কুমিল্লা নির্বাচন-গণতন্ত্রের জয় হোক

তুন উৎসবের অভিজ্ঞতা অর্জন করছে আজ কুমিল্লা। এটি যেন নতুন বছরেরই উপহার। সিটি করপোরেশন ঘোষণার পর এই প্রথম মেয়র ও কাউন্সিলররা নির্বাচিত হবেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ার পরও এই নির্বাচন জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে পরীক্ষার মতো। যদিও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলীয় পরিচয়ের বাইরে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সংশ্লিষ্টতা রয়ে গেছে স্পষ্টত। জয়-পরাজয়ের মূল্যায়নও হয়ে যাবে দলীয় বিবেচনায়। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো আইনের আওতায়
থেকে দলীয় মনোনয়ন না দিলেও দলীয় সমর্থনদানে পিছিয়ে নেই। বিরোধীদলীয় প্রার্থী নিজে দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পরও স্থানীয়ভাবে দলীয় কর্মী, এমনকি জাতীয় নেতাকর্মীর সহায়তা নিয়েছেন। কোনো কোনো প্রার্থীর পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রচারকাজে অংশ নিয়েছেন। সংগত কারণেই এই নির্বাচনকে মানুষ অত্যন্ত গুরুত্বসহ বিবেচনা করছে। সরকারের কাছেও এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে গণ্য হয়েছে। কারণ তারা আগামী জাতীয় নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের যথার্থতা প্রমাণ করতে চায় স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল তাদেরই আমলে। দুটো নির্বাচনই অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম-উভয় নির্বাচনেই সরকার সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। কিন্তু দুটি নির্বাচনেই সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে এবং তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পেয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে এবং সেনা নিয়োগ ছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা যায়-এমনটা প্রমাণের জন্যও বর্তমান সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়েছে। সেই আলোকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, সেখানে দলীয় প্রভাব কাজ করবে না-এটা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। তবে এ পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারাভিযান চলাকালে কুমিল্লার সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা যে ধৈর্য এবং সহনশীলতার প্রমাণ রেখেছেন, তাতে মনে হয় আজও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক দল বিরোধিতা করলেও সেখানে ইভিএমের সুষ্ঠু প্রয়োগ হয়েছে এবং ভোটারদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। কুমিল্লায়ও একই রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিরোধিতা করছে। ভোটারদের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণে অনীহা আছে বলে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুতরাং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপকেও কার্যকর করতে সহযোগিতা করবে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হোক, সুন্দর হোক। কুমিল্লার অসংখ্য সমস্যা সমাধান করে আধুনিক নগর হিসেবে কুমিল্লা প্রতিষ্ঠিত হোক।

No comments

Powered by Blogger.