সিডনির মেলব্যাগ- প্রবাসে উপেক্ষিত জাতীয় দায়িত্ব ও রিমি প্রসঙ্গ by অজয় দাশ গুপ্ত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখনও তুঙ্গে। প্রবাসে বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলাদেশীদের সাথে আলাপ করে ও তাঁদের মতামত নিয়ে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, তিনিই এখনও শেষ আস্থা। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও দেশপ্রেমের মহত্ত্বে তাঁর তুলনা তিনি।
কিন্তু তিনি একা সব সামলাতে পারবেন না, সেটা বাস্তব নয়। দেশের কথা আলাদা, আমরা যদি প্রবাসে বা বহির্বিশ্বে চোখ রাখি দেখব, জননেত্রীর ভিশন মিশন বা কর্মকা-কে যতটা গতিবেগ দেয়া প্রয়োজন, তুলে ধরা দরকার ততটা হচ্ছে না। হচ্ছে না বলেই ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। বাড়ছে ব্যবধান। অতটা হবার যেমন কারণ নেই তেমনি নিরসনও কঠিন কিছু নয়।
সিডনির জনপ্রিয় ওয়েব পত্রিকা বাংলা সিডনি ডটকমের উদ্যোগে একটি ভিডিও টকশোতে যেতে হয়েছিল ঈদের পূর্বাহ্ণে। গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা, সেই শোতে কথা বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রবীণতম বাংলাদেশী অভিবাসী নজরুল ইসলাম। যিনি এ দেশে বিশেষত সিডনিতে গ্রামীণ ব্যাংক সংক্রান্ত যে কোন কার্যক্রমের মূল ব্যক্তি। এর গোড়াপত্তনও তাঁর হাতে। উপস্থাপক রফিকুল ইসলামও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রবাসীজন অর্থাৎ একা আমিই ছিলাম অন্য প্রান্তে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নোবেলজয়ী কোন বাঙালীকে অপমান বা অপদস্থ করতে অনিচ্ছুক। দরিদ্র হতপীড়িত, কুসংস্কার আর চুরি মস্তানি ভরা সমাজ ও উত্তেজনাপ্রবণ দেশে জ্ঞানী বা সম্মানিতদের অপমান করার ভেতর বাহাদুরি থাকে না। থাকে আত্মগ্লানি, একইভাবে গ্রামীণ ব্যাংক বা যে কোন প্রতিষ্ঠান কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। বর্তমান সরকার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা জন-ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। দেশের আর্থসামাজিক রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজিত অব্যবস্থা বা অনিয়ম দূরীকরণে তাঁরা যে কোন পদক্ষেপই নিতে পারেন। গ্রামীণ ব্যাংক ও তার পরিচালনা নিয়ে ত্রুটি-বিচ্যুতি নিরসনে তাঁদের পদক্ষেপগুলো নিন্দিত নন্দিত দুই-ই হতে পারে। কিন্তু তাকে ঘিরে বিদেশে লবিং, ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে সরকারের কার্যক্রম সøথ করে দেয়া বা ইমেজ খর্ব করার প্রচেষ্টা সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। যে টকশোটির কথা বলছিলাম, দুই প্রবাসী গ্রামীণ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে আমি সাধ্যমতো সেটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন সেখানে নয়, প্রশ্ন হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা নিজেদের কাজ করছেন, তাঁরা যুক্তিতর্কে নিজেদের কথা তুলে ধরতে সচেষ্ট। অন্যদিকে জননেত্রীর প্রতিনিধি বা সমর্থকরা নিজ কাজে ব্যস্ত। সিডনিতে আওয়ামী ঘেঁষা সংগঠন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমতি নেই, উৎসব, আনন্দ, শোক দিবস নিয়ে তাঁরা মঞ্চে আবির্ভূত হতে ভালবাসেন বটে, এহেন জরুরী বিষয়ে জনমত গঠন বা প্রবাসীদের সঠিক তথ্য বা চিত্র দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখি না। দূতাবাসের কাজই বা কি? তাঁরা প্রথাগত দিবস পালন আর স্থানীয় ওয়েবসাইটে ফটো ছাপা হবার আনন্দে মশগুল। অথচ এঁদের কর্তব্য ছিল কুয়াশা বা ধোঁয়াশা পরিস্থিতি স্পষ্ট করে তোলা। তাঁরা হয়ত ভাবেন ক্ষমতা বদলে সরকার বদলে গেলে কি জানি কি বিপদ হয় বা হতে পারে। এই দুশ্চিন্তা চলছে অনাদিকাল থেকে। চলবে বোধহয় আজীবন। ফলে ন্যূনতম একটি সেমিনার বা বিবৃতি বক্তব্যেও এ নিয়ে কথা বলেননি তাঁরা। কোন পক্ষ অবলম্বন না করেও বিষয়টিতে সরকারী ভূমিকার সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা অসম্ভব কিছু ছিল না, কিন্তু তা হয়নি।
এভাবেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নীতি ও আদর্শের প্রচার যথাযথ গুরুত্ব পায় না, অন্তত প্রবাসে। আজ বাংলাদেশের বাস্তবতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে। লাখ লাখ প্রবাসীর শ্রম মেধা অর্থের সাথে দেশের ভাগ্য ও ভবিষ্যত চলছে সমানে সমান। পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশীদের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত, চমৎকার ও স্বচ্ছ এক বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার বা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই বিরুদ্ধবাদী, ষড়যন্ত্রকারীরা নানা ছলে-অজুহাতে পানি ঘোলা করে তুলতে চায়। পঁচাত্তর থেকে আজ অবধি তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। এখন সময় এসেছে নিজেদের বক্তব্য ও মতামত সুষ্ঠুভাবে ছড়িয়ে দেয়ার।
একটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার সমালোচনা করা সহজ, কিন্তু এখনও এর বিকল্প তৈরি হয়নি। স্বাধীনতার ঘাতক দালাল, পুঁজিবাদী আমেরিকার চর, ভারতবিদ্বেষ ও ভারতপ্রেমে মজে যাওয়া দুশমনদের কারসাজি থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধাশ্রয়ী রাজনীতির বিকল্প নেই। বলা বাহুল্য, শেখ হাসিনাই এ বিষয়ে যোগ্য ও বিশ্বাসভাজন দেশপ্রিয় নেত্রী। তাঁকে সুরক্ষা দেয়া, তাঁর অনুসৃত নীতিকে যৌক্তিক মাপকাঠিতে বিচার করে দেশে-বিদেশে প্রচার করলে অকারণ বিবাদ-বিসম্বাদ কমে আসবে। দুর্ভাগ্য হাইকমিশনগুলোও সে কাজ করতে এগিয়ে আসে না। আমরা তবে কোথায় আশার সূর্য রেখা দেখতে পাব?
সিমিন হোসেন রিমির প্রার্থিতা সিডনির বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। রিমি সিডনিতে আসেন, অনেকের খোঁজখবর রাখেন, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সাথে সাক্ষাতও হয়েছে এই শহরে। আদর্শপ্রিয়, তাজউদ্দীনের মতই সরল ও ঋজু চরিত্রের রিমিকে মনোনয়ন দেয়ায় প্রবাসীরা স্বভাবতই উদ্বেলিত। এদ্দিন ধরে আওয়ামী লীগ বনাম সোহেল তাজের স্নায়ুযুদ্ধেরও অবসান হবে এতে। শহীদ তাজউদ্দীনের পরিবারের প্রতি নেত্রী শেখ হাসিনার মমত্ব ও ভাললাগার বহির্প্রকাশে যে কৃতজ্ঞতা তাতেও মুগ্ধ আমরা। সিমিন হোসেন রিমি গবেষণা, লেখালেখি, চলচ্চিত্র অর্থাৎ সংস্কৃতির বহুধা শাখায় বিচরণ করেন। তাঁর তেজ ও আদর্শবোধ আওয়ামী লীগের নতুনদের জন্য প্রয়োজনীয়ও বটে। প্রবাসীরা তাঁর সাফল্য প্রত্যাশী।
dasgi[taakpu@hotmail.com
সিডনির জনপ্রিয় ওয়েব পত্রিকা বাংলা সিডনি ডটকমের উদ্যোগে একটি ভিডিও টকশোতে যেতে হয়েছিল ঈদের পূর্বাহ্ণে। গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা, সেই শোতে কথা বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রবীণতম বাংলাদেশী অভিবাসী নজরুল ইসলাম। যিনি এ দেশে বিশেষত সিডনিতে গ্রামীণ ব্যাংক সংক্রান্ত যে কোন কার্যক্রমের মূল ব্যক্তি। এর গোড়াপত্তনও তাঁর হাতে। উপস্থাপক রফিকুল ইসলামও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রবাসীজন অর্থাৎ একা আমিই ছিলাম অন্য প্রান্তে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নোবেলজয়ী কোন বাঙালীকে অপমান বা অপদস্থ করতে অনিচ্ছুক। দরিদ্র হতপীড়িত, কুসংস্কার আর চুরি মস্তানি ভরা সমাজ ও উত্তেজনাপ্রবণ দেশে জ্ঞানী বা সম্মানিতদের অপমান করার ভেতর বাহাদুরি থাকে না। থাকে আত্মগ্লানি, একইভাবে গ্রামীণ ব্যাংক বা যে কোন প্রতিষ্ঠান কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। বর্তমান সরকার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা জন-ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। দেশের আর্থসামাজিক রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজিত অব্যবস্থা বা অনিয়ম দূরীকরণে তাঁরা যে কোন পদক্ষেপই নিতে পারেন। গ্রামীণ ব্যাংক ও তার পরিচালনা নিয়ে ত্রুটি-বিচ্যুতি নিরসনে তাঁদের পদক্ষেপগুলো নিন্দিত নন্দিত দুই-ই হতে পারে। কিন্তু তাকে ঘিরে বিদেশে লবিং, ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে সরকারের কার্যক্রম সøথ করে দেয়া বা ইমেজ খর্ব করার প্রচেষ্টা সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। যে টকশোটির কথা বলছিলাম, দুই প্রবাসী গ্রামীণ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে আমি সাধ্যমতো সেটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন সেখানে নয়, প্রশ্ন হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা নিজেদের কাজ করছেন, তাঁরা যুক্তিতর্কে নিজেদের কথা তুলে ধরতে সচেষ্ট। অন্যদিকে জননেত্রীর প্রতিনিধি বা সমর্থকরা নিজ কাজে ব্যস্ত। সিডনিতে আওয়ামী ঘেঁষা সংগঠন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমতি নেই, উৎসব, আনন্দ, শোক দিবস নিয়ে তাঁরা মঞ্চে আবির্ভূত হতে ভালবাসেন বটে, এহেন জরুরী বিষয়ে জনমত গঠন বা প্রবাসীদের সঠিক তথ্য বা চিত্র দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখি না। দূতাবাসের কাজই বা কি? তাঁরা প্রথাগত দিবস পালন আর স্থানীয় ওয়েবসাইটে ফটো ছাপা হবার আনন্দে মশগুল। অথচ এঁদের কর্তব্য ছিল কুয়াশা বা ধোঁয়াশা পরিস্থিতি স্পষ্ট করে তোলা। তাঁরা হয়ত ভাবেন ক্ষমতা বদলে সরকার বদলে গেলে কি জানি কি বিপদ হয় বা হতে পারে। এই দুশ্চিন্তা চলছে অনাদিকাল থেকে। চলবে বোধহয় আজীবন। ফলে ন্যূনতম একটি সেমিনার বা বিবৃতি বক্তব্যেও এ নিয়ে কথা বলেননি তাঁরা। কোন পক্ষ অবলম্বন না করেও বিষয়টিতে সরকারী ভূমিকার সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা অসম্ভব কিছু ছিল না, কিন্তু তা হয়নি।
এভাবেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নীতি ও আদর্শের প্রচার যথাযথ গুরুত্ব পায় না, অন্তত প্রবাসে। আজ বাংলাদেশের বাস্তবতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে। লাখ লাখ প্রবাসীর শ্রম মেধা অর্থের সাথে দেশের ভাগ্য ও ভবিষ্যত চলছে সমানে সমান। পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশীদের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত, চমৎকার ও স্বচ্ছ এক বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার বা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই বিরুদ্ধবাদী, ষড়যন্ত্রকারীরা নানা ছলে-অজুহাতে পানি ঘোলা করে তুলতে চায়। পঁচাত্তর থেকে আজ অবধি তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। এখন সময় এসেছে নিজেদের বক্তব্য ও মতামত সুষ্ঠুভাবে ছড়িয়ে দেয়ার।
একটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার সমালোচনা করা সহজ, কিন্তু এখনও এর বিকল্প তৈরি হয়নি। স্বাধীনতার ঘাতক দালাল, পুঁজিবাদী আমেরিকার চর, ভারতবিদ্বেষ ও ভারতপ্রেমে মজে যাওয়া দুশমনদের কারসাজি থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধাশ্রয়ী রাজনীতির বিকল্প নেই। বলা বাহুল্য, শেখ হাসিনাই এ বিষয়ে যোগ্য ও বিশ্বাসভাজন দেশপ্রিয় নেত্রী। তাঁকে সুরক্ষা দেয়া, তাঁর অনুসৃত নীতিকে যৌক্তিক মাপকাঠিতে বিচার করে দেশে-বিদেশে প্রচার করলে অকারণ বিবাদ-বিসম্বাদ কমে আসবে। দুর্ভাগ্য হাইকমিশনগুলোও সে কাজ করতে এগিয়ে আসে না। আমরা তবে কোথায় আশার সূর্য রেখা দেখতে পাব?
সিমিন হোসেন রিমির প্রার্থিতা সিডনির বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। রিমি সিডনিতে আসেন, অনেকের খোঁজখবর রাখেন, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সাথে সাক্ষাতও হয়েছে এই শহরে। আদর্শপ্রিয়, তাজউদ্দীনের মতই সরল ও ঋজু চরিত্রের রিমিকে মনোনয়ন দেয়ায় প্রবাসীরা স্বভাবতই উদ্বেলিত। এদ্দিন ধরে আওয়ামী লীগ বনাম সোহেল তাজের স্নায়ুযুদ্ধেরও অবসান হবে এতে। শহীদ তাজউদ্দীনের পরিবারের প্রতি নেত্রী শেখ হাসিনার মমত্ব ও ভাললাগার বহির্প্রকাশে যে কৃতজ্ঞতা তাতেও মুগ্ধ আমরা। সিমিন হোসেন রিমি গবেষণা, লেখালেখি, চলচ্চিত্র অর্থাৎ সংস্কৃতির বহুধা শাখায় বিচরণ করেন। তাঁর তেজ ও আদর্শবোধ আওয়ামী লীগের নতুনদের জন্য প্রয়োজনীয়ও বটে। প্রবাসীরা তাঁর সাফল্য প্রত্যাশী।
dasgi[taakpu@hotmail.com
No comments