্তন করে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটা স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হওয়া এবং বিএনপির উচিত আলোচনা-সংলাপের পথ উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে তাদের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার বা স্থগিত ঘোষণা করা। নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি তেমন আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকার তার সদিচ্ছার প্রমাণ দিতে পারে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত ও বিচারাধীন আসামিরা ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দলের অন্য নেতা-কর্মী-রাজবন্দীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে।
এরপরই মূল বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতার কথা বলছেন কেউ কেউ। কেউবা আরও কারও হস্তক্ষেপের কথা বলছেন। কিন্তু কেন? কারও সঙ্গে আলোচনা ও মধ্যস্থতা ছাড়া যে জাতি নিজের দেশকে স্বাধীন করে ফেলতে পারে, নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিরসনে বিদেশিদের মুখাপেক্ষী হওয়া সেই জাতির জন্য বড়ই লজ্জার, অপমানের। মূল বিরোধীয় বিষয় তো ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন। ৩০০ সংসদীয় আসনের ১৫৩টিতেই কোনো প্রত্যক্ষ নির্বাচন হয়নি- যা সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদের নির্দেশ। বাকি ১৪৭ আসনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল নিয়ম রক্ষার দশম সংসদ নির্বাচনের পর আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে দশম সংসদ ভেঙে দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হলেই বর্তমান সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। কীভাবে তা করা যায় সে ব্যাপারেই প্রয়োজন আলোচনা, সংলাপ। তবে এই সংলাপে ভবিষ্যতের একটি স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক দলের আচরণবিধিরও ফয়সালা হওয়া উচিত। দরকার এ ব্যাপারে একটা জাতীয় সনদে সবার সম্মত হওয়া। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। সমঝোতা ও সমাধানে না পৌঁছলে পরিণতি কারও জন্যই শুভ নয়।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
ই-মেইল : kazi.shiraz@yahoo.com
তিনি এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তার গায়ে বিএনপির গন্ধ আছে। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরাও এখন দলীয়ভাবে বিভক্ত। কেউ আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, কেউ বিএনপি বুদ্ধিজীবী। এত বড় বিদ্বান-পণ্ডিতরাও এখন দলবাজিতে জড়িয়ে গিয়ে মানুষকে হতাশ করছেন। দেশের চেনাজানা বুদ্ধিজীবীদের নাম শুনলে কিংবা টিভি পর্দায় চেহারা দেখলেই মানুষ বলে দিতে পারেন তিনি বিএনপি বুদ্ধিজীবী নাকি আওয়ামী বুদ্ধিজীবী। এমনকি কোনো আলোচনায়-বিতর্কে কে কি বলবেন তা-ও বলে দিতে পারেন দর্শক-শ্রোতারা। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের প্রস্তাবটি মার খেয়েছে তার সম্পর্কে দলীয় সম্পৃক্ততার ধারণার কারণে। কিন্তু ডক্টর শামসুল হুদা, ডক্টর আকবর আলি খান, ডক্টর শাহদীন মালিক প্রমুখ কোনো দলীয় কাদায় এখন পর্যন্ত পা দেননি। এরা কোন দলের পক্ষে কাজ করছেন তা বলা যাবে না। তবে তাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর একটা সমালোচনা খুবই যথার্থ বলেই মনে হয়। তারা বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনকে সংলাপে বসা বা সংলাপের আয়োজন করার জন্য চিঠি দিয়েছেন কিন্তু বর্তমান সহিংসতা-নাশকতার নিন্দা করেননি, যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের এই জঘন্য অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত হওয়ার কোনো আহ্বান জানাননি। নাগরিক সাধারণ তো উদ্যোক্তাদের বলতেই পারে যে, আগে তো আগুন, পেট্রলবোমা, গুলি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচানোর জন্য এগুলো থামানোর ব্যবস্থার কথা বলুন; প্রথম বাক্যে এটা বলে পরে এর মূল কারণ ঘুচিয়ে ভবিষ্যতে রাজনীতির নামে এসব মানুষ মারার যজ্ঞ যাতে না চলে তার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করার কথা বলুন। আশা করতে চাই, নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সমঝোতা ও সংলাপের মাধ্যমে আসল রাজনৈতিক অসুখ সারানোর উদ্যোগ গ্রহণকারীরা এ ব্যাপারে মুখ খুলবেন এবং সন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হবেন। এই লেখা প্রেসে যাওয়ার আগে জানা গেল, উদ্যোক্তারা সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নাশকতা বন্ধের জোরালো দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের প্রতি। এতে তাদের শুভ উদ্যোগের পক্ষে জনমত আরও প্রবল হবে।
নাগরিক উদ্যোগের সূচনায় কিছুটা ত্রুটির কথা বলা হলেও এর পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করেছে মনে হয় না। কিন্তু এই ব্যাপারে সরকারি মহলের প্রতিক্রিয়া সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছে না। মানুষ বর্তমান শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি চায়। এটা তো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সরকার ব্যর্থ। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে তাদের বার বার তারিখ ঘোষণা এবং লম্বা লম্বা কথা সব ফাঁকা আওয়াজে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে বিএনপি নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয় বলে ঘোষণা দিলেও নাশকতা অব্যাহত আছে ২০ দলের ডাকা টানা অবরোধ ও হরতালের ছাতার নিচে থেকেই। তারা বিএনপিকে ডিফেইম করে জনগণের কাছে পচিয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে সরকারই সব নাশকতা করাচ্ছে বলে যা বলছে তার পক্ষে সবল কোনো যুক্তি নেই। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ কিছু জায়গায় পেট্রলবোমা হামলা, বোমা তৈরি, বোমা তৈরির মালামাল উদ্ধার, গ্রেফতার ও বোমাবাজের পক্ষে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে থাকলেও বেশি অভিযোগ ছাত্রদল-যুবদল ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে। নাশকতায় এ পর্যন্ত ছাত্রদল-যুবদলের গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা ১০২ এবং জামায়াত-শিবিরের ৮৪। সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ আংশিক সত্য বলে ধরে নিলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সহিংসতা-নাশকতার দায় এড়াতে পারে না। যারা নাশকতা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা তারা বলছেন না। তাদের দল বা অঙ্গদলের লোকেরা নাশকতার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণিত হলে কিংবা হাতেনাতে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে তাদের অনাপত্তির কথাও তারা বলছে না এবং দলীয় লোকদের এসব অপকর্মে জড়িত না হওয়ার প্রকাশ্য কোনো নির্দেশও দিচ্ছে না। ফলে সব কিছুই রহস্যময় থেকে যাচ্ছে। সহিংসতা, নাশকতা হচ্ছে, নিরীহ মানুষ দগ্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে, বার্ন ইউনিটে যন্ত্রণাকাতর মানুষ কাতরাচ্ছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে, সংঘর্ষেও মানুষ মারা যাচ্ছে- এটাই বাস্তব, এটাই সত্য। ১৩ ফেব্রুয়ারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী অবরোধের ৩৯ দিনে নিহতের সংখ্যা ৮৭। এর মধ্যে পেট্রলবোমা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৫২ জন, ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ১৯ জন, সংঘর্ষে ১৩ জন এবং অন্যান্য ৩ জন। যানবাহনে আগুন ও ভাঙচুরের সংখ্যা ১০৮৪, রেলে নাশকতা হয়েছে ১১ দফা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে নিঃশেষ না করে থামতে চাইছে না। কিন্তু এটা একটা অসম্ভব চিন্তা। জনগণের মধ্যে দুই দলের অবস্থানই এমন যে, কাউকে নিঃশেষ করে দেওয়া সম্ভব নয়। বরং 'রাজায় রাজায় যুদ্ধে উলু খাগড়ারই প্রাণ' যাবে। তাতে তাদের কী লাভ হবে? সাধারণ মানুষ কেন বলির পাঁঠা হবে? এভাবে চলবে না, চলতে পারে না। গণপ্রতিরোধের মুখে পড়ে অথবা বিবেকের দংশনে কিংবা ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে তাদের উভয়কে থামতে একদিন হবেই, আগেই থামেন না কেন? না থামলে আন্দোলনকারী এবং নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষ উভয়কেই এর দায় নিতে হবে।
এই সময়ে নাগরিক সমাজের প্রস্তাব তাই সর্বত্র গুরুত্বসহকারে বিবেচিত হচ্ছে। সর্বত্র এখন এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনুকূল জনমতও গড়ে উঠছে। সরকারের উচিত হবে নেতিবাচক অবস্থান পরিবর্তন করে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটা স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হওয়া এবং বিএনপির উচিত আলোচনা-সংলাপের পথ উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে তাদের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার বা স্থগিত ঘোষণা করা। নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি তেমন আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকার তার সদিচ্ছার প্রমাণ দিতে পারে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত ও বিচারাধীন আসামিরা ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দলের অন্য নেতা-কর্মী-রাজবন্দীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে।
এরপরই মূল বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতার কথা বলছেন কেউ কেউ। কেউবা আরও কারও হস্তক্ষেপের কথা বলছেন। কিন্তু কেন? কারও সঙ্গে আলোচনা ও মধ্যস্থতা ছাড়া যে জাতি নিজের দেশকে স্বাধীন করে ফেলতে পারে, নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিরসনে বিদেশিদের মুখাপেক্ষী হওয়া সেই জাতির জন্য বড়ই লজ্জার, অপমানের। মূল বিরোধীয় বিষয় তো ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন। ৩০০ সংসদীয় আসনের ১৫৩টিতেই কোনো প্রত্যক্ষ নির্বাচন হয়নি- যা সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদের নির্দেশ। বাকি ১৪৭ আসনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল নিয়ম রক্ষার দশম সংসদ নির্বাচনের পর আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে দশম সংসদ ভেঙে দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হলেই বর্তমান সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। কীভাবে তা করা যায় সে ব্যাপারেই প্রয়োজন আলোচনা, সংলাপ। তবে এই সংলাপে ভবিষ্যতের একটি স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক দলের আচরণবিধিরও ফয়সালা হওয়া উচিত। দরকার এ ব্যাপারে একটা জাতীয় সনদে সবার সম্মত হওয়া। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। সমঝোতা ও সমাধানে না পৌঁছলে পরিণতি কারও জন্যই শুভ নয়।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
ই-মেইল : kazi.shiraz@yahoo.com
No comments