অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে লিবিয়া by মুহাম্মদ শরীফ হোসেন
গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয় সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠন। কিন্তু আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে স্থিতিশীল অর্থনীতিতে ফিরে যাওয়া খুব বেশি সহজ হবে না। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়ে দিয়েছে, আট মাসের গৃহযুদ্ধে লিবিয়ার অর্থনীতি এ বছর ৫০ শতাংশেরও বেশি সঙ্কুচিত হবে। গৃহযুদ্ধে ন্যুয়ে পড়া দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া খুব বেশি সহজ হবে না বলেই অন্তবর্তী সরকার জানায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার পুনর্গঠন হবে টম ক্রুজের 'মিশন ইমপসিবল'।
এ মিশন ইমপসিবলকে সাফল্যে রূপ দিতে হলে একসঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তেল রপ্তানি বাড়াতে অবকাঠামো পুনঃ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিভক্ত দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা, অস্ত্র জমা নেওয়া ও গাদ্দাফির প্রতি অনুগত গোত্রগুলোকে সরকারের আস্থায় আনা খুব সহজ কাজ নয়। গৃহযুদ্ধে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন, পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য আমদানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে জনগণের এ দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান করতে হবে। বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ও সর্বোপরি একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতার চাবি তুলে দেওয়া হবে সরকারের মূল দায়িত্ব।
এ মুহূর্তে লিবিয়ার অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পশ্চিমাদের আটকে দেওয়া অর্থ। লন্ডনভিত্তিক ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিবিদ হির্স বলেন, 'লিবিয়ার আটক অর্থের পরিমাণ হবে প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলার।' এ অর্থ ছাড় করাণোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। শুধু জাতিসংঘের অনুমোদনের অপেক্ষা। লিবিয়ার খাদ্য চাহিদার ৭৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। তাই এ মুহূর্তে নগদ অর্থের প্রয়োজন অত্যধিক। তবে নগদ অর্থ তাৎক্ষণিক প্রাণ সঞ্চার করলেও দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী ভূমিকা রাখতে পারে মূল চালিক শক্তি তেল।
গৃহযুদ্ধের আগে লিবিয়ায় প্রতিদিন প্রায় ১৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে চার লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। তেল উৎপাদন যুদ্ধপূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। স্পেশালিস্ট রিস্ক কনসালটেন্সি কন্ট্রোল রিস্কের বিশ্লেষক হেনরি স্মিথ বলেন, 'তেল উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তেল উৎপাদন_এ দুটোই স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।'
লিবিয়া বিশ্বের ১২তম তেল রপ্তানিকারক দেশ, যা বিশ্ব তেল সরবরাহের প্রায় ২ শতাংশ। বলা হয়, আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেল রয়েছে লিবিয়ায়। তবে দেশটির তেলের প্রতি পশ্চিমাদের বিশেষ আগ্রহের কারণ এর উন্নত মান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, ২০১০ সালে লিবিয়ার রপ্তানি আয়ের ৯৫ শতাংশ এসেছে তেল থেকে। লিবিয়ার জাতীয় তেল সংস্থা এনওসির হিসাব অনুযায়ী, তেল উৎপাদন যুদ্ধ পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে সময় লাগবে এক বছর। বিশ্লেষকরাও আশা করছেন, ২০১২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দিনপ্রতি ১৬ লাখ ব্যারল তেল উৎপাদন করতে পারবে লিবিয়া। ওপেকের মতে, আগামী ছয় মাসে লিবিয়ার তেল উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেলে পেঁৗছবে এবং ২০১২ সালের শেষ নাগাদ যুদ্ধ পূর্ববর্তী অবস্থায় পেঁৗছবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, তেল উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে অবকাঠামো ও শ্রমিক সংকট একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য পার্শ্ববর্তী আরব দেশ, ইউরোপ-আমেরিকা ও বাংলাদেশ, ভারতের যেসব শ্রমিক ও কর্মকর্তা নিজ দেশে চলে গেছে, তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
আইএইচএস গ্লোবাল ইনসাইটের বিশ্লেষক স্যামুয়েল কিজুক বলেন, 'লিবিয়ার তেল ক্ষেত্রগুলোতে জড়িত এক লাখ বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার, ভূতত্ত্ববিদ ও টেকনেশিয়ান, যাঁরা প্রতিবেশী আরব, দক্ষিণ এশিয়া এবং চীন থেকে এসে কাজ করেছে_তাঁরা ফিরে আসতে সময় লাগবে। দ্রুত তেল উৎপাদনে এটি একটি বড় বাধা হবে।' লিবিয়ায় কাজ করা সবচেয়ে বড় বিদেশি কম্পানি ইতালির তেল ও গ্যাস উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ইনি জানিয়েছে, তাদের তেল উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে এক বছর লাগবে। তেলের পাশাপাশি লিবিয়ার আরেকটি মূল্যবান সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস। যুদ্ধের আগে লিবিয়া ইতালিতে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করত। ধারণা করা হচ্ছে, লিবিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে প্রায় ৫৫ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট।
গাদ্দাফির সময়ে লিবিয়ার অর্থনীতি আরব দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলক ভালো থাকলেও বর্তমানে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেকারত্ব। লিবিয়ার জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ৩০ বছরের কম। এদের মধ্যে বেকারত্ব যুদ্ধের আগে ছিল এক-তৃতীয়াংশ। যাদের অনেকেই গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল। দেশের স্থিতিশীলতার জন্য এসব যুবকের হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে তাদের কাজ দিতে হবে। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লিবিয়ার পর্যটন শিল্পও। তবে এ খাতে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ও আরব ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মরুদেশটির কৃষি খাত। তবে লিবিয়ার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে সরকারকে ঐক্যের মিশন নিয়ে নামতে হবে। এনটিসি এ দায়িত্ব পালনে কতটুকু সক্ষম হবে, এখন সেটিই বড় প্রশ্ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ আলমুত মুয়েলার বলেন, 'অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে লিবিয়ায় একটি কার্যকর সরকার দরকার। যারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্থনীতিকে গড়ে তুলবে। এ ক্ষেত্রে প্রভাব রাখার সুযোগ ইউরোপের খুব সামান্যই বলা যায়। কারণ তিউনেসিয়া ও মিসরের বিপ্লব থেকে ইউরোপ এমনটাই শিখেছে।'
আরবের পুনর্জাগরণ থেকেই পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়েছে লিবিয়া। সেই পরিবর্তন জনকল্যাণমুখী এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে বর্তমান পরিস্থিতি থেকেই তাদের শিখতে হবে। ৪২ বছরের স্বৈরশাসনে জনগণ যে জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, তা থেকে তাদের বের করে আনতে সরকারকে উদারতার পরিচয় দিতে হবে। প্রতিহিংসা নয়; বরং দেশের অভ্যন্তরে ঐক্য ও গণতন্ত্রের আবহ গড়ে তুলতে হবে। যাতে বর্তমান সরকার দ্রুততার সঙ্গে একটি নির্বাচন দিয়ে লিবিয়ার ৬০ লাখ মানুষকে যোগ্য নেতৃত্ব উপহার দিয়ে যেতে পারে। তবেই লিবিয়ার অর্থনীতি স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসতে পারে। গড়ে উঠতে পারে আরেকটি নতুন লিবিয়া।
তথ্য সূত্র : এএফপি, ইয়াহু, বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্স ও ব্লুমবার্গ।
এ মুহূর্তে লিবিয়ার অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পশ্চিমাদের আটকে দেওয়া অর্থ। লন্ডনভিত্তিক ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিবিদ হির্স বলেন, 'লিবিয়ার আটক অর্থের পরিমাণ হবে প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলার।' এ অর্থ ছাড় করাণোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। শুধু জাতিসংঘের অনুমোদনের অপেক্ষা। লিবিয়ার খাদ্য চাহিদার ৭৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। তাই এ মুহূর্তে নগদ অর্থের প্রয়োজন অত্যধিক। তবে নগদ অর্থ তাৎক্ষণিক প্রাণ সঞ্চার করলেও দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী ভূমিকা রাখতে পারে মূল চালিক শক্তি তেল।
গৃহযুদ্ধের আগে লিবিয়ায় প্রতিদিন প্রায় ১৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে চার লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। তেল উৎপাদন যুদ্ধপূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। স্পেশালিস্ট রিস্ক কনসালটেন্সি কন্ট্রোল রিস্কের বিশ্লেষক হেনরি স্মিথ বলেন, 'তেল উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তেল উৎপাদন_এ দুটোই স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।'
লিবিয়া বিশ্বের ১২তম তেল রপ্তানিকারক দেশ, যা বিশ্ব তেল সরবরাহের প্রায় ২ শতাংশ। বলা হয়, আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেল রয়েছে লিবিয়ায়। তবে দেশটির তেলের প্রতি পশ্চিমাদের বিশেষ আগ্রহের কারণ এর উন্নত মান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, ২০১০ সালে লিবিয়ার রপ্তানি আয়ের ৯৫ শতাংশ এসেছে তেল থেকে। লিবিয়ার জাতীয় তেল সংস্থা এনওসির হিসাব অনুযায়ী, তেল উৎপাদন যুদ্ধ পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে সময় লাগবে এক বছর। বিশ্লেষকরাও আশা করছেন, ২০১২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দিনপ্রতি ১৬ লাখ ব্যারল তেল উৎপাদন করতে পারবে লিবিয়া। ওপেকের মতে, আগামী ছয় মাসে লিবিয়ার তেল উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেলে পেঁৗছবে এবং ২০১২ সালের শেষ নাগাদ যুদ্ধ পূর্ববর্তী অবস্থায় পেঁৗছবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, তেল উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে অবকাঠামো ও শ্রমিক সংকট একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য পার্শ্ববর্তী আরব দেশ, ইউরোপ-আমেরিকা ও বাংলাদেশ, ভারতের যেসব শ্রমিক ও কর্মকর্তা নিজ দেশে চলে গেছে, তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
আইএইচএস গ্লোবাল ইনসাইটের বিশ্লেষক স্যামুয়েল কিজুক বলেন, 'লিবিয়ার তেল ক্ষেত্রগুলোতে জড়িত এক লাখ বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার, ভূতত্ত্ববিদ ও টেকনেশিয়ান, যাঁরা প্রতিবেশী আরব, দক্ষিণ এশিয়া এবং চীন থেকে এসে কাজ করেছে_তাঁরা ফিরে আসতে সময় লাগবে। দ্রুত তেল উৎপাদনে এটি একটি বড় বাধা হবে।' লিবিয়ায় কাজ করা সবচেয়ে বড় বিদেশি কম্পানি ইতালির তেল ও গ্যাস উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ইনি জানিয়েছে, তাদের তেল উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে এক বছর লাগবে। তেলের পাশাপাশি লিবিয়ার আরেকটি মূল্যবান সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস। যুদ্ধের আগে লিবিয়া ইতালিতে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করত। ধারণা করা হচ্ছে, লিবিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে প্রায় ৫৫ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট।
গাদ্দাফির সময়ে লিবিয়ার অর্থনীতি আরব দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলক ভালো থাকলেও বর্তমানে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেকারত্ব। লিবিয়ার জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ৩০ বছরের কম। এদের মধ্যে বেকারত্ব যুদ্ধের আগে ছিল এক-তৃতীয়াংশ। যাদের অনেকেই গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল। দেশের স্থিতিশীলতার জন্য এসব যুবকের হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে তাদের কাজ দিতে হবে। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লিবিয়ার পর্যটন শিল্পও। তবে এ খাতে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ও আরব ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মরুদেশটির কৃষি খাত। তবে লিবিয়ার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে সরকারকে ঐক্যের মিশন নিয়ে নামতে হবে। এনটিসি এ দায়িত্ব পালনে কতটুকু সক্ষম হবে, এখন সেটিই বড় প্রশ্ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ আলমুত মুয়েলার বলেন, 'অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে লিবিয়ায় একটি কার্যকর সরকার দরকার। যারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্থনীতিকে গড়ে তুলবে। এ ক্ষেত্রে প্রভাব রাখার সুযোগ ইউরোপের খুব সামান্যই বলা যায়। কারণ তিউনেসিয়া ও মিসরের বিপ্লব থেকে ইউরোপ এমনটাই শিখেছে।'
আরবের পুনর্জাগরণ থেকেই পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়েছে লিবিয়া। সেই পরিবর্তন জনকল্যাণমুখী এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে বর্তমান পরিস্থিতি থেকেই তাদের শিখতে হবে। ৪২ বছরের স্বৈরশাসনে জনগণ যে জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, তা থেকে তাদের বের করে আনতে সরকারকে উদারতার পরিচয় দিতে হবে। প্রতিহিংসা নয়; বরং দেশের অভ্যন্তরে ঐক্য ও গণতন্ত্রের আবহ গড়ে তুলতে হবে। যাতে বর্তমান সরকার দ্রুততার সঙ্গে একটি নির্বাচন দিয়ে লিবিয়ার ৬০ লাখ মানুষকে যোগ্য নেতৃত্ব উপহার দিয়ে যেতে পারে। তবেই লিবিয়ার অর্থনীতি স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসতে পারে। গড়ে উঠতে পারে আরেকটি নতুন লিবিয়া।
তথ্য সূত্র : এএফপি, ইয়াহু, বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্স ও ব্লুমবার্গ।
No comments