সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০১৩: শান্তিপূর্ণ ভোট, ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীদের পরাজয় চার সিটিতেই বিএনপির জয়
ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গতকাল শনিবার রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
গভীর রাতে বেসরকারিভাবে পাওয়া খবরে চার সিটিতেই বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
গভীর রাতে বেসরকারিভাবে পাওয়া খবরে চার সিটিতেই বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
তাঁরা
হলেন রাজশাহীতে মোসাদ্দেক হোসেন, খুলনায় মো. মনিরুজ্জামান, বরিশালে আহসান
হাবিব ও সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী। তাঁদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী এবং নিজ নিজ সিটি করপোরেশনের
সর্বশেষ মেয়র ছিলেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সিলেটে ১২৮টি কেন্দ্রের সবগুলোতে আরিফুল হক (টেলিভিশন প্রতীক) পেয়েছেন এক লাখ সাত হাজার ৩৩০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান (আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট। কামরান গত রাতেই বিজয়ী হিসেবে আরিফুল হককে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রাত সাড়ে ১২টায় বরিশালে ১০০টি কেন্দ্রের সবগুলোর বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা দেওয়া হয়। তাতে বিএনপির আহসান হাবিব (আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৭৫১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন (টেলিভিশন প্রতীক) পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৪১ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক খান পেয়েছেন এক হাজার ৮০৭ ভোট। তবে আহসান হাবিবকে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ রোববার সকালে ঘোষণা দেওয়া হবে।
রাত দেড়টার দিকে রাজশাহীতে ১৩৭টি কেন্দ্রের সব কটির ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এতে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন (আনারস প্রতীক) এক লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান (তালা প্রতীক) পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৭২৬ ভোট। ফল ঘোষণার পরপরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাত পৌনে দুইটার দিকে খুলনায় মোট ২৮৮টি কেন্দ্রের মধ্যে সব কটির ফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। এতে এক লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বিএনপির মনিরুজ্জামান (আনারস প্রতীক)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (তালা) পেয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ছোটখাটো দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে সার্বিকভাবে এ নির্বাচন ছিল অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে।
সরকারের শেষ সময়ের এ নির্বাচনের ফলাফলকে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছায়া হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। এ কারণে এ নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও এতে জাতীয় রাজনীতি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
এ নির্বাচনকে সরকারের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের মাপকাঠি হিসেবে দেখছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই। তার পরও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নিজ নিজ প্রার্থীর প্রতি সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এমনকি উভয় রাজনৈতিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আশপাশের জেলার নিজ নিজ দলীয় নেতারাও প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এ অবস্থায় চার সিটিতেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ভরাডুবির সঙ্গে আগামী নির্বাচনের হিসাব-নিকাশও মেলাতে শুরু করেছেন অনেকে।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে (৪ আগস্ট) এই চার সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়। চারটিতেই জয়ী হন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা। তাই একই সিটি নির্বাচনের গতকালের ফলাফলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করছেন, এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে তাঁদের চলমান আন্দোলন আরও গতিশীল হবে।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করছেন, এ নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক, আওয়ামী লীগের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাঁরা কৃতিত্বের দাবি করেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তের এ নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যই নয়, নির্বাচন কমিশনের জন্যও একটি পরীক্ষা ছিল। কারণ, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রধান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচন। এতে আমলে নেওয়ার মতো কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
গতকালের চার সিটি নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া দেশের সবগুলো সিটির মেয়র হলেন বিএনপিদলীয়। নারায়ণগঞ্জেও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে হারিয়ে বিজয়ী হন নাগরিক সমাজের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ ছাড়া মেয়াদ পূর্তির দীর্ঘদিন পরও ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়নি। বর্তমান সরকার ঢাকা সিটিকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে এক দফা তফসিল ঘোষণা করেও নির্বাচন করা যায়নি। এর মধ্যে এখন আইনি জটিলতা কেটে গেছে। পবিত্র রমজান মাসের পর ঢাকা সিটির তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সিলেটে ১২৮টি কেন্দ্রের সবগুলোতে আরিফুল হক (টেলিভিশন প্রতীক) পেয়েছেন এক লাখ সাত হাজার ৩৩০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান (আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট। কামরান গত রাতেই বিজয়ী হিসেবে আরিফুল হককে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রাত সাড়ে ১২টায় বরিশালে ১০০টি কেন্দ্রের সবগুলোর বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা দেওয়া হয়। তাতে বিএনপির আহসান হাবিব (আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৭৫১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন (টেলিভিশন প্রতীক) পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৪১ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক খান পেয়েছেন এক হাজার ৮০৭ ভোট। তবে আহসান হাবিবকে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ রোববার সকালে ঘোষণা দেওয়া হবে।
রাত দেড়টার দিকে রাজশাহীতে ১৩৭টি কেন্দ্রের সব কটির ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এতে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন (আনারস প্রতীক) এক লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান (তালা প্রতীক) পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৭২৬ ভোট। ফল ঘোষণার পরপরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাত পৌনে দুইটার দিকে খুলনায় মোট ২৮৮টি কেন্দ্রের মধ্যে সব কটির ফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। এতে এক লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বিএনপির মনিরুজ্জামান (আনারস প্রতীক)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (তালা) পেয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ছোটখাটো দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে সার্বিকভাবে এ নির্বাচন ছিল অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে।
সরকারের শেষ সময়ের এ নির্বাচনের ফলাফলকে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছায়া হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। এ কারণে এ নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও এতে জাতীয় রাজনীতি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
এ নির্বাচনকে সরকারের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের মাপকাঠি হিসেবে দেখছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই। তার পরও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নিজ নিজ প্রার্থীর প্রতি সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এমনকি উভয় রাজনৈতিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আশপাশের জেলার নিজ নিজ দলীয় নেতারাও প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এ অবস্থায় চার সিটিতেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ভরাডুবির সঙ্গে আগামী নির্বাচনের হিসাব-নিকাশও মেলাতে শুরু করেছেন অনেকে।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে (৪ আগস্ট) এই চার সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়। চারটিতেই জয়ী হন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা। তাই একই সিটি নির্বাচনের গতকালের ফলাফলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করছেন, এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে তাঁদের চলমান আন্দোলন আরও গতিশীল হবে।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করছেন, এ নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক, আওয়ামী লীগের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাঁরা কৃতিত্বের দাবি করেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তের এ নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যই নয়, নির্বাচন কমিশনের জন্যও একটি পরীক্ষা ছিল। কারণ, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রধান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচন। এতে আমলে নেওয়ার মতো কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
গতকালের চার সিটি নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া দেশের সবগুলো সিটির মেয়র হলেন বিএনপিদলীয়। নারায়ণগঞ্জেও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে হারিয়ে বিজয়ী হন নাগরিক সমাজের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ ছাড়া মেয়াদ পূর্তির দীর্ঘদিন পরও ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়নি। বর্তমান সরকার ঢাকা সিটিকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে এক দফা তফসিল ঘোষণা করেও নির্বাচন করা যায়নি। এর মধ্যে এখন আইনি জটিলতা কেটে গেছে। পবিত্র রমজান মাসের পর ঢাকা সিটির তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
No comments