ক্ষমতাসীনদের কোন্দলে বাড়ছে খুন by নাছির উদ্দিন শোয়েব
চাঞ্চল্যকর খুনের আসামিকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের নাকের ডগায়। এমনকি উল্টো বাদীপক্ষকেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘরে হামলাও চালানো হচ্ছে। বাদী ও ভুক্তভোগীরা মামলা করেও পড়ছেন বিপাকে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হলেও এসব আসামিকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? পুলিশ নাগালে পেয়েও কেন ধরছে না? এসব প্রশ্নের জবাবে পুলিশেরই ঊর্ধ্বতন কেউ কেউ বলছেন, যারা আসামি তারা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। দলের লোক খুন হলেও একই দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে পুলিশ অনেকটা নিরুপায় বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১১ দিনেও গ্রেফতার হয়নি নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেন হত্যার আসামিরা। এ ঘটনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজুর ভাইসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন লোকমানের ভাই। কিন্তু আসামিরা গ্রেফতার তো হয়ইনি; বরং লোকমানের বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করে পুলিশ। অথচ বাদীপক্ষ মামলার এজাহারেও তার নাম উল্লেখ করেনি। এমনকি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খোকনের জড়িত থাকার ব্যাপারে কোনো মৌখিক অভিযোগও করা হয়নি। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের জন্য আবেদন করে আদালতে। আদালত তাকে জামিন দিলেও ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা পুলিশ অন্য একটি মামলায় তাকে আটক দেখিয়ে হয়রানি করছে বলে খোকনের পরিবার অভিযোগ করেছে। প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার না করে ভিন্নমতের নেতাদের হয়রানি করে খুনিদের উত্সাহ বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অত্যুত্সাহে হত্যাকারী চক্র লোকমানের বাড়িতে হামলা-বোমাবাজি করছে মহানন্দে। অভিযোগ আছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে দলীয় লোক খুন হলেও পুলিশ এসব হত্যা মামলা আগ্রহ নিয়ে তদন্ত করছে না। আসামিরা দলীয় লোক হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে না। খুন করেও পার পেয়ে যাচ্ছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর রাতে নরসিংদীর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে। সন্ধ্যার পরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বসে মিটিং করার সময় সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে লোকমান হোসেনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তিনি মারা যান।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ৩৪ মাসে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৯৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি, ভাগ-বাটোয়ারা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জেরে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের কোনোটিরই কিনারা হয়নি। বেশিরভাগ আসামিই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের লোক। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গা বাঁচিয়ে চলছে। আলোচিত হত্যা মামলা হলেও এ ধরনের বহু মামলার তদন্ত ঝুলে আছে। দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ মামলার বাদীপক্ষও সোচ্চার না থাকায় মামলাগুলো হিমাগারে পড়ে আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন প্রায় সময়ই বলে থাকেন, ‘সন্ত্রাসী সে যে দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেয়া হবে না’, কিন্তু নিজের দলের লোকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে। এমনকি লোকমান হোসেন হত্যার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। মন্ত্রীর আস্ফাালন কোনো কাজে আসছে না। জিডিতে তার ‘নির্দেশনা’র হম্বিতম্বি ফলাও করে দেখানো হলেও কেউ তা মানছে না।
অধিকারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কমপক্ষে ৯৪ জন নিহত হয়েছে, আহত কমপক্ষে ১৫ হাজার। কোন্দলে গত বছর মারা গেছেন ৫২ জন, আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫০০ জন। এর আগের বছর কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন খুন হয়েছেন। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ২০৮ জন।
তবে থেমে নেই ক্ষমতাসীনদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংঘর্ষ। চলতি মাসেই নিহত হলেন দুই জনপ্রতিনিধি। এ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাংচুর করা হয়েছে যানবাহন এবং মানুষের ঘরবড়ি। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, এলাকার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, স্থানীয় নির্বাচন, ব্যক্তিগত ও দলীয় রেষারেষির কারণে এসব খুনের ঘটনা ঘটে।
গত ১৪ জানুয়ারি আগারগাঁওয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক খুন হন। এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি নূর মোহাম্মদ। তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেছিলেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হয়েছেন ফজলুল হক। নূর মোহাম্মদকে গুলি করার ঘটনায় ফজলুল হক গ্রুপের হাত রয়েছে মনে করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে গিয়েই ফজলুকে হত্যা করা হয়।
গত বছর ৭ অক্টোবর রাজধানীর মগবাজারে টেন্ডার বিরোধে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলায় খুন হয় যুবলীগ নেতা ইউসুফ আলী সরদার। এর আগে সংসদ ভবন এলাকায় ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের পিস্তলের গুলিতে খুন হন যুবলীগ নেতা ইব্রাহীম আহমেদ। এ ঘটনার এখন পর্যন্ত কোনো কিনারা হয়নি। এ মামলায়, মাজহারুল ইসলাম মিঠু, গোলাম মোস্তফা শিমুল ও শাওনের গানম্যান দেলোয়ার হোসেন ও গাড়িচালক কামাল হোসেন কালাকে গ্রেফতার করা হলেও একজন ছাড়া বাকি আসামিরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম ফারুক হোসেন খুন হন। আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের একটি গ্রুপ ফারুককে গুলি করেছে। এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু এ হত্যা মামলায় দলীয় কোনো ক্যাডার গ্রেফতার হয়নি। একই বছরের ২৬ জুলাই চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কাফরুলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব ও তার দলবল ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা গিয়াস উদ্দিন গেসুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ মাহবুবকে গ্রেফতার করেছিল। পরে সে জামিনে বেরিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গেসুকে খুন করা হয়েছিল। মোহাম্মদপুর এলাকায় ক্যাবল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যা করা হয় থানা ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন ওরফে কুতু বাবুকে। মোহাম্মদপুরের মাদক ব্যবসা, ডিশ লাইনের ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা কুতুকে হত্যা করেছিল বলে ওই সময় কুতুর স্বজনরা অভিযোগ করেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বি হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে আবুল কালাম আসাদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়। নিহত আসাদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছিল প্রায় ৫০ জন। এ ঘটনায়ও প্রকৃত খুনি গ্রেফতার হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর রাতে নরসিংদীর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে। সন্ধ্যার পরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বসে মিটিং করার সময় সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে লোকমান হোসেনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তিনি মারা যান।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ৩৪ মাসে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৯৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি, ভাগ-বাটোয়ারা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জেরে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের কোনোটিরই কিনারা হয়নি। বেশিরভাগ আসামিই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের লোক। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গা বাঁচিয়ে চলছে। আলোচিত হত্যা মামলা হলেও এ ধরনের বহু মামলার তদন্ত ঝুলে আছে। দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ মামলার বাদীপক্ষও সোচ্চার না থাকায় মামলাগুলো হিমাগারে পড়ে আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন প্রায় সময়ই বলে থাকেন, ‘সন্ত্রাসী সে যে দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেয়া হবে না’, কিন্তু নিজের দলের লোকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে। এমনকি লোকমান হোসেন হত্যার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। মন্ত্রীর আস্ফাালন কোনো কাজে আসছে না। জিডিতে তার ‘নির্দেশনা’র হম্বিতম্বি ফলাও করে দেখানো হলেও কেউ তা মানছে না।
অধিকারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কমপক্ষে ৯৪ জন নিহত হয়েছে, আহত কমপক্ষে ১৫ হাজার। কোন্দলে গত বছর মারা গেছেন ৫২ জন, আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫০০ জন। এর আগের বছর কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন খুন হয়েছেন। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ২০৮ জন।
তবে থেমে নেই ক্ষমতাসীনদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংঘর্ষ। চলতি মাসেই নিহত হলেন দুই জনপ্রতিনিধি। এ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাংচুর করা হয়েছে যানবাহন এবং মানুষের ঘরবড়ি। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, এলাকার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, স্থানীয় নির্বাচন, ব্যক্তিগত ও দলীয় রেষারেষির কারণে এসব খুনের ঘটনা ঘটে।
গত ১৪ জানুয়ারি আগারগাঁওয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক খুন হন। এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি নূর মোহাম্মদ। তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেছিলেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হয়েছেন ফজলুল হক। নূর মোহাম্মদকে গুলি করার ঘটনায় ফজলুল হক গ্রুপের হাত রয়েছে মনে করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে গিয়েই ফজলুকে হত্যা করা হয়।
গত বছর ৭ অক্টোবর রাজধানীর মগবাজারে টেন্ডার বিরোধে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলায় খুন হয় যুবলীগ নেতা ইউসুফ আলী সরদার। এর আগে সংসদ ভবন এলাকায় ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের পিস্তলের গুলিতে খুন হন যুবলীগ নেতা ইব্রাহীম আহমেদ। এ ঘটনার এখন পর্যন্ত কোনো কিনারা হয়নি। এ মামলায়, মাজহারুল ইসলাম মিঠু, গোলাম মোস্তফা শিমুল ও শাওনের গানম্যান দেলোয়ার হোসেন ও গাড়িচালক কামাল হোসেন কালাকে গ্রেফতার করা হলেও একজন ছাড়া বাকি আসামিরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম ফারুক হোসেন খুন হন। আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের একটি গ্রুপ ফারুককে গুলি করেছে। এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু এ হত্যা মামলায় দলীয় কোনো ক্যাডার গ্রেফতার হয়নি। একই বছরের ২৬ জুলাই চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কাফরুলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব ও তার দলবল ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা গিয়াস উদ্দিন গেসুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ মাহবুবকে গ্রেফতার করেছিল। পরে সে জামিনে বেরিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গেসুকে খুন করা হয়েছিল। মোহাম্মদপুর এলাকায় ক্যাবল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যা করা হয় থানা ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন ওরফে কুতু বাবুকে। মোহাম্মদপুরের মাদক ব্যবসা, ডিশ লাইনের ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা কুতুকে হত্যা করেছিল বলে ওই সময় কুতুর স্বজনরা অভিযোগ করেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বি হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে আবুল কালাম আসাদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়। নিহত আসাদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছিল প্রায় ৫০ জন। এ ঘটনায়ও প্রকৃত খুনি গ্রেফতার হয়নি।
No comments