বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতায় অস্থিরতা দেখা দেবে
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য অষ্টম জাতীয়
পে-স্কেলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ বেতন নির্ধারণের সুপারিশ নিয়ে ব্যবসায়ী
মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের
অনেকেই আতংকিত ও চিন্তিত। তাদের মতে, সরকারি খাত হচ্ছে একটি আনুষ্ঠানিক
খাত। এ খাতে বেতন বৃদ্ধি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গেই অনানুষ্ঠানিক বেসরকারি
খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব হামলে পড়বে। তৈরি হবে আর্থসামাজিক অস্থিরতা। যার
মাশুল গুনতে হবে সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তাদের। কেউ কেউ দাবি করেছেন, এটি
কোনো যুক্তি হতে পারে না। বেসরকারি খাতেও দফায় দফায় বেতন বাড়ানো হয়েছে। এ
খাতেও ফরমাল ও স্থিতিশীল অনেক খাত রয়েছে। যেখানে কর্মকর্তাদের বেতন সরকারি
কর্মকর্তাদের চেয়েও দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি। ক্ষেত্র বিশেষে এটি কয়েকগুণ বেশিও
রয়েছে। তাছাড়া সারা দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন
মাত্র ১৩ লাখ। সেখানে বেসরকারি খাতে এককভাবে তৈরি পোশাক শিল্পেই রয়েছেন
সর্বাধিক ৪০ লাখ শ্রমিক। গত ৫ বছরের ব্যবধানে এ খাতেও শ্রমিকের মজুরিমূল্য
২৯৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন বৈষম্যের মধ্যে
পড়ে গেছেন। অন্যদিকে ৬ বছর পর সরকারি খাতে বেতন দ্বিগুণ করার সুপারিশ করা
হয়েছে। এটি সময়ের যৌক্তিক দাবি বলেও তারা মনে করছেন। অন্যদিকে কেউ কেউ আবার
বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন সরকার বাড়াতেই পারে। কিন্তু আমাদের দেশে
একটি সংস্কৃতি চালু হয়ে গেছে, সেটি হচ্ছে- আনুষ্ঠানিক খাতে বড় কোনো
পরিবর্তনের প্রভাব বেসরকারি খাতেও এসে যায়। তাই বেতন বাড়ানোর পর বাজার
ব্যবস্থা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও সরকারের রাখতে হবে। নতুবা বেতন
বৃদ্ধির সুফল সরকারি চাকিরিজীবীরা যেমন পাবেন না, তেমনি এর নেতিবাচক
প্রভাবে বেসরকারি খাতে পাঁচ কোটি শ্রমজীবীসহ ১৬ কোটি মানুষকেই দুর্ভোগের
মুখে পড়তে হবে। যেটি হবে অনাকাক্সিক্ষত। পুরো আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকেই তা
অস্থির করে তুলতে পারে।
রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ প্রদান এবং সেটি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের প্রভাব বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
এফবিসিসিআই : ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারি খাতে মাত্র আড়াই শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির প্রভাব বেসরকারি খাতে সাড়ে ৯৭ শতাংশ মানুষের ওপর পড়তে পারে না। যদি পড়েই থাকে সেটি হবে একেবারেই অযৌক্তি ও অন্যায্য। তবে সেটি সামলে ওঠার সক্ষমতা দেশের বেসরকারি খাতের তৈরি হয়েছে। বেসরকারি অনেক খাতই রয়েছে যেখানে বেতন কাঠামো খুবই আকর্ষণীয়।
তিনি বলেন, বেতন বৃদ্ধির হুজুগে যাতে আগেভাগে বাজারে অস্থিরতা তৈরি না হয়, সেদিকে সরকারের সতর্ক থাকা উচিত।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স : সুপারিশ যেহেতু হয়েছে, একটি বর্ধিত বেতন কাঠামো নিশ্চয় বাস্তবায়ন হবে- এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে দেশের বেসরকারি খাতগুলোর সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নেয়া দরকার। তিনি বলেন, বেতন কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ হওয়া উচিত যাতে বেসরকারি খাতগুলোতে কোনো অস্থিরতা তৈরির সুযোগ না হয়। কারণ বেসরকারি বেতন কাঠামো আকর্ষণীয় হলেও অনেক খাতে এখনও খুবই দৈন্য রয়েছে। বিশেষ করে সড়ক, নৌ ও জুটসহ বিভিন্ন খাতের শ্রমজীবীরা সন্তোষজনক মজুরিমূল্য পাচ্ছেন না। তাই সরকারি বেতন বৃদ্ধির প্রভাব প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এসব খাতসহ বেসরকারি সব খাতেই পড়তে পারে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) : সংগঠনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ বলেন, সরকারি খাতে একসঙ্গে এত বেশি হারে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব তো বেসরকারি খাতে কিছুটা পড়বেই। যদিও বেসরকারি খাত এখন একটা অবস্থানে চলে এসেছে। বেতনও অনেকটা মানসম্মতপর্যায়ের। এরপর আবার প্রতিবছর একটা আনুপাতিক হারে বাড়ানো হয়। তবে এ খাতে এত বেশি হারে কখনোই বেতন বৃদ্ধি হয় না। যেটা এবার সরকারি খাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব কতটা পড়বে সেটি নির্ভর করে সম্পূর্ণ সরকারি মেকানিজমের ওপর। জেনেছি সরকার এ বর্ধিত বেতন তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন করবে। এভাবে করলে প্রভাব সেভাবে পড়বে না। তবে এজন্য বেসরকারি খাতে অবকাঠামো উন্নয়নসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি আরও বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন : বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি না সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব বেসরকারি খাতে বিশেষ করে এর সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্পে পড়বে। কারণ এ খাতে ৫ বছরের ব্যবধানে গত বছর পর্যন্ত বেতন কাঠামো ২৯৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৫ বছরের আগে বিদ্যমান মজুরি বোর্ড রিভিউর সুযোগ নেই।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সেভাবে কোনো প্রভাব না পড়লেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত বিষয়টি শ্রমিক ও মালিকদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতি : বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এটি একটি সুপারিশ মাত্র। চূড়ান্ত বাস্তবায়ন হয়তো কিছুটা কম-বেশি হবে। তবে যে বেতন বৃদ্ধি পাবে তার দরকার ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারকে মাথায় রাখতে হবে- সরকারি চাকরি করছেন মাত্র ১৩ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। মোট শ্রমবাজারের খুব কম অংশের চাহিদাই সরকারি খাতে পূরণ হয়। অথচ প্রতিবছর ২০ লাখ লোক এই শ্রমবাজারে প্রবেশ করেন। এখন ১৩ লাখের জন্য যদি বাকি সবাই ভোগান্তির শিকার হন, তাহলে একটি সমস্যা দেখা দেবে। সেক্ষেত্রে পরামর্শ হবে বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যাতে গোটাবাজার ব্যবস্থা কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় থাকে তা দেখভালে রাখা। তাহলে বেসরকারি খাতে এর প্রভাব কিছুটা পড়লেও তা সহনীয় মাত্রায় থাকবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হোসেন খালেদ জানিয়েছে, এ বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার তার সংগঠনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়া হবে।
রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ প্রদান এবং সেটি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের প্রভাব বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
এফবিসিসিআই : ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারি খাতে মাত্র আড়াই শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির প্রভাব বেসরকারি খাতে সাড়ে ৯৭ শতাংশ মানুষের ওপর পড়তে পারে না। যদি পড়েই থাকে সেটি হবে একেবারেই অযৌক্তি ও অন্যায্য। তবে সেটি সামলে ওঠার সক্ষমতা দেশের বেসরকারি খাতের তৈরি হয়েছে। বেসরকারি অনেক খাতই রয়েছে যেখানে বেতন কাঠামো খুবই আকর্ষণীয়।
তিনি বলেন, বেতন বৃদ্ধির হুজুগে যাতে আগেভাগে বাজারে অস্থিরতা তৈরি না হয়, সেদিকে সরকারের সতর্ক থাকা উচিত।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স : সুপারিশ যেহেতু হয়েছে, একটি বর্ধিত বেতন কাঠামো নিশ্চয় বাস্তবায়ন হবে- এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে দেশের বেসরকারি খাতগুলোর সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নেয়া দরকার। তিনি বলেন, বেতন কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ হওয়া উচিত যাতে বেসরকারি খাতগুলোতে কোনো অস্থিরতা তৈরির সুযোগ না হয়। কারণ বেসরকারি বেতন কাঠামো আকর্ষণীয় হলেও অনেক খাতে এখনও খুবই দৈন্য রয়েছে। বিশেষ করে সড়ক, নৌ ও জুটসহ বিভিন্ন খাতের শ্রমজীবীরা সন্তোষজনক মজুরিমূল্য পাচ্ছেন না। তাই সরকারি বেতন বৃদ্ধির প্রভাব প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এসব খাতসহ বেসরকারি সব খাতেই পড়তে পারে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) : সংগঠনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ বলেন, সরকারি খাতে একসঙ্গে এত বেশি হারে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব তো বেসরকারি খাতে কিছুটা পড়বেই। যদিও বেসরকারি খাত এখন একটা অবস্থানে চলে এসেছে। বেতনও অনেকটা মানসম্মতপর্যায়ের। এরপর আবার প্রতিবছর একটা আনুপাতিক হারে বাড়ানো হয়। তবে এ খাতে এত বেশি হারে কখনোই বেতন বৃদ্ধি হয় না। যেটা এবার সরকারি খাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব কতটা পড়বে সেটি নির্ভর করে সম্পূর্ণ সরকারি মেকানিজমের ওপর। জেনেছি সরকার এ বর্ধিত বেতন তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন করবে। এভাবে করলে প্রভাব সেভাবে পড়বে না। তবে এজন্য বেসরকারি খাতে অবকাঠামো উন্নয়নসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি আরও বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন : বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি না সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব বেসরকারি খাতে বিশেষ করে এর সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্পে পড়বে। কারণ এ খাতে ৫ বছরের ব্যবধানে গত বছর পর্যন্ত বেতন কাঠামো ২৯৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৫ বছরের আগে বিদ্যমান মজুরি বোর্ড রিভিউর সুযোগ নেই।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সেভাবে কোনো প্রভাব না পড়লেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত বিষয়টি শ্রমিক ও মালিকদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতি : বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এটি একটি সুপারিশ মাত্র। চূড়ান্ত বাস্তবায়ন হয়তো কিছুটা কম-বেশি হবে। তবে যে বেতন বৃদ্ধি পাবে তার দরকার ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারকে মাথায় রাখতে হবে- সরকারি চাকরি করছেন মাত্র ১৩ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। মোট শ্রমবাজারের খুব কম অংশের চাহিদাই সরকারি খাতে পূরণ হয়। অথচ প্রতিবছর ২০ লাখ লোক এই শ্রমবাজারে প্রবেশ করেন। এখন ১৩ লাখের জন্য যদি বাকি সবাই ভোগান্তির শিকার হন, তাহলে একটি সমস্যা দেখা দেবে। সেক্ষেত্রে পরামর্শ হবে বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যাতে গোটাবাজার ব্যবস্থা কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় থাকে তা দেখভালে রাখা। তাহলে বেসরকারি খাতে এর প্রভাব কিছুটা পড়লেও তা সহনীয় মাত্রায় থাকবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হোসেন খালেদ জানিয়েছে, এ বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার তার সংগঠনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়া হবে।
No comments