লাতিন আমেরিকাই হতে পারে স্নোডেনের ঠিকানা
কিউবার
প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর নৈতিক সমর্থনের পর মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা
সংস্থার (এনএসএ) সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের লাতিন আমেরিকায়
আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য
ফাঁস করে ফেরারি এই কর্মকর্তা দুই সপ্তাহ ধরে মস্কোর শেরেমেতিয়েভা
বিমানবন্দরে আছেন। রাশিয়া থেকে কিউবায় ট্রানজিট নিয়ে লাতিন আমেরিকায়
যেতে হয়। বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা ও নিকারাগুয়া ইতিমধ্যে স্নোডেনকে
রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। স্নোডেনের বিষয়ে এত
দিন চুপ থাকলেও গত সোমবার কিউবা তাঁর লাতিন আমেরিকায় আশ্রয়ের প্রতি
সমর্থন জানায়। তবে কিউবায় স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়া হবে কি না, তা স্পষ্ট
করেননি প্রেসিডেন্ট রাউল। কিউবা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে
সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। তাই দেশটি এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের বড়
শত্রু হিসেবে বিবেচিত স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়া থেকে বিরত থাকবে বলেই ধারণা
করা হচ্ছে। মার্কিন গোপন নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দেওয়া উইকিলিকসের পক্ষ
থেকে বলা হয়, স্নোডেনের প্রতি সত্যিই সংহতি প্রকাশ করে থাকলে রাউলের উচিত
তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়া। স্নোডেন লাতিন
আমেরিকার কোনো দেশে আশ্রয় পেলেও নানা জটিলতায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে,
তিনি রাশিয়া থেকে কীভাবে বের হবেন, তা স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন,
স্নোডেন রাশিয়া থেকে বের হতে পারলেও তাঁকে হয়তো পশ্চিম ইউরোপের আকাশসীমা
অতিক্রম করতে দেওয়া হবে না। আবার স্নোডেনের বিষয়টি নিজেদের নিয়ন্ত্রণেই
রাখতে চায় রাশিয়া। ফলে কোনো পাসপোর্ট ছাড়া শেরেমেতিয়েভা বিমানবন্দর
ছেড়ে যাওয়া তাঁর জন্য কঠিন হবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের
মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, স্নোডেন কীভাবে রাশিয়া ছেড়ে যাবেন, সেটা
তাঁর ব্যাপার। মস্কো এ ব্যাপারে কিছুই বলছে না। হংকং থেকে গত ২৩ জুন
রাশিয়ায় যান স্নোডেন। সারা বিশ্বের জনসাধারণের ওপর মার্কিন নজরদারির
গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রোষানলে পড়েন। তাঁর ব্যাপারে
একটি ভারসাম্যপূর্ণ কঠিন অবস্থান নিতে রাশিয়া একরকম বাধ্য হয়েছে। কারণ
ওয়াশিংটনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় মস্কো। আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ
করেছে ভেনেজুয়েলা: স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে ভেনেজুয়েলা। এ
ব্যাপারে তাঁর আবেদন গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট
নিকোলাস মাদুরো। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য স্নোডেনের প্রতি
গত সোমবার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিচার এড়াতে স্নোডেন ২৭টি
দেশে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। মাদুরো সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্নোডেনের
আবেদনপত্র গ্রহণ করেছেন। এখন তিনি কারাকাসে আসতে চান কি না, সে ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এএফপি।
No comments