দুর্নীতি নিয়ে সচিব সভায় তর্ক-বিতর্ক
ভূমি অফিসের দুর্নীতি, রাজউকে পরিকল্পনা পাস করাতে টাকাপয়সার লেনদেন, সরকারি কর্মচারীদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া, গণপদোন্নতির ফলে নিচের দিকের পদ খালি হয়ে যাওয়ায় সরকারি কাজ আটকে যাওয়া প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সচিব সভায় তর্কে জড়িয়ে পড়েন সচিবরা।
এসব কারণে জনগণকে প্রতিশ্রুত সেবা দিতে না পারার বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া সচিবরা তাঁদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিও করেছেন। সরকারি নিয়োগে ঘন ঘন প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে দাবি করে তাঁরা বিজি প্রেসের ক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ৪৮ জন সচিব এতে উপস্থিত ছিলেন। তিন ঘণ্টাব্যাপী সভায় বক্তব্য দেন ৩০ জন সচিব। সভায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, পার্বত্য শান্তিচুক্তির পুরো বাস্তবায়ন, আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন আরো জোরদার করা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের বলা হয়েছে।
সভায় অংশ নেওয়া একাধিক সচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিকল্পনা সচিব ভূমি অফিসের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না দাবি করে তিনি এর প্রতিকার চান। একই সঙ্গে পূর্তসচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কেউ পরিকল্পনা পাস করাতে পারে না। টাকা ছাড়া ওখানে কিছু হয় না। এই দুই খাতের দুর্নীতি নিয়ে সভায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট দুই সচিবই তাঁদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
সভায় একজন সচিব মন্ত্রিপরিষদের সচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, বড় পদোন্নতির ফলে নিচের দিকের পদগুলো শূন্য হয়ে গেছে। সরকারি চিঠিপত্র করার লোক নেই। অনেক পদ শূন্য থাকায় সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায় না। তিনি দ্রুত নিচের দিকে লোক নিয়োগের তাগিদ দেন। সে সময় অন্য এক সচিব বলেন, 'সম্প্রতি রাজনৈতিক ইস্যুগুলোতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িয়ে পড়ছেন। তাঁরা অতি উৎসাহ দেখান। এই উৎসাহ আমলাতন্ত্রের ক্ষতি করছে। দেশ ও রাজনীতি যেভাবে চলে সেভাবে চলতে দেওয়া উচিত। আমাদের উচিত আমাদের কাজ করা।'
একজন সচিব বলেন, 'আমরা আদালত অবমাননার ভয়ে থাকি সব সময়। আজও আদালত অবমাননার কোনো আইন পাস হয়নি। আইনটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে সংসদে আটকে আছে।' সচিবরা দ্রুত এ আইন পাস করানোর অনুরোধ জানান।
একজন সচিব বাসায় একটি অফিস রুম এবং তাঁর দায়িত্ব পালনের জন্য একজন পিএস নিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। অনেক সচিব এ-সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেন। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, সচিবদের সব সময় দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু অফিস সময়ের পর তাঁদের আর পিএস থাকে না। এ কারণে তাঁদের কাজের সমস্যা হয়। একজন বৈকালিক পিএস থাকলে এ সমস্যা সমাধান করা যাবে।
সরকারের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে সচিবরা বিজি প্রেসের ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দিয়ে তাঁরা বলেন, যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে সরকারের পক্ষে কোনো উন্নয়নকাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, 'আমরা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি ভালো। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের পেন্ডিং সিদ্ধান্তগুলো কার্যকরের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।' সচিব সভায় আর কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শের মাধ্যমে ইস্যু বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শ জোরদার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে ইস্যু নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সে ইস্যু নিয়ে লিখিত মতামত নিতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর। তারপর অনুমোদন নিয়ে সভা আহ্বান করতে হবে মন্ত্রণালয়কে। অনেক সময় লিখিত নোটিশ দিয়ে মতামত নেওয়া হয় না। সচিব সভায় এ বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।
মন্ত্রিপরিষদের সচিব জানান, বাজেট ও এডিপি বাস্তবায়নের বিষয়েও সচিবদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়নে তদারকি এবং সচিবদের নেতৃত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষার জন্যও সচিবদের লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভর্তুকির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সচিব বলেন, সভায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সভায় জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। সরকারের প্রধান কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা ও রাজস্ব আদায় করা।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ৪৮ জন সচিব এতে উপস্থিত ছিলেন। তিন ঘণ্টাব্যাপী সভায় বক্তব্য দেন ৩০ জন সচিব। সভায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, পার্বত্য শান্তিচুক্তির পুরো বাস্তবায়ন, আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন আরো জোরদার করা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের বলা হয়েছে।
সভায় অংশ নেওয়া একাধিক সচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিকল্পনা সচিব ভূমি অফিসের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না দাবি করে তিনি এর প্রতিকার চান। একই সঙ্গে পূর্তসচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কেউ পরিকল্পনা পাস করাতে পারে না। টাকা ছাড়া ওখানে কিছু হয় না। এই দুই খাতের দুর্নীতি নিয়ে সভায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট দুই সচিবই তাঁদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
সভায় একজন সচিব মন্ত্রিপরিষদের সচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, বড় পদোন্নতির ফলে নিচের দিকের পদগুলো শূন্য হয়ে গেছে। সরকারি চিঠিপত্র করার লোক নেই। অনেক পদ শূন্য থাকায় সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায় না। তিনি দ্রুত নিচের দিকে লোক নিয়োগের তাগিদ দেন। সে সময় অন্য এক সচিব বলেন, 'সম্প্রতি রাজনৈতিক ইস্যুগুলোতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িয়ে পড়ছেন। তাঁরা অতি উৎসাহ দেখান। এই উৎসাহ আমলাতন্ত্রের ক্ষতি করছে। দেশ ও রাজনীতি যেভাবে চলে সেভাবে চলতে দেওয়া উচিত। আমাদের উচিত আমাদের কাজ করা।'
একজন সচিব বলেন, 'আমরা আদালত অবমাননার ভয়ে থাকি সব সময়। আজও আদালত অবমাননার কোনো আইন পাস হয়নি। আইনটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে সংসদে আটকে আছে।' সচিবরা দ্রুত এ আইন পাস করানোর অনুরোধ জানান।
একজন সচিব বাসায় একটি অফিস রুম এবং তাঁর দায়িত্ব পালনের জন্য একজন পিএস নিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। অনেক সচিব এ-সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেন। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, সচিবদের সব সময় দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু অফিস সময়ের পর তাঁদের আর পিএস থাকে না। এ কারণে তাঁদের কাজের সমস্যা হয়। একজন বৈকালিক পিএস থাকলে এ সমস্যা সমাধান করা যাবে।
সরকারের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে সচিবরা বিজি প্রেসের ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দিয়ে তাঁরা বলেন, যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে সরকারের পক্ষে কোনো উন্নয়নকাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, 'আমরা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি ভালো। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের পেন্ডিং সিদ্ধান্তগুলো কার্যকরের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।' সচিব সভায় আর কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শের মাধ্যমে ইস্যু বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে আন্তমন্ত্রণালয় পরামর্শ জোরদার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে ইস্যু নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সে ইস্যু নিয়ে লিখিত মতামত নিতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর। তারপর অনুমোদন নিয়ে সভা আহ্বান করতে হবে মন্ত্রণালয়কে। অনেক সময় লিখিত নোটিশ দিয়ে মতামত নেওয়া হয় না। সচিব সভায় এ বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।
মন্ত্রিপরিষদের সচিব জানান, বাজেট ও এডিপি বাস্তবায়নের বিষয়েও সচিবদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়নে তদারকি এবং সচিবদের নেতৃত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষার জন্যও সচিবদের লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভর্তুকির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সচিব বলেন, সভায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সভায় জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। সরকারের প্রধান কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা ও রাজস্ব আদায় করা।
No comments