ফুটবলকে ঘিরে মিলনমেলা

বার্ধক্যে শরীর এখন আর চলে না। তার পরও গুটি গুটি পায়ে কাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন জহিরুল হক। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি এ মাঠে ঝড় তুলেছেন। তবে তাঁর কাছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের চিত্রটা তখন ছিল একটু ভিন্ন, 'আমাদের সময় স্টেডিয়ামের অবস্থাটা এমন ছিল না। মাঠটা ছিল। কিন্তু চারদিকে ছিল ঝিল। জোরে লাথি মারলেই বল গিয়ে পানিতে পড়ত।' ১৭ বছর মোহামেডানে খেলা এ ডিফেন্ডারের


মতো কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন গোলাম সারোয়ার টিপু, আশীষ ভদ্র, কাজী সালাউদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নুর মতো ফুটবলের সোনালি অতীতের তারকারাও। তাঁদের এ উপলক্ষটা করে দিয়েছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সোনালী অতীত ক্লাবের যৌথ আয়োজনের 'ওয়ালটন-সোনালী অতীত মাস্টারস্ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ'। কেউবা মাঠের লড়াইয়ে কেউ আবার মাঠের বাইরে থেকে এক দিনের এ টুর্নামেন্টকে রাঙিয়েছেন নতুন রঙে।
তবে মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে উৎসবের রংটা বেশি ছিল মাঠের বাইরেই। সব দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু, 'আসলে আমি একটু আবেগে আপ্লুত হয়ে গেছি। কমবেশি সবার সঙ্গেই দেখা হয়েছে। কেউ গাল টিপে আদর করছে। কেউ আবার পা ধরে সালাম করছে। একসময় যারা আমার ছাত্র ছিল তারাও এখন চলি্লশোর্ধ্ব। আজকের এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।' মাঠে নামেননি বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু এ আবেগ ছুঁয়ে গেছে তাঁকেও, 'আমার মনে হচ্ছে আমি আবারও পুরনো দিনগুলোতে ফিরে গেছি। আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি, যারা আমার প্রতিপক্ষ ছিল সবার সঙ্গেই আজ (কাল) দেখা হয়ে গেল। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।'
কাল একটু কম উচ্ছল ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদি। বরিশাল সোনালী অতীত ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন এক লিগে সর্বোচ্চ গোল করা মোহামেডানের এ সাবেক স্ট্রাইকার। তবে টাইব্রেকার থেকে গোল করেও ফাইনালে তিনি জেতাতে পারেননি বরিশালকে। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ম্যাচে নারায়ণগঞ্জ সোনালী অতীত ক্লাব টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বরিশালকে। তবে দীর্ঘদিন পরে মাঠে নামতে পেরে একটু বেশিই উৎফুল্ল সালাম মুর্শেদি, 'মনে হচ্ছিল আমি আমার সেই খেলোয়াড়ি জীবনে ফিরে গেছি। খুব ভালো লাগছে।' সালাম মুর্শেদির মতো বরিশালের হয়ে টাইব্রেকারে আরো গোল করেছেন মাসুদ, কামাল, স্বপন। আর চ্যাম্পিয়ন নারায়ণগঞ্জের পক্ষে গোলগুলো এসেছে গাউস, জাকির, স্বপন, মন্টু ও রতনের পা থেকে।

No comments

Powered by Blogger.