মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-রেডিও বা টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারের তাগিদ স্টিফেনের-বিদেশি আইন পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া অবশ্যই সবার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে বলে মত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র্যাপ। একই সঙ্গে তিনি টেলিভিশন বা রেডিওর মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়ার বিবরণী সরাসরি সমপ্রচার এবং বিদেশি আইন পরামর্শক নিয়োগের সুযোগ দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর পাঠানো অনেক সুপারিশ গৃহীত না হওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের চলমান বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন র্যাপ। বিচারপ্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতে তিনি চলতি বছরে এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ সফর করছেন।
স্টিফেন জে র্যাপ বলেন, বিশ্বব্যাপী এ বিচারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এমনভাবে এ বিচারকাজ পরিচালনা করা উচিত যাতে তা স্বচ্ছ হয় এবং সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
র্যাপ বলেন, 'এই বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গত মার্চ মাসে আমি এই বিচারকাজের ধারাগুলোর সংশোধনীর জন্য কিছু প্রস্তাব রেখেছিলাম। এসব প্রস্তাবের কিছু জুন মাসে গৃহীত সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই যে প্রস্তাবের মধ্য থেকে আরো অনেক বিষয় যোগ করা সম্ভব ছিল।'
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত বলেন, এ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে পুরোপুরি স্বচ্ছতা আনতে হবে। বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সময় আসামিপক্ষসহ সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার পাশাপাশি বিদেশি আইন পরামর্শকদের নিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। র্যাপ বলেন, বিচার কার্যক্রমের সব বক্তব্য ইংরেজি ও বাংলায় হতে হবে এবং এ জন্য অনুবাদকেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, আর এখন এসে বিচারকে উৎসাহিত করছেন কেন_সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাপ বলেন, 'তখনকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতি এবং ২০১১ সালের প্রেসিডেন্ট ওবামার কূটনৈতিক আদর্শ এক নয়।'
এর আগে লিখিত বক্তব্যে র্যাপ বলেন, 'বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে জানতে এবং যে বিচারকাজ শুরু হয়েছে তার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে করণীয় বিষয়ে মত জানাতে বাংলাদেশে এটি এ বছরে আমার তৃতীয় সফর।'
মার্কিন দূত বলেন, '১৯৭১ সালে কী ধরনের জঘন্য অপরাধ এখানে সংঘটিত হয়েছিল সে বিষয়ে আমার ধারণা রয়েছে। আমি জানি সে সময় হাজার হাজার ভুক্তভোগীকে হত্যা করা হয়েছে কিংবা তাঁরা ধর্ষিত হয়েছেন, কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে তাঁরা দিনাতিপাত করেছেন এবং কত বাড়িঘর ও সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে।'
র্যাপ বলেন, "প্রথমত এটা গুরুত্বপূর্ণ যে বিচারকদের প্রথম সুযোগেই 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা উচিত। 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধি ও বিভিন্ন মামলার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ বিষয় এখনো কোনো সংজ্ঞায় ফেলা হয়নি।"
যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার আশ্বাস
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করতে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'ট্রাইব্যুনালে আরো দক্ষ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত র্যাপ। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সব ধরনের আইনি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করেছেন তিনি। আমরা আইনি সব সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে তাঁকে আশ্বস্ত করেছি।'
মন্ত্রী জানান, প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।
বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক দূত স্টিফেন জে র্যাপের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী এসব কথা জানান। বৈঠকে আইনমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা উপস্থিত ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার ব্যক্তি ও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে সুবিচার পায় এবং এ দেশে অপরাধ মার্জনার সংস্কৃতির ইতি হোক, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তা চায়। বিচার সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্র একযোগে কাজ করতে চায়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে র্যাপের বৈঠক : আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে স্টিফেন জে র্যাপ আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রূপসী বাংলা হোটেলে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, 'কোনো সন্দেহ বা ধারণা থেকে বিচারপতি নিজামুল হকের বিষয়ে আবেদন করিনি। দেশ-বিদেশের নজির উপস্থাপন করেছি।'
স্টিফেন জে র্যাপ বলেন, বিশ্বব্যাপী এ বিচারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এমনভাবে এ বিচারকাজ পরিচালনা করা উচিত যাতে তা স্বচ্ছ হয় এবং সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
র্যাপ বলেন, 'এই বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গত মার্চ মাসে আমি এই বিচারকাজের ধারাগুলোর সংশোধনীর জন্য কিছু প্রস্তাব রেখেছিলাম। এসব প্রস্তাবের কিছু জুন মাসে গৃহীত সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই যে প্রস্তাবের মধ্য থেকে আরো অনেক বিষয় যোগ করা সম্ভব ছিল।'
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত বলেন, এ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে পুরোপুরি স্বচ্ছতা আনতে হবে। বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সময় আসামিপক্ষসহ সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার পাশাপাশি বিদেশি আইন পরামর্শকদের নিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। র্যাপ বলেন, বিচার কার্যক্রমের সব বক্তব্য ইংরেজি ও বাংলায় হতে হবে এবং এ জন্য অনুবাদকেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, আর এখন এসে বিচারকে উৎসাহিত করছেন কেন_সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাপ বলেন, 'তখনকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতি এবং ২০১১ সালের প্রেসিডেন্ট ওবামার কূটনৈতিক আদর্শ এক নয়।'
এর আগে লিখিত বক্তব্যে র্যাপ বলেন, 'বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে জানতে এবং যে বিচারকাজ শুরু হয়েছে তার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে করণীয় বিষয়ে মত জানাতে বাংলাদেশে এটি এ বছরে আমার তৃতীয় সফর।'
মার্কিন দূত বলেন, '১৯৭১ সালে কী ধরনের জঘন্য অপরাধ এখানে সংঘটিত হয়েছিল সে বিষয়ে আমার ধারণা রয়েছে। আমি জানি সে সময় হাজার হাজার ভুক্তভোগীকে হত্যা করা হয়েছে কিংবা তাঁরা ধর্ষিত হয়েছেন, কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে তাঁরা দিনাতিপাত করেছেন এবং কত বাড়িঘর ও সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে।'
র্যাপ বলেন, "প্রথমত এটা গুরুত্বপূর্ণ যে বিচারকদের প্রথম সুযোগেই 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা উচিত। 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধি ও বিভিন্ন মামলার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ বিষয় এখনো কোনো সংজ্ঞায় ফেলা হয়নি।"
যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার আশ্বাস
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করতে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'ট্রাইব্যুনালে আরো দক্ষ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত র্যাপ। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সব ধরনের আইনি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করেছেন তিনি। আমরা আইনি সব সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে তাঁকে আশ্বস্ত করেছি।'
মন্ত্রী জানান, প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।
বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক দূত স্টিফেন জে র্যাপের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী এসব কথা জানান। বৈঠকে আইনমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা উপস্থিত ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার ব্যক্তি ও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে সুবিচার পায় এবং এ দেশে অপরাধ মার্জনার সংস্কৃতির ইতি হোক, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তা চায়। বিচার সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্র একযোগে কাজ করতে চায়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে র্যাপের বৈঠক : আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে স্টিফেন জে র্যাপ আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রূপসী বাংলা হোটেলে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, 'কোনো সন্দেহ বা ধারণা থেকে বিচারপতি নিজামুল হকের বিষয়ে আবেদন করিনি। দেশ-বিদেশের নজির উপস্থাপন করেছি।'
No comments