কৃষিতে নারীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই by আদিত্য আরাফাত
বাংলাদেশে গত এক দশকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণরে নিমিত্তে প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ বাড়তি শ্রম শক্তি যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষই নারী শ্রমিক। ২০০৫-২০০৬ এর শ্রম শক্তি জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের এক কোটি বিশ লক্ষ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলত কৃষি, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত।
১৯৯৯-২০০০ সময়কাল থেকে ২০০৯-২০১০ সময়কালে কৃষি-বন-মৎস্য খাতে অংশগ্রণকারী নারীর সংখ্যা ৩৭ লক্ষ থেকে বেড়ে প্রায় ৮০ লক্ষ হয়েছে (১১৬ শতাংশ বেড়েছে) কিন্তু ক্ষুধার বিরুদ্ধে সংগ্রামে নারীর অবদান স্বীকৃতি ও উচ্চারণের বাইরে থেকেছে।
গ্রামীণ জীবন যাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) এর ২০১২ সালের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে আসে। শ্রম বাজারে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ থাকলেও নিয়োজিত (employed) নারী শ্রমিকের প্রায় বাহাত্তর (৭২) শতাংশই হল অবৈতনিক পারিবারিক নারী শ্রমিক।
কৃষিতে নারীদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক তাদের স্বীকৃত দেওয়া হয় না। দেশে কৃষকদের সংখ্যা আছে কিন্তু কিষাণীদের সংখ্যা কত তার তথ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে নেই। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রদত্ত ১ কোটি ৩৯ লক্ষ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে অপারগ কতজন কিষাণী ‘কৃষক কার্ড’ পেয়েছেন।
গ্রামীণ জীবন যাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) জেন্ডার গ্রুপ এর সমন্বয়কারী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, কৃষিতে কিষাণীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরী। ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ নারী কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত থাকলেও তাদের স্বীকৃতি নেই। কৃষিতে নারীদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক তাদের স্বীকৃত দেওয়া হয় না।
কৃষিতে নারীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজনীয়তা ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘এটা একারণে প্রয়োজনীয় যে এরই সঙ্গে সরকারের নীতি-কৌশলের একটি ব্যাপক যোগসূত্র আছে। যেমন ধরা যাক ‘‘কৃষক কার্ড’’। বর্তমান সরকারের কৃষিখাতে গতিশীল দিকনির্দেশনার অন্যতম একটি উদ্যোগ হল পরিচয়বাহী ‘‘কৃষক কার্ড’’ বিতরণ। কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা (যেমন উপকরণ ভর্তুকি) দেয়ার ক্ষেত্রে শনাক্তকরণ অতি জরুরী, যেখানে পরিচয়বাহী ‘কৃষক কার্ড’ থাকায় সরকারী কৃষি সেবা গ্রহনের পথ সুগম হয়।’
নারী ও শিশু মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বর্তমান সরকার নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন বিশেষ করে কৃষি সেক্টরে। রাষ্ট্র তার সীমিত কিন্তু দ্রুত প্রসারমান সাধ্যের মধ্যে শক্তিশালী কৃষি সম্প্রসারণ সেবা দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি সরকারকে কিষাণীর জন্য আলাদা কার্ড দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবেন বলে জানান।
গ্রামীণ নারীর শ্রম নির্ঘন্ট
শ্রম শক্তি জরীপ অনুযায়ী ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষ যারা কাজ করছেন, কাজ করছেন না কিন্তু কাজ খুঁজছেন- জনগোষ্ঠীর এমন অংশকে শ্রম শক্তির সদস্য হিসেবে ধরা হয়। সরকারী তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে এক কোটি বিশ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, কৃষি-বন-মৎস্য খাতেই যুক্ত হয়েছে ত্রিশ লক্ষ কর্মসংস্থান। অর্থনীতির উদ্বৃত্ত শ্রমের ধারণায় আমাদের কৃষিতে পারিবারিক শ্রম-এর প্রাধান্য থাকায় শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা কখনো কখনো শূন্য হয়ে দাঁড়ায়। কৃষিতে নতুন কর্মসংস্থান নতুন কাজের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয় সত্য, তবে তা একই সাথে বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে কৃষি খাতের গতিশীলতা, কৃষিতে নায্য মজুরী, অথবা কৃষি শ্রমিকের বাজারে প্রবেশগম্যতা কিছুতেই নিশ্চিত করে না।
গত এক দশকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের নিমিত্তে প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ বাড়তি শ্রম শক্তি যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষই নারী শ্রমিক।
শ্রমশক্তির সংজ্ঞানুযায়ী, ২৯ শতাংশ নারীই কেবল শ্রমশক্তির অংশ হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার যোগ্যতা ছুঁয়েছেন, বাকীরা নিশ্চিতভাবে নানান অবৈতনিক পারিবারিক কাজে নিয়োজিত থাকার পরও শ্রমশক্তির শক্ত হিসাবে অদৃশ্য থাকছেন। সিএসআরএল এর ২০১২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮১ শতাংশ নারী গৃহকর্মে সরাসরি অবদান রাখছেন। এদের অনেকে কিষাণী, তবে তা শ্রমশক্তির বিবেচনায় ‘অদৃশ্য’। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে যারা শ্রমশক্তির বাইরে পড়েছেন, তাদের ৬৫ শতাংশ ‘ছাত্র’ হিসাবে দিব্যি স্বীকৃত! শুধু নারীরই যেন স্বীকৃতির দরকার নেই!
২০০৫-২০০৬ এর শ্রম শক্তি জরীপ অনুযায়ী বাংলাদেশের এককোটি বিশ লক্ষ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলতঃ কৃষি, পশুপালন, হাঁসমুরগী পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত। ১৯৯৯-২০০০ সময়কাল থেকে ২০০৫-২০০৬ সময়কালে কৃষি-বন-মৎস্য খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ থেকে বেড়ে প্রায় ৭৭ লক্ষ হয়েছে (১০৮ শতাংশ বেড়েছে)। অন্যদিকে এই সময়কালে এই খাতে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে ২.৩ শতাংশ। ২০০২-২০০৩ সময়কালের তুলনায় কৃষি-বন-মৎস্য খাতে পুরুষ শ্রমিকের অংশগ্রহণ কমেছে প্রায় ১০.৪ শতাংশ।
‘কৃষিতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে কেন?’-এর উত্তরে শরমিন্দ নীলোর্মি বলনে, ‘কম মজুরী সত্ত্বেও অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় এবং ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষি কাজে অংশ নেয়া যায় - এসব কারণে গ্রামীন নারী কৃষিতে শ্রম দিচ্ছেন। যার অধিকাংশই মজুরী-বহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। এক্ষেত্রে সারা দেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম এবং বেসরকারী সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা হিসেবে কাজ করেছে। তবে সংখ্যাধিক্যের কারণে নিয়োজিত কিষাণীকে ঠকিয়ে কম মজুরী দেওয়ার প্রবনতাও সমান ভাবে চলছে।’
নারী নেত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘নারী কৃষি শ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কৃষক হিসেবে তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করলে দেশের উন্নয়নের গতিও শ্লথ হয়ে পড়বে।’
কৃষিতে বছরের পর বছর ধরে অবদান রাখলেও রাষ্ট্রে এখনও নারীর স্বীকৃতি মেলেনি। অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী ও নারী নেত্রীরা মনে করছেন দেশের কৃষি, কিষাণ-কিষাণীর সার্বিক উন্নতির স্বার্থে ‘সামগ্রিক কৃষি সংস্কার কর্মসুচি’ জরুরী ভিত্তিতে হাতে নিতে হবে। সেই সঙ্গে গ্রামীণ নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় প্রাতিষ্ঠনিক ব্যবস্থা এবং কৃষি তথ্য পৌছে দেবার বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
গ্রামীণ জীবন যাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) এর ২০১২ সালের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে আসে। শ্রম বাজারে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ থাকলেও নিয়োজিত (employed) নারী শ্রমিকের প্রায় বাহাত্তর (৭২) শতাংশই হল অবৈতনিক পারিবারিক নারী শ্রমিক।
কৃষিতে নারীদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক তাদের স্বীকৃত দেওয়া হয় না। দেশে কৃষকদের সংখ্যা আছে কিন্তু কিষাণীদের সংখ্যা কত তার তথ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে নেই। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রদত্ত ১ কোটি ৩৯ লক্ষ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে অপারগ কতজন কিষাণী ‘কৃষক কার্ড’ পেয়েছেন।
গ্রামীণ জীবন যাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) জেন্ডার গ্রুপ এর সমন্বয়কারী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, কৃষিতে কিষাণীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরী। ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ নারী কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত থাকলেও তাদের স্বীকৃতি নেই। কৃষিতে নারীদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক তাদের স্বীকৃত দেওয়া হয় না।
কৃষিতে নারীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজনীয়তা ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘এটা একারণে প্রয়োজনীয় যে এরই সঙ্গে সরকারের নীতি-কৌশলের একটি ব্যাপক যোগসূত্র আছে। যেমন ধরা যাক ‘‘কৃষক কার্ড’’। বর্তমান সরকারের কৃষিখাতে গতিশীল দিকনির্দেশনার অন্যতম একটি উদ্যোগ হল পরিচয়বাহী ‘‘কৃষক কার্ড’’ বিতরণ। কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা (যেমন উপকরণ ভর্তুকি) দেয়ার ক্ষেত্রে শনাক্তকরণ অতি জরুরী, যেখানে পরিচয়বাহী ‘কৃষক কার্ড’ থাকায় সরকারী কৃষি সেবা গ্রহনের পথ সুগম হয়।’
নারী ও শিশু মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বর্তমান সরকার নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন বিশেষ করে কৃষি সেক্টরে। রাষ্ট্র তার সীমিত কিন্তু দ্রুত প্রসারমান সাধ্যের মধ্যে শক্তিশালী কৃষি সম্প্রসারণ সেবা দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি সরকারকে কিষাণীর জন্য আলাদা কার্ড দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবেন বলে জানান।
গ্রামীণ নারীর শ্রম নির্ঘন্ট
শ্রম শক্তি জরীপ অনুযায়ী ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষ যারা কাজ করছেন, কাজ করছেন না কিন্তু কাজ খুঁজছেন- জনগোষ্ঠীর এমন অংশকে শ্রম শক্তির সদস্য হিসেবে ধরা হয়। সরকারী তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে এক কোটি বিশ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, কৃষি-বন-মৎস্য খাতেই যুক্ত হয়েছে ত্রিশ লক্ষ কর্মসংস্থান। অর্থনীতির উদ্বৃত্ত শ্রমের ধারণায় আমাদের কৃষিতে পারিবারিক শ্রম-এর প্রাধান্য থাকায় শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা কখনো কখনো শূন্য হয়ে দাঁড়ায়। কৃষিতে নতুন কর্মসংস্থান নতুন কাজের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয় সত্য, তবে তা একই সাথে বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে কৃষি খাতের গতিশীলতা, কৃষিতে নায্য মজুরী, অথবা কৃষি শ্রমিকের বাজারে প্রবেশগম্যতা কিছুতেই নিশ্চিত করে না।
গত এক দশকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের নিমিত্তে প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ বাড়তি শ্রম শক্তি যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষই নারী শ্রমিক।
শ্রমশক্তির সংজ্ঞানুযায়ী, ২৯ শতাংশ নারীই কেবল শ্রমশক্তির অংশ হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার যোগ্যতা ছুঁয়েছেন, বাকীরা নিশ্চিতভাবে নানান অবৈতনিক পারিবারিক কাজে নিয়োজিত থাকার পরও শ্রমশক্তির শক্ত হিসাবে অদৃশ্য থাকছেন। সিএসআরএল এর ২০১২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮১ শতাংশ নারী গৃহকর্মে সরাসরি অবদান রাখছেন। এদের অনেকে কিষাণী, তবে তা শ্রমশক্তির বিবেচনায় ‘অদৃশ্য’। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে যারা শ্রমশক্তির বাইরে পড়েছেন, তাদের ৬৫ শতাংশ ‘ছাত্র’ হিসাবে দিব্যি স্বীকৃত! শুধু নারীরই যেন স্বীকৃতির দরকার নেই!
২০০৫-২০০৬ এর শ্রম শক্তি জরীপ অনুযায়ী বাংলাদেশের এককোটি বিশ লক্ষ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলতঃ কৃষি, পশুপালন, হাঁসমুরগী পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত। ১৯৯৯-২০০০ সময়কাল থেকে ২০০৫-২০০৬ সময়কালে কৃষি-বন-মৎস্য খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ থেকে বেড়ে প্রায় ৭৭ লক্ষ হয়েছে (১০৮ শতাংশ বেড়েছে)। অন্যদিকে এই সময়কালে এই খাতে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে ২.৩ শতাংশ। ২০০২-২০০৩ সময়কালের তুলনায় কৃষি-বন-মৎস্য খাতে পুরুষ শ্রমিকের অংশগ্রহণ কমেছে প্রায় ১০.৪ শতাংশ।
‘কৃষিতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে কেন?’-এর উত্তরে শরমিন্দ নীলোর্মি বলনে, ‘কম মজুরী সত্ত্বেও অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় এবং ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষি কাজে অংশ নেয়া যায় - এসব কারণে গ্রামীন নারী কৃষিতে শ্রম দিচ্ছেন। যার অধিকাংশই মজুরী-বহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। এক্ষেত্রে সারা দেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম এবং বেসরকারী সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা হিসেবে কাজ করেছে। তবে সংখ্যাধিক্যের কারণে নিয়োজিত কিষাণীকে ঠকিয়ে কম মজুরী দেওয়ার প্রবনতাও সমান ভাবে চলছে।’
নারী নেত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘নারী কৃষি শ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কৃষক হিসেবে তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করলে দেশের উন্নয়নের গতিও শ্লথ হয়ে পড়বে।’
কৃষিতে বছরের পর বছর ধরে অবদান রাখলেও রাষ্ট্রে এখনও নারীর স্বীকৃতি মেলেনি। অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী ও নারী নেত্রীরা মনে করছেন দেশের কৃষি, কিষাণ-কিষাণীর সার্বিক উন্নতির স্বার্থে ‘সামগ্রিক কৃষি সংস্কার কর্মসুচি’ জরুরী ভিত্তিতে হাতে নিতে হবে। সেই সঙ্গে গ্রামীণ নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় প্রাতিষ্ঠনিক ব্যবস্থা এবং কৃষি তথ্য পৌছে দেবার বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
No comments