মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংবিধান সংশোধন চায় না
মিয়ানমারের পার্লামেন্টের স্পিকার গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, আগামী বছরের নির্বাচনের আগে দেশের সংবিধানে কোনো সংশোধনী আনা সম্ভব হবে না। সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা সংবিধানে কোনো ধরনের পরিবর্তন চান না—এ কথা বলার পরদিনই ওই কথা জানালেন স্পিকার শোয়ে মান। গণতন্ত্রপন্থী জনপ্রিয় নেত্রী অং সান সু চিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে তাঁর দলসহ বিভিন্ন মহল থেকে সংবিধান সংশোধনের দাবি উঠেছে। খবর এএফপির। সাবেক সামরিক জান্তার তৈরি করা মিয়ানমারের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। যাঁদের স্বামী, স্ত্রী বা সন্তান বিদেশি নাগরিক, তাঁরা প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য। সম্প্রতি রাজনীতিক, সেনা কর্মকর্তাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক নজিরবিহীন বৈঠকে ধারাটি বাতিলের ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। স্পিকার শোয়ে মান রাজধানী নেপিডোতে সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে আগামী মে মাসে একটি গণভোট হবে। তবে গণভোটের পরপরই সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব নয়।
কারণ, সংশোধনীগুলোর আওতা অনেক ব্যাপক। সোমবারই পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা সংবিধানে বড় কোনো সংশোধনী আনার জোরালো বিরোধিতা করেন। কর্নেল তে নাইং পার্লামেন্টে বলেন, ‘আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, সংবিধান কোনো একজন ব্যক্তির জন্য নয়, বরং প্রত্যেকের ভবিষ্যতের জন্য রচিত। ...বিদেশি নাগরিকদের মধ্য থেকে কাউকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হলে তা দেশের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে।’ শান্তিতে নোবেলজয়ী রাজনীতিক অং সান সু চির প্রয়াত স্বামী ও দুই ছেলে যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তাই সংবিধানের একটি ধারা (৫৯এফ) অনুযায়ী তিনি দেশের শীর্ষ পদের অযোগ্য। গত সপ্তাহেই মিয়ানমার সফর করা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সু চিকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দিতে সংবিধান সংশোধন করার জন্য আহ্বান জানান। ওবামা ওই সংবিধানকে ‘অনিরপেক্ষ, অন্যায্য ও অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দেন। বর্তমানে মিয়ানমারের আইনসভার চার ভাগের এক ভাগ আসন অনির্বাচিত সেনাদের জন্য সংরক্ষিত। ২০১১ সালে প্রত্যক্ষ ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরও এভাবেই সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখছে সেনাবাহিনী।
No comments