কাঁদলেন, অন্যদেরও কাঁদালেন
‘যিনি চলে গেছেন, তিনি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিলেন। আমার এখন রাগ হয়, তিনি কেন শুধু আমার বাবাই থাকলেন না। কেন আমার এত ভালো বন্ধু হলেন?’
>>শোকসভায় বাবার কথা বলতে গিয়ে আজ বৃহস্পতিবার অঝোরে কাঁদতে থাকেন দুর্বৃত্তের হাতে খুন হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলামের ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিন। ছবি: শহীদুল ইসলাম
কথাটুকু বলেই কাঁদতে থাকেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের খুন হওয়া অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলামের ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিন। আজ বৃহস্পতিবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শোকসভায় কথা বলছিলেন তিনি। তাঁর এই কান্না স্পর্শ করে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের, তাঁরাও কান্না চেপে রাখতে পারেননি।
কান্নামাখা কণ্ঠে সৌমিন বলেন, ‘আমার মা নেই, বাবা নেই। আমি অসহায়, আমি এতিম। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? বেঁচে থাকাটাই এখন আমার জন্য শাস্তি।’ বললেন, ‘যে মানুষটা প্রাণীর প্রতি সহিংসতা নয়—এই ভেবে আমিষ খাওয়াই ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁকে কেন এমন নৃশংসভাবে খুন হতে হলো?’
অধ্যাপক শফিউল ইসলামের বোন ওয়াসিম রুমানা সভায় বলেন, ‘আন্দোলন যদি ম্লান হয়ে যায়, তাহলে রক্ত আবারও ঝরবে। আপনারা আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার করুন। যাতে আর কোনো মা, কোনো বোনকে এভাবে কাঁদতে না হয়।’ তিনি ঘাতকদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে বলেন। সভায় অধ্যাপক শফিউলের মা সখিনা আক্তার উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য দেননি।
শোকসভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করে বলেন, ‘অধ্যাপক শফিউলের রক্তের মধ্য দিয়ে হলেও যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত ঝরা শেষ হয়। আর যেন কারও রক্ত না ঝরে, আমরা তার দাবি জানাই।’
>>সৌমিনের কান্না স্পর্শ করে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের, তাঁরাও কান্না থামাতে পারেননি। আজ বৃহস্পতিবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগ শোকসভার আয়োজন করে। ছবি: শহীদুল ইসলাম
১৫ নভেম্বর দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে চৌদ্দপাই এলাকায় নিজের ভাড়া বাড়ির কাছে অধ্যাপক শফিউল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
No comments