ধূমকেতুতে জৈব অণু
ধূমকেতু ৬৭পি/চুরিয়মোভ-গেরাসিমেঙ্কো’র বায়ুমণ্ডলে জৈব অণু শনাক্ত করেছে এতে নামা ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ইসা) যন্ত্রযান ফিলা। বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কার্বনভিত্তিক জৈব পদার্থই পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছে। মহাশূন্য থেকে ধূমকেতু বাহিত হয়ে প্রাণের রাসায়নিক উপাদান পৃথিবীতে এসেছিল কিনা, ফিলার এ আবিষ্কার সে রহস্যের জট খোলায় অবদান রাখতে পারে। জার্মানির তৈরি কসাক নামের একটি যন্ত্র ধূমকেতুটির পাতলা বায়ুমণ্ডল থেকে ওই যৌগগুলো সংগ্রহ করেছে। এ যন্ত্রটির ‘বাতাস’ টেনে নেয়ার ক্ষমতা আছে। কসাক থেকে পাওয়া উপাত্তের প্রধান বিশ্লেষক ড. ফ্রেড গোয়েসম্যান জৈবযৌগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তাদের বিশ্লেষক দল এখনও এ প্রাপ্তির ফলাফল নির্ধারণের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে গোয়েসম্যান। কি অণু পাওয়া গেছে বা তা কতটা জটিল, এখন পর্যন্ত তা প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাবে ধূমকেতুর সম্ভাব্য ভূমিকার কার্যকর কিছু তথ্য ওই ফলাফল থেকে পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশু পৃথিবীতে ধূমকেতু পতনের ফলে ধূমকেতু থেকে আসা জৈব অণু পৃথিবীতে প্রাণের প্রাথমিক উপাদান তৈরি করেছিল বলে বিজ্ঞানীদের মাঝে ধারণা প্রচলিত আছে। ফিলার অবতরণের পর ধূমকেতুটির পৃষ্ঠে মুপুস নামের একটি হাতুড়িজাতীয় যন্ত্র মোতায়েন করা হয়। এর তৎপরতা এবং প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ধারণা পাওয়া গেছে, ধূমকেতুটির পৃষ্ঠ ১০-২০ সেমি’র একটি ধূলার স্তরে ঢেকে আছে, আর তার নিচে রয়েছে পানি জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে যাওয়া কঠিন বরফ। বরফের এ স্তরটি বেলে পাথরের মতোই শক্ত। বহিঃসৌরজগত দিয়ে ধূমকেতুটি যাওয়ার সময়ও বরফের স্তরটি একইরকম শক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ১০ বছরের যাত্রা শেষে ১২ নভেম্বর ধূমকেতু ৬৭পি’র পৃষ্ঠে অবতরণ করে ফিলা।
No comments