ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সঙ্কট- স্রোতের বিপরীতে অবস্থান কর্তৃপক্ষের by এম তৌহিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একবারই অংশ নিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বিপত্তি বেধেছে। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পরীক্ষার পরে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ভর্তি ইচ্ছুকদের মধ্যে যারা চান্স পাননি তারা পড়েছেন বিপাকে। যে কারণে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। তাদের আন্দোলনের সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সাথে একমত হলেও এবারের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে ভর্তি পরীক্ষায় আর একবার সুযোগ দেয়ার পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তারা কোনোভাবেই এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে চান না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রথমবারের মতো এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে একটু সমস্যা হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। এ নিয়ে আর নতুন করে বিবেচনার কিছু আছে বলে মনে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও এ বিষয়ে আর কোনো বিবেচনা করা হবে না বলে একাধিকবার নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন। তবে গতকাল এ বিষয়ে জানতে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপুল পরিমাণ আসন ফাঁকা থাকা, কোচিং বাণিজ্য, ভর্তি জালিয়াতি রোধ ইত্যাদি বিষয় সামনে নিয়ে আসছেন এ সিদ্ধান্তের যুক্তি হিসেবে। তবে এগুলোর সত্যতা থাকলেও শিক্ষার্থীরা এ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছেন। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আসন যাতে ফাঁকা না থাকে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যারা চান্স পেয়ে ভর্তি হয়েছেন তাদের আর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না এমন নিয়ম করতে পারে। এ ছাড়া মার্ক কমিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন কথা বলছেন তারা।
আরো অন্তত একবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ দেয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকালও আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জড়ো হলে পুলিশের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ তাদের ব্যানার কেড়ে নেন। এ সময় ওই এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পরে শিক্ষার্থীদের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর তাদের দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি দেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেনÑ তামজীদ (রাইফেলস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ), সালমান (কবি নজরুল ইসলাম কলেজ), সুইটি (টঙ্গী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়), সুমাইয়া (ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ও রিয়াজ (ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ)। এ সময় তারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দেয়া বক্তব্য ভিসিকে স্মরণ করিয়ে দেন। ভিসি তাদের দাবিটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
তামজিদ নয়া দিগন্তকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও এ পথই বেছে নিচ্ছে। সে হিসেবে আমাদের আর কোনো পথ থাকবে না। তাই আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছি। এমন সময় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যখন অন্য কোথাও আবেদন করার সুযোগও নেই। কোনো কোচিং বা অন্য কারোর প্ররোচনায় তারা আন্দোলন করছেন না বলেও এ সময় জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, তাদের আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তবে সেটা ক্যাম্পাসের মধ্যে নয়। তারা বাইরে আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। তারা বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করায় তাতে বাধা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছু ভাবছে না বলেও তিনি জানান।
আরো অন্তত একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর মাধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া হলে ২৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক, অভিভাবক এবং বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে সংহতি সমাবেশ করবেন।
এ সিদ্ধান্তে কিছুটা সমস্যায় পড়বেন প্রথমবার চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীরাও। যারা প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পান তারা অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যাশামতো ভালো আসন যোগ্যতা থাকলেও পান না। ফলে তারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো বিষয়গুলোয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেন; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তারাও এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এ সিদ্ধান্তের ফলে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা গভীর সঙ্কটে পড়েছেন। এইসএসসি পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অন্যান্যবারের তুলনায় দেড় মাস কম সময় পেয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আরো দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বাতিল করেছে। আগে থেকে সিদ্ধান্ত জানালে তারা আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারতেন; কিন্তু পরীক্ষার পরে জানানোর কারণে তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য এবার ঘোষণা দিয়ে আরো একবার দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাদের এসব দাবির সাথে একমত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কয়েকটি ছাত্র সংগঠন কর্মসূচি পালন করেছেন এবং বিবৃতিও দিয়েছেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, উভয় অংশের কথারই যুক্তি আছে। তবে আসল সমস্যা হলো আসন সংখ্যা। এ সমস্যা সমাধানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আসন বাড়াতে হবে এবং যাতে শিক্ষার্থীরা আকর্ষিত হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম সুমন নয়া দিগন্তকে বলেন, এ সিদ্ধান্তটা অবশ্যই যৌক্তিক; কিন্তু কোনো আগে পিছে চিন্তা না করেই এটি করা হয়েছে। এভাবে যদি সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হয় তবে সেটা স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত অন্তত একবার সুযোগ রেখে এবং শিক্ষক, বৃদ্ধিজীবী, ছাত্রনেতাদের সাথে আলোচনা করেই করতে হয়। এটির বৈধতা দিতে হলে অবশ্যই আরো একবার দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ বলেন, সিদ্ধান্তটা ভালো। তবে যারা এবার পরীক্ষা দিয়েছে তাদের আর একবার সুযোগ দেয়া উচিত। তার পরের বার থেকে এ সিদ্ধান্তটি কার্যকর করা যেতে পারে।
জাসদ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ : ওই দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়া এবং ডাকসু নির্বাচন দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জাসদ ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলা ভবনের প্রধান ফটকে সমাবেশে মিলিত হয়। জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম সুমনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো: শাহজাহান আলী সাজুর পরিচালনায় সমাবেশে সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তারা কোনোভাবেই এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে চান না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রথমবারের মতো এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে একটু সমস্যা হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। এ নিয়ে আর নতুন করে বিবেচনার কিছু আছে বলে মনে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও এ বিষয়ে আর কোনো বিবেচনা করা হবে না বলে একাধিকবার নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন। তবে গতকাল এ বিষয়ে জানতে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপুল পরিমাণ আসন ফাঁকা থাকা, কোচিং বাণিজ্য, ভর্তি জালিয়াতি রোধ ইত্যাদি বিষয় সামনে নিয়ে আসছেন এ সিদ্ধান্তের যুক্তি হিসেবে। তবে এগুলোর সত্যতা থাকলেও শিক্ষার্থীরা এ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছেন। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আসন যাতে ফাঁকা না থাকে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যারা চান্স পেয়ে ভর্তি হয়েছেন তাদের আর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না এমন নিয়ম করতে পারে। এ ছাড়া মার্ক কমিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন কথা বলছেন তারা।
আরো অন্তত একবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ দেয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকালও আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জড়ো হলে পুলিশের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ তাদের ব্যানার কেড়ে নেন। এ সময় ওই এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পরে শিক্ষার্থীদের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর তাদের দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি দেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেনÑ তামজীদ (রাইফেলস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ), সালমান (কবি নজরুল ইসলাম কলেজ), সুইটি (টঙ্গী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়), সুমাইয়া (ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ও রিয়াজ (ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ)। এ সময় তারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দেয়া বক্তব্য ভিসিকে স্মরণ করিয়ে দেন। ভিসি তাদের দাবিটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
তামজিদ নয়া দিগন্তকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও এ পথই বেছে নিচ্ছে। সে হিসেবে আমাদের আর কোনো পথ থাকবে না। তাই আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছি। এমন সময় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যখন অন্য কোথাও আবেদন করার সুযোগও নেই। কোনো কোচিং বা অন্য কারোর প্ররোচনায় তারা আন্দোলন করছেন না বলেও এ সময় জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, তাদের আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তবে সেটা ক্যাম্পাসের মধ্যে নয়। তারা বাইরে আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। তারা বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করায় তাতে বাধা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছু ভাবছে না বলেও তিনি জানান।
আরো অন্তত একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর মাধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া হলে ২৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক, অভিভাবক এবং বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে সংহতি সমাবেশ করবেন।
এ সিদ্ধান্তে কিছুটা সমস্যায় পড়বেন প্রথমবার চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীরাও। যারা প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পান তারা অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যাশামতো ভালো আসন যোগ্যতা থাকলেও পান না। ফলে তারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো বিষয়গুলোয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেন; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তারাও এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এ সিদ্ধান্তের ফলে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা গভীর সঙ্কটে পড়েছেন। এইসএসসি পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অন্যান্যবারের তুলনায় দেড় মাস কম সময় পেয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আরো দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বাতিল করেছে। আগে থেকে সিদ্ধান্ত জানালে তারা আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারতেন; কিন্তু পরীক্ষার পরে জানানোর কারণে তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য এবার ঘোষণা দিয়ে আরো একবার দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাদের এসব দাবির সাথে একমত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কয়েকটি ছাত্র সংগঠন কর্মসূচি পালন করেছেন এবং বিবৃতিও দিয়েছেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, উভয় অংশের কথারই যুক্তি আছে। তবে আসল সমস্যা হলো আসন সংখ্যা। এ সমস্যা সমাধানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আসন বাড়াতে হবে এবং যাতে শিক্ষার্থীরা আকর্ষিত হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম সুমন নয়া দিগন্তকে বলেন, এ সিদ্ধান্তটা অবশ্যই যৌক্তিক; কিন্তু কোনো আগে পিছে চিন্তা না করেই এটি করা হয়েছে। এভাবে যদি সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হয় তবে সেটা স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত অন্তত একবার সুযোগ রেখে এবং শিক্ষক, বৃদ্ধিজীবী, ছাত্রনেতাদের সাথে আলোচনা করেই করতে হয়। এটির বৈধতা দিতে হলে অবশ্যই আরো একবার দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ বলেন, সিদ্ধান্তটা ভালো। তবে যারা এবার পরীক্ষা দিয়েছে তাদের আর একবার সুযোগ দেয়া উচিত। তার পরের বার থেকে এ সিদ্ধান্তটি কার্যকর করা যেতে পারে।
জাসদ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ : ওই দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়া এবং ডাকসু নির্বাচন দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জাসদ ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলা ভবনের প্রধান ফটকে সমাবেশে মিলিত হয়। জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম সুমনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো: শাহজাহান আলী সাজুর পরিচালনায় সমাবেশে সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
No comments