কম্বল পেয়েই কেঁদে ফেলল মেয়েটি
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী পারভীন আক্তারের বয়স আট বছর। তার মা ও বাবা ভিক্ষা করে সংসার চালায়। এবার শীতে গায়ে দেওয়ার জন্য কোনো গরম কাপড় নেই। কম্বল নিতে এসে থরথর করে কাঁপছিল মেয়েটি। একটি কম্বল পাওয়ামাত্রই বুকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে কেঁদে ফেলে সে।
নাটোরের অ্যাকশন অন ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এডিডি) কার্যালয়ের সামনে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে গতকাল সোমবার এ দৃশ্যের অবতারণা হয়। পারভীন আক্তার জানায়, এত দিন সে তার মায়ের পরনের কাপড়ে মুখ গুঁজে রাত যাপন করেছে। তার মতো অসহায় ১০০ প্রতিবন্ধীর হাতে কম্বল তুলে দেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে নাটোর, গাইবান্ধা ও নেত্রকোনায় গতকাল সিটিব্যাংক এনএর সহযোগিতায় এবং রাজশাহীর তানোর উপজেলায় রোববার ফ্যাশন হাউস ওটুর সহযোগিতায় ৫৪০টি কম্বল দেওয়া হয়। এবারের এ কম্বল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয় ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে। চার জেলায় গত দুদিনে কম্বলগুলো বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
নাটোরের সদর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১০০ প্রতিবন্ধীকে গতকাল কম্বল দেওয়া হয়। কম্বল পেয়ে দিঘাপতিয়া এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফুলবালা বেওয়া (৭২) বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় দুই বেলা খাতে পাইনি। শীতের কাপড় কিনব কী করি? তাই ঠান্ডার ভয়ে বিকাল হলেই ঘরে দরজা দিয়া থাকি। দম ফেলতে পারিনি। কম্বলডা পাইয়াএখন চিন্তামুক্ত হলাম।
গাইবান্ধা আসাদুজ্জামান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ২০০ শীতার্তকে কম্বল দেওয়া হয়। গাইবান্ধা পৌরসভার মুন্সীপাড়া, বানিয়ারজান, পূর্বপাড়া, ডেভিড কোং পাড়া, বাংলাবাজার, পশ্চিমপাড়া, ফকিরপাড়া, মালিপাড়া এলাকা এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার বারবলদিয়া, দারিয়াপুর, কয়াছয়ঘরিয়া, বালুয়া, বল্লমঝাড়, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এবং সমিতির বাজার গ্রামের মানুষকে এসব কম্বল দেওয়া হয়।
কম্বল পেয়ে কয়াছয়ঘরিয়া গ্রামের আজিরন বেগম (৫৫) বলেন, ‘হামারঘরে সোংসারোত পাঁচকোনা মানুষ। দুইব্যালা ঠিকমতোন খাব্যার জোগবার পাই ন্যা। শীতের কাপড়া কিনমো ক্যামন করি। তোমারঘরে কমবোল পায়া উপক্যার হলো বাবা। আইজকে আইতোত আরামে ঘুমব্যার পামো।’ কঞ্চিপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী রনজু মিয়া (৫৫) বলেন, ‘এক ব্যালা না খায়া থাকা যায়। কিন্তুক শীতের কষ্টে আইত কাটে না। তোমারঘরে কাপড়াকোনা পায়া ভালো হলো।’
নেত্রকোনা শহরের আদর্শ শিশুবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শীতার্তদের মাঝে ২০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সকাল নয়টার দিকে বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আদর্শ শিশুবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন নেত্রকোনা জেলা শাখার সহসভাপতি বিমল বিশ্বাস এবং নেত্রকোনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান।
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশের অগ্রগণ্য সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলো গরিব-অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে যে ব্যতিক্রম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, তা প্রতিষ্ঠানটির মানবতাবোধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’
রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার বাধাইল ইউনিয়নের জিনাখোর আদিবাসী গ্রামে গত রোববার ৪০ দরিদ্র আদিবাসীকে কম্বল দেওয়া হয়। শীতবস্ত্র বিতরণের আগে বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন।
এবারের কম্বল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয় ১ ডিসেম্বর। গত দুদিনে বিতরণ করা চারটি জেলা ছাড়াও এ পর্যন্ত কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটে এসব কম্বল দেওয়া হয়।
[(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নাটোর, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি)৷
নাটোরের অ্যাকশন অন ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এডিডি) কার্যালয়ের সামনে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে গতকাল সোমবার এ দৃশ্যের অবতারণা হয়। পারভীন আক্তার জানায়, এত দিন সে তার মায়ের পরনের কাপড়ে মুখ গুঁজে রাত যাপন করেছে। তার মতো অসহায় ১০০ প্রতিবন্ধীর হাতে কম্বল তুলে দেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে নাটোর, গাইবান্ধা ও নেত্রকোনায় গতকাল সিটিব্যাংক এনএর সহযোগিতায় এবং রাজশাহীর তানোর উপজেলায় রোববার ফ্যাশন হাউস ওটুর সহযোগিতায় ৫৪০টি কম্বল দেওয়া হয়। এবারের এ কম্বল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয় ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে। চার জেলায় গত দুদিনে কম্বলগুলো বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
নাটোরের সদর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১০০ প্রতিবন্ধীকে গতকাল কম্বল দেওয়া হয়। কম্বল পেয়ে দিঘাপতিয়া এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফুলবালা বেওয়া (৭২) বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় দুই বেলা খাতে পাইনি। শীতের কাপড় কিনব কী করি? তাই ঠান্ডার ভয়ে বিকাল হলেই ঘরে দরজা দিয়া থাকি। দম ফেলতে পারিনি। কম্বলডা পাইয়াএখন চিন্তামুক্ত হলাম।
গাইবান্ধা আসাদুজ্জামান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ২০০ শীতার্তকে কম্বল দেওয়া হয়। গাইবান্ধা পৌরসভার মুন্সীপাড়া, বানিয়ারজান, পূর্বপাড়া, ডেভিড কোং পাড়া, বাংলাবাজার, পশ্চিমপাড়া, ফকিরপাড়া, মালিপাড়া এলাকা এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার বারবলদিয়া, দারিয়াপুর, কয়াছয়ঘরিয়া, বালুয়া, বল্লমঝাড়, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এবং সমিতির বাজার গ্রামের মানুষকে এসব কম্বল দেওয়া হয়।
কম্বল পেয়ে কয়াছয়ঘরিয়া গ্রামের আজিরন বেগম (৫৫) বলেন, ‘হামারঘরে সোংসারোত পাঁচকোনা মানুষ। দুইব্যালা ঠিকমতোন খাব্যার জোগবার পাই ন্যা। শীতের কাপড়া কিনমো ক্যামন করি। তোমারঘরে কমবোল পায়া উপক্যার হলো বাবা। আইজকে আইতোত আরামে ঘুমব্যার পামো।’ কঞ্চিপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী রনজু মিয়া (৫৫) বলেন, ‘এক ব্যালা না খায়া থাকা যায়। কিন্তুক শীতের কষ্টে আইত কাটে না। তোমারঘরে কাপড়াকোনা পায়া ভালো হলো।’
নেত্রকোনা শহরের আদর্শ শিশুবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শীতার্তদের মাঝে ২০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সকাল নয়টার দিকে বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আদর্শ শিশুবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন নেত্রকোনা জেলা শাখার সহসভাপতি বিমল বিশ্বাস এবং নেত্রকোনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান।
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশের অগ্রগণ্য সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলো গরিব-অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে যে ব্যতিক্রম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, তা প্রতিষ্ঠানটির মানবতাবোধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’
রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার বাধাইল ইউনিয়নের জিনাখোর আদিবাসী গ্রামে গত রোববার ৪০ দরিদ্র আদিবাসীকে কম্বল দেওয়া হয়। শীতবস্ত্র বিতরণের আগে বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন।
এবারের কম্বল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয় ১ ডিসেম্বর। গত দুদিনে বিতরণ করা চারটি জেলা ছাড়াও এ পর্যন্ত কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটে এসব কম্বল দেওয়া হয়।
[(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নাটোর, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি)৷
No comments