জাপানে এক দিনে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ
জাপানের মন্ত্রিসভা থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পদত্যাগ করেছেন প্রভাবশালী দুই নারী সদস্য। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক তহবিল তছরুপের অভিযোগ ওঠার পর গতকাল সোমবার এ পদত্যাগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে গৃহীত সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে একটা ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। পদত্যাগকারী দুজন হলেন বিচারমন্ত্রী মিদোরি মাৎসুশিমা এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইউকো ওবুচি। মাৎসুশিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করেছেন। আর ওবুচির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকগোষ্ঠী ও অন্য দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া তহবিলের অপব্যবহার করেছেন। এই দুজন পদত্যাগ করায় প্রধানমন্ত্রী আবের মন্ত্রিসভায় নারী সদস্যের সংখ্যা তিনে নেমে এল। অথচ আবে গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর সরকারে নারী সদস্যের সংখ্যা বাড়িয়ে পাঁচে উন্নীত করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।
গতকাল দুজন পদত্যাগ করার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, আমি বর্তমানের ঘটনার দায় নিচ্ছি এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ এই জোড়া পদত্যাগকে আবে ২০১২ সালে দেশের ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার আগের বছরগুলোতে জাপানে একের পর এক সরকার এসেছে আর বিদায় নিয়েছে। ওই অস্থিতিশীল সময়ে বছরে গড়ে একটি করে নতুন সরকার দেখেছে দেশটি। ওবুচির বাবা জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে আসা এই নারী জাপানের মন্ত্রিসভার সামনের সারিতে তরুণ মুখ হিসেবে ছিলেন। কারণ, তাঁর আগে যাঁরা বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু ওবুচি রাজনৈতিক তহবিলকে নিজের খেয়ালখুশিমতো ব্যবহার করেছেন বলে গেল সপ্তাহে খবর বেরোনোর পর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। অন্যদিকে বিচারমন্ত্রী মাৎসুশিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের নাম ও ছবিসংবলিত বৈদ্যুতিক পাখা সস্তায় বাজারে ছেড়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ভোটারদের সমর্থন কেনার চেষ্টা করেছেন। জাপানের রাজনীতিতে অর্থ কেলেঙ্কারির বিয়ষটি বিরল নয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে দেশটিতে নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো নিয়ম না থাকায় এ নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না।
No comments