জাপার প্রেসিডিয়াম সভায় মহাজোট ছাড়ার তাগিদ-সময় নিলেন এরশাদ
এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল সোমবার বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সকাল ১১টা থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী এ সভায় প্রেসিডিয়ামের কোনো কোনো সদস্য মহাজোট ছাড়ার পক্ষে মত ব্যক্ত করেন বলে জানা গেছে। তবে এখনই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। এ ঘোষণার সময় নির্ধারণের একক দায়িত্ব
দেওয়া হয়েছে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
জাপার একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাপার সাংগঠনিক মূল্যায়নের জন্য এ বৈঠক আহ্বান করা হলেও এতে মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
সূত্র মতে, জাপা নেতারা বলেন, এ সরকার ব্যর্থ। মহাজোটে থেকে সরকারের ব্যর্থতার দায় বহন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।' প্রথমেই পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, 'আমরা সরকারে আছি। কিন্তু ক্ষমতায় নেই। আবার মহাজোট থাকার কারণেই সরকারের সব ব্যর্থতাও তুলে ধরতে পারি না। কিন্তু পার্টির চেয়ারম্যান সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না।' তিনি বলেন, 'যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই পার্টির নেতা-কর্মীরা বলছেন, আর মহাজোট নয়। আগামীতে পল্লীবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ শাসন দেখতে চাই।'
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জাপার সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, 'মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তবে আরো সময় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।' আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমানও মহাজোট ছাড়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে ভরাডুবি হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায়। তবে এরশাদ সাহেবের বয়স হয়েছে। এ মুহূর্তে জেল-জুলুমের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। তাই আরো কিছু সময় অপেক্ষা করাটাই ঠিক হবে।'
সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এরশাদ বলেন, 'আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে জনগণ অতীষ্ঠ। গত তিন বছরে এ সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সবই জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে। আমাকে যেহেতু আপনারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই হুট করে নয় বরং যথাসময়ে মহাজোট থেকে বের হওয়া বা না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' বৈঠকে উপস্থিত প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এরশাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে টিপাইমুখ বাঁধ অভিমুখে রোডমার্চের আদলে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ এবং ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে জাপার একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
আলোচনায় জাপা নেতারা বলেন, ২৫০ থেকে ২৭০টি আসনে জাপার যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। বাকি আসনগুলোতেও যোগ্য প্রার্থী সন্ধান করা হবে।
বৈঠকে বেগম রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন বাবলু উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্য এরশাদের ভাই জি এম কাদের অনুপস্থিত ছিলেন।
ডা. মিলন ক্রসফায়ারে নিহত হন : এরশাদ
প্রেসিডিয়াম বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ডা. মিলন কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ক্রসফায়ারে নিহত হন। এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল না। এ ঘটনায় যাঁরা আমাকে দোষারোপ করেন, তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই এটা করেন। কিন্তু তাঁদের এ উদ্দেশ্য সফল হবে না।' এরশাদ আরো বলেন, 'ডা. মিলন ছিলেন একজন সাধারণ পেশাজীবী মানুষ। তাঁকে হত্যা করলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতো, এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তিনি ছিলেন না। বরং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল রাজনৈতিক হীন স্বার্থে। এ হামলার মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতে পারত।'
গত ২৭ নভেম্বর ছিল ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯০ সালের এই দিনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি নিহত হন। মিলনের মৃত্যুর পর স্বৈরশাসকবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়। এরপর ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান এরশাদ।
জাপার একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাপার সাংগঠনিক মূল্যায়নের জন্য এ বৈঠক আহ্বান করা হলেও এতে মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
সূত্র মতে, জাপা নেতারা বলেন, এ সরকার ব্যর্থ। মহাজোটে থেকে সরকারের ব্যর্থতার দায় বহন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।' প্রথমেই পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, 'আমরা সরকারে আছি। কিন্তু ক্ষমতায় নেই। আবার মহাজোট থাকার কারণেই সরকারের সব ব্যর্থতাও তুলে ধরতে পারি না। কিন্তু পার্টির চেয়ারম্যান সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না।' তিনি বলেন, 'যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই পার্টির নেতা-কর্মীরা বলছেন, আর মহাজোট নয়। আগামীতে পল্লীবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ শাসন দেখতে চাই।'
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জাপার সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, 'মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তবে আরো সময় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।' আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমানও মহাজোট ছাড়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে ভরাডুবি হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায়। তবে এরশাদ সাহেবের বয়স হয়েছে। এ মুহূর্তে জেল-জুলুমের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। তাই আরো কিছু সময় অপেক্ষা করাটাই ঠিক হবে।'
সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এরশাদ বলেন, 'আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে জনগণ অতীষ্ঠ। গত তিন বছরে এ সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সবই জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে। আমাকে যেহেতু আপনারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই হুট করে নয় বরং যথাসময়ে মহাজোট থেকে বের হওয়া বা না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' বৈঠকে উপস্থিত প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এরশাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে টিপাইমুখ বাঁধ অভিমুখে রোডমার্চের আদলে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ এবং ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে জাপার একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
আলোচনায় জাপা নেতারা বলেন, ২৫০ থেকে ২৭০টি আসনে জাপার যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। বাকি আসনগুলোতেও যোগ্য প্রার্থী সন্ধান করা হবে।
বৈঠকে বেগম রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন বাবলু উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্য এরশাদের ভাই জি এম কাদের অনুপস্থিত ছিলেন।
ডা. মিলন ক্রসফায়ারে নিহত হন : এরশাদ
প্রেসিডিয়াম বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ডা. মিলন কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ক্রসফায়ারে নিহত হন। এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল না। এ ঘটনায় যাঁরা আমাকে দোষারোপ করেন, তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই এটা করেন। কিন্তু তাঁদের এ উদ্দেশ্য সফল হবে না।' এরশাদ আরো বলেন, 'ডা. মিলন ছিলেন একজন সাধারণ পেশাজীবী মানুষ। তাঁকে হত্যা করলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতো, এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তিনি ছিলেন না। বরং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল রাজনৈতিক হীন স্বার্থে। এ হামলার মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতে পারত।'
গত ২৭ নভেম্বর ছিল ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯০ সালের এই দিনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি নিহত হন। মিলনের মৃত্যুর পর স্বৈরশাসকবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়। এরপর ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান এরশাদ।
No comments