কোণঠাসা কাশ্মিরিরা, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছে ভারত by নূর উল হক
শেখ মোস্তাক, ৫৫, ভারত-শাসিত কাশ্মিরের উত্তর অংশ বারামুল্লা জেলার অধিবাসী। তিনি এখন উদ্বিগ্ন।
সোমবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারির পর তার মেয়েকে তার বন্ধুদের সাথে জম্মুর প্রধান নগরীর কাছে অবস্থিত বাবা গুলাম শাহ বাদশাহ ইউনিভার্সিটি থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কাশ্মিরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকে। কাশ্মিরিদের প্রবল প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ক্যাবল টিভি, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বাতিল করা হয়েছে।
মোস্তাক বলেন, ২৪ ঘণ্টারও বেশি আগে তার মেয়ে ও তার বন্ধুরা জম্মু ত্যাগ করেছে। কিন্তু এখনো তাদের তারা বাড়ি ফেরেনি।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, আমরা পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তারা মেয়েদের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। তারা এখনো জম্মুতেই আছে না কাশ্মিরের দক্ষিণ অংশে ফিরতে পেরেছে জানি না।
তিনি বলেন, আমরা অসহায়। আমরা আশা করছি, মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু করা হয়নি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের ৭০ লাখ অধিবাসীর একজন হলেন মুস্তাক। ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর তারা এখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।
ঈদের কোনো আবহ নেই
আগামী সোমবার কাশ্মিরে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হওয়ার কথা। কিন্তু অধিবাসীরা বলছে, তাদের মধ্যে ঈদ উৎসবের কোনো আনন্দ নেই। তারা বলছেন, তাদের বাজার থেকে কোরবানির পশু কেনার অনুমতিও দেয়া হচ্ছে না।
বিক্রেতারা বলছে, বর্তমান অবস্থায় ব্যবসা চালানো কঠিন। জহুর আহমদ শেখ, ২৯, বলেন, তিনি ঈদের জন্য ৬০টি পশুর অর্ডার দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন কোনো ক্রেতা নেই।
তিনি বলেন, আমি এবার ব্যাপক বিক্রির আশা করেছিলাম। কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, লোকজন ঈদে পশু কিনতে চায়। কিন্তু এ ধরনের পরিবেশে কেউ এ খাতে টাকা খরচ করতে চাইবে না।
কাশ্মির অঞ্চলে অনিশ্চয়তা ও বিভ্রান্তি বিরাজ করছে। কারফিউয়ের মধ্যে লোকজন নিত্যপণ্য সংগ্রহ করতেও সমস্যায় পড়ছে। রোগী ও শিশুরা পড়েছে সবচেয়ে বড় অসুবিধায়। ফার্মেসিগুলো বন্ধ রয়েছে। শিশুদের ফরমুলা দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানিরা বলছে, তাদের মজুত শেষ হয়ে আসছে।
মোহাম্মদ রফিক দার নামের ২৭ বছরের এক ব্যক্তি জানান, চাল, ময়দা ও অন্যান্য ভোজ্য সামগ্রীর প্রায় শেষের পথে। আর দুদিন চলতে পারে। উপত্যকার বাইরে থেকে কোনো চালান আসছে না। কাশ্মিরিরদের সামনে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে।
অবরোধের ফলে এই অঞ্চলের আপেল চাষীদের জন্যও সমস্যা হচ্ছে। বছরের এই সময়ই তাদের ফসল তুলতে হয়।
রাজ্যটির অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সেখানকার আপেল বাগানের গুরুত্ব ব্যাপক। চাষীরা জানিয়েছে, আপেলবোঝাই ট্রাকগুলো গন্তব্যে যেতে পারছে না। নিরাপত্তা বাহিনী মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছে না।
ফয়াস আহমদ মালিক, ২৭, বলেন, আপেল বেশি দিন রাখা যায় না।
ভারত এখন দখলদার শক্তি
এদিকে রাস্তায় রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী যখন টহল দিচ্ছে, তখন কাশ্মিরের অধিবাসীদের মধ্যে ক্রোধ আর অসহায়বোধ তাড়িয়ে ফিরছে। কর্তৃপক্ষ চারজনের বেশি লোককে একসাথে হতে দিচ্ছে না।
কর্তৃপক্ষ জটিল রোগীদের শ্রীনগরের প্রধান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, তবে এজন্য তাদেরকে বিশেষ অনুমতিপত্র দেখাতে হচ্ছে।
আইনজীবী আবরার আলী, ৩৫, বলেন, কাশ্মিরে ভারতের বিশ্বাসঘাতকতা নতুন মাত্রায় নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, আমাদের আগে মুখ্যমন্ত্রী ছিল। তারা ছিল কাশ্মিরে ভারতীয় প্রতিনিধি। তাদেরকে জেলে রাখা হয়েছে। কাশ্মিরিরা কিভাবে নিজেদের এখন নিরাপদ মনে করবে। ৩৭০ ও ৩৫ক ধারা বাতিল করে ভারত এখন দখলদার শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
অধিবাসী সোহাইল রাশিদ বলেন, ভারতের পদক্ষেপের ফলে এই অঞ্চলের শান্তিতে প্রভাব ফেলবে।
কাশ্মিরিদের ভাগ্য শত শত মাইল দূরে দিল্লি থেকে নির্ধারিত হচ্ছে দেশের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের মাধ্যমে। এতে কাশ্মির নিয়ে কাশ্মিরিদের কোনো কথা থাকছে না।
সাবেক আইন পরিষদ সদস্য জাভেদ হাসান বেগ বলেন, এখন কাশ্মির পরিণত হয়েছে পঞ্চায়েতে। সারা বিশ্বে ভারত পরিচিত ছিল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য এখন তা আর নেই।
সোমবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারির পর তার মেয়েকে তার বন্ধুদের সাথে জম্মুর প্রধান নগরীর কাছে অবস্থিত বাবা গুলাম শাহ বাদশাহ ইউনিভার্সিটি থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কাশ্মিরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকে। কাশ্মিরিদের প্রবল প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ক্যাবল টিভি, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বাতিল করা হয়েছে।
মোস্তাক বলেন, ২৪ ঘণ্টারও বেশি আগে তার মেয়ে ও তার বন্ধুরা জম্মু ত্যাগ করেছে। কিন্তু এখনো তাদের তারা বাড়ি ফেরেনি।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, আমরা পুলিশ ও বেসামরিক প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তারা মেয়েদের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। তারা এখনো জম্মুতেই আছে না কাশ্মিরের দক্ষিণ অংশে ফিরতে পেরেছে জানি না।
তিনি বলেন, আমরা অসহায়। আমরা আশা করছি, মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু করা হয়নি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের ৭০ লাখ অধিবাসীর একজন হলেন মুস্তাক। ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর তারা এখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।
ঈদের কোনো আবহ নেই
আগামী সোমবার কাশ্মিরে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হওয়ার কথা। কিন্তু অধিবাসীরা বলছে, তাদের মধ্যে ঈদ উৎসবের কোনো আনন্দ নেই। তারা বলছেন, তাদের বাজার থেকে কোরবানির পশু কেনার অনুমতিও দেয়া হচ্ছে না।
বিক্রেতারা বলছে, বর্তমান অবস্থায় ব্যবসা চালানো কঠিন। জহুর আহমদ শেখ, ২৯, বলেন, তিনি ঈদের জন্য ৬০টি পশুর অর্ডার দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন কোনো ক্রেতা নেই।
তিনি বলেন, আমি এবার ব্যাপক বিক্রির আশা করেছিলাম। কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, লোকজন ঈদে পশু কিনতে চায়। কিন্তু এ ধরনের পরিবেশে কেউ এ খাতে টাকা খরচ করতে চাইবে না।
কাশ্মির অঞ্চলে অনিশ্চয়তা ও বিভ্রান্তি বিরাজ করছে। কারফিউয়ের মধ্যে লোকজন নিত্যপণ্য সংগ্রহ করতেও সমস্যায় পড়ছে। রোগী ও শিশুরা পড়েছে সবচেয়ে বড় অসুবিধায়। ফার্মেসিগুলো বন্ধ রয়েছে। শিশুদের ফরমুলা দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানিরা বলছে, তাদের মজুত শেষ হয়ে আসছে।
মোহাম্মদ রফিক দার নামের ২৭ বছরের এক ব্যক্তি জানান, চাল, ময়দা ও অন্যান্য ভোজ্য সামগ্রীর প্রায় শেষের পথে। আর দুদিন চলতে পারে। উপত্যকার বাইরে থেকে কোনো চালান আসছে না। কাশ্মিরিরদের সামনে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে।
অবরোধের ফলে এই অঞ্চলের আপেল চাষীদের জন্যও সমস্যা হচ্ছে। বছরের এই সময়ই তাদের ফসল তুলতে হয়।
রাজ্যটির অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সেখানকার আপেল বাগানের গুরুত্ব ব্যাপক। চাষীরা জানিয়েছে, আপেলবোঝাই ট্রাকগুলো গন্তব্যে যেতে পারছে না। নিরাপত্তা বাহিনী মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছে না।
ফয়াস আহমদ মালিক, ২৭, বলেন, আপেল বেশি দিন রাখা যায় না।
ভারত এখন দখলদার শক্তি
এদিকে রাস্তায় রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী যখন টহল দিচ্ছে, তখন কাশ্মিরের অধিবাসীদের মধ্যে ক্রোধ আর অসহায়বোধ তাড়িয়ে ফিরছে। কর্তৃপক্ষ চারজনের বেশি লোককে একসাথে হতে দিচ্ছে না।
কর্তৃপক্ষ জটিল রোগীদের শ্রীনগরের প্রধান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, তবে এজন্য তাদেরকে বিশেষ অনুমতিপত্র দেখাতে হচ্ছে।
আইনজীবী আবরার আলী, ৩৫, বলেন, কাশ্মিরে ভারতের বিশ্বাসঘাতকতা নতুন মাত্রায় নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, আমাদের আগে মুখ্যমন্ত্রী ছিল। তারা ছিল কাশ্মিরে ভারতীয় প্রতিনিধি। তাদেরকে জেলে রাখা হয়েছে। কাশ্মিরিরা কিভাবে নিজেদের এখন নিরাপদ মনে করবে। ৩৭০ ও ৩৫ক ধারা বাতিল করে ভারত এখন দখলদার শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
অধিবাসী সোহাইল রাশিদ বলেন, ভারতের পদক্ষেপের ফলে এই অঞ্চলের শান্তিতে প্রভাব ফেলবে।
কাশ্মিরিদের ভাগ্য শত শত মাইল দূরে দিল্লি থেকে নির্ধারিত হচ্ছে দেশের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের মাধ্যমে। এতে কাশ্মির নিয়ে কাশ্মিরিদের কোনো কথা থাকছে না।
সাবেক আইন পরিষদ সদস্য জাভেদ হাসান বেগ বলেন, এখন কাশ্মির পরিণত হয়েছে পঞ্চায়েতে। সারা বিশ্বে ভারত পরিচিত ছিল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য এখন তা আর নেই।
No comments