মুখোমুখি যুদ্ধ থেকে কেন আইএস গেরিলা কৌশলে?
খেলাফতের
পতনের পর সম্প্রতি আইএস-এর কথিত সংবাদপত্র আল নাবাতে ‘টেম্পোরারি ফল অব
সিটিজ অ্যাজ অ্যা ওয়ার্কিং মেথড ফর দ্য মুজাহিদিন’ শিরোনামে চার পর্বের
ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। একে আইএস-এর ‘গেরিলা ম্যানুয়েল’ হিসেবে
উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওই নির্দেশিকায় আইএস তাদের
যোদ্ধাদের শত্রুদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। অথচ
একসময় মুখোমুখি যুদ্ধকেই উৎসাহিত করতো জঙ্গি সংগঠনটি। তবে কেন কৌশল
পরিবর্তন করেছে তারা? জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলো বলছে,
খেলাফতের পতনের পর আইএস দুর্বল হয়ে পড়েছে। যোদ্ধা ও অর্থ সংকটে রয়েছে তারা।
এমন অবস্থায় প্রতিপক্ষকে আঘাত করে তাদের মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের
প্রয়োজন মেটানোর জন্য আইএস সদস্যদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নৃশংসতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আইএস। অতীতের যেকোনও জঙ্গি তৎপরতাকে ছাপিয়ে তারা আবির্ভূত হয় ভয়াবতার চূড়ান্ত রূপ নিয়ে। তবে ক্রমশ বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছে পরাজিত হতে হতে এ বছরের মার্চে সিরিয়ায় নিজেদের সর্বশেষ ঘাঁটি বাঘুজের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয় তাদের। একপর্যায়ে পুরনো ধাঁচের লড়াইয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয় জঙ্গি সংগঠনটি। সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়া এবং জনসমর্থন আদায় করাকে কৌশল হিসেবে নেয় তারা।
কীভাবে গেরিলা যোদ্ধারা নিজেদের ক্ষতি না করেই শত্রু পক্ষকে দুর্বল করে দিতে পারে, নাবাতে প্রকাশিত নিবন্ধে তারই কৌশল শেখানো হয়েছে। হামলায় আক্রান্তদের কাছ থেকে অস্ত্র জব্দ করা এবং তাদের জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া বা পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
সামনাসামনি যুদ্ধ থেকে সরে এসে আইএস-এর আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার কৌশল বেছে নেওয়ার নেপথ্যের সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলো শনাক্ত করেছে রয়টার্স। এরমধ্যে রয়েছে অর্থ, খাবার, ওষুধ ও অস্ত্র সংগ্রহ করে যোদ্ধাদের প্রয়োজন পূরণ করা। বিশেষ করে দুর্বল অবস্থায় থাকা যোদ্ধাদের প্রয়োজন মেটানো যখন কঠিন হয়ে পড়ে, তখন এ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’-এর নির্বাহী পরিচালক রিটা কাৎজ জানান, এ গেরিলা যুদ্ধের ম্যানুয়েল আইএস-এর এ পর্যন্ত প্রকাশিত ম্যানুয়েলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিস্তারিত। কয়েক বছর আগে সৌদি আরবে ইলেক্ট্রনিক ম্যাগাজিন আল বাত্তারে আল কায়েদা প্রকাশিত ম্যানুয়েলগুলোতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল, তার অন্তত একটির সঙ্গে এর মিল রয়েছে।
রিটা আরও বলেন, আইএস-এর নতুন ম্যানুয়েল থেকে দেখা গেছে, সংগঠনটি যোদ্ধা ও অর্থ সংকটে রয়েছে। বিভিন্ন ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস, বিশেষ করে কর ও তেল রাজস্ব হারিয়েছে আইএস।
‘বলতে গেলে আর্থিকভাবে, ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের দিক দিয়ে এবং সামরিকভাবে সংগঠনটি অনেক দুর্বল। ইরাক ও সিরিয়ার বাইরের এলাকাগুলোতে মনোযোগ বাড়িয়ে আইএস নেতৃত্ব তাদের তথাকথিত খিলাফত পুনর্জাগরিত করতে চাইছে’—বলেন রিটা কাৎজ।
অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্ল্যাশপয়েন্ট-এর জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা লাইথ আলখুরির মতে, ক্ষতিসাধনের ক্ষেত্রে গেরিলা যুদ্ধ কম খরচের বিষয়। পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উত্তর আফ্রিকা, ভারতীয় উপমহাদেশ ও মধ্য আফ্রিকাসহ আইএস যেখানে নিজেদের বিস্তৃত করতে চায়, সেখানেই তারা এ কৌশল ব্যবহার করে।
ইসলাম বিষয়ক জর্ডানি বিশেষজ্ঞ হাসান আবু হানিয়েহ মনে করছেন, শুধু মিডিয়া কাভারেজ পেতে সাময়িকভাবে শহর অবরুদ্ধ করা নয়, নতুন যুদ্ধ কৌশলের অংশ হিসেবেও গেরিলা ধারার আক্রমণকে বেছে নিয়েছে আইএস। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের যুদ্ধ সংগঠনটির জন্য কৌশলে পরিণত হয়েছে। আপাতত তারা একে ছোট ছোট ধারাবাহিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে দুর্বল করার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যেমনটা সর্বশেষ বক্তব্যে বাগদাদি (আইএস প্রধান) বলেছেন।’
২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নৃশংসতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আইএস। অতীতের যেকোনও জঙ্গি তৎপরতাকে ছাপিয়ে তারা আবির্ভূত হয় ভয়াবতার চূড়ান্ত রূপ নিয়ে। তবে ক্রমশ বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছে পরাজিত হতে হতে এ বছরের মার্চে সিরিয়ায় নিজেদের সর্বশেষ ঘাঁটি বাঘুজের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয় তাদের। একপর্যায়ে পুরনো ধাঁচের লড়াইয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয় জঙ্গি সংগঠনটি। সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়া এবং জনসমর্থন আদায় করাকে কৌশল হিসেবে নেয় তারা।
কীভাবে গেরিলা যোদ্ধারা নিজেদের ক্ষতি না করেই শত্রু পক্ষকে দুর্বল করে দিতে পারে, নাবাতে প্রকাশিত নিবন্ধে তারই কৌশল শেখানো হয়েছে। হামলায় আক্রান্তদের কাছ থেকে অস্ত্র জব্দ করা এবং তাদের জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া বা পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
সামনাসামনি যুদ্ধ থেকে সরে এসে আইএস-এর আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার কৌশল বেছে নেওয়ার নেপথ্যের সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলো শনাক্ত করেছে রয়টার্স। এরমধ্যে রয়েছে অর্থ, খাবার, ওষুধ ও অস্ত্র সংগ্রহ করে যোদ্ধাদের প্রয়োজন পূরণ করা। বিশেষ করে দুর্বল অবস্থায় থাকা যোদ্ধাদের প্রয়োজন মেটানো যখন কঠিন হয়ে পড়ে, তখন এ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’-এর নির্বাহী পরিচালক রিটা কাৎজ জানান, এ গেরিলা যুদ্ধের ম্যানুয়েল আইএস-এর এ পর্যন্ত প্রকাশিত ম্যানুয়েলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিস্তারিত। কয়েক বছর আগে সৌদি আরবে ইলেক্ট্রনিক ম্যাগাজিন আল বাত্তারে আল কায়েদা প্রকাশিত ম্যানুয়েলগুলোতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল, তার অন্তত একটির সঙ্গে এর মিল রয়েছে।
রিটা আরও বলেন, আইএস-এর নতুন ম্যানুয়েল থেকে দেখা গেছে, সংগঠনটি যোদ্ধা ও অর্থ সংকটে রয়েছে। বিভিন্ন ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস, বিশেষ করে কর ও তেল রাজস্ব হারিয়েছে আইএস।
‘বলতে গেলে আর্থিকভাবে, ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের দিক দিয়ে এবং সামরিকভাবে সংগঠনটি অনেক দুর্বল। ইরাক ও সিরিয়ার বাইরের এলাকাগুলোতে মনোযোগ বাড়িয়ে আইএস নেতৃত্ব তাদের তথাকথিত খিলাফত পুনর্জাগরিত করতে চাইছে’—বলেন রিটা কাৎজ।
অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্ল্যাশপয়েন্ট-এর জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা লাইথ আলখুরির মতে, ক্ষতিসাধনের ক্ষেত্রে গেরিলা যুদ্ধ কম খরচের বিষয়। পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উত্তর আফ্রিকা, ভারতীয় উপমহাদেশ ও মধ্য আফ্রিকাসহ আইএস যেখানে নিজেদের বিস্তৃত করতে চায়, সেখানেই তারা এ কৌশল ব্যবহার করে।
ইসলাম বিষয়ক জর্ডানি বিশেষজ্ঞ হাসান আবু হানিয়েহ মনে করছেন, শুধু মিডিয়া কাভারেজ পেতে সাময়িকভাবে শহর অবরুদ্ধ করা নয়, নতুন যুদ্ধ কৌশলের অংশ হিসেবেও গেরিলা ধারার আক্রমণকে বেছে নিয়েছে আইএস। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের যুদ্ধ সংগঠনটির জন্য কৌশলে পরিণত হয়েছে। আপাতত তারা একে ছোট ছোট ধারাবাহিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে দুর্বল করার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যেমনটা সর্বশেষ বক্তব্যে বাগদাদি (আইএস প্রধান) বলেছেন।’
No comments