শেয়ারবাজার-১৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বীমা কম্পানিগুলো
বীমা কম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আরো এক হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য গত সপ্তাহের গুচ্ছ ঘোষণার আলোকে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএ) শিগগিরই এ অর্থ বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বীমা খাতের ৬০টি কম্পানির মধ্যে ১৭টি জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান আর বাকি ৪৩টি সাধারণ বীমা। জীবন বীমা কম্পানিগুলোর লাইফ ফান্ডে ১৩ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা
রয়েছে। এর মধ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। এরই মধ্যে বীমা কম্পানিগুলো এক হাজার ৩৭ কোটি টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। বাকি এক হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা শিগগিরই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ইনসু্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সভায় লাইফ ফান্ডের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে বিইএ সভাপতি শেখ কবির হোসেন জানান, পুঁজিবাজারে লাইফ এবং নন-লাইফ বীমা কম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে দীর্ঘ মেয়াদে সুফল বয়ে আনবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে বীমা খাতের কম্পানিগুলো নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে এই অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে। বৈঠকের একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলোর টাকাও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কাছে কী পরিমাণ বিনিয়োগযোগ্য তহবিল রয়েছে, সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, এই টাকার কিছু অংশ এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাকিটাও আনার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
গত বুধবার পুঁজিবাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়ানো ও দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীলতা ফেরাতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। ঘোষিত স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজারে বীমা কম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়ানোর কথাও রয়েছে। এতে বলা হয়, 'বীমা তহবিলের (লাইফ ও নন-লাইফ ফান্ডের) অর্থ অনতিবিলম্বে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মত হয়েছে। এ ছাড়া সরকার বীমা শিল্পের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।
এ ঘোষণার আগে ও পরে নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করে বীমা কম্পানিগুলো। রবিবার বীমা কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বৈঠকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গতকাল সোমবার বিইএর কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আরো সহজ করার জন্য বিইএ ১৭ নভেম্বর এসইসির কাছে তিন দফা প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মতো বীমা কম্পানিগুলোকে ১০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ, ইনসু্যুরেন্স কম্পানিকে সহযোগী কম্পানি হিসেবে ব্যাংকের মতো পূর্ণ মার্চেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স দেওয়া এবং ইনস্যুরেন্স কম্পানিগুলোকে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কম্পানির (এএমসি) লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
No comments