আমদানিকারকরা জিম্মি
পণ্যভর্তি কন্টেইনারের বিপরীতে বিভিন্ন
চার্জের নামে আমদানিকারকদের কাছ থেকে বছরে অন্তত ৩৬৫ কোটি টাকা হাতিয়ে
নিচ্ছে বিদেশী শিপিং লাইনগুলো। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রীতিমতো
আমদানিকারকদের জিম্মি করে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে এ টাকা হাতিয়ে
নেয়া হচ্ছে। অথচ এ বাড়তি চার্জ বা ‘ডেমারেজ’ আদায় রোধ করা গেলে বিপুল
পরিমাণ টাকা দেশেই থাকত।
১৮ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অষ্টম বৈঠকে এ বাড়তি চার্জ আদায় রোধে কমিটি গঠনের মাধ্যমে ‘কমন ট্যারিফ’ বা চার্জ নির্ধারণের তাগাদা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৬ মাসেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বন্দর উপদেষ্টা কমিটির নবম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকেরও অন্যতম এজেন্ডা ওই বাড়তি চার্জ।
সূত্র জানায়, বিদেশি রফতানিকারক সে দেশের শিপিং লাইন থেকে কন্টেইনার ভাড়া নিয়ে ওই কন্টেইনারের যাবতীয় ভাড়া পরিশোধ করে বিল অব লেডিং বা বিএল পাঠিয়ে দেয় এ দেশের আমদানিকারকের কাছে। বিল অব লেডিংয়ে ঘোষিত পণ্য অক্ষত অবস্থায় আমদানিকারক বুঝে নেন সংশ্লিষ্ট শিপিং লাইনের এ দেশীয় এজেন্ট থেকে। এলসির শর্তানুযায়ী ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ যে বন্দরে (দেশে) পণ্য লোড হয়েছে সেখানেই পরিশোধ করে আমদানিকারক। সঙ্গত কারণেই পণ্যের ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) নেয়ার সময় বাড়তি কোনো চার্জ এদেশীয় শিপিং লাইন নিতে পারে না। কিন্তু কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একেক শিপিং এজেন্ট একেক ধরনের চার্জ আদায় করছে। আবার বন্দর কর্তৃপক্ষ যেখানে ডেমারেজ চার্জ ৬ ডলার করে নেয়, সেখানে শিপিং লাইনগুলো নিচ্ছে ১০ ডলার করে। অতিরিক্ত চার্জের মধ্যে রয়েছে ডকুমেন্টেশন চার্জ, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফি, ক্লিনিং চার্জ, সার্ভে চার্জ ইত্যাদি।
জিপি শিপিং লাইনের চার্জ আদায়ের একটি মানি রিসিটে দেখা যায়, মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি নামে এক আমদানিকারক নিয়োজিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি থেকে ওই শিপিং লাইন একটি কন্টেইনারের বিপরীতে ১০ হাজার ২১০ টাকা চার্জ আদায় করেছে। এর মধ্যে ডকুমেন্টেশন চার্জ নেয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা, ক্লিনিং চার্জ ১ হাজার ২০০ টাকা ও সার্ভে চার্জ নেয়া হয়েছে ৯০০ টাকা। ফ্রিটাইমের মধ্যে কন্টেইনার না নেয়ায় ওই কন্টেইনারের বিপরীতে ডিটেনশন বা ডেমারেজ চার্জ আদায় করা হয়েছে ৭ হাজার ১১০ টাকা।
সূত্র জানায়, প্রতিটি কন্টেইনারে এভাবে কেবল ডেমারেজ চার্জ বেশি গুণতে হচ্ছে একদিনে অন্তত চার ডলার করে। শিপিং লাইনগুলো ছয় মার্কিন ডলার থেকে শুরু করে চুরাশি মার্কিন ডলার পর্যন্ত প্রতিদিনের ডেমারেজ চার্জ আদায় করে বলে অভিযোগ আছে।
আমদানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার আসার পর ৫ দিন ফ্রি টাইম বা কোনো ধরনের চার্জ আদায় করে না বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর প্রথম সাত দিন প্রতি কন্টেইনারের (২০ ফিট) বিপরীতে ৬ ডলার, পরের সাত দিন ১২ ডলার করে চার্জ আদায় করে। এরপর থেকে যতদিন আমদানিকারক কন্টেইনার বা পণ্য ডেলিভারি নেবে না ততদিন অর্থাৎ ২৪ ডলার করে ‘পার ডে পার পেমেন্ট’ ভিত্তিতে ডেমারেজ আদায় করে। অন্যদিকে শিপিং লাইনগুলোও আলাদাভাবে প্রতিটি কন্টেইনারের বিপরীতে বন্দরের প্রায় দ্বিগুণ ডেমারেজ আদায় করে। বন্দর এবং শিপিং লাইন- দু’পক্ষকেই ডেমারেজ দিতে হচ্ছে আমদানিকারকদের ।
বন্দর সূত্রের তথ্য মতে, ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে এসেছে ৭ লাখ ৩১ হাজার ১৭২টি একক কন্টেইনার (২০ ফিট)। এসব কন্টেইনারের বিপরীতে বছরে কেবল ডেমারেজ চার্জ বাবদ আমদানিকারকদের পকেট থেকে বিদেশে চলে গেছে ৩৬৫ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মাহমুদুল ইমাম বিলু গতকাল যুগান্তরকে বলেন, শিপিং লাইনগুলো আমদানিকারকদের কাছ থেকে চার্জ আদায়ের নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে। একেক শিপিং লাইন একেক ধরনের চার্জ আদায় করছে যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক। তিনি বলেন, শিপিং লাইনগুলোর মাধ্যমে দেশ থেকে প্রতি বছর সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। পরোক্ষভাবে আমদানিকারকদের বাড়তি চার্জ গোনার এই মাশুল দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অষ্টম সভায় চার্জ আদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তখন বন্দর চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে সবার সঙ্গে বসে কমন ট্যারিফ বা চার্জ নির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়। চেয়ারম্যান নিজেও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এনএস গুহ নিলাজকে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব প্রদান করেন মৌখিকভাবে।
কিন্তু প্রায় ৬ মাস পরও এ বিষয়ে আর কোনো বৈঠক বা নতুন করে কোনো কমিটিও হয়নি। বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সেই নির্দেশনাও ঝুলে আছে। আমদানিকারকরাও আছেন শিপিং এজেন্টদের বাড়তি চার্জ আদায়ের খড়গের তলায়।
অষ্টম সভায় অতিরিক্ত চার্জ আদায়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা স্বীকার করে এনএস গুহ নিলাজ গতকাল যুগান্তরকে বলেন, ‘আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনারের বিপরীতে আমদানিকারকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ বা ডেমারেজ আদায়ের বিষয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি আছে। আমদানিকারক কিংবা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সব অভিযোগ যে সঠিক তা নয়। আবার কোনো কোনো শিপিং লাইন যে অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে না তাও বলা যাবে না। তবে সব পক্ষকে নিয়ে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ‘কমন ট্যারিফ’ নির্ধারণ করা গেলে ভালো হয়। অষ্টম বৈঠকের পর চার্জ আদায়ের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ আর কোনো বৈঠক করেছে কিনা আমার জানা নেই।’ তিনি নিজেও সময়ের অভাবে এ বিষয়ে নতুন করে কোনো উদ্যোগ নিতে পারেননি বলে জানান।
বাড়তি চার্জ আদায় প্রসঙ্গে জিপি শিপিং লাইনের কর্মকর্তা আতাউর রহমান খান যুগান্তরকে বলেন, শিপিং লাইন্সের মালিক বা বিদেশী প্রিন্সিপ্যাল অফিস যে ট্যারিফ নির্ধারণ করে দেয় সেভাবেই আমদানি পণ্য ডেলিভারি দেয়ার সময় চার্জ আদায় করা হয়। এখানে লুকোচুরির কিছুই নেই।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এহসানুল হক চৌধুরী এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে শিপিং লাইন্সগুলো তাদের নিজস্ব নিয়মে ট্যারিফ আদায় করে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। যে শিপিং লাইন যত ভালো সার্ভিস দেয় তত বেশি চার্জ আদায় করে। আমদানিকারকরা চাইলে কম চার্জ আদায় করে এমন শিপিং লাইন্সের মাধ্যমে পণ্য আনতে পারে। কমন ট্যারিফ নির্ধারণ কিংবা বিদেশী শিপিং লাইনগুলোকে বাধ্য করার কোনো এখতিয়ার বন্দর চেয়ারম্যানের নেই।
১৮ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অষ্টম বৈঠকে এ বাড়তি চার্জ আদায় রোধে কমিটি গঠনের মাধ্যমে ‘কমন ট্যারিফ’ বা চার্জ নির্ধারণের তাগাদা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৬ মাসেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বন্দর উপদেষ্টা কমিটির নবম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকেরও অন্যতম এজেন্ডা ওই বাড়তি চার্জ।
সূত্র জানায়, বিদেশি রফতানিকারক সে দেশের শিপিং লাইন থেকে কন্টেইনার ভাড়া নিয়ে ওই কন্টেইনারের যাবতীয় ভাড়া পরিশোধ করে বিল অব লেডিং বা বিএল পাঠিয়ে দেয় এ দেশের আমদানিকারকের কাছে। বিল অব লেডিংয়ে ঘোষিত পণ্য অক্ষত অবস্থায় আমদানিকারক বুঝে নেন সংশ্লিষ্ট শিপিং লাইনের এ দেশীয় এজেন্ট থেকে। এলসির শর্তানুযায়ী ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ যে বন্দরে (দেশে) পণ্য লোড হয়েছে সেখানেই পরিশোধ করে আমদানিকারক। সঙ্গত কারণেই পণ্যের ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) নেয়ার সময় বাড়তি কোনো চার্জ এদেশীয় শিপিং লাইন নিতে পারে না। কিন্তু কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একেক শিপিং এজেন্ট একেক ধরনের চার্জ আদায় করছে। আবার বন্দর কর্তৃপক্ষ যেখানে ডেমারেজ চার্জ ৬ ডলার করে নেয়, সেখানে শিপিং লাইনগুলো নিচ্ছে ১০ ডলার করে। অতিরিক্ত চার্জের মধ্যে রয়েছে ডকুমেন্টেশন চার্জ, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফি, ক্লিনিং চার্জ, সার্ভে চার্জ ইত্যাদি।
জিপি শিপিং লাইনের চার্জ আদায়ের একটি মানি রিসিটে দেখা যায়, মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি নামে এক আমদানিকারক নিয়োজিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি থেকে ওই শিপিং লাইন একটি কন্টেইনারের বিপরীতে ১০ হাজার ২১০ টাকা চার্জ আদায় করেছে। এর মধ্যে ডকুমেন্টেশন চার্জ নেয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা, ক্লিনিং চার্জ ১ হাজার ২০০ টাকা ও সার্ভে চার্জ নেয়া হয়েছে ৯০০ টাকা। ফ্রিটাইমের মধ্যে কন্টেইনার না নেয়ায় ওই কন্টেইনারের বিপরীতে ডিটেনশন বা ডেমারেজ চার্জ আদায় করা হয়েছে ৭ হাজার ১১০ টাকা।
সূত্র জানায়, প্রতিটি কন্টেইনারে এভাবে কেবল ডেমারেজ চার্জ বেশি গুণতে হচ্ছে একদিনে অন্তত চার ডলার করে। শিপিং লাইনগুলো ছয় মার্কিন ডলার থেকে শুরু করে চুরাশি মার্কিন ডলার পর্যন্ত প্রতিদিনের ডেমারেজ চার্জ আদায় করে বলে অভিযোগ আছে।
আমদানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার আসার পর ৫ দিন ফ্রি টাইম বা কোনো ধরনের চার্জ আদায় করে না বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর প্রথম সাত দিন প্রতি কন্টেইনারের (২০ ফিট) বিপরীতে ৬ ডলার, পরের সাত দিন ১২ ডলার করে চার্জ আদায় করে। এরপর থেকে যতদিন আমদানিকারক কন্টেইনার বা পণ্য ডেলিভারি নেবে না ততদিন অর্থাৎ ২৪ ডলার করে ‘পার ডে পার পেমেন্ট’ ভিত্তিতে ডেমারেজ আদায় করে। অন্যদিকে শিপিং লাইনগুলোও আলাদাভাবে প্রতিটি কন্টেইনারের বিপরীতে বন্দরের প্রায় দ্বিগুণ ডেমারেজ আদায় করে। বন্দর এবং শিপিং লাইন- দু’পক্ষকেই ডেমারেজ দিতে হচ্ছে আমদানিকারকদের ।
বন্দর সূত্রের তথ্য মতে, ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে এসেছে ৭ লাখ ৩১ হাজার ১৭২টি একক কন্টেইনার (২০ ফিট)। এসব কন্টেইনারের বিপরীতে বছরে কেবল ডেমারেজ চার্জ বাবদ আমদানিকারকদের পকেট থেকে বিদেশে চলে গেছে ৩৬৫ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মাহমুদুল ইমাম বিলু গতকাল যুগান্তরকে বলেন, শিপিং লাইনগুলো আমদানিকারকদের কাছ থেকে চার্জ আদায়ের নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে। একেক শিপিং লাইন একেক ধরনের চার্জ আদায় করছে যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক। তিনি বলেন, শিপিং লাইনগুলোর মাধ্যমে দেশ থেকে প্রতি বছর সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। পরোক্ষভাবে আমদানিকারকদের বাড়তি চার্জ গোনার এই মাশুল দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অষ্টম সভায় চার্জ আদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তখন বন্দর চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে সবার সঙ্গে বসে কমন ট্যারিফ বা চার্জ নির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়। চেয়ারম্যান নিজেও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এনএস গুহ নিলাজকে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব প্রদান করেন মৌখিকভাবে।
কিন্তু প্রায় ৬ মাস পরও এ বিষয়ে আর কোনো বৈঠক বা নতুন করে কোনো কমিটিও হয়নি। বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সেই নির্দেশনাও ঝুলে আছে। আমদানিকারকরাও আছেন শিপিং এজেন্টদের বাড়তি চার্জ আদায়ের খড়গের তলায়।
অষ্টম সভায় অতিরিক্ত চার্জ আদায়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা স্বীকার করে এনএস গুহ নিলাজ গতকাল যুগান্তরকে বলেন, ‘আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনারের বিপরীতে আমদানিকারকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ বা ডেমারেজ আদায়ের বিষয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি আছে। আমদানিকারক কিংবা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সব অভিযোগ যে সঠিক তা নয়। আবার কোনো কোনো শিপিং লাইন যে অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে না তাও বলা যাবে না। তবে সব পক্ষকে নিয়ে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ‘কমন ট্যারিফ’ নির্ধারণ করা গেলে ভালো হয়। অষ্টম বৈঠকের পর চার্জ আদায়ের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ আর কোনো বৈঠক করেছে কিনা আমার জানা নেই।’ তিনি নিজেও সময়ের অভাবে এ বিষয়ে নতুন করে কোনো উদ্যোগ নিতে পারেননি বলে জানান।
বাড়তি চার্জ আদায় প্রসঙ্গে জিপি শিপিং লাইনের কর্মকর্তা আতাউর রহমান খান যুগান্তরকে বলেন, শিপিং লাইন্সের মালিক বা বিদেশী প্রিন্সিপ্যাল অফিস যে ট্যারিফ নির্ধারণ করে দেয় সেভাবেই আমদানি পণ্য ডেলিভারি দেয়ার সময় চার্জ আদায় করা হয়। এখানে লুকোচুরির কিছুই নেই।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এহসানুল হক চৌধুরী এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে শিপিং লাইন্সগুলো তাদের নিজস্ব নিয়মে ট্যারিফ আদায় করে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। যে শিপিং লাইন যত ভালো সার্ভিস দেয় তত বেশি চার্জ আদায় করে। আমদানিকারকরা চাইলে কম চার্জ আদায় করে এমন শিপিং লাইন্সের মাধ্যমে পণ্য আনতে পারে। কমন ট্যারিফ নির্ধারণ কিংবা বিদেশী শিপিং লাইনগুলোকে বাধ্য করার কোনো এখতিয়ার বন্দর চেয়ারম্যানের নেই।
No comments