‘ব্যক্তিগত নয় এটা পুরো জাতির ব্যাপার’
পদত্যাগের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছেন দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। স্বাভাবিকভাবেই কাল ছিলেন আগ্রহের কেন্দ্রে। এমনিতে স্বল্পভাষী আকরাম খান কাল খুলে দিলেন আক্ষেপ, অভিযোগ আর হতাশার ঝাঁপি। জানালেন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট, সঙ্গে ভবিষ্যৎ ভাবনাও...
পদত্যাগের কারণ...
আকরাম খান: প্রধান নির্বাচক হিসেবে অনেক সময়ই মনে হতো কিছু ক্রিকেটারের প্রতি আমি অন্যায় করতে বাধ্য হচ্ছি, কিন্তু কিছু করতে পারছি না। এসব নিয়ে আমি বরাবরই খুব অস্বস্তিতে ছিলাম। তবে আশা করতাম, হয়তো আস্তে আস্তে ঠিক হবে। কিন্তু দিন দিন এসব আরও বেশি হচ্ছিল। এ জন্যই সরে দাঁড়িয়েছি। কারণ এটা ব্যক্তিগত কোনো ব্যাপার নয়, পুরো জাতির ব্যাপার। আমার একটা সিদ্ধান্তে দেশের ক্রিকেট লাভবান হতে পারে, আবার অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারে। চিন্তা করে দেখলাম, যেহেতু ঠিকভাবে কাজ করতে পারছি না, তখন সরে দাঁড়ানোই ভালো।
কখন থেকে মনে হচ্ছে কাজ করা মুশকিল...
আকরাম: যখন প্রধান নির্বাচক ছিলাম না, তখন অনেক ব্যাপারই হয়তো আমি জানতাম না। প্রধান নির্বাচক হওয়ার পর থেকেই কিছু সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেক কিছুই করতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। একটা সময় দেখা গেল, দায়টা আমার ওপরই পড়ছে, আমি খারাপ হয়ে যাচ্ছি। এ জন্যই সরে দাঁড়ানো।
সর্বশেষ যে ঘটনায় পদত্যাগ...
আকরাম: এসিসি যেহেতু ১৫ জন চেয়েছে, আমরা ১৫ জনের দলই দিয়েছিলাম। কিন্তু তামিমকে এখান থেকে স্ট্যান্ডবাইয়ে পাঠিয়ে ১৪ জন করা হয়েছে। তামিমের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ফিজিওর রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, ডাক্তারের রিপোর্টও পেয়েছি। দুজনই বলেছেন ওকে আমরা দলে বিবেচনা করতে পারি। এরপর আমরা তিনজন ওকে রেখেছিলাম। সেটি পরিবর্তন করা হয়েছে, আমাকে জানানোও হয়নি। আমি জানতে পেরেছি বোর্ডের মেইল পেয়ে, যেটা আমার খুবই খারাপ লেগেছে। আমি প্রধান নির্বাচক হওয়ার পর থেকে একটা না একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছেই।
এর আগে হস্তক্ষেপের উদাহরণ...
আকরাম: সব এখনই বলব না। একটা ঘটনা ঘটেছিল আশরাফুলকে নিয়ে। আশরাফুল যখন পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট খেলেছে, তখন চার নম্বরের জন্য লড়াইয়ে ছিল রকিবুল ও শুভাগত। আমরা ওদের ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাঠিয়েছি ‘এ’ দলের হয়ে খেলার জন্য, ওরা ওখানে রান পায়নি। কিন্তু আশরাফুল রান করছিল। আলাপ-আলোচনা করে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে নেওয়ার সময় ওকে বলা হয়েছিল, দুটি টেস্টই খেলানো হবে। কিন্তু একটা টেস্টে খারাপ করার পর দুটি টেস্ট আমরা কিন্তু ওকে খেলাতে পারিনি। একটা টেস্টে খারাপ করতেই পারে, কিন্তু আমরা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।
এই সিদ্ধান্তে তামিম ইকবালের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কোনো ভূমিকা আছে কিনা...
আকরাম: এটা পুরোটাই ভুল একটা ধারণা। শুধু তামিম কেন, আশরাফুলের মতো ক্রিকেটারকে আমরা এখন চাইলেও দলে ডাকতে পারছি না। শাহরিয়ার নাফীসের মতো ক্রিকেটার আমার কারণে কিংবা বোর্ড কর্মকর্তাদের কারণে অস্বস্তিকর অবস্থায় আছে। এখন তামিমের মতো প্রতিষ্ঠিত একজন ক্রিকেটারকে নড়বড়ে করে দেওয়া হলো। এমন আরও কয়েকজন আছে, দুই দিন আগেও যাদের দলে থিতু বলে মনে হয়েছে, তারাও এখন নড়বড়ে। একটা দলের জন্য এটা মোটেও ভালো নয়। একটা কথা আমি না বলে পারছি না, একটা দল তখনই সাফল্য পায়, যখন দলে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার বেশি থাকে। বিশ্বের যেকোনো দেশেই একটি পজিশনে অনেক দিন ধরে যে খেলছে, সে-ই কিন্তু বেশি ভালো করে। শুরু থেকেই আমাদের নির্বাচক কমিটির একটা লক্ষ্য ছিল, আমরা এমন একটা দল গড়ব, যেখানে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার বেশি থাকবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটারদের আমরা নড়বড়ে করে দিয়েছি।
আরেক নির্বাচক মিনহাজুল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, দলটা আমাদেরই...
আকরাম: এটা নিশ্চিত, ১৫ জন থেকে একজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে কাগজটা আছে, চাইলে আমি দেখাতে পারি।
বোর্ড প্রেসিডেন্টের দল অনুমোদনের নিয়ম প্রসঙ্গে...
আকরাম: আমরা সাইন করার আগে কেউ মতামত দিতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, সবার মতামত নেওয়ার পর চূড়ান্তভাবে আমরা যখন সাইন করব, এরপর যেন পরিবর্তন করা না হয়। আমি শুরু থেকেই এটা বলে আসছি। কিন্তু আমরা সাইন করার পর এই প্রথম পরিবর্তন করা হলো।
সমস্যা সমাধানের পথ...
আকরাম: সবাইকে যার যার নিজের দায়িত্বটা বুঝতে হবে এবং সেটা পালন করতে হবে। আমার জবাবদিহি অবশ্যই থাকবে। তবে আমি কাজ করতে পারব না, কিন্তু জবাবদিহি করতে হবে আমাকে, তাহলে তো হয় না।
ছাড়ার সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন ছিল...
আকরাম: কঠিন তো ছিলই। ২০০৭-এর এপ্রিলে অবসর নেওয়ার পর জুনে নির্বাচক কমিটিকে এলাম। এরপর গত জুনে প্রধান নির্বাচক। ক্রিকেট ছাড়ার পর এই প্রথম সত্যিকারের ব্রেক...এখনো ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু ভাবছি না। আমি এখনো মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিনি।
বোর্ড প্রেসিডেন্ট ডাকলে...
আকরাম: সিদ্ধান্ত বদলাব না...ডাকলে আমি অবশ্যই যাব। সাত-আট মাস কাজ করেছি, কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ বলব।
আকরাম খান: প্রধান নির্বাচক হিসেবে অনেক সময়ই মনে হতো কিছু ক্রিকেটারের প্রতি আমি অন্যায় করতে বাধ্য হচ্ছি, কিন্তু কিছু করতে পারছি না। এসব নিয়ে আমি বরাবরই খুব অস্বস্তিতে ছিলাম। তবে আশা করতাম, হয়তো আস্তে আস্তে ঠিক হবে। কিন্তু দিন দিন এসব আরও বেশি হচ্ছিল। এ জন্যই সরে দাঁড়িয়েছি। কারণ এটা ব্যক্তিগত কোনো ব্যাপার নয়, পুরো জাতির ব্যাপার। আমার একটা সিদ্ধান্তে দেশের ক্রিকেট লাভবান হতে পারে, আবার অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারে। চিন্তা করে দেখলাম, যেহেতু ঠিকভাবে কাজ করতে পারছি না, তখন সরে দাঁড়ানোই ভালো।
কখন থেকে মনে হচ্ছে কাজ করা মুশকিল...
আকরাম: যখন প্রধান নির্বাচক ছিলাম না, তখন অনেক ব্যাপারই হয়তো আমি জানতাম না। প্রধান নির্বাচক হওয়ার পর থেকেই কিছু সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেক কিছুই করতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। একটা সময় দেখা গেল, দায়টা আমার ওপরই পড়ছে, আমি খারাপ হয়ে যাচ্ছি। এ জন্যই সরে দাঁড়ানো।
সর্বশেষ যে ঘটনায় পদত্যাগ...
আকরাম: এসিসি যেহেতু ১৫ জন চেয়েছে, আমরা ১৫ জনের দলই দিয়েছিলাম। কিন্তু তামিমকে এখান থেকে স্ট্যান্ডবাইয়ে পাঠিয়ে ১৪ জন করা হয়েছে। তামিমের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ফিজিওর রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, ডাক্তারের রিপোর্টও পেয়েছি। দুজনই বলেছেন ওকে আমরা দলে বিবেচনা করতে পারি। এরপর আমরা তিনজন ওকে রেখেছিলাম। সেটি পরিবর্তন করা হয়েছে, আমাকে জানানোও হয়নি। আমি জানতে পেরেছি বোর্ডের মেইল পেয়ে, যেটা আমার খুবই খারাপ লেগেছে। আমি প্রধান নির্বাচক হওয়ার পর থেকে একটা না একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছেই।
এর আগে হস্তক্ষেপের উদাহরণ...
আকরাম: সব এখনই বলব না। একটা ঘটনা ঘটেছিল আশরাফুলকে নিয়ে। আশরাফুল যখন পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট খেলেছে, তখন চার নম্বরের জন্য লড়াইয়ে ছিল রকিবুল ও শুভাগত। আমরা ওদের ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাঠিয়েছি ‘এ’ দলের হয়ে খেলার জন্য, ওরা ওখানে রান পায়নি। কিন্তু আশরাফুল রান করছিল। আলাপ-আলোচনা করে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে নেওয়ার সময় ওকে বলা হয়েছিল, দুটি টেস্টই খেলানো হবে। কিন্তু একটা টেস্টে খারাপ করার পর দুটি টেস্ট আমরা কিন্তু ওকে খেলাতে পারিনি। একটা টেস্টে খারাপ করতেই পারে, কিন্তু আমরা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।
এই সিদ্ধান্তে তামিম ইকবালের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কোনো ভূমিকা আছে কিনা...
আকরাম: এটা পুরোটাই ভুল একটা ধারণা। শুধু তামিম কেন, আশরাফুলের মতো ক্রিকেটারকে আমরা এখন চাইলেও দলে ডাকতে পারছি না। শাহরিয়ার নাফীসের মতো ক্রিকেটার আমার কারণে কিংবা বোর্ড কর্মকর্তাদের কারণে অস্বস্তিকর অবস্থায় আছে। এখন তামিমের মতো প্রতিষ্ঠিত একজন ক্রিকেটারকে নড়বড়ে করে দেওয়া হলো। এমন আরও কয়েকজন আছে, দুই দিন আগেও যাদের দলে থিতু বলে মনে হয়েছে, তারাও এখন নড়বড়ে। একটা দলের জন্য এটা মোটেও ভালো নয়। একটা কথা আমি না বলে পারছি না, একটা দল তখনই সাফল্য পায়, যখন দলে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার বেশি থাকে। বিশ্বের যেকোনো দেশেই একটি পজিশনে অনেক দিন ধরে যে খেলছে, সে-ই কিন্তু বেশি ভালো করে। শুরু থেকেই আমাদের নির্বাচক কমিটির একটা লক্ষ্য ছিল, আমরা এমন একটা দল গড়ব, যেখানে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার বেশি থাকবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটারদের আমরা নড়বড়ে করে দিয়েছি।
আরেক নির্বাচক মিনহাজুল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, দলটা আমাদেরই...
আকরাম: এটা নিশ্চিত, ১৫ জন থেকে একজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে কাগজটা আছে, চাইলে আমি দেখাতে পারি।
বোর্ড প্রেসিডেন্টের দল অনুমোদনের নিয়ম প্রসঙ্গে...
আকরাম: আমরা সাইন করার আগে কেউ মতামত দিতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, সবার মতামত নেওয়ার পর চূড়ান্তভাবে আমরা যখন সাইন করব, এরপর যেন পরিবর্তন করা না হয়। আমি শুরু থেকেই এটা বলে আসছি। কিন্তু আমরা সাইন করার পর এই প্রথম পরিবর্তন করা হলো।
সমস্যা সমাধানের পথ...
আকরাম: সবাইকে যার যার নিজের দায়িত্বটা বুঝতে হবে এবং সেটা পালন করতে হবে। আমার জবাবদিহি অবশ্যই থাকবে। তবে আমি কাজ করতে পারব না, কিন্তু জবাবদিহি করতে হবে আমাকে, তাহলে তো হয় না।
ছাড়ার সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন ছিল...
আকরাম: কঠিন তো ছিলই। ২০০৭-এর এপ্রিলে অবসর নেওয়ার পর জুনে নির্বাচক কমিটিকে এলাম। এরপর গত জুনে প্রধান নির্বাচক। ক্রিকেট ছাড়ার পর এই প্রথম সত্যিকারের ব্রেক...এখনো ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু ভাবছি না। আমি এখনো মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিনি।
বোর্ড প্রেসিডেন্ট ডাকলে...
আকরাম: সিদ্ধান্ত বদলাব না...ডাকলে আমি অবশ্যই যাব। সাত-আট মাস কাজ করেছি, কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ বলব।
No comments