যে পাঁচ কারণে বার্সা ছাড়তে পারেন মেসি
গুঞ্জনের সূত্রটা লিওনেল মেসি নিজেই। কদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে মেসির কথাতেই ইঙ্গিত ছিল বার্সেলোনা ছেড়ে যাওয়ার। মেসি অবশ্য দিনক্ষণ স্পষ্ট করে বলেননি। তবে এত দিন যেখানে ধরেই নেওয়া হয়েছিল, পেশাদার ক্যারিয়ারের ইতি মেসি প্রাণের ক্লাবটিতেই করবেন, সেখানে তাঁর কণ্ঠে অন্য সুর শোনাটা চমকের তো বটেই। যদিও এরপরই গুঞ্জন থামাতে মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, বার্সাতে সুখেই আছেন মেসি। কিন্তু মেসির ক্লাব বদলের সম্ভাবনা একেবারেই নাকচ করে দেওয়া যায় না।
মেসির ভক্তদেরই একটা অংশ মনে করে, বার্সায় আর নতুন কিছুর জন্য নিজেকে উজ্জীবিত করা মেসির পক্ষে খুব কঠিন। এখানে শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছানো হয়েই গেছে মেসির। নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেকে নতুন করে উদ্দীপিত করতে মেসির উচিত নতুন লিগে নাম লেখানো। সেটা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও হতে পারে। সে যা-ই হোক না কেন, ব্লিচার রিপোর্ট মেসির বার্সা ছাড়ার পাঁচটি কারণ খুঁজে বের করেছে:
এক.
বার্সেলোনার পরিচালক বোর্ড এখন আর আগের মতো নেই। বার্সার নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে। ‘ক্লাবের চেয়ে বেশি কিছু’র মূলমন্ত্র থেকে বার্সা অনেকটাই সরে এসেছে। বার্সা কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ কদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন, এখন যারা ফুটবল কম বোঝে, তারাই বার্সার হর্তাকর্তা বনে গেছে। ফুটবলটাকে ভালোবাসার বদলে ব্যবসায়িক ধান্দা বেশি যাদের, তাদের সংখ্যাই এখন বার্সার পরিচালক বোর্ডে নাকি বেশি।
মেসির সঙ্গেও বার্সার নতুন পরিচালক বোর্ডের সম্পর্কটা ভালো নয়। সান্দ্রো রসেলের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের ওপর সন্তুষ্ট ছিলেন না বলেই নাকি পেপ গার্দিওলা বার্সায় সাফল্যমণ্ডিত সময়টা পেছনে ফেলে ক্লাব ছেড়েছিলেন। রসেল এরই মধ্যে সরে যেতে বাধ্য হলেও তাঁর পক্ষের লোকেরাই ক্লাব চালাচ্ছেন। আর তাই সাবেক গুরুর পথ অনুসরণ করতে পারেন মেসিও।
দুই.
মেসি নিজেও এই সময়টায় ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে ট্যাক্স ফাঁকির মামলা তাঁর নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিতে ছোপ ছোপ দাগ ফেলেছে। স্পেনের আর্থিক সংকট আর দেশটির কর বিভাগের মরিয়া হয়ে ওঠা, অনেক তারকা ফুটবলারকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে। এমনিতেই স্পেনের করের হার নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ভূতের মতো তাড়া করে ফেরা এই কর মামলা থেকে রেহাই পেতে নতুন দেশ, নতুন শহর আর নতুন লিগের সন্ধান করতেই পারেন মেসি।
তিন.
মেসির বার্সা ছাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে নেইমার-নাটকও। নেইমারকে সই করানোটা নিজের ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে নিয়েছিলেন রসেল। যদিও এই কারণেই গদিচ্যুত হতে হয় বার্সার তখনকার সভাপতিকে। ফাঁস হয়, নেইমারকে যে টাকায় বার্সা কিনেছে বলে খবর, আসলে কিনেছে তার চেয়েও ঢের বেশি টাকায়। এই গুঞ্জন রটে যায়, নেইমারের আসল বেতনও হয়তো অনেক বেশি। এমনকি সেটা হয়তো মেসির সমান। এর ওপর রোনালদোর বেতনও বাড়িয়ে দেয় রিয়াল। সব মিলে মেসি নাকি নাখোশ হয়ে পড়েন। মেসিকে খুশি করাতে নতুন করে চুক্তি করে তাঁকে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকের খেলোয়াড় বানিয়ে দেয় বার্সা। কিন্তু সেই যে সুরটা কেটে গেল, এখনো ঠিক তাল-লয়টা মিলছে না। বার্সায় মেসিকে ঠিক মেসির মতো মনে হচ্ছে না অনেক দিন ধরেই।
চার.
রিয়াল মাদ্রিদ একের পর এক দুর্দান্ত সব খেলোয়াড়কে সই করিয়ে দলটাকে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলেছে। কিন্তু বার্সেলোনা খেলোয়াড় সই করানোয় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বার্সার সাফল্যের মূলে ছিল জাভি-ইনিয়েস্তা-মেসি ত্রয়ীর দুর্দান্ত বোঝাপড়া। জাভির বয়স ৩৫ চলছে। ৩১-এ পা দিয়েছেন ইনিয়েস্তা। কিন্তু বার্সা এই দুই অসামান্য প্রতিভাধর মিডফিল্ডারের শূন্যতা পূরণে সেভাবে মাথাই ঘামায়নি। রাকিটিচকে মাঝমাঠে নিয়ে এলেও বার্সা মূলত আক্রমণভাগ বেশি ভারী করেছে লুইস সুয়ারেজকে এনে। যে সুয়ারেজ মেসির জায়গাটাও নড়বড়ে করে দিয়েছেন। মেসি আর বার্সার প্রধান আক্রমণ-ভরসা নন। সুয়ারেজকে মাঝখানে রেখে মেসিকে উইংয়ে ঠেলে দিলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে কদিন আগে মন্তব্য করেছেন আর্সেন ওয়েঙ্গারও।
পাঁচ.
মেসির ওপর সীমাহীন চাপ। বার্সা ব্যর্থ হলেই সব তির ধেয়ে যায় মেসির দিকে। বার্সা কোনো ম্যাচে হারতে থাকলে সমর্থকেরা তো বটেই, মাঠে সতীর্থরাও যেন পাগলের মতো খুঁজতে থাকে মেসিকে। যেন মেসি জাদুকরি কিছু করে পরিস্থিতি পাল্টে দেবেন। বার্সা যে এক মেসির ওপর কতটা নির্ভরশীল হয়ে ছিল, সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে এখন। আর একাই সেই ভার বয়ে নিতে নিতে মেসিও যেন ক্লান্ত।
সব মিলিয়ে তাঁর মনের ভেতরও মেঘ দানা বেঁধেছে নিশ্চয়ই। না হলে এ ধরনের কথা মেসি কেন বলবেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বার্সার সঙ্গে মেসির চুক্তি। কিন্তু দুই পক্ষের বনিবনা না হলে, মেসি যদি ক্লাবে আর থাকতে না-ই চান, জোর করে তাঁকে ধরেও রাখতে পারবে না বার্সা। বরং বেশি দামে তাঁকে বেচে দেওয়াটাই হবে দুই পক্ষের জন্যই মঙ্গল।
বার্সা সমর্থকেরা শুধু প্রার্থনা করবেন, সেই দিনটা যেন কখনোই না আসে!
মেসির ভক্তদেরই একটা অংশ মনে করে, বার্সায় আর নতুন কিছুর জন্য নিজেকে উজ্জীবিত করা মেসির পক্ষে খুব কঠিন। এখানে শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছানো হয়েই গেছে মেসির। নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেকে নতুন করে উদ্দীপিত করতে মেসির উচিত নতুন লিগে নাম লেখানো। সেটা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও হতে পারে। সে যা-ই হোক না কেন, ব্লিচার রিপোর্ট মেসির বার্সা ছাড়ার পাঁচটি কারণ খুঁজে বের করেছে:
এক.
বার্সেলোনার পরিচালক বোর্ড এখন আর আগের মতো নেই। বার্সার নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে। ‘ক্লাবের চেয়ে বেশি কিছু’র মূলমন্ত্র থেকে বার্সা অনেকটাই সরে এসেছে। বার্সা কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ কদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন, এখন যারা ফুটবল কম বোঝে, তারাই বার্সার হর্তাকর্তা বনে গেছে। ফুটবলটাকে ভালোবাসার বদলে ব্যবসায়িক ধান্দা বেশি যাদের, তাদের সংখ্যাই এখন বার্সার পরিচালক বোর্ডে নাকি বেশি।
মেসির সঙ্গেও বার্সার নতুন পরিচালক বোর্ডের সম্পর্কটা ভালো নয়। সান্দ্রো রসেলের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের ওপর সন্তুষ্ট ছিলেন না বলেই নাকি পেপ গার্দিওলা বার্সায় সাফল্যমণ্ডিত সময়টা পেছনে ফেলে ক্লাব ছেড়েছিলেন। রসেল এরই মধ্যে সরে যেতে বাধ্য হলেও তাঁর পক্ষের লোকেরাই ক্লাব চালাচ্ছেন। আর তাই সাবেক গুরুর পথ অনুসরণ করতে পারেন মেসিও।
দুই.
মেসি নিজেও এই সময়টায় ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে ট্যাক্স ফাঁকির মামলা তাঁর নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিতে ছোপ ছোপ দাগ ফেলেছে। স্পেনের আর্থিক সংকট আর দেশটির কর বিভাগের মরিয়া হয়ে ওঠা, অনেক তারকা ফুটবলারকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে। এমনিতেই স্পেনের করের হার নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ভূতের মতো তাড়া করে ফেরা এই কর মামলা থেকে রেহাই পেতে নতুন দেশ, নতুন শহর আর নতুন লিগের সন্ধান করতেই পারেন মেসি।
তিন.
মেসির বার্সা ছাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে নেইমার-নাটকও। নেইমারকে সই করানোটা নিজের ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে নিয়েছিলেন রসেল। যদিও এই কারণেই গদিচ্যুত হতে হয় বার্সার তখনকার সভাপতিকে। ফাঁস হয়, নেইমারকে যে টাকায় বার্সা কিনেছে বলে খবর, আসলে কিনেছে তার চেয়েও ঢের বেশি টাকায়। এই গুঞ্জন রটে যায়, নেইমারের আসল বেতনও হয়তো অনেক বেশি। এমনকি সেটা হয়তো মেসির সমান। এর ওপর রোনালদোর বেতনও বাড়িয়ে দেয় রিয়াল। সব মিলে মেসি নাকি নাখোশ হয়ে পড়েন। মেসিকে খুশি করাতে নতুন করে চুক্তি করে তাঁকে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকের খেলোয়াড় বানিয়ে দেয় বার্সা। কিন্তু সেই যে সুরটা কেটে গেল, এখনো ঠিক তাল-লয়টা মিলছে না। বার্সায় মেসিকে ঠিক মেসির মতো মনে হচ্ছে না অনেক দিন ধরেই।
চার.
রিয়াল মাদ্রিদ একের পর এক দুর্দান্ত সব খেলোয়াড়কে সই করিয়ে দলটাকে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলেছে। কিন্তু বার্সেলোনা খেলোয়াড় সই করানোয় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বার্সার সাফল্যের মূলে ছিল জাভি-ইনিয়েস্তা-মেসি ত্রয়ীর দুর্দান্ত বোঝাপড়া। জাভির বয়স ৩৫ চলছে। ৩১-এ পা দিয়েছেন ইনিয়েস্তা। কিন্তু বার্সা এই দুই অসামান্য প্রতিভাধর মিডফিল্ডারের শূন্যতা পূরণে সেভাবে মাথাই ঘামায়নি। রাকিটিচকে মাঝমাঠে নিয়ে এলেও বার্সা মূলত আক্রমণভাগ বেশি ভারী করেছে লুইস সুয়ারেজকে এনে। যে সুয়ারেজ মেসির জায়গাটাও নড়বড়ে করে দিয়েছেন। মেসি আর বার্সার প্রধান আক্রমণ-ভরসা নন। সুয়ারেজকে মাঝখানে রেখে মেসিকে উইংয়ে ঠেলে দিলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে কদিন আগে মন্তব্য করেছেন আর্সেন ওয়েঙ্গারও।
পাঁচ.
মেসির ওপর সীমাহীন চাপ। বার্সা ব্যর্থ হলেই সব তির ধেয়ে যায় মেসির দিকে। বার্সা কোনো ম্যাচে হারতে থাকলে সমর্থকেরা তো বটেই, মাঠে সতীর্থরাও যেন পাগলের মতো খুঁজতে থাকে মেসিকে। যেন মেসি জাদুকরি কিছু করে পরিস্থিতি পাল্টে দেবেন। বার্সা যে এক মেসির ওপর কতটা নির্ভরশীল হয়ে ছিল, সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে এখন। আর একাই সেই ভার বয়ে নিতে নিতে মেসিও যেন ক্লান্ত।
সব মিলিয়ে তাঁর মনের ভেতরও মেঘ দানা বেঁধেছে নিশ্চয়ই। না হলে এ ধরনের কথা মেসি কেন বলবেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বার্সার সঙ্গে মেসির চুক্তি। কিন্তু দুই পক্ষের বনিবনা না হলে, মেসি যদি ক্লাবে আর থাকতে না-ই চান, জোর করে তাঁকে ধরেও রাখতে পারবে না বার্সা। বরং বেশি দামে তাঁকে বেচে দেওয়াটাই হবে দুই পক্ষের জন্যই মঙ্গল।
বার্সা সমর্থকেরা শুধু প্রার্থনা করবেন, সেই দিনটা যেন কখনোই না আসে!
No comments