কায়সারের রায় আজ
জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের বিরুদ্ধে একাত্তরে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আজ এ রায় ঘোষণা করবেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম। চলতি বছরের ২০শে আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষে মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এই মামলার রায় যে কোনদিন ঘোষণা করা হবে মর্মে তা অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল-২। একই সঙ্গে ওই দিন জামিনে থাকা কায়সারের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। নিয়মানুযায়ী রায় ঘোষণার সময় আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। কায়সারের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা, হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ১৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতীয় পার্টির কোন নেতা কিংবা সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় ঘোষিত হচ্ছে। চলতি বছরের ২৩শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত ৬ কার্যদিবসে কায়সারের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ ও আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, ড. তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে ৭ই আগস্ট থেকে ১৯শে আগস্ট পর্যন্ত ৭ কার্যদিবসে কায়সারের পক্ষে অভিযোগ ও আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আবদুস সোবহান তরফদার। গত ৯ই মার্চ থেকে ২৩শে জুলাই পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষে কায়সারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মনোয়ারা বেগমসহ ৩২ জন। তাদের মধ্যে কায়সারের বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগ ও ঘটনার ওপর সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৮ জন। আর জব্দ তালিকার সাক্ষী ছিলেন ৪ জন। তাদেরকে জেরা করেন কায়সারের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীরা। তবে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের পক্ষে কোন সাফাই সাক্ষী হাজির করেনি আসামি পক্ষ। চলতি বছরের ৪ঠা মার্চ কায়সারের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। এর আগে ২রা ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল-২। গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে এবং ২৬শে ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১৩ই জানুয়ারি অভিযোগ গঠন না করার পক্ষে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আবদুস সোবহান তরফদার। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে সৈয়দ কায়সার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। ২০১৩ সালের ২১শে মে সৈয়দ মো. কায়সারকে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরদিন ২২শে মে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
No comments