নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতেই সমাধান খুঁজতে হবে-সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী
জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কি সংঘাতের রাজনীতির দ্বারপ্রান্তে? এখন স্বাভাবিকভাবেই সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হবে। ত্রয়োদশ সংশোধনী ত্রুটিমুক্ত ছিল না।
কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বাস্তবানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়াই একতরফাভাবে তা বাতিল করা হলো। বিলটি পাসের পর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, ‘এর মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের সব সম্ভাবনা তিরোহিত হলো। এই অপচেষ্টায় দেশে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠল। গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের সব পথ রুদ্ধ হয়ে গেল।’ অন্যদিকে, সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আলোচনার পথ খোলা আছে।’ তিনি আবারও সংবিধান সংশোধনের মনোভাবও ব্যক্ত করেন। আমরা মনে করি, পথ যে সত্যিই খোলা রয়েছে, সেটা বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপনের দায়দায়িত্ব এখন আরও বেশি মাত্রায় সরকারি দলের ওপরই বর্তাবে। আর তাই আপিল বিভাগের রায়কে এখনো বেশ ভরসাপূর্ণ বলেই আমরা গণ্য করি।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস করা হয়েছে উচ্চ আদালতের রায় মেনে। কিন্তু বড় প্রশ্ন হলো, আড়াই বছর বাকি থাকতে কেন তড়িঘড়ি করে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করতে হলো? বাতিল করে সংলাপ, আর বহাল রেখে সংলাপের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এক নয়। গত ৩০ মে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া সংসদের বিশেষ কমিটির প্রথম খসড়া প্রতিবেদনে ত্রয়োদশ সংশোধনী বহাল রাখা হয়েছিল। বিশেষ কমিটির সেই অবস্থান আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ ছিল।
আমাদের মনে হয়, এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য অপেক্ষা করারও সুযোগ ছিল। আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশে আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় হতে পারে বলে স্পষ্ট মন্তব্য করা হয়েছে। সংবিধানের সংশোধনী সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অন্তত আগামী দুই মেয়াদে যে বিদ্যমান ব্যবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা এড়ানো যায়—এই ভাবনাটি সরকারের আচরণে পরিলক্ষিত হয়নি। প্রধান বিরোধী দল ও তার শরিকেরা দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকার কীভাবে তার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে, এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সরকারের উচিত এই প্রশ্নটির যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশের ভোট পায় যে বিরোধী দল, তাদের সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা বাস্তবসম্মত কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। অন্যদিকে, বিরোধী দলকে বুঝতে হবে, তারা প্রধান উপদেষ্টা পদে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অস্বীকার করে একধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। তাদের বর্তমান অবস্থান ২০০৬ সালের আওয়ামী লীগের সঙ্গে তুলনীয়। বর্তমান রাষ্ট্রপতি তাঁর পূর্বসূরির ভূমিকা নিলে বিএনপি তা মানবে না বলেই বলে ধরে নেওয়া যায়। সুতরাং, তাদেরও আলোচনায় যেতে হবে। বিরোধী দলের উচিত জাতীয় সংসদকে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার প্রধান জায়গা হিসেবে নেওয়া। সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় না বসার ক্রমাগত বিরোধিতার, বৈরিতার, অসহযোগিতার কৌশল সুস্থ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে না। দেশ ও জাতির স্বার্থে উভয় পক্ষকে সুষ্ঠু নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক পদ্ধতিতে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস করা হয়েছে উচ্চ আদালতের রায় মেনে। কিন্তু বড় প্রশ্ন হলো, আড়াই বছর বাকি থাকতে কেন তড়িঘড়ি করে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করতে হলো? বাতিল করে সংলাপ, আর বহাল রেখে সংলাপের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এক নয়। গত ৩০ মে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া সংসদের বিশেষ কমিটির প্রথম খসড়া প্রতিবেদনে ত্রয়োদশ সংশোধনী বহাল রাখা হয়েছিল। বিশেষ কমিটির সেই অবস্থান আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ ছিল।
আমাদের মনে হয়, এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য অপেক্ষা করারও সুযোগ ছিল। আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশে আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় হতে পারে বলে স্পষ্ট মন্তব্য করা হয়েছে। সংবিধানের সংশোধনী সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অন্তত আগামী দুই মেয়াদে যে বিদ্যমান ব্যবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা এড়ানো যায়—এই ভাবনাটি সরকারের আচরণে পরিলক্ষিত হয়নি। প্রধান বিরোধী দল ও তার শরিকেরা দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকার কীভাবে তার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে, এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সরকারের উচিত এই প্রশ্নটির যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশের ভোট পায় যে বিরোধী দল, তাদের সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা বাস্তবসম্মত কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। অন্যদিকে, বিরোধী দলকে বুঝতে হবে, তারা প্রধান উপদেষ্টা পদে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অস্বীকার করে একধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। তাদের বর্তমান অবস্থান ২০০৬ সালের আওয়ামী লীগের সঙ্গে তুলনীয়। বর্তমান রাষ্ট্রপতি তাঁর পূর্বসূরির ভূমিকা নিলে বিএনপি তা মানবে না বলেই বলে ধরে নেওয়া যায়। সুতরাং, তাদেরও আলোচনায় যেতে হবে। বিরোধী দলের উচিত জাতীয় সংসদকে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার প্রধান জায়গা হিসেবে নেওয়া। সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় না বসার ক্রমাগত বিরোধিতার, বৈরিতার, অসহযোগিতার কৌশল সুস্থ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে না। দেশ ও জাতির স্বার্থে উভয় পক্ষকে সুষ্ঠু নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক পদ্ধতিতে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
No comments