রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অনুমোদন কাম্য নয়-নতুন ব্যাংকের প্রয়োজন আছে কি?
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১১-১২ অর্থবছরের মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে দেশে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। আগামী মাস (জুলাই) থেকে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির জন্য দরখাস্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানিছেন।
তাঁর এই ঘোষণা সংশ্লিষ্ট মহলে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রথমত, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নতুন ব্যাংক বা বিমা কোম্পানির প্রয়োজন আছে কি না। দ্বিতীয়ত, নতুন ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের এখতিয়ার কার?
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩১ ধারায় ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২-এ সরকার বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে নতুন নির্দেশনা দিতে পারবে বলে যে কথা বলা হয়েছিল, ২০০৩ সালে তা তুলে নেওয়া হয়। ফলে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের করণীয় কিছু নেই। সম্প্রতি সরকার নতুন আইন করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করলেও সেটি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংক নয়, বিশেষায়িত ব্যাংক। অনাবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে আরেকটি বিশেষায়িত ব্যাংক করার ব্যাপারেও তিনটি দরখাস্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়েছে। এ ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের।
এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রীর উল্লেখিত ঘোষণায় স্বভাবতই এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিস্মিত হয়েছেন। একই সঙ্গে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলারও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে কাঠামো ও বিস্তার, তাতে ১৫-১৬টি ব্যাংক থাকাই যথেষ্ট। কিন্তু বর্তমানে দেশে ৪৯টি ব্যাংক আছে, যার মধ্যে ৩০টি বেসরকারি। এ ছাড়া বিদেশি মালিকানাধীন নয়টি ব্যাংক আছে। বিমা কোম্পানি রয়েছে ৬২টি, যার মধ্যে জীবন বিমা ১৯টি এবং সাধারণ বিমা ৪২টি। বর্তমানে এই ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না—এমন অভিযোগ কোনো মহল থেকেই ওঠেনি। বরং অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।
তার পরও যদি যুক্তির খাতিরে ধরেও নিই যে দেশে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির প্রয়োজন আছে, সে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের এখতিয়ারে ছেড়ে দিতে হবে। নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই দরখাস্ত আহ্বান করবে। অর্থ মন্ত্রণালয় দরখাস্ত আহ্বান করলে রাজনীতিকরণের সুযোগ থাকে। আর্থিক খাতে রাজনৈতিক প্রভাব বা দলীয় বিবেচনা বাঞ্ছনীয় নয়। অবশ্য বিমা কোম্পানি অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের। তবে সে ক্ষেত্রেও দলীয় বিবেচনার বদলে পেশাগত দক্ষতা অভিজ্ঞতা অগ্রাধিকার পাবে, সেটাই সবার প্রত্যাশা।
অতীতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার একাধিক নজির রয়েছে। দলীয় লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার দৃষ্টান্তও কম নয়। আবার অসাধু উদ্যোক্তাদের পাল্লায় পড়ে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছিল; যার খেসারত কেবল গ্রাহকদেরই দিতে হয়নি, সরকারকেও দিতে হয়েছে। কোথাও বা প্রশাসক বসিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়েছে। এসব নজির থাকা সত্ত্বেও নির্বিচারে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি খোলার কোনো যুক্তি নেই। অতএব, নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠার চিন্তা বাদ দিয়ে যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু আছে, সেগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে ও আইন-কানুন মেনে চলে, সেই দিকেই নজর দিতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩১ ধারায় ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২-এ সরকার বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে নতুন নির্দেশনা দিতে পারবে বলে যে কথা বলা হয়েছিল, ২০০৩ সালে তা তুলে নেওয়া হয়। ফলে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের করণীয় কিছু নেই। সম্প্রতি সরকার নতুন আইন করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করলেও সেটি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংক নয়, বিশেষায়িত ব্যাংক। অনাবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে আরেকটি বিশেষায়িত ব্যাংক করার ব্যাপারেও তিনটি দরখাস্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়েছে। এ ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের।
এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রীর উল্লেখিত ঘোষণায় স্বভাবতই এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিস্মিত হয়েছেন। একই সঙ্গে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলারও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে কাঠামো ও বিস্তার, তাতে ১৫-১৬টি ব্যাংক থাকাই যথেষ্ট। কিন্তু বর্তমানে দেশে ৪৯টি ব্যাংক আছে, যার মধ্যে ৩০টি বেসরকারি। এ ছাড়া বিদেশি মালিকানাধীন নয়টি ব্যাংক আছে। বিমা কোম্পানি রয়েছে ৬২টি, যার মধ্যে জীবন বিমা ১৯টি এবং সাধারণ বিমা ৪২টি। বর্তমানে এই ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না—এমন অভিযোগ কোনো মহল থেকেই ওঠেনি। বরং অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।
তার পরও যদি যুক্তির খাতিরে ধরেও নিই যে দেশে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির প্রয়োজন আছে, সে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের এখতিয়ারে ছেড়ে দিতে হবে। নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই দরখাস্ত আহ্বান করবে। অর্থ মন্ত্রণালয় দরখাস্ত আহ্বান করলে রাজনীতিকরণের সুযোগ থাকে। আর্থিক খাতে রাজনৈতিক প্রভাব বা দলীয় বিবেচনা বাঞ্ছনীয় নয়। অবশ্য বিমা কোম্পানি অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের। তবে সে ক্ষেত্রেও দলীয় বিবেচনার বদলে পেশাগত দক্ষতা অভিজ্ঞতা অগ্রাধিকার পাবে, সেটাই সবার প্রত্যাশা।
অতীতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার একাধিক নজির রয়েছে। দলীয় লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার দৃষ্টান্তও কম নয়। আবার অসাধু উদ্যোক্তাদের পাল্লায় পড়ে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছিল; যার খেসারত কেবল গ্রাহকদেরই দিতে হয়নি, সরকারকেও দিতে হয়েছে। কোথাও বা প্রশাসক বসিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়েছে। এসব নজির থাকা সত্ত্বেও নির্বিচারে নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি খোলার কোনো যুক্তি নেই। অতএব, নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠার চিন্তা বাদ দিয়ে যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু আছে, সেগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে ও আইন-কানুন মেনে চলে, সেই দিকেই নজর দিতে হবে।
No comments