অবশেষে লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা ২ মামলাই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত
ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে
র্যাবের দায়ের করা দুটি মামলাই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এ ব্যাপারে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আদেশ দিয়েছেন।
তবে লিমনকে গুলি করার দায়ে র্যাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না-
সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি তার প্রয়োজন
দেখছেন না।
লিমন ও তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তবে লিমন কালের কণ্ঠকে বলেছেন, 'অন্যায়ভাবে আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে যারা গুলি করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আইনের মাধ্যমে লড়াই করব।'
লিমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'লিমনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে জেনে খুব ভালো লাগছে। আমরা অনেক আগে থেকেই এ দাবি জানিয়ে আসছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তরিকভাবে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন।' গুলিবর্ষণকারী র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা লিমনের মায়ের মামলা প্রত্যাহার করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে লিমনের পরিবার বলতে পারবে।'
গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার (লিমনের) বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহার করা হবে।' র্যাবের গুলিতে লিমন পঙ্গু হয়েছে, এ ক্ষেত্রে র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো কিছু করার এখন প্রয়োজন আমি দেখি না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যে অবস্থায় লিমন র্যাবের কাছে ধৃত হয়েছিল, যে অবস্থায় র্যাব তাকে ও অন্যদের প্রতিরোধ করেছিল, সেটি কিন্তু র্যাবের বিরুদ্ধে তার প্রতিরোধের বিষয়। সেটা সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে।'
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিমনের বয়স মাত্র ১৬ বছর। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনে তাঁর ফিরে যাওয়ার বিবেচনা থেকেই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে এত দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চেয়েছিলেন মামলা প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু কোনো এক কারণে বিষয়টি এগোচ্ছিল না। মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে আরো বলেন, 'যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে সফল হয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে তাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য আমরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন জানাব, যেন তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।'
সূত্র জানায়, লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়্যারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন। গত ১৩ জুন চিঠি মন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছায়। চিঠিটি নথিভুক্ত করার জন্য ২০ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপর গত ২৩ জুন লিমন এবং তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম ও বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলেন।
কালের কণ্ঠের ঝালকাঠি প্রতিনিধি কে এম সবুজ জানান, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান লিমনকে ফোন করে মামলা প্রত্যাহারের সংবাদ পৌঁছে দেন। এ তথ্য জানিয়ে লিমন কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তে তিনি ও তাঁর মা খুশি। লিমন বলেন, 'মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি। এ বিজয় দেশের প্রতিটি গরিব মানুষের।' লিমন আরো বলেন, 'অন্যায়ভাবে আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার অপরাধে বরিশাল র্যাব-৮-এর তৎকালীন উপপরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমানসহ ছয় র্যাব সদস্যের বিচার করা হলেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাকে যারা নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আইনের মাধ্যমে লড়াই করব।'
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, 'লিমন যে নির্দোষ তা প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু যারা ওকে হত্যা করতে চেয়েছিল তাদের বিচার না হলে ন্যায়বিচার পাব না। শুধু আমরাই নই, দেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে, লিমন নিরপরাধ।' লিমন চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মা হেনোয়ারা বেগম।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ বাড়ির কাছে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কলেজছাত্র লিমন হোসেন। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই রাজাপুর থানায় লিমনসহ আটজনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে; একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে। অস্ত্র আইনের মামলায় ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল রাজাপুর থানা অভিযোগপত্র দাখিল করে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে। সর্বশেষ এ মামলায় লিমনের বিরুদ্ধে গত ১ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৬ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২। একই সঙ্গে এ মামলা থেকে লিমনের অব্যাহতি চেয়ে তাঁর মা হেনোয়ারা বেগমের করা আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত।
এ ছাড়া সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গত বছরের ১ জুলাই রাজাপুর পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে লিমনসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলাটি বিচারের জন্য জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ আগস্ট এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।
দুটি মামলায়ই লিমন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। দুটি মামলায়ই রাজাপুর থানা পুলিশের লিমনের বিরুদ্ধে আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ সন্ত্রাসী মোরসেদ জোমাদ্দার তার দলবল নিয়ে রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে পুরাতন জমাদ্দারহাট শহীদ জমাদ্দারের বাড়িতে বৈঠক করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সেখানে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে, র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে লিমনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর পাশেই পাওয়া যায় আমেরিকার তৈরি একটি পিস্তল ও একটি গুলির খোসা। অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করিয়া আসামি লিমন ও অপরাপর আসামিদের বিরুদ্ধে র্যাবের ডিএডি লুৎফর রহমানের দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। ঘটনার সময় সব আসামি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলিয়া মামলার সার্বিক তদন্ত এবং সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত হইয়াছে।'
লিমন ও তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তবে লিমন কালের কণ্ঠকে বলেছেন, 'অন্যায়ভাবে আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে যারা গুলি করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আইনের মাধ্যমে লড়াই করব।'
লিমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'লিমনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে জেনে খুব ভালো লাগছে। আমরা অনেক আগে থেকেই এ দাবি জানিয়ে আসছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তরিকভাবে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন।' গুলিবর্ষণকারী র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা লিমনের মায়ের মামলা প্রত্যাহার করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে লিমনের পরিবার বলতে পারবে।'
গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার (লিমনের) বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহার করা হবে।' র্যাবের গুলিতে লিমন পঙ্গু হয়েছে, এ ক্ষেত্রে র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'র্যাবের বিরুদ্ধে কোনো কিছু করার এখন প্রয়োজন আমি দেখি না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যে অবস্থায় লিমন র্যাবের কাছে ধৃত হয়েছিল, যে অবস্থায় র্যাব তাকে ও অন্যদের প্রতিরোধ করেছিল, সেটি কিন্তু র্যাবের বিরুদ্ধে তার প্রতিরোধের বিষয়। সেটা সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে।'
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিমনের বয়স মাত্র ১৬ বছর। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনে তাঁর ফিরে যাওয়ার বিবেচনা থেকেই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে এত দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চেয়েছিলেন মামলা প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু কোনো এক কারণে বিষয়টি এগোচ্ছিল না। মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে আরো বলেন, 'যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে সফল হয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে তাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য আমরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন জানাব, যেন তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।'
সূত্র জানায়, লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়্যারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন। গত ১৩ জুন চিঠি মন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছায়। চিঠিটি নথিভুক্ত করার জন্য ২০ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপর গত ২৩ জুন লিমন এবং তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম ও বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলেন।
কালের কণ্ঠের ঝালকাঠি প্রতিনিধি কে এম সবুজ জানান, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান লিমনকে ফোন করে মামলা প্রত্যাহারের সংবাদ পৌঁছে দেন। এ তথ্য জানিয়ে লিমন কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তে তিনি ও তাঁর মা খুশি। লিমন বলেন, 'মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি। এ বিজয় দেশের প্রতিটি গরিব মানুষের।' লিমন আরো বলেন, 'অন্যায়ভাবে আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার অপরাধে বরিশাল র্যাব-৮-এর তৎকালীন উপপরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমানসহ ছয় র্যাব সদস্যের বিচার করা হলেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাকে যারা নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আইনের মাধ্যমে লড়াই করব।'
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, 'লিমন যে নির্দোষ তা প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু যারা ওকে হত্যা করতে চেয়েছিল তাদের বিচার না হলে ন্যায়বিচার পাব না। শুধু আমরাই নই, দেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে, লিমন নিরপরাধ।' লিমন চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মা হেনোয়ারা বেগম।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ বাড়ির কাছে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কলেজছাত্র লিমন হোসেন। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই রাজাপুর থানায় লিমনসহ আটজনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে; একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে। অস্ত্র আইনের মামলায় ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল রাজাপুর থানা অভিযোগপত্র দাখিল করে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে। সর্বশেষ এ মামলায় লিমনের বিরুদ্ধে গত ১ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৬ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২। একই সঙ্গে এ মামলা থেকে লিমনের অব্যাহতি চেয়ে তাঁর মা হেনোয়ারা বেগমের করা আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত।
এ ছাড়া সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গত বছরের ১ জুলাই রাজাপুর পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে লিমনসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলাটি বিচারের জন্য জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ আগস্ট এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।
দুটি মামলায়ই লিমন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। দুটি মামলায়ই রাজাপুর থানা পুলিশের লিমনের বিরুদ্ধে আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ সন্ত্রাসী মোরসেদ জোমাদ্দার তার দলবল নিয়ে রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে পুরাতন জমাদ্দারহাট শহীদ জমাদ্দারের বাড়িতে বৈঠক করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সেখানে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে, র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে লিমনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর পাশেই পাওয়া যায় আমেরিকার তৈরি একটি পিস্তল ও একটি গুলির খোসা। অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করিয়া আসামি লিমন ও অপরাপর আসামিদের বিরুদ্ধে র্যাবের ডিএডি লুৎফর রহমানের দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। ঘটনার সময় সব আসামি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলিয়া মামলার সার্বিক তদন্ত এবং সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত হইয়াছে।'
No comments