বাংলাদেশের অব্যাহত উত্থান
বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১-৬ জুলাই যে চীন সফর করেন, এর মধ্য দিয়ে
আঞ্চলিক রাজনীতির একটি নতুন দিক উঠে এসেছে – সেটা হলো আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে
উত্থান হচ্ছে বাংলাদেশের।
গত বছর দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি (৭.৩%) হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে মাঝারি আয়ের দেশের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন হাসিনা। আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের পর্যায়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তার।
আমার বিবেচনায় হাসিনার চীন সফরের প্রধান তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো: এক. বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোরে (বিসিআইএম-ইআর) তাদের গতি জোরদার করছে; দুই. ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ব্যাপারে এগিয়েছে বাংলাদেশ – যেটাকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন ‘ডিজিটাল সিল্ক রোড’, হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ পরিকল্পনার সাথে যেটা মিলে গেছে; এবং তিন. রাখাইন রাজ্য থেকে যারা ঘরবাড়ি হারা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, মিয়ানমারে তাদের দ্রুত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির সাথে বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছে এখানে। হাসিনার বাস্তববাদী মানসিকতার ব্যাপারে বেইজিং স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে। ‘ভারত-পন্থী’ হিসেবে বিবেচিত হলেও হাসিনা ভারতীয় অক্ষের বাইরেও বিচারণ করছেন এবং চীনের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি। এবং এরপরও সুনির্দিষ্টভাবে কোন পক্ষ নেননি তিনি।
এমনিতেও এখানে বৈপরিত্যের কোন ব্যাপার নেই, কারণ হাসিনার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু এখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে চীনকে সংযত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে যে জোর তৎপরতা শুরু করেছে, সেটার ব্যাপারে হাসিনার অনাগ্রহকে সাধুবাদ জানায় চীন।
মোদ্দা কথা হলো চীন মনে করে যে ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নটি সত্য হওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের যে বিশাল বাজার, সেটা চীনের জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের অজানা দুয়ার খুলে দেবে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি যদি দ্রুত বাড়তে থাকে, তাহলে অর্থনীতির জন্য উন্নত অবকাঠামো, আরও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি সহায়তার প্রয়োজন হবে। আর চীন সেখানে ঋণ সহায়তা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সাহায্য করতে পারবে এবং পরিবহন, বিদ্যুৎ বিপনন ও টেলিযোগাযোগের মতো খাতগুলোতে অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারবে।
একইভাবে, ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্যও বাংলাদেশের মধ্যে সম্ভাবনা দেখছে চীন। এই পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতকে তাদের দক্ষিণ এশিয়া কৌশলের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এটা নিশ্চিত যে, দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শীতল যুদ্ধের এজেন্ডার সাথে গাঁট বাঁধলে তাতে ভারতের স্বার্থ হাসিল হবে না।
কলম্বোতে নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে গিয়ে সম্প্রতি হোচট খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে যে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক দেশগুলো আসিয়ানের মতো চীন-বিরোধী মার্কিন নীতিকে প্রত্যাখ্যান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নির্বাচিত সরকারগুলো তাদের উন্নয়ন এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তারা এমন একটা আন্তর্জাতিক পরিবেশ খুঁজছে যেটা তাদের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সহায়ক এবং যেখানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
ভারত এখানে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে পারতো। কিন্তু তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ঢুকে গেছে। শ্রীলংকায় (২০১৫) ভারতীয় কূটনীতিকরা ইঙ্গ-মার্কিন প্রকল্পের সাথে মিলে ‘ক্ষমতা বদলের’ খেলায় নেমেছিল। এর আগে তারা নেপালকে ‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ পরিণত করার ব্যর্থ প্রকল্প নিয়ে নেমেছিল, যেটার পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। তবে এরপরে মালদ্বীপে তারা (২০১৮) সাফল্য পেয়েছে।
২০১৫ সালে কলম্বোতে মাহিন্দা রাজাপাকসার বদলে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তার ভারতকে একটিও নতুন বড় কোন প্রকল্প দেয়নি। এদিকে, শ্রীলংকায় প্রবেশের জন্য ভারতকে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলস্বরূপ শ্রীলংকায় বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। আর ভারতের এখানে বিসিআইএমের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখা উচিত।
ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, “বিসিআইএম-ইসির গতি বৃদ্ধির জন্য ভারতের সাথে বিনিময়ের ব্যাপারে চীনের আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকার করেছেন যে, “ভারতের সাথে মিলেই এই পদক্ষেপকে আবার চাঙ্গা করতে হবে”।
বেইজিং সহযোগিতার যে ‘চায়না-ইন্ডিয়া প্লাস’ ধারণা দিয়েছে, সেটার কার্যকারিতা বোঝার ক্ষেত্রে একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে বিসিআইএম-ইসি দিয়ে। ভারত ও চীনের সাথে হাত মেলায়, তাহলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পথে অনেক কিছুই অর্জিত হতে পারে। রোহিঙ্গা সঙ্কটটি এখানে একটি উদাহরণ।
ভারত ও চীন কেন একটা যৌথ নীতি গ্রহণ করতে পারে না? আসলে যুক্তরাষ্ট্র এখানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিপজ্জনক খেলায় নেমেছে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ও এশিয়া ও প্রশান্ত বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ব্র্যাড শেরম্যান সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যকে মিয়ানমার থেকে আলাদা করে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করার যে বিস্ফোরক প্রস্তাব দিয়েছেন, সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সেটিকে নাকচ করে দেন হাসিনা।
হাসিনা বলেন: “এটা একটা মারাত্মক ও অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব। এটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের ৫৪০০০ বর্গমাইল সীমানা নিয়ে আমরা খুশি… তারা যেখানেই হাত দিয়েছে, সেখানে আগুন লেগে গেছে.. কোথাও শান্তি আসেনি এবং জঙ্গিবাদ ও অস্থিরতা গ্রাস করেছে… আমরা এ অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এখানে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে… এটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়”।
হাসিনা আরও বলেন যে, চীনা নেতারা ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মিয়ানমারকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করবেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “চীন আশ্বাস দিয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তারা বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এটা কি ভালো খবর নয়?”
গত বছর দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি (৭.৩%) হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে মাঝারি আয়ের দেশের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন হাসিনা। আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের পর্যায়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তার।
আমার বিবেচনায় হাসিনার চীন সফরের প্রধান তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো: এক. বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোরে (বিসিআইএম-ইআর) তাদের গতি জোরদার করছে; দুই. ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ব্যাপারে এগিয়েছে বাংলাদেশ – যেটাকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন ‘ডিজিটাল সিল্ক রোড’, হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ পরিকল্পনার সাথে যেটা মিলে গেছে; এবং তিন. রাখাইন রাজ্য থেকে যারা ঘরবাড়ি হারা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, মিয়ানমারে তাদের দ্রুত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির সাথে বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছে এখানে। হাসিনার বাস্তববাদী মানসিকতার ব্যাপারে বেইজিং স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে। ‘ভারত-পন্থী’ হিসেবে বিবেচিত হলেও হাসিনা ভারতীয় অক্ষের বাইরেও বিচারণ করছেন এবং চীনের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি। এবং এরপরও সুনির্দিষ্টভাবে কোন পক্ষ নেননি তিনি।
এমনিতেও এখানে বৈপরিত্যের কোন ব্যাপার নেই, কারণ হাসিনার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু এখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে চীনকে সংযত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে যে জোর তৎপরতা শুরু করেছে, সেটার ব্যাপারে হাসিনার অনাগ্রহকে সাধুবাদ জানায় চীন।
মোদ্দা কথা হলো চীন মনে করে যে ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নটি সত্য হওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের যে বিশাল বাজার, সেটা চীনের জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের অজানা দুয়ার খুলে দেবে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি যদি দ্রুত বাড়তে থাকে, তাহলে অর্থনীতির জন্য উন্নত অবকাঠামো, আরও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি সহায়তার প্রয়োজন হবে। আর চীন সেখানে ঋণ সহায়তা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সাহায্য করতে পারবে এবং পরিবহন, বিদ্যুৎ বিপনন ও টেলিযোগাযোগের মতো খাতগুলোতে অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারবে।
একইভাবে, ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্যও বাংলাদেশের মধ্যে সম্ভাবনা দেখছে চীন। এই পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতকে তাদের দক্ষিণ এশিয়া কৌশলের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এটা নিশ্চিত যে, দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শীতল যুদ্ধের এজেন্ডার সাথে গাঁট বাঁধলে তাতে ভারতের স্বার্থ হাসিল হবে না।
কলম্বোতে নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে গিয়ে সম্প্রতি হোচট খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে যে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক দেশগুলো আসিয়ানের মতো চীন-বিরোধী মার্কিন নীতিকে প্রত্যাখ্যান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নির্বাচিত সরকারগুলো তাদের উন্নয়ন এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তারা এমন একটা আন্তর্জাতিক পরিবেশ খুঁজছে যেটা তাদের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সহায়ক এবং যেখানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
ভারত এখানে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে পারতো। কিন্তু তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ঢুকে গেছে। শ্রীলংকায় (২০১৫) ভারতীয় কূটনীতিকরা ইঙ্গ-মার্কিন প্রকল্পের সাথে মিলে ‘ক্ষমতা বদলের’ খেলায় নেমেছিল। এর আগে তারা নেপালকে ‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ পরিণত করার ব্যর্থ প্রকল্প নিয়ে নেমেছিল, যেটার পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। তবে এরপরে মালদ্বীপে তারা (২০১৮) সাফল্য পেয়েছে।
২০১৫ সালে কলম্বোতে মাহিন্দা রাজাপাকসার বদলে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তার ভারতকে একটিও নতুন বড় কোন প্রকল্প দেয়নি। এদিকে, শ্রীলংকায় প্রবেশের জন্য ভারতকে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলস্বরূপ শ্রীলংকায় বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। আর ভারতের এখানে বিসিআইএমের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখা উচিত।
ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, “বিসিআইএম-ইসির গতি বৃদ্ধির জন্য ভারতের সাথে বিনিময়ের ব্যাপারে চীনের আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকার করেছেন যে, “ভারতের সাথে মিলেই এই পদক্ষেপকে আবার চাঙ্গা করতে হবে”।
বেইজিং সহযোগিতার যে ‘চায়না-ইন্ডিয়া প্লাস’ ধারণা দিয়েছে, সেটার কার্যকারিতা বোঝার ক্ষেত্রে একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে বিসিআইএম-ইসি দিয়ে। ভারত ও চীনের সাথে হাত মেলায়, তাহলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পথে অনেক কিছুই অর্জিত হতে পারে। রোহিঙ্গা সঙ্কটটি এখানে একটি উদাহরণ।
ভারত ও চীন কেন একটা যৌথ নীতি গ্রহণ করতে পারে না? আসলে যুক্তরাষ্ট্র এখানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিপজ্জনক খেলায় নেমেছে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ও এশিয়া ও প্রশান্ত বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ব্র্যাড শেরম্যান সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যকে মিয়ানমার থেকে আলাদা করে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করার যে বিস্ফোরক প্রস্তাব দিয়েছেন, সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সেটিকে নাকচ করে দেন হাসিনা।
হাসিনা বলেন: “এটা একটা মারাত্মক ও অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব। এটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের ৫৪০০০ বর্গমাইল সীমানা নিয়ে আমরা খুশি… তারা যেখানেই হাত দিয়েছে, সেখানে আগুন লেগে গেছে.. কোথাও শান্তি আসেনি এবং জঙ্গিবাদ ও অস্থিরতা গ্রাস করেছে… আমরা এ অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এখানে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে… এটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়”।
হাসিনা আরও বলেন যে, চীনা নেতারা ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মিয়ানমারকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করবেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “চীন আশ্বাস দিয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তারা বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এটা কি ভালো খবর নয়?”
No comments