চলতি মাসেই অনলাইন নীতিমালা
গৃহীত
হলো অনলাইন নীতিমালার খসড়া। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহমেদের
সভাপতিত্বে বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয়
রেগুলেটরি কমিটি’র সভায় এই খসড়া নীতিগতভাবে গ্রহণ করা হয়। উপ-কমিটির তৈরি
করা খসড়াটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বৈঠকে ভাষাগত বা টেকনিক্যাল বিষয়টি খতিয়ে
দেখতে কমিটিকে ১০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। মূল্যায়ন শেষে চলতি মাসেই চূড়ান্ত
অনুমোদন দেয়া হবে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা। নীতিমালার খসড়া অনুমোদন বিষয়ে
নীতিমালা মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা জব্বার নতুন বার্তা ডটকমকে
জানান, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যেই ১৩ সদস্যসের কমিটি বসে নীতিমালাটি
চূড়ান্ত করবে। এর আগে গত এপ্রিলে মোস্তফা জব্বারের নেতৃত্বাধীন ছয়
সদস্যের একটি উপকমিটি প্রধান তথ্য কর্মকর্তার কাছে এই খসড়াটি জমা দিয়েছিল।
নতুন খসড়া নীতিমালাটি নিচে হুবহু তুলে দেয়া হলো: ১.২.৮ সমাজের সকল ক্ষেত্রে
সকল প্রকারের বৈষ্যৈ নিরসন করে সমতার নীতি প্রতিষ্ঠায় অনলাইন গণমাধ্যমের
ভমিকা নিশ্চিত করা। ১.৩ নীতিমালার প্রধান দিকসমুহ : ১.৩.১ অনলাইন গণমাধ্যম
সেবা প্রদানকারীদের লাইসেন্স প্রদান, পর্যবেক্ষণ (Monitoring)) এবং মান
বজায় রাখার লক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা; ১.৩.২ লাইসেন্স প্রদানের
মাধ্যমে সকল অনলাইন গণমাধ্যমকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার আওতায় এনে এ সেক্টরে
সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; ১.৩.৩ জনস্বার্থ, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আদর্শ
ও চেতনা, সামাজিক মূলবোধ এবং রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সামঞ্জ্য রেখে যাতে
অনলাইন গণমাধ্যম সেবাদানকারী কর্তৃক তথ্য ও উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচার করা
হয় তা নিশ্চিতকরণ; ১.৩.৪ বাংলাদেশের নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের
ক্ষেত্রে অনলাইন গণমাধ্যমের ভমিকা নিশ্চিতকরণ; ১.৩.৫ অনলাইন গণ মাধ্যমের
সহায়তায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত ব্যক্তির মৌলিক অধিকার ও
সম্মান সমুন্নত রাখার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ; ১.৩.৬ সমাজে নৈতিক অবক্ষয় রোধ ও
সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাকরণ; ১.৩.৭ জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের
আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে অনলাইন গণমাধ্যমের অবদান
নিশ্চিতকরণ; ১.৩.৮ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের
সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা; ১.৩.৯ অশ্লীলতা রোধ
এবং সামাজিক মূ্ল্যবোধের পরিপন্থী কোন বিজ্ঞাপন বা তথ্য- উপাত্ত প্রকাশ বা
সম্প্রচার না করার মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ, দেশীয় সাহিত,
কৃষ্টি/ সংস্কৃতি উন্নয়নে সহায়তাকরণ। ১.৩.১০ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের
বিস্তার রোধ ও প্রতিরোধে সহায়তা করা। ১.৪ নীতিমালার কৌশলসমহ ১.৪.১ এ
নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য সকল অংশীজন (Stakeholder) দের
পরামর্শ গ্রহণ; ১.৪.২ এ নীতিমালা বাস্তবায়নের জন প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি
প্রণয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠন করা; ১.৪.৩ অনলাইন গণমাধ্যম কমিশনের
মাধ্যমে গণ- মাধ্যমের কর্মকান্ড- সমন্বয় করা। ১.৫: সংজ্ঞা ও পরিধি এই
নীতিমালার আলোকে অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোন ভাষায়
জনগণের জন্য ইন্টারনেট মাধ্যমে ভিডিও, অডিও, টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়ার অন্য
কোন রূপে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী সংস্থা বা
প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। এই ধরনের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এই নীতিমালার
পরিধিতে থাকবেন। সরকার ব্লগ বা অন্য ধরনের কাঠামোতে পরিচালিত অনলাইন
প্রকাশনা, প্রচার বা সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানকে এই গণমাধ্যমের আওতায় আনতে
পারবেন। দ্বিতীয় অধ্যায় অনলাইন গণমাধ্যম লাইন্সেন্স ২.১ লাইসেন্স প্রদান
২.১.১ সকল অনলাইন গণ মাধ্যমকে সরকারের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে;
সরকার লাইসেন্স ফিস বাবদ “নাম মাত্র ফিস” ধার্য করবে। ২.১.২ সরকার একটি
লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট নিয়মে অনলাইন
গণ মাধ্যমকে লাইসেন্স প্রদান করবে। বিদ্যমান অনলাইন গণমাধ্যমসমুহ শর্ত পরণ
সাপেক্ষে লাইসেন্স পাবে। ২.১.৩ সরকার অংশীজনদের (Stakeholder) সাথে আলোচনা
করে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামুলক উন্মুক্ত
স্বতন্ত্র আইন/ নীতিমালা/ বিধিমালা প্রণয়ন করবে। এতে লাইসেন্স প্রদান
পদ্ধতি, লাইসেন্স প্রদানের যো্গ্যতা ও অযোগ্যতা, লাইসেন্স বাতিল ও
অগ্রায়নের বিধান বর্ণিত থাকবে; ২.১.৪ এ সম্পর্কিত আইন/ নীতিমালা/ বিধিমালা
প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার তথা তথ্য মন্ত্রণালয় এ সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয়
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ২.১.৫ লাইসেন্স প্রাপ্ত সকল অনলাইন গণ মাধ্যম
সরকারের কাছে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে এবং শর্ত পরণ সাপেক্ষে
সরকারি বিজ্ঞাপনসহ সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা পাবে। তৃতীয় অধ্যায় অনলাইনে
তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার সংক্রান্ত নীতিমালা ৩.১ মহান
মুক্তিযুদ্ধ এবং তার ইতিহাস ৩.১.১ তথ্যের অবাধগ্যেতা, শিক্ষার প্রসার,
উন্নয়নমলক কর্মকান্ডে সকলকে উদ্ধুদ্ধকরণ, নির্মল আনন্দদান ও দেশপ্রেমে
উদ্বুদ্ধ করা হবে অনলাইন গণমাধ্যমের তথ্য- উপাত্ত প্রকাশ ও সম্প্রচারের মূল
লক্ষ্য। এই লক্ষ্যেরভিত্তিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচার, প্রকাশ ও
সম্প্রচারের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে; ৩.১.২ মহান
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং বাংলাদেশের
রাষ্ট্রীয় আদর্শ ও নীতিমালা সমুন্নত রাখতে হবে; ৩.১.৩ স্বাধীনতা সংগ্রামের
প্রকৃত ইতিহাসসহ সর্বজন স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা গৌরবান্বিত করতে
হবে। ৩.২ সংবাদ ও তথ্যমুলক বিষয়াদি : ৩.২.১ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত,
প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত কোন তথ্য- উপাত্ত কোন প্রকার অসঙ্গতিপর্ণ
বিভ্রান্তিমুলক অসত্য তথ্য বা উপাত্ত দেয়া যাবেনা। সকল প্রকারের
তথ্য-উপাত্তে উভয় পক্ষের যুক্তিসমুহ যথাযথ ভাবে উপস্থাপনের সুযোগ থাকতে
হবে; ৩.২.২ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নিম্নবর্ণিত জাতীয়রুত্বপর্ণ
অনুষ্ঠানসমহের তথ্য-উপাত্ত বাধ্যতামুলকভাবে প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার
করতে হবে। যথাঃ- জরুরী আবহাওয়া বার্তা, স্বাস্থবার্তা, গুরুত্বপর্ণ ঘোষণা,
সরকার কর্তৃক জারীকৃত প্রেস নোট, সরকারকর্তৃক সময় সময় অনুমোদিত জাতীয়
গুরুত্বপর্ণ অনুষ্ঠানসমুহ ইতাদি। ৩.৩ ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় অনুভুতি
৩.৩.১ দেশীয় সংস্কৃতির অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের আবহমানকালের নিজস্ব
সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাবধারার প্রতিফলন, বাংলাদেশীসংস্কৃতির সঙ্গে
জনসাধারণের নিবিড় যোগসুত্র স্থাপন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ধারাকে
দেশপ্রেমের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে দেশীয় সংস্কৃতির সুষ্ঠু প্রতিফলন করতে
হবে; ৩.৩.২ ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীসমহের সংস্কৃতির অগ্রগতির জন্য তাঁদের নিজস্ব
সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাবধারার সুষ্ঠু প্রতিফলন করতে হবে। ৩.৩.৩ সংস্কৃতির
সমৃদ্ধির জন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিল্প ও শিল্পীদের অনুসন্ধান ও
আবিষ্কার করে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে;
৩.৩.৪ রাষ্ট্র ভাষাকে যোগ্য মর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে অনুষ্ঠান এবং
এই উদ্দেশে সঠিক বাংলা বানান ও উচ্চারণের একটি আদর্শ মান স্থাপনের চেষ্টা
করতে হবে। তথ্য পাঠ, প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনক্রমেই
প্রমিত বানান বা উচ্চারণের মান শিথিল করা যাবে না; প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষা
ব্যবহার করা যাবে, তবে কোনক্রমেই কোন অঞ্চলের প্রতি কৌতুক বা পরিহাস করার
জন্য আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা যাবেনা; ৩.৩.৫ সকল ধর্মীয় অনুভতির প্রতি
পর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে; ৩.৩.৬ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত,
প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য উপাত্তে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় তথা
সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সমমর্যাদা ও সক্রিয়
অংশগ্রহণের লক্ষে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী সমাজ আমাদের জাতিকে প্রত্যয়দীপ্ত
রাখার ব্যাপারে সত্যিকারের অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এর স্পষ্ট
প্রতিফলন থাকতে হবে। ৩.৪ উন্নয়নমলক কর্মকান্ড : ৩.৪.১ উন্নয়নমলক কর্মকা-
বিশেষ করে স্বেচ্ছাভিত্তিক কাজের উদ্বুদ্ধকরণ এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে
তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব সচিত্র
প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হবে। একই সাথে শ্রমের মর্যাদা ও কায়িক পরিশ্রমের
প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং
এজন্য কোন পেশা বা বৃত্তি যে অমর্যাদাকর নয় সেটি তথ্য-উপাত্ত প্রচার,
প্রকাশ ও সম্প্রচারের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তুলতে হবে; ৩.৪.২ অনলাইন গণমাধ্যমে
প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য-উপাত্তে কৃষি ও শিল্প
ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার আন্দোলনে
জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক ও অনান্য
কর্মীদেরকে গুরুত্বপর্ণ ভমিকা ও দায়িত্ব পালনে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে; ৩.৪.৩
অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য-উপাত্তে
জনসংখা বৃদ্ধির ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন রাখতে ও এ সম্পর্কে কার্যকর
ব্যবস্থা গ্রহণে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শালীনতা, রুচি ও দেশীয়
কৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য রেখে জনসংখা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্পর্কে
তথ্য-উপাত্ত প্রদান করতে হবে; ৩.৪.৪ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত
বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য-উপাত্তে জনসাধারণকে দেশের শিল্পের উন্নয়নের ও
দেশের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে হবে; ৩.৪.৫ অনলাইন গণমাধ্যমে
প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য-উপাত্তে যুব সম্প্রদায়ের
সৃজনশীল চিন্তাধারা ও শক্তিকে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের পথনির্দেশনা দিতে হবে
এবং তাদের সমস্যা সমাধানে ফলপ্রসু ইঙ্গিত প্রদান করতে হবে; ৩.৪.৬ অনলাইন
গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল তথ্য-উপাত্তে উন্নয়ন,
সামাজিক কুসংস্কার থেকে মুক্তি এবং সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ অবদমনের দায়িত্ব
পালন করার লক্ষে সকল প্রকার দুর্নীতি দমন ও সমাধানের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত থাকতে
হবে; ৩.৪.৭ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত সকল
তথ্য-উপাত্তে জাতীয় সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন সংশ্লিষ্ট সকলকর্মচারী এবং
জনসাধারণকে দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য সচেতন করে তুলতে হবে। ৩.৫ তথ্য উপাত্ত
প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার বিষয়ক সতর্কতা : ৩.৫.১ অনলাইন গণমাধ্যমে শিশু
বা নারীর প্রতি সহিংসতা, অসমমুলক আচরণ বা হয়রানীমুলক কর্মকান্ডকে উদ্ধুদ্ধ
করে এমন অনুষ্ঠান প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না; ৩.৫.২ অনলাইন
গণমাধ্যমে শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক, মানবিক এবং নৈতিক গঠনকে নেতিবাচকভাবে
প্রভাবিত করে এমন ধরণের অশ্লীল,তথ্যগতভাবে ভ্রান্ত বা ভাষাগতভাবে অশোভন
কিংবা সহিংসতামুলক অনুষ্ঠান প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না;
৩.৫.৩ অনলাইন গণমাধ্যমে কোন প্রকার অশোভন উক্তি/ আচরণ করা যাবে না এবং
অপরাধীদের কার্যকলাপের কৌশল প্রদর্শন যা অপরাধ সংগঠনের ক্ষেত্রে নতুন
পদ্ধতি প্রবর্তনে সহায়ক হতে পারে এমন তথ্য উপাত্ত বা দৃশাবলী প্রচার,
প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা; ৩.৫.৫ অনলাইন গণমাব্ধমে মানবিক অনুভতিতে
আঘাত করে এমন তথ্য-উপাত্ত, হতাকান্ড-, নৃশংস হত্যাকান্ড, দুর্ঘটনায় নিহত ও
আত্মহতার মৃতদেহ এবং নির্যাতিত, ধর্ষিত এবং ব্যভিচার এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ
কোন নারী বা শিশুর স্থির বা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবেনা; ৩.৫.৬ অনলাইন
গণমাধ্যমে মানবিক অনুভতিতে আঘাত করে করে এমন কোন মানুষ বা প্রাণী
নির্যাতনের এমন দৃশ্য তথ্য উপাত্ত বা দৃশাবলী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার
করা যাবেনা; ৩.৫.৭ অনলাইন গণমাধ্যমে দেশী ও বিদেশী ছবি/ অনুষ্ঠানে অশ্লীল,
হিংসাত্মক, সন্ত্রাসমুলক এবং দেশীয় সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কোন
তথ্য উপাত্ত বা দৃশাবলী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা; ৩.৬
শিক্ষামুলক তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার: ৩.৬.১ অনলাইন
গণমাধ্যমে জনস্বার্থে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক
জনগোষ্ঠীর নিকট শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষামুলক তথ্য
উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করতে হবে। ৩.৬.২ অনলাইন গণমাধ্যমে একটি
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়ক শিক্ষামুলক কর্মকান্ড বা তথ্য নির্ভর
প্রতিবেদন প্রস্তুত বা প্রামাণ্যতথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার
করতে হবে। ৩.৬.৩ অনলাইন গণমাধ্যমে দেশের প্রতিটি নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষর
হতে সচেতন ও আগ্রহী করার জন্যে তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার
করতে হবে। ৩.৭ বিবিধ ৩.৭.১ প্রতেকটি অনলাইন গণ মাব্ধমের সুনির্দিষ্ট
charter of duties ও সম্পাদকীয় নীতিমালা থাকতে হবে; ৩.৭.২ সকল তথ উপাত্ত
প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে The Censorship of Film Act-
1963, ICT Act বা সংশ্লিষ্ট আইনসমুহ ও তার অধীন প্রণীত বিধি বা নীতিমালার
পরিপন্থী কোন তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করা যাবেনা। চতুর্থ
অধ্যায় বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত নীতিমালা ৪.১ রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ব্যক্তি এবং
বিজ্ঞাপন ৪.১.১ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বিদেশী কুটনীতিক এবং জাতীয় বীরদের
অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত পণ্যের বিজ্ঞাপনে
অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে গণসচেতনতা ও সমাজ সংস্কার মুলক বিজ্ঞাপনে
দেশের স্বনামধন্য নাগরিকদের সম্মতিক্রমে বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভূক্ত করা যাবে;
৪.১.২ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনের
ভাষা, দৃশ্য কিংবা নির্দেশনা কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুভতির প্রতি
পীড়াদায়ক হতে পারবে না। ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে পŸের বাণিজিক
উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে, গীর্জা ইতাদি স্থানের ধর্মীয় স্থিরচিত্র কিংবা
চলমান চিত্র উপস্থাপন করা যাবে না। তবে বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত বিষয়বস্তুর
প্রয়োজনে ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত না করে এ ধরণের প্রতিষ্ঠানের চিত্র প্রকাশ
বা প্রদর্শন বিবেচনা করা যেতে পারে; ৪.১.৩ অনলাইন গণমাধ্যমে বন্ধু
রাষ্ট্রসমুহের সাথে মতবিরোধ সৃষ্টি করতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ
বা সম্প্রচার করা যাবে না; ৪.১.৪ অনলাইন গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধর্ম বা
মতাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্বেষ বা বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার
প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না। ৪.২ পণ্য, পণ্যের মান এবং ভোক্তা অধিকার
সংরক্ষণ ৪.২.১ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত
বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ষ্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এর
তালিকাভুক্ত পণ্য সামগ্রীর বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বিএসটিআই মান নিয়ন্ত্রণ
সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে। এছাড়া অনান্য ক্ষেত্রে (যেখানে প্রযোজ)
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মান নিয়ন্ত্রণ সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে; ৪.২.২
অনলাইন গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপনে এমন কোন বর্ণনা বা দাবী প্রচার, প্রকাশ বা
সম্প্রচার করা যাবে না যাতে জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতারিত হতে
পারে; ৪.২.৩ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনে
প্রতিযোগী পণ্যের তুলনা বা নিন্দা করে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করা যাবে না। অন্য
পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে অমর্যাদাকর কোন উক্তি করা যাবে না; ৪.২.৪ অনলাইন
গণমাধ্যমে সংবাদের আকারে বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে
না। অনুষ্ঠান হতে বিজ্ঞাপন ভিন্নতর হতে হবে। নাটক বা কোন অনুষ্ঠানের ভিতরে
বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু প্রত্যক্ষ করা যাবে না; ৪.২.৫ অনলাইন
গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনের অডিও মানসম্মত এবং
শ্রুতিমধুর হতে হবে, অতিকোলাহলপর্ণ ও কর্ণপীড়াদায়ক হবে না। বিজ্ঞাপনে
নোংরা ও অশ্লীল শব্দ, উক্তি, সংলাপ, জিংগেল ও গালিগালাজ ইত্যাদি
অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না; ৪.২.৬ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা
সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনে কোন দেশী- বিদেশী গান বা গানের অংশ বা গানের সুর
সুরকার ও স্বত্বাধিকারীর অনাপত্তি নিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে; ৪.২.৭
অনলাইন গণমাধ্যমে কোন ধরণের নকল বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা
যাবে না; ৪.২.৮ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত
বিজ্ঞাপনে ঔষধ জাতীয় পণ্য, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনেষ্টিক সেন্টার,
স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইতাদির ক্ষেত্রে স্বাস্থ মন্ত্রণালয় অথবা তার অধীনস্থ
অধিদপ্তরের অনুমোদন/ ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে; ৪.২.৯ অনলাইন গণমাধ্যমে
প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে।
ঔষধপত্র, চিকিৎসা বিষয়ক পণ্যের বিজ্ঞাপনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দন্ত
চিকিৎসকদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ প্রদান করা যাবে না এবং তাদের পরিচয়
প্রচার,প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না। অনুরূপভাবে অনান্য ক্ষেত্রে
বাণিজিকভাবে ব্যবহৃত পণ্যের বিজ্ঞাপনে পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে।
তবে, সচেতনতামুলক বিজ্ঞাপন যেমন- এইডস, ডায়রিয়া, ডেংগু, যক্ষ্মা, মহামারি
ইত্যাদি প্রতিরোধ, মাদক নিয়ন্ত্রণ, এসিড নিক্ষেপ প্রভৃতি ক্ষেত্রে
অনুমতিক্রমে পরিচয়সহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পেশাগত পরামর্শ দেখানো যেতে
পারে; ৪.২.১০ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত দেশে
উৎপাদিত তথা দেশীয় বা সেবার বিজ্ঞাপনে দেশীয় মডেল ব্যবহার করতে হবে। তবে,
দেশীয় পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে সীমিত সংখ্যক বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে
পারে; ৪.২.১১ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিদেশে
উৎপাদিত পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে;
৪.২.১২ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনে
পরিবেশ বিনষ্টকারী বা বন্ধুসুলভ নয় এমন দৃশ্য দেখানো যাবে না; ৪.২.১৩
অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপনে
রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত গুরুত্বপর্ণ ভবন, স্থাপনা, কার্যালয়, যেমন- জাতীয়
সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, কোর্ট বা আদালত ও
আদালতের কার্যক্রম, সেনানিবাস এলাকা, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি
প্রদর্শন করা যাবে না।
No comments