বিশ্লেষণ জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বার্তা
চার সিটি করপোরেশনেই বিরোধী দলের সব
প্রার্থীর জয় হলো। জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই ফলাফল সরকার ও বিরোধী
দলের জন্য নতুন বার্তা বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
তবে
সরকারি দল মনে করে, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া এই সরকারের জন্য একটি
বড় অর্জন। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তা নিরসনে এই ফলাফল
নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখানে জাতীয় রাজনীতি প্রাধান্য পেয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনে এ ফলাফল প্রভাব রাখতে পারে।
এম সাখাওয়াত মনে করেন, উভয় দলই এ নির্বাচনের ফলাফল আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করবে। আওয়ামী লীগ বলবে, দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, এটা তার প্রমাণ। আর বিরোধী দল বলবে, সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে। জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। ফলে পাল্টাপাল্টি দাবিতে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অনুষ্ঠিত এই চার সিটি করপোরেশন (রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চার প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন। পরাজিত হন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা। সাড়ে চার বছর পর গতকাল (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আগের প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপিও আগের তিন প্রার্থীকে বহাল রাখে। শুধু সিলেটে প্রার্থী পরিবর্তন করে আরিফুল হককে সমর্থন দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ২০০৮ সালের ৪ আগস্টের নির্বাচনের পাঁচ মাসের মাথায় ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল সিটি নির্বাচনের ফলাফল থেকেই।
সংবিধান অনুসারে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ-ছয় মাস পর নির্বাচন হবে। তাই এই ফলাফল আগামী জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছে পর্যবেক্ষক মহল।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচন হলেও এই চার সিটি নির্বাচনেই জাতীয় রাজনীতির বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে সাধারণত প্রার্থীর ব্যক্তিগত গুণাগুণ, যোগ্যতা, এলাকার উন্নয়ন ও আঞ্চলিকতা ভোটারদের কাছে বিবেচনায় থাকে। কিন্তু এ নির্বাচনে এলাকার সমস্যার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় রাজনীতি। উভয় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। সরকারি ও বিরোধী দল রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভোটাররাও নির্বাচনে সরকারের সফলতা-ব্যর্থতার মূল্যায়ন করেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট অনেক দিন ধরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়েও তাদের আপত্তিকর মনোভাব ছিল। ফলে এ নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশ নেওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিরোধী দল অংশ নেওয়ায় দেশে ইতিবাচক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একটা বড় অগ্রগতি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তা ছাড়া নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাও যথেষ্ট উজ্জীবিত হবেন।
এ নির্বাচনে সবচেয়ে চাপে ছিল সরকারি দল আওয়ামী লীগ। অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থান থাকায় এ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা বলেন, দলের বিজয়ের চেয়ে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ করার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে তাঁরা অন্তত দুটি সিটিতে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন। রাজশাহীতে ব্যাপক উন্নয়নকাজ হওয়ায় সেখানে জয়ের আশা করেছিলেন তাঁরা। বিশেষ করে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করে রাজশাহী শহরে আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় আওয়ামী লীগ জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী ছিল।
খুলনায়ও ব্যাপক উন্নয়নকাজ হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ দাবি করে। তা ছাড়া দলটি মনে করে, মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক একজন ভালো রাজনৈতিক সংগঠক হওয়ায় তিনি জিততে পারবেন। অপর দুই সিটিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে দলটির ধারণা ছিল। কিন্তু ফল দেখে মনে হচ্ছে, স্থানীয় উন্নয়ন ও প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রভাব বা ভাবমূর্তি কাজে লাগেনি। এ নির্বাচনে ভোটাররা আসলে সরকারের সফলতা-ব্যর্থতার মূল্যায়ন করেছেন।
নীতিনির্ধারকেরা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের ফল নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতে পারে জেনেও সরকার এতে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার নীতিতে সরকার অটল থেকেছে এবং সফল হয়েছে।
এই নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্যও বড় পরীক্ষা ছিল। বর্তমান কমিশনের অধীনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণে এটাই ছিল বড় নির্বাচন। বর্তমান কমিশন সম্পর্কেও বিরোধী দল সমালোচনামুখর ছিল। শেষ পর্যন্ত এই কমিশনের অধীনে যে নির্বাচন হলো, তাতে ভোটাররা পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখানে জাতীয় রাজনীতি প্রাধান্য পেয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনে এ ফলাফল প্রভাব রাখতে পারে।
এম সাখাওয়াত মনে করেন, উভয় দলই এ নির্বাচনের ফলাফল আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ব্যবহার করবে। আওয়ামী লীগ বলবে, দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, এটা তার প্রমাণ। আর বিরোধী দল বলবে, সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে। জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। ফলে পাল্টাপাল্টি দাবিতে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অনুষ্ঠিত এই চার সিটি করপোরেশন (রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চার প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন। পরাজিত হন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা। সাড়ে চার বছর পর গতকাল (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আগের প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপিও আগের তিন প্রার্থীকে বহাল রাখে। শুধু সিলেটে প্রার্থী পরিবর্তন করে আরিফুল হককে সমর্থন দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ২০০৮ সালের ৪ আগস্টের নির্বাচনের পাঁচ মাসের মাথায় ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল সিটি নির্বাচনের ফলাফল থেকেই।
সংবিধান অনুসারে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ-ছয় মাস পর নির্বাচন হবে। তাই এই ফলাফল আগামী জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছে পর্যবেক্ষক মহল।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচন হলেও এই চার সিটি নির্বাচনেই জাতীয় রাজনীতির বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে সাধারণত প্রার্থীর ব্যক্তিগত গুণাগুণ, যোগ্যতা, এলাকার উন্নয়ন ও আঞ্চলিকতা ভোটারদের কাছে বিবেচনায় থাকে। কিন্তু এ নির্বাচনে এলাকার সমস্যার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় রাজনীতি। উভয় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। সরকারি ও বিরোধী দল রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভোটাররাও নির্বাচনে সরকারের সফলতা-ব্যর্থতার মূল্যায়ন করেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট অনেক দিন ধরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়েও তাদের আপত্তিকর মনোভাব ছিল। ফলে এ নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশ নেওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিরোধী দল অংশ নেওয়ায় দেশে ইতিবাচক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একটা বড় অগ্রগতি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তা ছাড়া নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাও যথেষ্ট উজ্জীবিত হবেন।
এ নির্বাচনে সবচেয়ে চাপে ছিল সরকারি দল আওয়ামী লীগ। অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থান থাকায় এ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা বলেন, দলের বিজয়ের চেয়ে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ করার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে তাঁরা অন্তত দুটি সিটিতে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন। রাজশাহীতে ব্যাপক উন্নয়নকাজ হওয়ায় সেখানে জয়ের আশা করেছিলেন তাঁরা। বিশেষ করে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করে রাজশাহী শহরে আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় আওয়ামী লীগ জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী ছিল।
খুলনায়ও ব্যাপক উন্নয়নকাজ হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ দাবি করে। তা ছাড়া দলটি মনে করে, মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক একজন ভালো রাজনৈতিক সংগঠক হওয়ায় তিনি জিততে পারবেন। অপর দুই সিটিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে দলটির ধারণা ছিল। কিন্তু ফল দেখে মনে হচ্ছে, স্থানীয় উন্নয়ন ও প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রভাব বা ভাবমূর্তি কাজে লাগেনি। এ নির্বাচনে ভোটাররা আসলে সরকারের সফলতা-ব্যর্থতার মূল্যায়ন করেছেন।
নীতিনির্ধারকেরা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের ফল নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতে পারে জেনেও সরকার এতে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার নীতিতে সরকার অটল থেকেছে এবং সফল হয়েছে।
এই নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্যও বড় পরীক্ষা ছিল। বর্তমান কমিশনের অধীনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণে এটাই ছিল বড় নির্বাচন। বর্তমান কমিশন সম্পর্কেও বিরোধী দল সমালোচনামুখর ছিল। শেষ পর্যন্ত এই কমিশনের অধীনে যে নির্বাচন হলো, তাতে ভোটাররা পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
No comments