র্যাবের করা মামলা দুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিচার চান লিমন সরকারের সুমতি
প্রায় আড়াই বছর নানা হয়রানির পর ঝালকাঠির
কলেজছাত্র লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে করা র্যাবের মামলা দুটি প্রত্যাহার করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন,
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন,
ফৌজদারি
কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা মামলা দুটি
প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,
‘লিমনের বয়স মাত্র ১৬ বছর। আমরা চাই, সে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে
যাক।’
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হওয়া লিমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ওপর র্যাবের নিষ্ঠুরতা দেশের মানুষ মেনে নেয়নি। র্যাবের করা মিথ্যা মামলা দুটি সরকার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছে যে তারা ভুল করেছে।’ লিমন আরও বলেন, ‘যারা গুলি করে আমাকে চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছে, সেই র্যাব সদস্যদের বিচার হলেই আমি প্রকৃত বিচার পাব।’
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, ‘লিমনের নামে মিথ্যা মামলা সরকার উঠাইয়া নেলেও র্যাবের নামে আমি যে মামলা করছি, হেয়া উঠামু না। আমার মামলার ঘটনা সত্য। র্যাবের কারণে আমার ছেলে আজ পঙ্গু। ন্যায়বিচারের জন্য গত আড়াই বছর আমি দৌড়াদৌড়ি করছি। আরও যত দিন লাগব, দৌড়াদৌড়ি করব।’
প্রায় আড়াই বছর আগে র্যাবের এক অভিযানে গুলিবিদ্ধ হন একাদশ শ্রেণীর ছাত্র লিমন। এরপর তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হয়। পরে র্যাব লিমনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একটি এবং অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করে। দুটি মামলায়ই লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় ১ জুলাই লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২। এ অভিযোগ গঠনের দায় থেকে লিমন অব্যাহতির জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মানিক আচার্য্য।
র্যাবের গুলিতে লিমনের পঙ্গু হওয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধেই দুটি মামলা করার ঘটনা দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রতিবাদে সোচ্চার হয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তখন সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও উপদেষ্টা র্যাবের পক্ষে সাফাই গেয়ে বক্তব্য দেন। আর র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে লিমন, তাঁর মা, বাবা ও বোনকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করে।
অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চাইছিলাম মামলা প্রত্যাহার করা হোক।’ তিনি আরও বলেন, মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখন র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে বলে এখন মনে করি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘লিমন যে অবস্থায় সেখানে র্যাব কর্তৃক ধৃত হয়েছিল, সে অবস্থার প্রেক্ষিতও বিবেচনা করতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন লিমনকে আইনি সহায়তাদানকারী মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান। তিনি বলেন, ‘এ বক্তব্যে মনে হচ্ছে, সরকার কোনো একজন অপরাধীকে ক্ষমা করছে। এর মধ্য দিয়ে লিমনের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের আইনের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করলে লিমন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নির্দোষ প্রমাণিত হতেন।’
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মামলা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
দুই বছর আগে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে লিমনকে দেখতে যান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তখন তিনি ঘোষণা দেন, তিনি লিমনের পক্ষে আইনি লড়াই করবেন। কিন্তু তিনি গত ২৩ জুন লিমন ও তাঁর মা-বাবাকে ডেকে পাঠান এবং র্যাবের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। লিমনের বরাত দিয়ে সেই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে মিজানুর রহমান ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি লিমনকে মামলা প্রত্যাহার করতে বলেননি। তিনি বলেছিলেন, লিমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সঙ্গে র্যাবের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের কথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুলতে পারে।
এর আগে গত ৩০ মে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি অনানুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে লিমনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেন।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে র্যাবের গুলিতে আহত হন লিমন। পরে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে তাঁর চিকিৎসার খরচ চালান। চিকিৎসকেরা লিমনের জীবন বাঁচাতে তাঁর বাঁ পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলেন।
এ ঘটনায় র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের মামলা পুলিশ প্রথমে নেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি নিলেও পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে র্যাবের সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে। এর বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে তা-ও খারিজ করে দেন ঝালকাঠির বিচারিক হাকিম আদালত। এ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেন লিমনের মা। আগামী ১৩ আগস্ট এর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হওয়া লিমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ওপর র্যাবের নিষ্ঠুরতা দেশের মানুষ মেনে নেয়নি। র্যাবের করা মিথ্যা মামলা দুটি সরকার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছে যে তারা ভুল করেছে।’ লিমন আরও বলেন, ‘যারা গুলি করে আমাকে চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছে, সেই র্যাব সদস্যদের বিচার হলেই আমি প্রকৃত বিচার পাব।’
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, ‘লিমনের নামে মিথ্যা মামলা সরকার উঠাইয়া নেলেও র্যাবের নামে আমি যে মামলা করছি, হেয়া উঠামু না। আমার মামলার ঘটনা সত্য। র্যাবের কারণে আমার ছেলে আজ পঙ্গু। ন্যায়বিচারের জন্য গত আড়াই বছর আমি দৌড়াদৌড়ি করছি। আরও যত দিন লাগব, দৌড়াদৌড়ি করব।’
প্রায় আড়াই বছর আগে র্যাবের এক অভিযানে গুলিবিদ্ধ হন একাদশ শ্রেণীর ছাত্র লিমন। এরপর তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হয়। পরে র্যাব লিমনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একটি এবং অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করে। দুটি মামলায়ই লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় ১ জুলাই লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২। এ অভিযোগ গঠনের দায় থেকে লিমন অব্যাহতির জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মানিক আচার্য্য।
র্যাবের গুলিতে লিমনের পঙ্গু হওয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধেই দুটি মামলা করার ঘটনা দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রতিবাদে সোচ্চার হয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তখন সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও উপদেষ্টা র্যাবের পক্ষে সাফাই গেয়ে বক্তব্য দেন। আর র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে লিমন, তাঁর মা, বাবা ও বোনকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করে।
অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চাইছিলাম মামলা প্রত্যাহার করা হোক।’ তিনি আরও বলেন, মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখন র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে বলে এখন মনে করি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘লিমন যে অবস্থায় সেখানে র্যাব কর্তৃক ধৃত হয়েছিল, সে অবস্থার প্রেক্ষিতও বিবেচনা করতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন লিমনকে আইনি সহায়তাদানকারী মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান। তিনি বলেন, ‘এ বক্তব্যে মনে হচ্ছে, সরকার কোনো একজন অপরাধীকে ক্ষমা করছে। এর মধ্য দিয়ে লিমনের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের আইনের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করলে লিমন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নির্দোষ প্রমাণিত হতেন।’
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মামলা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
দুই বছর আগে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে লিমনকে দেখতে যান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তখন তিনি ঘোষণা দেন, তিনি লিমনের পক্ষে আইনি লড়াই করবেন। কিন্তু তিনি গত ২৩ জুন লিমন ও তাঁর মা-বাবাকে ডেকে পাঠান এবং র্যাবের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। লিমনের বরাত দিয়ে সেই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে মিজানুর রহমান ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি লিমনকে মামলা প্রত্যাহার করতে বলেননি। তিনি বলেছিলেন, লিমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সঙ্গে র্যাবের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের কথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুলতে পারে।
এর আগে গত ৩০ মে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি অনানুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে লিমনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেন।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে র্যাবের গুলিতে আহত হন লিমন। পরে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে তাঁর চিকিৎসার খরচ চালান। চিকিৎসকেরা লিমনের জীবন বাঁচাতে তাঁর বাঁ পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলেন।
এ ঘটনায় র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের মামলা পুলিশ প্রথমে নেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি নিলেও পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে র্যাবের সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে। এর বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে তা-ও খারিজ করে দেন ঝালকাঠির বিচারিক হাকিম আদালত। এ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেন লিমনের মা। আগামী ১৩ আগস্ট এর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
No comments