আফগানিস্তানের জন্য মৃত্যুর মূল্য নেই by ড্যানিয়েল এল ডেভিস
সেনাবাহিনীর
সার্জেন্ট মেজর জেমস সারটর গত ১৩ জুলাই শনিবার আফগানিস্তানের ফারিয়াব প্রদেশে কর্মরত
অবস্থায় নিহত হয়েছেন। চলতি বছর মারা যাওয়া ১২ সৈন্যের তিনি স্রেফ একজন। এই
সংখ্যাটি ওয়াশিংটনের ব্যর্থ পররাষ্ট্রনীতির জন্য আত্মত্যাগ করাকে কম
অযৌক্তিক ও কম গ্রহণযোগ্য করে না।
আমরা সারটর পরিবারকে কী বলব? এটা বলব যে আমাদের দেশকে রক্ষার জন্য তিনি শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত দিয়েছেন? আমেরিকার ইতিহাসের কিছু বৈপরিত্বে এটা হয়তো সত্য। কিন্তু আফগানিস্তানে এটা গতানুগতিক ও অপমানকর একঘেঁয়ে মন্তব্য হয়ে গেছে।
চলতি বছর তার আগে মারা যাওয়া অন্য ১১ জনের মতো এ লোকটিও এক অভিযানে তার জীবন দান করেছেন, তবে তা আমাদের দেশের জন্য কল্যাণকর হয়নি। এই সর্বোচ্চ, তীব্র যন্ত্রণাদায়ক আত্মত্যাগের কারণে আমেরিকা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হয়নি। সত্য কথা হলো, আফগানিস্তানে আমাদের যুদ্ধ নিয়ে কোনো আমেরিকানই বলতে গেলে কোনো ধরনের মনোযোগ দেয় না। আর সামান্য কিছু লোক প্রকৃত অর্থেই আরেক সৈন্যের মর্মান্তিক প্রাণ হারানোতে শোকাভিভূত হয়েছে।
বস্তুত এই মৃত্যুর শোকের পুরো বোঝা পড়েছে একটি পরিবারের সামান্য সংখ্যক লোকের ওপর, তার ঘনিষ্ঠজনের ওপর। কেউ যখন বলে, আরে ভাই কেউ তো তাকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে জোরজবরদস্তি করেনি, তারা স্বেচ্ছায় যুদ্ধে গেছে, তখন আমার মাথায় রক্ত চেপে যায।
মাঝে মাঝে ভাবি, এই লোকের প্রাণপ্রিয় পুত্রটি, কন্যা, স্বামী বা স্ত্রী যদি এভাবে মারা যেত, তবে কি তারা একই ভাবনা ভাবত? নিশ্চয় না। আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে অপ্রয়োজনীয় মৃত্যুর কোনোই প্রয়োজন নেই।
মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ এই যুদ্ধে আমেরিকার সামরিক সম্পৃক্ততার অবসান ঘটাতে বেপরোয়াভাবে চেষ্টা করছেন। এর মানে হলো প্রত্যাহারের নির্দেশের অপেক্ষা করার সময় সারটর তার প্রাণ দিয়েছেন।
খালিলজাদ ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সমঝোতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন আর সামরিক লক্ষ্য হাসিল করার কিছু নেই। বাকি আছে মাত্র দুটি বিষয়: কখন প্রত্যাহার শুরু হবে এবং তা কত দ্রুত হবে? যেকোনো প্রাণহানিই কষ্টদায়ক। কিন্তু এই বিপর্যয়কর যুদ্ধটি গুটিয়ে আনার সময় আরো একটি আমেরিকানের মৃত্যুও হৃদয়বিদারক।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত হবে দ্রুত আফগানিস্তানে নিয়মিত সামরিক অভিযান বন্ধ করা। আমেরিকার নিরাপত্তার প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকি চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সৈন্যদের আর কোনো শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে পাঠানো ঠিক হবে না। আমাদের বাহিনীর উচিত হবে না টহল কার্যক্রমে থাকা, কাঁটাতারের বাইরে বের হওয়াও উচিত হবে না। আমাদের সৈন্যদের উচিত হবে কূটনৈতিক সদস্যদের পাহারা দেয়া, নিজেদের রক্ষার কাজে নিয়োজিত হওয়া। এর মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমিত হওয়া উচিত হবে।
দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান আলোচনায় প্রত্যাহারের মেয়াদটি দ্রুত হতেই হবে। পররাষ্ট্রবিষয়ক নীতি নির্ধারকেরা অবশ্য বলে আসছেন যে সময়ের আগেই প্রত্যাহার হবে কৌশলগত ভুল, কিন্তু ১৮ বছর যুদ্ধ করার পরও যদি বলা হয় প্রত্যাহারের সময় এখনো হয়নি, তবে তা হবে হাস্যকর কথা।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি সমঝোতা হয়, তবে আমাদের প্রত্যাহার আরো কয়েক বছর পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখার কোনো অর্থ হয় না। চুক্তি সইয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যে নয়, বরং কয়েক মাসের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব শান্তিপূর্ণ প্রত্যাহার হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে কূটনৈতিক সম্পৃকতা অব্যাহত রাখা। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক সহায়তাও অব্যাহত রাখতে হবে। তবে অযথা যাতে আমেরিকান অর্থ ব্যয় না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আমাদের প্রকাশ্যেই স্বীকার করতে হবে যে ২০০১ সালে আমাদের হামলায় বাধাপ্রাপ্ত আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ আবার শুরু হয়ে যাবে আমাদের প্রত্যাহারের পরপরই। তবে আমাদের এও স্বীকার করতে হবে যে প্রায় দুই দশক ধরে আমাদের টানা সামরিক হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তাদের যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। আমরা প্রত্যাহার না হলে বেসামরিক হতাহত অব্যাহত থাকতে পারে। আর তা চলতেই থাকবে।
আমাদের দেশের বিপুলসংখ্যক লোক আমাদের দেশের জন্য কোনো লাভ ছাড়াই তাদের জীবনকে দান করেছে। তারা এমন এক যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে, যেখানে সামরিকভাবে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। আমেরিকান জীবনের অপ্রয়োজনীয় আত্মত্যাগের অবসান ঘটানোর এটাই সময়। এখনই সময়।
আমরা সারটর পরিবারকে কী বলব? এটা বলব যে আমাদের দেশকে রক্ষার জন্য তিনি শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত দিয়েছেন? আমেরিকার ইতিহাসের কিছু বৈপরিত্বে এটা হয়তো সত্য। কিন্তু আফগানিস্তানে এটা গতানুগতিক ও অপমানকর একঘেঁয়ে মন্তব্য হয়ে গেছে।
চলতি বছর তার আগে মারা যাওয়া অন্য ১১ জনের মতো এ লোকটিও এক অভিযানে তার জীবন দান করেছেন, তবে তা আমাদের দেশের জন্য কল্যাণকর হয়নি। এই সর্বোচ্চ, তীব্র যন্ত্রণাদায়ক আত্মত্যাগের কারণে আমেরিকা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হয়নি। সত্য কথা হলো, আফগানিস্তানে আমাদের যুদ্ধ নিয়ে কোনো আমেরিকানই বলতে গেলে কোনো ধরনের মনোযোগ দেয় না। আর সামান্য কিছু লোক প্রকৃত অর্থেই আরেক সৈন্যের মর্মান্তিক প্রাণ হারানোতে শোকাভিভূত হয়েছে।
বস্তুত এই মৃত্যুর শোকের পুরো বোঝা পড়েছে একটি পরিবারের সামান্য সংখ্যক লোকের ওপর, তার ঘনিষ্ঠজনের ওপর। কেউ যখন বলে, আরে ভাই কেউ তো তাকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে জোরজবরদস্তি করেনি, তারা স্বেচ্ছায় যুদ্ধে গেছে, তখন আমার মাথায় রক্ত চেপে যায।
মাঝে মাঝে ভাবি, এই লোকের প্রাণপ্রিয় পুত্রটি, কন্যা, স্বামী বা স্ত্রী যদি এভাবে মারা যেত, তবে কি তারা একই ভাবনা ভাবত? নিশ্চয় না। আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে অপ্রয়োজনীয় মৃত্যুর কোনোই প্রয়োজন নেই।
মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ এই যুদ্ধে আমেরিকার সামরিক সম্পৃক্ততার অবসান ঘটাতে বেপরোয়াভাবে চেষ্টা করছেন। এর মানে হলো প্রত্যাহারের নির্দেশের অপেক্ষা করার সময় সারটর তার প্রাণ দিয়েছেন।
খালিলজাদ ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সমঝোতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন আর সামরিক লক্ষ্য হাসিল করার কিছু নেই। বাকি আছে মাত্র দুটি বিষয়: কখন প্রত্যাহার শুরু হবে এবং তা কত দ্রুত হবে? যেকোনো প্রাণহানিই কষ্টদায়ক। কিন্তু এই বিপর্যয়কর যুদ্ধটি গুটিয়ে আনার সময় আরো একটি আমেরিকানের মৃত্যুও হৃদয়বিদারক।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত হবে দ্রুত আফগানিস্তানে নিয়মিত সামরিক অভিযান বন্ধ করা। আমেরিকার নিরাপত্তার প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকি চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সৈন্যদের আর কোনো শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে পাঠানো ঠিক হবে না। আমাদের বাহিনীর উচিত হবে না টহল কার্যক্রমে থাকা, কাঁটাতারের বাইরে বের হওয়াও উচিত হবে না। আমাদের সৈন্যদের উচিত হবে কূটনৈতিক সদস্যদের পাহারা দেয়া, নিজেদের রক্ষার কাজে নিয়োজিত হওয়া। এর মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমিত হওয়া উচিত হবে।
দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান আলোচনায় প্রত্যাহারের মেয়াদটি দ্রুত হতেই হবে। পররাষ্ট্রবিষয়ক নীতি নির্ধারকেরা অবশ্য বলে আসছেন যে সময়ের আগেই প্রত্যাহার হবে কৌশলগত ভুল, কিন্তু ১৮ বছর যুদ্ধ করার পরও যদি বলা হয় প্রত্যাহারের সময় এখনো হয়নি, তবে তা হবে হাস্যকর কথা।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি সমঝোতা হয়, তবে আমাদের প্রত্যাহার আরো কয়েক বছর পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখার কোনো অর্থ হয় না। চুক্তি সইয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যে নয়, বরং কয়েক মাসের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব শান্তিপূর্ণ প্রত্যাহার হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে কূটনৈতিক সম্পৃকতা অব্যাহত রাখা। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক সহায়তাও অব্যাহত রাখতে হবে। তবে অযথা যাতে আমেরিকান অর্থ ব্যয় না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আমাদের প্রকাশ্যেই স্বীকার করতে হবে যে ২০০১ সালে আমাদের হামলায় বাধাপ্রাপ্ত আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ আবার শুরু হয়ে যাবে আমাদের প্রত্যাহারের পরপরই। তবে আমাদের এও স্বীকার করতে হবে যে প্রায় দুই দশক ধরে আমাদের টানা সামরিক হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তাদের যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। আমরা প্রত্যাহার না হলে বেসামরিক হতাহত অব্যাহত থাকতে পারে। আর তা চলতেই থাকবে।
আমাদের দেশের বিপুলসংখ্যক লোক আমাদের দেশের জন্য কোনো লাভ ছাড়াই তাদের জীবনকে দান করেছে। তারা এমন এক যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে, যেখানে সামরিকভাবে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। আমেরিকান জীবনের অপ্রয়োজনীয় আত্মত্যাগের অবসান ঘটানোর এটাই সময়। এখনই সময়।
No comments