ভিওআইপির অবৈধ বাণিজ্য-ছয় মোবাইল অপারেটরকে ছয় কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা by কাজী হাফিজ
ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল বা ভিওআইপির অবৈধ বাণিজ্যে সিম (সাবস্ক্রাইবার আইডেনটিটি মডিউল) বা রিম (রিমুভাল ইউজার আইডেনটিটি মডিউল) ব্যবহার হওয়ার কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানার টেলিটকসহ দেশের ছয় মোবাইল ফোন অপারেটরকে মোট ছয় কোটি ২৯ লাখ ২২ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর মধ্যে এয়ারটেলকে ভিওআইপিতে ব্যবহৃত তাদের ছয় হাজার ১৮৮টি সিমের জন্য সর্বোচ্চ দুই কোটি ৫৫ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিটিআরসির পক্ষ থেকে সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস ডিভিশনের পরিচালক লে. কর্নেল মো. রকিবুল হাসান এ জরিমানার টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে ছয় মোবাইল ফোন অপারেটরকে নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ গতকাল এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যথাযথভাবে গ্রাহক নিবন্ধন ছাড়াই মোবাইল ফোন অপারেটরদের সিম/রিম ভিওআইপির অবৈধ কারবারে ব্যবহৃত হচ্ছিল। আমাদের ধারণা, সঠিকভাবে গ্রাহক নিবন্ধন হলে দেশে ভিওআইপির অবৈধ বাণিজ্য অনেকটাই কমে যেত। কিন্তু মোবাইল ফোন অপারেটররা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় বিটিআরসি ও র্যাবের যৌথ অভিযানে ভিওআইপিতে ব্যবহৃত ১৩ হাজার সিম উদ্ধার করা হয়। সেখানে প্যাকেট বোঝাই অনিবন্ধিত সিমও পাওয়া যায়। ভিওআইপি কল শনাক্ত করার যন্ত্রের মাধ্যমেও অনেক সিম শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় আইন প্রয়োগ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। আমরা আশা করছি, এরপর মোবাইল অপারেটররা সতর্ক হবে।'
কার কত জরিমানা : বিটিআরসি টেলিটককে ভিওআইপিতে ব্যবহৃত তাদের এক হাজার ১২৪টি সিমের জন্য ৫৬ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার বা ৪৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা পরিশোধ করতে বলেছে। সিটিসেলকে বলা হয়েছে তাদের ১৫৬টি রিমের জন্য সাত হাজার ৯৫০ মার্কিন ডলার বা ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৫ টাকা দিতে। রবিকে বলা হয়েছে তাদের এক হাজার ৩০৯টি সিমের জন্য ৬৫ হাজার ৪৫০ ডলার বা ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫ টাকা পরিশোধ করতে। ওরাসকম টেলিকম বা বাংলালিংককে তাদের তিন হাজার ৮৫৭টি সিমের জন্য এক লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ ডালার বা এক কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার ১২৫ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। গ্রামীণফোনকে তাদের দুই হাজার ৬১৭টি সিমের জন্য পরিশোধ করতে বলা হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার ৮৫০ ডলার বা এক কোটি সাত লাখ ৯৫ হাজার ১২৫ টাকা।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, প্রতিটি সিমের জন্য ৫০ ডলার হিসাবে এ জরিমানা করা হয়েছে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিটিআরসি প্রথমে এ ধরনের অপরাধে প্রতিটি সিমের জন্য ১০ ডলার জরিমানার বিধান করে। পরে ওই সময়েই এ জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ ডলার করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অনেকবার চেষ্টা করেও টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তাঁর মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। এয়ারটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিষয়টি জেনেছে কিন্তু এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছে না। গ্রামীণফোনের করপোরেট কমিউনিকেশনসের প্রধান তাহমীদ আজিজুল হক গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা বিষয়টি জেনেছি। বিটিআরসি থেকে আজই আমাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের অভিযোগের বিষয়টি বিশ্লেষণের আগে এখন কোনো মন্তব্য করার অবস্থানে আমরা নেই।'
১০ সেকেন্ড পালস বিষয়ে বিটিআরসির সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত : এদিকে গ্রাহকদের জন্য সব ধরনের প্যাকেজে ১০ সেকেন্ড পালসের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের আপত্তি-আবেদন বিটিআরসি গ্রহণ করেনি। গতকাল বিটিআরসি ছয় মোবাইল অপারেটরকে জানিয়ে দিয়েছে, নির্ধারিত সময় ১৫ আগস্টের (আজ) মধ্যে এ সুবিধা চালু করতে হবে। তা না হলে বিষয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্সের শর্ত এবং 'বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১'-এর লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।
এদিকে এই নির্দেশনা সম্পর্কে দ্বিমত প্রকাশ করে মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসিকে জানায়, এটা অবাস্তব এবং অযৌক্তিক। গত ৬ আগস্ট বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ দ্বিমতের কথা জানান।
বিটিআরসির গতকালের দ্বিতীয় নির্দেশনায় বলা হয়, অপারেটররা গ্রাহকদের ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা দেওয়ার নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ না করে সময়ক্ষেপণের জন্য অ্যামটবের মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য তুলে ধরেছে, যা তাদের কাছ থেকে মোটেই কাম্য নয়। গত ১৫ বছরে দেশের মোবাইল ফোন সেবার ব্যবসায় অনেক পরিপক্বতা এসেছে। এই পর্যায়ে শুধু ব্যবসায়িক সুবিধার কথা বিবেচনা না করে ব্যবসায়িক নৈতিকতা এবং গ্রাহকস্বার্থ রক্ষার্থে যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত বিলিং সাইকল প্রবর্তন করা সংশ্লিষ্ট সবার কাম্য। একজন গ্রাহক মোবাইল ফোনে যতটুক সময় কথা বলবে, ঠিক ততটুকু সময়ের জন্য বিল দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু অপারেটরদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় এনে তা এত দিন বাধ্যতামূলক করা হয়নি। বর্তমান অবস্থায় প্যাকেজ-নির্বিশেষে ভয়েস কল (আইভিআরসহ) সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ড পালস বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোচনা বা বিলম্বের কোনো অবকাশ নেই।
গতকাল মঙ্গলবার বিটিআরসির পক্ষ থেকে সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস ডিভিশনের পরিচালক লে. কর্নেল মো. রকিবুল হাসান এ জরিমানার টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে ছয় মোবাইল ফোন অপারেটরকে নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ গতকাল এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যথাযথভাবে গ্রাহক নিবন্ধন ছাড়াই মোবাইল ফোন অপারেটরদের সিম/রিম ভিওআইপির অবৈধ কারবারে ব্যবহৃত হচ্ছিল। আমাদের ধারণা, সঠিকভাবে গ্রাহক নিবন্ধন হলে দেশে ভিওআইপির অবৈধ বাণিজ্য অনেকটাই কমে যেত। কিন্তু মোবাইল ফোন অপারেটররা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় বিটিআরসি ও র্যাবের যৌথ অভিযানে ভিওআইপিতে ব্যবহৃত ১৩ হাজার সিম উদ্ধার করা হয়। সেখানে প্যাকেট বোঝাই অনিবন্ধিত সিমও পাওয়া যায়। ভিওআইপি কল শনাক্ত করার যন্ত্রের মাধ্যমেও অনেক সিম শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় আইন প্রয়োগ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। আমরা আশা করছি, এরপর মোবাইল অপারেটররা সতর্ক হবে।'
কার কত জরিমানা : বিটিআরসি টেলিটককে ভিওআইপিতে ব্যবহৃত তাদের এক হাজার ১২৪টি সিমের জন্য ৫৬ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার বা ৪৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা পরিশোধ করতে বলেছে। সিটিসেলকে বলা হয়েছে তাদের ১৫৬টি রিমের জন্য সাত হাজার ৯৫০ মার্কিন ডলার বা ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৫ টাকা দিতে। রবিকে বলা হয়েছে তাদের এক হাজার ৩০৯টি সিমের জন্য ৬৫ হাজার ৪৫০ ডলার বা ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫ টাকা পরিশোধ করতে। ওরাসকম টেলিকম বা বাংলালিংককে তাদের তিন হাজার ৮৫৭টি সিমের জন্য এক লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ ডালার বা এক কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার ১২৫ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। গ্রামীণফোনকে তাদের দুই হাজার ৬১৭টি সিমের জন্য পরিশোধ করতে বলা হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার ৮৫০ ডলার বা এক কোটি সাত লাখ ৯৫ হাজার ১২৫ টাকা।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, প্রতিটি সিমের জন্য ৫০ ডলার হিসাবে এ জরিমানা করা হয়েছে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিটিআরসি প্রথমে এ ধরনের অপরাধে প্রতিটি সিমের জন্য ১০ ডলার জরিমানার বিধান করে। পরে ওই সময়েই এ জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ ডলার করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অনেকবার চেষ্টা করেও টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তাঁর মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। এয়ারটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিষয়টি জেনেছে কিন্তু এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছে না। গ্রামীণফোনের করপোরেট কমিউনিকেশনসের প্রধান তাহমীদ আজিজুল হক গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা বিষয়টি জেনেছি। বিটিআরসি থেকে আজই আমাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের অভিযোগের বিষয়টি বিশ্লেষণের আগে এখন কোনো মন্তব্য করার অবস্থানে আমরা নেই।'
১০ সেকেন্ড পালস বিষয়ে বিটিআরসির সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত : এদিকে গ্রাহকদের জন্য সব ধরনের প্যাকেজে ১০ সেকেন্ড পালসের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের আপত্তি-আবেদন বিটিআরসি গ্রহণ করেনি। গতকাল বিটিআরসি ছয় মোবাইল অপারেটরকে জানিয়ে দিয়েছে, নির্ধারিত সময় ১৫ আগস্টের (আজ) মধ্যে এ সুবিধা চালু করতে হবে। তা না হলে বিষয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর লাইসেন্সের শর্ত এবং 'বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১'-এর লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।
এদিকে এই নির্দেশনা সম্পর্কে দ্বিমত প্রকাশ করে মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসিকে জানায়, এটা অবাস্তব এবং অযৌক্তিক। গত ৬ আগস্ট বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ দ্বিমতের কথা জানান।
বিটিআরসির গতকালের দ্বিতীয় নির্দেশনায় বলা হয়, অপারেটররা গ্রাহকদের ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা দেওয়ার নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ না করে সময়ক্ষেপণের জন্য অ্যামটবের মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য তুলে ধরেছে, যা তাদের কাছ থেকে মোটেই কাম্য নয়। গত ১৫ বছরে দেশের মোবাইল ফোন সেবার ব্যবসায় অনেক পরিপক্বতা এসেছে। এই পর্যায়ে শুধু ব্যবসায়িক সুবিধার কথা বিবেচনা না করে ব্যবসায়িক নৈতিকতা এবং গ্রাহকস্বার্থ রক্ষার্থে যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত বিলিং সাইকল প্রবর্তন করা সংশ্লিষ্ট সবার কাম্য। একজন গ্রাহক মোবাইল ফোনে যতটুক সময় কথা বলবে, ঠিক ততটুকু সময়ের জন্য বিল দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু অপারেটরদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় এনে তা এত দিন বাধ্যতামূলক করা হয়নি। বর্তমান অবস্থায় প্যাকেজ-নির্বিশেষে ভয়েস কল (আইভিআরসহ) সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ড পালস বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোচনা বা বিলম্বের কোনো অবকাশ নেই।
No comments