কোরবানি পশুর হাট-বিড়ম্বনার শেষ কবে?
রাজধানীতে কোরবানির হাট ইজারা নিয়ে অচলাবস্থার যে খবর রোববারের সমকালে প্রকাশ হয়েছে, তা আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না। প্রতিবারই আমরা বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করি_ ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করে ধর্মপ্রাণ মুসলমান যখন ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হতে চায়, তখন পশুর হাট নিয়ে একটি শ্রেণী অতি মুনাফার পাঁয়তারা করে।
হাটকেন্দ্রিক মধ্যস্বত্বভোগীদের অনিয়মের কারণে যেমন বিক্রেতা, তেমনই ক্রেতা বঞ্চিত হন ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে। পশুর হাটে অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগও থাকে এন্তার। এ বছর বিভক্ত সিটি করপোরেশনের ২০টি হাটের মধ্যে অন্তত আটটিতে কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদারদের বিরোধ অসন্তোষের বোঝার ওপর শাকের আঁটি হিসেবে হাজির হয়েছে। সমকালের প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, নিলামে ওই হাটগুলোর কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়ার কারণেই ইজারা বিলম্বিত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কর্মকর্তারা বলছেন, ইজারাদাররা সিন্ডিকেট করে অস্বাভাবিক কম দরে হাট নিতে চাইছেন। ইজারাদাররা অবশ্য স্থান সংকোচনের কথা বলেছেন। কিন্তু তার জন্য ইজারামূল্যে গত বছরের সঙ্গে যে ব্যবধান তৈরি হয়েছে, তা অবিশ্বাস্যই মনে হয়। যেমন তালতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাট গতবার এক কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ইজারা হয়েছিল। এবার যখন সেই হাট শুধু ৩৭ লাখ টাকা নিলাম ওঠে, তখন সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। এটাও স্পষ্ট যে, এ ধরনের কারসাজির নেপথ্যে থাকে রাজনৈতিক প্রভাব। কিন্তু তাই বলে কর্তৃপক্ষের ইজারা বন্ধ বা বিলম্বিত রাখার যুক্তি নেই। মনে রাখা জরুরি, ঈদের দিন ঘনিয়ে আসছে। সময়মতো হাট ব্যবস্থাপনা না হলে ভুগতে হবে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকেই। কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, অভিযোগ না করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। সিন্ডিকেট শায়েস্তা করতে সিটি করপোরেশন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিতে পারে। নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে সিন্ডিকেটের বাইরে অনেকেই নিলামে অংশ নিতে আগ্রহী হবেন, তাতে সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে কোরবানির হাট ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী নীতি প্রণয়নেও উদ্যোগী হওয়া উচিত। তাতে করে ঝামেলা ও বিড়ম্বনা অনেক কমবে।
No comments