পবিত্র কোরআনের আলো-জুলায়খার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিবাহ
৫৫. কা-লাজ'আলনি 'আলা খাযা----ইনিল আরদি,
ইন্নি হাফিযুন 'আলীমুন। ৫৬. ওয়া কাযা-লিকা মাক্কান্না-লিয়ুসুফা ফিল আরদি,
য়াতাবাওওয়াউ মিনহা-হাইছু য়াশা----উ, নুসিবু বিরাহমাতিনা-মান নাশা----উ ওয়া
লা-নুদি'উ আজরাল মুহসিনিনা।
সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৫৫. ইউসুফ বললেন, দেশের অর্থ-সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজে আমাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আপনার কাছে আবেদন করছি। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান। * ৫৬. এভাবেই আমি ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠা দান করেছি। সে ওই দেশের যেখানে খুশি স্থান করে নিতে পারত। যাকে ইচ্ছা আমি নিজের অনুগ্রহ দান করি। আমি পুণ্যবানদের কর্মফল নষ্ট করি না।
তাফসির : * রাষ্ট্রের অর্থ, সম্পদ ও বাণিজ্য বিষয়ে একজন ব্যক্তির মধ্যে যে ধরনের গুণাবলি ও যোগ্যতা থাকা দরকার, আলোচ্য আয়াতে হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মধ্যে এর সবই যে পূর্ণ মাত্রায় ছিল, তা-ই তুলে ধরা হয়েছে। অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীর জন্য প্রথমত প্রয়োজন হলো, সরকারি সম্পদের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ করা; নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো কোনো আশঙ্কা থাকলে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দ্বিতীয়ত প্রয়োজন হলো, অপ্রয়োজনীয় খাতে বা প্রয়োজনের চেয়ে কোনো খাতে বেশি বরাদ্দ না দেওয়া আবার কোথাও প্রয়োজনের চেয়ে কম বরাদ্দ দিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকেও সচেতন থাকা। এই বিষয়গুলোই আরবি 'হাফিয' এবং 'আলিম' শব্দ দুটি প্রয়োগ করে বোঝানো হয়েছে। বাদশাহ ইউসুফ (আ.)-এর গুণাবলির কথা জেনে মুগ্ধ হয়েছিলেন, তাঁর ধর্মপরায়ণতা ও বুদ্ধিমত্তায় পুরো আস্থা রেখেছিলেন, তবু বাস্তবে তাঁকে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ের পূর্ণ ক্ষমতা ও পদমর্যাদা প্রথমেই দেওয়া হলো না। ব্যক্তিগত সহকারীরূপে নিজের সান্নিধ্যে রেখে তাঁর বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্যই এমন করা হয়েছিল বলে তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে বরেণ্য মুসলিম মনীষীগণ মন্তব্য করেছেন। বরেণ্য অনেক তাফসিরবিদ লিখেছেন, এ সময়ই জুলায়খার স্বামী কিতফির মৃত্যুবরণ করে। পরে বাদশাহর উদ্যোগে বিধবা জুলায়খার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিবাহ সম্পন্ন হয়। তখন ইউসুফ (আ.) জুলায়খার উদ্দেশে বললেন, তুমি আগে যা চেয়েছিলে, যেভাবে চেয়েছিলে, সেই তুলনায় এটি কি অনেক উত্তম নয়? জুলায়খা নিজের দোষ স্বীকার করে তখন ইউসুফ (আ.)-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁদের দাম্পত্যজীবন সুখী হয়েছিল। দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল। তাদের একজনের নাম ছিল ইফরায়িম, অপরজনের নাম ছিল মানশা। বিভিন্ন বর্ণনায় আছে, বিবাহের পর আল্লাহ তায়ালা ইউসুফ (আ.)-এর অন্তরে জুলায়খার প্রতি গভীর ভালোবাসা ঢেলে দেন, যা আগে তাঁর মধ্যে ছিল না। এমনকি তাঁদের ভালোবাসায় জুলায়খার চেয়ে ইউসুফ (আ.)-ই এগিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি জুলায়খার কাছে জানতে চান, ব্যাপার কী, তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসছ না মনে হয়! জুলায়খা বললেন, আপনার অসিলায় আমি আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করেছি। সেখানে আপনার প্রেম ম্লান হয়ে গেছে! তাফসিরে কুরতুবি ও মাজহারিতেও ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর কুদরত ও লীলা বোঝা কঠিন। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে কখন কাকে কিভাবে সম্মান দান করেন, তা কেবল তিনিই জানেন। বান্দা হিসেবে আমাদের করণীয় হলো, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে সর্বদা সচেষ্ট থাকা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৫৫. ইউসুফ বললেন, দেশের অর্থ-সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজে আমাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আপনার কাছে আবেদন করছি। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান। * ৫৬. এভাবেই আমি ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠা দান করেছি। সে ওই দেশের যেখানে খুশি স্থান করে নিতে পারত। যাকে ইচ্ছা আমি নিজের অনুগ্রহ দান করি। আমি পুণ্যবানদের কর্মফল নষ্ট করি না।
তাফসির : * রাষ্ট্রের অর্থ, সম্পদ ও বাণিজ্য বিষয়ে একজন ব্যক্তির মধ্যে যে ধরনের গুণাবলি ও যোগ্যতা থাকা দরকার, আলোচ্য আয়াতে হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মধ্যে এর সবই যে পূর্ণ মাত্রায় ছিল, তা-ই তুলে ধরা হয়েছে। অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীর জন্য প্রথমত প্রয়োজন হলো, সরকারি সম্পদের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ করা; নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো কোনো আশঙ্কা থাকলে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দ্বিতীয়ত প্রয়োজন হলো, অপ্রয়োজনীয় খাতে বা প্রয়োজনের চেয়ে কোনো খাতে বেশি বরাদ্দ না দেওয়া আবার কোথাও প্রয়োজনের চেয়ে কম বরাদ্দ দিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকেও সচেতন থাকা। এই বিষয়গুলোই আরবি 'হাফিয' এবং 'আলিম' শব্দ দুটি প্রয়োগ করে বোঝানো হয়েছে। বাদশাহ ইউসুফ (আ.)-এর গুণাবলির কথা জেনে মুগ্ধ হয়েছিলেন, তাঁর ধর্মপরায়ণতা ও বুদ্ধিমত্তায় পুরো আস্থা রেখেছিলেন, তবু বাস্তবে তাঁকে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ের পূর্ণ ক্ষমতা ও পদমর্যাদা প্রথমেই দেওয়া হলো না। ব্যক্তিগত সহকারীরূপে নিজের সান্নিধ্যে রেখে তাঁর বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্যই এমন করা হয়েছিল বলে তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে বরেণ্য মুসলিম মনীষীগণ মন্তব্য করেছেন। বরেণ্য অনেক তাফসিরবিদ লিখেছেন, এ সময়ই জুলায়খার স্বামী কিতফির মৃত্যুবরণ করে। পরে বাদশাহর উদ্যোগে বিধবা জুলায়খার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিবাহ সম্পন্ন হয়। তখন ইউসুফ (আ.) জুলায়খার উদ্দেশে বললেন, তুমি আগে যা চেয়েছিলে, যেভাবে চেয়েছিলে, সেই তুলনায় এটি কি অনেক উত্তম নয়? জুলায়খা নিজের দোষ স্বীকার করে তখন ইউসুফ (আ.)-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁদের দাম্পত্যজীবন সুখী হয়েছিল। দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল। তাদের একজনের নাম ছিল ইফরায়িম, অপরজনের নাম ছিল মানশা। বিভিন্ন বর্ণনায় আছে, বিবাহের পর আল্লাহ তায়ালা ইউসুফ (আ.)-এর অন্তরে জুলায়খার প্রতি গভীর ভালোবাসা ঢেলে দেন, যা আগে তাঁর মধ্যে ছিল না। এমনকি তাঁদের ভালোবাসায় জুলায়খার চেয়ে ইউসুফ (আ.)-ই এগিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি জুলায়খার কাছে জানতে চান, ব্যাপার কী, তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসছ না মনে হয়! জুলায়খা বললেন, আপনার অসিলায় আমি আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করেছি। সেখানে আপনার প্রেম ম্লান হয়ে গেছে! তাফসিরে কুরতুবি ও মাজহারিতেও ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর কুদরত ও লীলা বোঝা কঠিন। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে কখন কাকে কিভাবে সম্মান দান করেন, তা কেবল তিনিই জানেন। বান্দা হিসেবে আমাদের করণীয় হলো, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে সর্বদা সচেষ্ট থাকা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments