ওসামার অবস্থান নির্ণয়ে সরকারের ব্যর্থতা ছিল
আন্তর্জাতিক
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের
অগোচরে ওই দেশে বছরের পর বছর গোপনে বসবাস করেছিলেন। পাকিস্তান সরকারের
প্রায় সব পর্যায়ে অযোগ্যতা ও অবহেলার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।
পাকিস্তান সরকারের গঠিত অ্যাবোটাবাদ কমিশন নামের বিচার বিভাগীয় কমিটির
গোপন প্রতিবেদনে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনটি
ফাঁস হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্দেশে ২০১১ সালের মে মাসে
মার্কিন কমান্ডো বাহিনী ওসামাকে হত্যা করে। ঘটনাটিকে ‘খুনের অপরাধ’ বলে
অ্যাবোটাবাদ কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ৩৩৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে
পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সপরিবারে ওসামার অবস্থানের বিস্তারিত বিবরণ
তুলে ধরা হয়েছে। ২০০৫ সালের আগস্টে অ্যাবোটাবাদে বসবাস শুরু করার আগ
পর্যন্ত ওসামার পরিবার আফগান সীমান্ত এলাকা, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা
সোয়াত ও হরিপুর এবং আরও দু-একটি সম্ভাব্য স্থানে অবস্থান করে। এ সময় তারা
অত্যন্ত সাধারণ ও মিতব্যয়ী জীবন যাপন করত। তবে তারা জনসমক্ষে নিজেদের
প্রকাশ করত না। আত্মগোপনের জন্য ওসামা বিন লাদেন বিশেষ ধরনের টুপি (কাউবয়
ক্যাপ) ব্যবহার করতেন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে ওসামাকে হত্যার
অভিযান চালানোয় মার্কিন কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ হয় পাকিস্তান। এতে দুই
দেশের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে। ওসামা হত্যার পরপরই ঘটনাটি তদন্তের
জন্য পাকিস্তানি পার্লামেন্টের আহ্বানে স্বাধীন অ্যাবোটাবাদ কমিশন গঠন করা
হয়। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) তৎপরতা
সম্পর্কে স্থানীয় গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের (আইএসআই) অজ্ঞতার বিষয়টিও খতিয়ে
দেখতে বলা হয়। কমিশনের প্রতিবেদনে অ্যাবোটাবাদে বহুল আলোচিত মার্কিন
কমান্ডো হামলাকে ‘পাকিস্তানের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর সবচেয়ে
অপমানজনক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করা হয়। হামলার নাটকীয় বিবরণ প্রতিবেদনে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওসামার তিন স্ত্রী, পাকিস্তানের অন্তত ২০০
সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও অন্যদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি
করা হয়। প্রতিবেদনে অভিযানের শেষ মুহূর্তের অবস্থা নিয়ে কথা বলে ওসামার
পরিবার। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা ওই প্রতিবেদন ফাঁস করে। এএফপি
ও বিবিসি।
No comments