‘স্বামী-স্ত্রীর মতোই ছিলাম’
চিত্রনায়িকা হ্যাপি আর ক্রিকেটার রুবেলের প্রেম কাহিনী এখন আলোচনার শীর্ষে। গত ক’দিন ধরেই হ্যাপি-রুবেলের প্রেম কাহিনী খবরের শিরোনাম হয়ে আসছে। রুবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন হ্যাপি। অভিযোগ করেছেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন রুবেল। এবার আরেক ‘বোমা’ ফাটালেন নবাগতা এই চিত্রনায়িকা। বললেন- রুবেলের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতোই ছিলেন তিনি, একই ফ্ল্যাটে। সেই ফ্ল্যাটের মালিক জাতীয় দলের পেসার রুবেল নিজেই। মিরপুরের কমার্স কলেজের সামনের সেই ফ্ল্যাটে একদিন-দু’দিন নয়, অনেক দিন অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কেটেছে তাদের। বেসরকারি এক এফএম রেডিও’র ‘অন্ধকারের গল্প’ নামের অনুষ্ঠানে এমনটাই দাবি করেছেন হ্যাপি। যদিও হ্যাপির এই একতরফা দাবির প্রেক্ষিতে রুবেলের কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছে না, আপাতত লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়েছেন তিনি। উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন নিয়েছেন। আইনজীবী নিয়োগ করেছেন হ্যাপির মামলার আইনি মোকাবিলা করতে। অপরদিকে হ্যাপিও নাছোড়বান্দা হয়ে আছেন। রুবেলের এই প্রেম-প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। হ্যাপিও নিয়োগ করেছেন আইনজীবী। হ্যাপির দাবি, রুবেল তাকে নিয়ে এক ধরনের ‘খেলা’ খেলেছে। এখন আর তিনি রুবেলকে বিয়ে করতে চান না। ভালবাসা এখন পরিণত হয়েছে ঘৃণায়। এমনকি রুবেলকে ‘নেশাখোর’ বলেও মন্তব্য করেছেন হ্যাপি। রুবেলের সঙ্গে তার কথোপকথনের রেকর্ড বাজারে ছেড়েছিলেন হ্যাপি নিজেই। তাতে অবশ্য প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে কিছুটা আঁচ করা যায়, শারীরিক সম্পর্কের কিছুই উঠে আসেনি সেই কথোপকথনে। রুবেল-হ্যাপির শেষ যে কথোপকথন বাজারে এসেছে, তাতে উল্টো রুবেল স্বামী-স্ত্রী’র মতো থাকাসহ সব কিছুই অস্বীকার করেছেন। এড়িয়ে গেছেন প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টিও। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা এফএম (৯০.৪) রেডিওতে নিজের জীবনের অজানা অধ্যায়গুলো উন্মোচন করেছেন জনসমক্ষে। হ্যাপির সেই বক্তব্য তুলে ধরা হলো এখানে। সঙ্গে রয়েছে রুবেলের সঙ্গে তার শেষ কথোপকথনের বিস্তারিত।
রক্ষণশীল পরিবার: নিজের সম্পর্কে হ্যাপি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, আমার প্রথম মুভি ‘কিছু আশা কিছু ভালবাসা।’ মোস্তাাফিজ জামান মানিক এর পরিচালক। প্রথমে আমি চুরি করে শুটিং করতাম। আমার পরিবার রক্ষণশীল হওয়ায় তারা আমায় তেমন সমর্থন দিতেন না। আমার প্রথম মুভি মধুমিতা হলে গিয়ে দেখি। হ্যাপি বলেন, আমার তেমন ছেলে বন্ধু ছিল না। ছেলেদের সাথে তেমন মেশা হয়নি। প্রচুর ছেলে বন্ধু আমাকে ডিস্টার্ব করতো। কোন ছেলে পরিচালকই আমাকে বলতে পারেনি যে, আমাকে ভালবাসে।
প্রথম পরিচয়: হ্যাপি বলেন, এক বছর ধরে ওর সঙ্গে পরিচয়। শুরুটা হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। প্রথমে ও আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। দুই জনেরই গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। এ কারণেই ওকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি। রুবেল যে খেলোয়াড় তা আমি প্রথমে জানতাম না। আমি তেমন ক্রিকেট বুঝি না। এমনকি কখনও মাঠে যেয়ে খেলা দেখিনি। সর্বশেষ আমি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা দেখি। আমি ক্রিকেট তেমন দেখি না। অনেকে হয়তো ভাবেন খেলা দেখে আমি ওকে ভালবেসেছি কিন্তু তা না। এর আগে শুরু থেকেই ফেসবুকে কথা হয়েছে। ওর ফোন পেয়ে প্রথমে খারাপ লাগতো ও বিরক্ত হতাম। তারপর থেকে আস্তে আস্তে সম্পর্ক হয়েছে। ও খুব পাগলামি করতো। প্রায়ই ওর সাথে ঘুরতে বের হতাম। ওর সব পাগলামি দেখে আমি বুঝতাম ও আমাকে সত্যি ভালবাসে। এখন মনে হয় সব কিছু অভিনয় ছিল ওর। ঢাকায় থাকলে প্রতিদিন ওর সঙ্গে দেখা হতো। ওর সঙ্গে সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত জমা হয়ে আছে। ওইগুলো ভুলতে পারছি না। ভালবাসা আমার জীবনের সর্বনাশা। ও আমাকে বাবু বলে ডাকতো। আমি রাগ করলেই ও কান্না করতো। ওর কান্না দেখে আমার অনেক ভাল লাগতো। ভাবতাম ছেলেটা আমাকে অনেক ভালবাসে। কিন্তু রুবেলের সব কিছুই এখন আমার ফেক মনে হয়। ওর সব কথাই আমি শুনতাম। যখন যা বলতো তাই করতাম। বন্ধুদের সাথে দেখা করতে দিতো না আমাকে। একা একা মার্কেটে যেতে দিতো না। ওকে মনে হয়েছে ও শুধুই আমার, আর কারও নয়। হ্যাপি বলেন, যখন আমি জানলাম ওর ফ্যামিলি ওকে বিয়ে করাতে চাইছে তখন আমি ওকে বলেছি, তুমি আমাদের সম্পর্কের কথা বাবা-মাকে জানাও। কিন্তু সে জানায়নি। উল্টো আমাকে খারাপ মেয়ে বলে গালি দিয়েছে। মিডিয়ায় কাজ করলে নাকি আমরা খারাপ হয়ে যাই। তারপরও আমি মনে করতাম, যেহেতু ভালবেসে ফেলেছি এখন তো ফিরতে পারবো না। ওর কথায় ফিল্ম ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ওর মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখিনি।
রুবেল নেশাখোর: রুবেল প্রতিদিন নেশা করতো। অতিরিক্ত নেশা করতো। আমি তাকে নিষেধ করতাম ও শুধু বলতো আজই শেষ, আর করবো না। ও আবার করতো। শুধু খেলার আগের দিন নেশা করতো না রুবেল। তাছাড়া প্রতিটি দিনই নেশা করতো। ও আসলে নেশা ছাড়া থাকতে পারতো না।
মামলার সিদ্ধান্ত: ও বলে, আমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। অথচ তার সাথে তার বাসায় স্বামী-স্ত্রীর মতোই থাকতাম। ১ তারিখে হঠাৎ করেই বলেছে, তোমার সাথে আমার সম্পর্ক ব্রেকআপ। তখন বলে, তুমি আমাকে ফোন দিও না। আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। মামলা করার আগের দিন সে বলেছে, আমাকে বিয়ে করতে পারবে না। এরপর মামলা করতে চেয়েছি। থানায় যাই। তখন থানা থেকে বিসিবিতে ফোন করে। তখন কিছু খেলোয়াড় বিষয়টা মীমাংসা করতে থানায় আসে। ওই সময় রুবেল বলে, আমি তোমাকে বিয়ে করবো। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেই মামলা করবো না। কিন্তু তাতেও কোন কিছু বদলায় না। আবারও রুবেল বলে, বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে। বিশ্বকাপের পরেই ও বিয়ে করবে। এ সময় ওকে বলি, আমাদের কথাগুলো রেকর্ড করা আছে। হঠাৎ সে পাল্টে যায়। অনেক ভাল ব্যবহার করতে থাকে। মামলা করার আগের দিন অনেক ভুলিয়ে-ভালিয়ে আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়, মোবাইলের অনেক কিছু ডিলিট করে দেয়। সে বলে, তুমি মামলা করবে? করো, কিছুই করতে পারবে না। মামলা করে কিছুই হবে না। আমি তোমার বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানি মামলা করবো। এখন ওর কথা শুনলেই ঘৃণা হয়। ওকে আমি ঘৃণা করি। এখন সত্যি, রুবেল নামের এ মানুষের প্রতি ঘৃণা হয়। যে আমাকে নিয়ে খেললো। রুবেলের মতো জানোয়ারকে আমি আর কখনও বিয়ে করবো না।
ক্রিকেট তারকাদের সঙ্গে অভিনেত্রীদের প্রেম এবং নারী কেলেঙ্কারির খবর নতুন নয়। অনেক খ্যাতিমান ক্রিকেট তারকা অভিনেত্রীদের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছেন। এ ধরনের উদাহরণ রয়েছে অসংখ্য। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের ঘটনাটি চমকে দিয়েছে অনেককেই। যদিও অভিযোগটি এখনও একতরফা। রুবেল হোসেন নিশ্চুপ। কেবল অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির বক্তব্যই পাওয়া যাচ্ছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ এনেছেন অভিনেত্রী হ্যাপি।
রুবেল হ্যাপির শেষ ফোন আলাপ
রুবেল: ওটা তো এক নম্বর মিথ্যা কথা ছিল।
হ্যাপি: এক নম্বর মিথ্যা কথা ছিল?
রুবেল: হ্যাঁ
হ্যাপি: কোনটা মিথ্যা ছিল? আমরা দু’জন হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলাম এটা মিথ্যা কথা?
রুবেল: হাজব্যান্ড-ওয়াইফ? কিসের হাজব্যান্ড-ওয়াইফ ছিলাম তোমার সঙ্গে আমি?
হ্যাপি: হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলাম না আমরা?
রুবেল: না। কখনওই ছিলাম না হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো।
হ্যাপি: কিছুই হয়নি আমাদের মধ্যে?
রুবেল: না কি হবে?
হ্যাপি: ভেরি গুড রুবেল, অনেক সুন্দর করে কথা উল্টাতে পারো। একটা মানুষ যে এত সুন্দর করে কথা উল্টাতে পারে! একটা কথা বলতো, আমাকে কখনও ভালবেসেছিলে?
রুবেল: তোমাকে কি ভালবেসেছি বলো তো?
হ্যাপি: তার মানে তুমি কি বলতে চাচ্ছ, তুমি আমাকে ভালবাসনি। তোমার সঙ্গে আমার অন্য ধরনের কোন রিলেশনও হয়নি। আমরা কখনও হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলামই না, তাইতো? বলো?
রুবেল: না, তোমার সঙ্গে হাজব্যান্ড-ওয়াইফের সম্পর্ক কেন থাকবে? এগুলো মুখের কথা নাকি?
হ্যাপি: মুখের কথা মানে কি?
রুবেল: তুমি বুঝছো না কেন, মুখের কথা না?
হ্যাপি: আমরা শুধু বিয়েই করিনি। আমাদের আর কিছু বাকি ছিল?
রুবেল: আমাদের কি? আমাদের কিছুই হয় নাই।
হ্যাপি: আজকে কত তারিখ রুবেল?
রুবেল: তুমি খুব ভাল করে জানো আজকে কত তারিখ।
হ্যাপি: একটু বলতো? আজকে ১২ তারিখ রাইট? আজকে ১২ তারিখ।
রুবেল: ১৩ তারিখ।
হ্যাপি: ১৩ তারিখ শুক্রবার ২০১৪।
রুবেল: শনিবার।
হ্যাপি: শনিবার পড়েছে। কয়টা বাজে এখন?
রুবেল: অলমোস্ট ২টা।
হ্যাপি: ২টা। এখন ডিসেম্বর মাস। তার মানে তুমি আমার কথাগুলো অস্বীকার করলে, আমি থানায় গেছি তারপর। এই শুক্রবারের আগের শুক্রবার ওই তো সাত-আট তারিখ হবে হইতো। তো তুমি কথাগুলো অস্বীকার করলে থানার পরের টাইমটাতে রাইট? সব কিছু অস্বীকার করলে তাইতো?
রুবেল: অস্বীকার করার কি, যেটা সত্য কথা সেটায় বলতেছি।
হ্যাপি: ওকে ডান। তার মানে তুমি আমাকে লাভ করো না তাই তো?
রুবেল: তো বুঝতে পারছো তো তুমি, তোমাকে আমি লাভ করবো কেন বলো?
হ্যাপি: আমাকে যখন লাভই করো না, তাহলে আমার সাথে ভালবাসার অভিনয়টা কেন করলা?
রুবেল: তোমার সাথে আমি কিসের ভালবাসার অভিনয় করছি?
হ্যাপি: তোমার এসব রেকর্ডিং কিন্তু আমার কাছে আছে।
রুবেল: কোন রেকর্ডিং... নাই। রেকর্ডিং দিয়ে কিছুই হবে না। উল্টাপাল্টা বানিয়ে বানিয়ে রেকর্ডিং করছো না?
হ্যাপি: বানিয়ে বানিয়ে, তোমার কথা কই আমি অন্য কাউরে দিয়া বলাইছি যে, বানিয়ে বানিয়ে বলছো? তোমার ফোন নম্বর কি শো করবে না?
রুবেল: তুমি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছো না?
হ্যাপি: তোমাকে ব্ল্যাকমেইল কেন? তুমি আমাকে বলছো, তুমি আমাকে ভালবাসো না। তার মানে তোমার পুরোটাই ছল না? বলো আমি তোমার সব বিশ্বাস করছি। বলো?
আর তুমি সব অস্বীকার করলে আজ ১৩ তারিখ তুমি সব অস্বীকার করলে।
রুবেল: আমি ঘুমাবো, রাখি বাই।
রক্ষণশীল পরিবার: নিজের সম্পর্কে হ্যাপি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, আমার প্রথম মুভি ‘কিছু আশা কিছু ভালবাসা।’ মোস্তাাফিজ জামান মানিক এর পরিচালক। প্রথমে আমি চুরি করে শুটিং করতাম। আমার পরিবার রক্ষণশীল হওয়ায় তারা আমায় তেমন সমর্থন দিতেন না। আমার প্রথম মুভি মধুমিতা হলে গিয়ে দেখি। হ্যাপি বলেন, আমার তেমন ছেলে বন্ধু ছিল না। ছেলেদের সাথে তেমন মেশা হয়নি। প্রচুর ছেলে বন্ধু আমাকে ডিস্টার্ব করতো। কোন ছেলে পরিচালকই আমাকে বলতে পারেনি যে, আমাকে ভালবাসে।
প্রথম পরিচয়: হ্যাপি বলেন, এক বছর ধরে ওর সঙ্গে পরিচয়। শুরুটা হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। প্রথমে ও আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। দুই জনেরই গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। এ কারণেই ওকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি। রুবেল যে খেলোয়াড় তা আমি প্রথমে জানতাম না। আমি তেমন ক্রিকেট বুঝি না। এমনকি কখনও মাঠে যেয়ে খেলা দেখিনি। সর্বশেষ আমি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা দেখি। আমি ক্রিকেট তেমন দেখি না। অনেকে হয়তো ভাবেন খেলা দেখে আমি ওকে ভালবেসেছি কিন্তু তা না। এর আগে শুরু থেকেই ফেসবুকে কথা হয়েছে। ওর ফোন পেয়ে প্রথমে খারাপ লাগতো ও বিরক্ত হতাম। তারপর থেকে আস্তে আস্তে সম্পর্ক হয়েছে। ও খুব পাগলামি করতো। প্রায়ই ওর সাথে ঘুরতে বের হতাম। ওর সব পাগলামি দেখে আমি বুঝতাম ও আমাকে সত্যি ভালবাসে। এখন মনে হয় সব কিছু অভিনয় ছিল ওর। ঢাকায় থাকলে প্রতিদিন ওর সঙ্গে দেখা হতো। ওর সঙ্গে সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত জমা হয়ে আছে। ওইগুলো ভুলতে পারছি না। ভালবাসা আমার জীবনের সর্বনাশা। ও আমাকে বাবু বলে ডাকতো। আমি রাগ করলেই ও কান্না করতো। ওর কান্না দেখে আমার অনেক ভাল লাগতো। ভাবতাম ছেলেটা আমাকে অনেক ভালবাসে। কিন্তু রুবেলের সব কিছুই এখন আমার ফেক মনে হয়। ওর সব কথাই আমি শুনতাম। যখন যা বলতো তাই করতাম। বন্ধুদের সাথে দেখা করতে দিতো না আমাকে। একা একা মার্কেটে যেতে দিতো না। ওকে মনে হয়েছে ও শুধুই আমার, আর কারও নয়। হ্যাপি বলেন, যখন আমি জানলাম ওর ফ্যামিলি ওকে বিয়ে করাতে চাইছে তখন আমি ওকে বলেছি, তুমি আমাদের সম্পর্কের কথা বাবা-মাকে জানাও। কিন্তু সে জানায়নি। উল্টো আমাকে খারাপ মেয়ে বলে গালি দিয়েছে। মিডিয়ায় কাজ করলে নাকি আমরা খারাপ হয়ে যাই। তারপরও আমি মনে করতাম, যেহেতু ভালবেসে ফেলেছি এখন তো ফিরতে পারবো না। ওর কথায় ফিল্ম ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ওর মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখিনি।
রুবেল নেশাখোর: রুবেল প্রতিদিন নেশা করতো। অতিরিক্ত নেশা করতো। আমি তাকে নিষেধ করতাম ও শুধু বলতো আজই শেষ, আর করবো না। ও আবার করতো। শুধু খেলার আগের দিন নেশা করতো না রুবেল। তাছাড়া প্রতিটি দিনই নেশা করতো। ও আসলে নেশা ছাড়া থাকতে পারতো না।
মামলার সিদ্ধান্ত: ও বলে, আমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। অথচ তার সাথে তার বাসায় স্বামী-স্ত্রীর মতোই থাকতাম। ১ তারিখে হঠাৎ করেই বলেছে, তোমার সাথে আমার সম্পর্ক ব্রেকআপ। তখন বলে, তুমি আমাকে ফোন দিও না। আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। মামলা করার আগের দিন সে বলেছে, আমাকে বিয়ে করতে পারবে না। এরপর মামলা করতে চেয়েছি। থানায় যাই। তখন থানা থেকে বিসিবিতে ফোন করে। তখন কিছু খেলোয়াড় বিষয়টা মীমাংসা করতে থানায় আসে। ওই সময় রুবেল বলে, আমি তোমাকে বিয়ে করবো। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেই মামলা করবো না। কিন্তু তাতেও কোন কিছু বদলায় না। আবারও রুবেল বলে, বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে। বিশ্বকাপের পরেই ও বিয়ে করবে। এ সময় ওকে বলি, আমাদের কথাগুলো রেকর্ড করা আছে। হঠাৎ সে পাল্টে যায়। অনেক ভাল ব্যবহার করতে থাকে। মামলা করার আগের দিন অনেক ভুলিয়ে-ভালিয়ে আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়, মোবাইলের অনেক কিছু ডিলিট করে দেয়। সে বলে, তুমি মামলা করবে? করো, কিছুই করতে পারবে না। মামলা করে কিছুই হবে না। আমি তোমার বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানি মামলা করবো। এখন ওর কথা শুনলেই ঘৃণা হয়। ওকে আমি ঘৃণা করি। এখন সত্যি, রুবেল নামের এ মানুষের প্রতি ঘৃণা হয়। যে আমাকে নিয়ে খেললো। রুবেলের মতো জানোয়ারকে আমি আর কখনও বিয়ে করবো না।
ক্রিকেট তারকাদের সঙ্গে অভিনেত্রীদের প্রেম এবং নারী কেলেঙ্কারির খবর নতুন নয়। অনেক খ্যাতিমান ক্রিকেট তারকা অভিনেত্রীদের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছেন। এ ধরনের উদাহরণ রয়েছে অসংখ্য। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের ঘটনাটি চমকে দিয়েছে অনেককেই। যদিও অভিযোগটি এখনও একতরফা। রুবেল হোসেন নিশ্চুপ। কেবল অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির বক্তব্যই পাওয়া যাচ্ছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ এনেছেন অভিনেত্রী হ্যাপি।
রুবেল হ্যাপির শেষ ফোন আলাপ
রুবেল: ওটা তো এক নম্বর মিথ্যা কথা ছিল।
হ্যাপি: এক নম্বর মিথ্যা কথা ছিল?
রুবেল: হ্যাঁ
হ্যাপি: কোনটা মিথ্যা ছিল? আমরা দু’জন হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলাম এটা মিথ্যা কথা?
রুবেল: হাজব্যান্ড-ওয়াইফ? কিসের হাজব্যান্ড-ওয়াইফ ছিলাম তোমার সঙ্গে আমি?
হ্যাপি: হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলাম না আমরা?
রুবেল: না। কখনওই ছিলাম না হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো।
হ্যাপি: কিছুই হয়নি আমাদের মধ্যে?
রুবেল: না কি হবে?
হ্যাপি: ভেরি গুড রুবেল, অনেক সুন্দর করে কথা উল্টাতে পারো। একটা মানুষ যে এত সুন্দর করে কথা উল্টাতে পারে! একটা কথা বলতো, আমাকে কখনও ভালবেসেছিলে?
রুবেল: তোমাকে কি ভালবেসেছি বলো তো?
হ্যাপি: তার মানে তুমি কি বলতে চাচ্ছ, তুমি আমাকে ভালবাসনি। তোমার সঙ্গে আমার অন্য ধরনের কোন রিলেশনও হয়নি। আমরা কখনও হাজব্যান্ড-ওয়াইফের মতো ছিলামই না, তাইতো? বলো?
রুবেল: না, তোমার সঙ্গে হাজব্যান্ড-ওয়াইফের সম্পর্ক কেন থাকবে? এগুলো মুখের কথা নাকি?
হ্যাপি: মুখের কথা মানে কি?
রুবেল: তুমি বুঝছো না কেন, মুখের কথা না?
হ্যাপি: আমরা শুধু বিয়েই করিনি। আমাদের আর কিছু বাকি ছিল?
রুবেল: আমাদের কি? আমাদের কিছুই হয় নাই।
হ্যাপি: আজকে কত তারিখ রুবেল?
রুবেল: তুমি খুব ভাল করে জানো আজকে কত তারিখ।
হ্যাপি: একটু বলতো? আজকে ১২ তারিখ রাইট? আজকে ১২ তারিখ।
রুবেল: ১৩ তারিখ।
হ্যাপি: ১৩ তারিখ শুক্রবার ২০১৪।
রুবেল: শনিবার।
হ্যাপি: শনিবার পড়েছে। কয়টা বাজে এখন?
রুবেল: অলমোস্ট ২টা।
হ্যাপি: ২টা। এখন ডিসেম্বর মাস। তার মানে তুমি আমার কথাগুলো অস্বীকার করলে, আমি থানায় গেছি তারপর। এই শুক্রবারের আগের শুক্রবার ওই তো সাত-আট তারিখ হবে হইতো। তো তুমি কথাগুলো অস্বীকার করলে থানার পরের টাইমটাতে রাইট? সব কিছু অস্বীকার করলে তাইতো?
রুবেল: অস্বীকার করার কি, যেটা সত্য কথা সেটায় বলতেছি।
হ্যাপি: ওকে ডান। তার মানে তুমি আমাকে লাভ করো না তাই তো?
রুবেল: তো বুঝতে পারছো তো তুমি, তোমাকে আমি লাভ করবো কেন বলো?
হ্যাপি: আমাকে যখন লাভই করো না, তাহলে আমার সাথে ভালবাসার অভিনয়টা কেন করলা?
রুবেল: তোমার সাথে আমি কিসের ভালবাসার অভিনয় করছি?
হ্যাপি: তোমার এসব রেকর্ডিং কিন্তু আমার কাছে আছে।
রুবেল: কোন রেকর্ডিং... নাই। রেকর্ডিং দিয়ে কিছুই হবে না। উল্টাপাল্টা বানিয়ে বানিয়ে রেকর্ডিং করছো না?
হ্যাপি: বানিয়ে বানিয়ে, তোমার কথা কই আমি অন্য কাউরে দিয়া বলাইছি যে, বানিয়ে বানিয়ে বলছো? তোমার ফোন নম্বর কি শো করবে না?
রুবেল: তুমি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছো না?
হ্যাপি: তোমাকে ব্ল্যাকমেইল কেন? তুমি আমাকে বলছো, তুমি আমাকে ভালবাসো না। তার মানে তোমার পুরোটাই ছল না? বলো আমি তোমার সব বিশ্বাস করছি। বলো?
আর তুমি সব অস্বীকার করলে আজ ১৩ তারিখ তুমি সব অস্বীকার করলে।
রুবেল: আমি ঘুমাবো, রাখি বাই।
No comments