ময়লার ভাগাড় মশার উৎপাত: সরজমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল by মরিয়ম চম্পা
ছবি: নাসির উদ্দিন |
বাংলামোটরের
সিগন্যালে বিআরটিসি বাসে বসে বিড়বিড় করছেন আবদুল করিম। তার এক স্বজন ঢাকা
মেডিকেলে ভর্তি। এক সপ্তাহ আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সেটা
বাসাবাড়িতে বসে নয়। ঢাকা মেডিকেলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে দেখতে গিয়ে
আক্রান্ত হন ডেঙ্গুতে। হাসপাতাল থেকে ফিরেই বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাকেও ভর্তি করতে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে সরজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালের শহীদ মিনার গেইটের ফুটপাথ থেকে
জরুরি বিভাগের প্রধান গেইট পর্যন্ত ড্রেনে আটকে আছে ময়লা পানি।
একটু ভেতরে প্রবেশ করতেই আমতলা গেইটের রঙ্গিন পাথরের কারুকার্যের সামনে নারকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতলসহ ময়লার স্তুপ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নারী ও শিশুদের জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সামনে ড্রেনেও একই অবস্থা। পানিতে দলা বেধে আছে মশার লার্ভা। হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে ঠিক মাঝখানটায় রয়েছে পরিত্যক্ত একটি পানির ফোয়ারা। যেটায় পানির কোনো প্রবাহ নেই। পানির কালসিটে রং জানান দেয় অনেক দিন ধরেই ফোয়ারাটি অযত্নে পড়ে আছে। দুটি শিশু পানির খুব কাছে গিয়ে ছবি তুলছে। এসময় পানিতে কয়েকটি মাছের আনাগোনা দেখা যায়। ভেতরে প্রবেশ করে সিঁড়ির নিচে ময়লাভর্তি ট্রলি পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভবনের ৫ম তলায় একপাশে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে অপর পাশে টিনের চালার ওপর ময়লার স্তুপে মশার আনাগোনা। ওয়ার্ডের সামনে মেঝেতে থাকা রোগীর ব্যবহৃত স্যালাইনের প্যাকেট, কলার খোসা, রুটির খালি প্যাকেট, ডিমের খোসা যে যেভাবে পারছে ভবনের সরু ফাঁকা স্থানে ফেলছে। ৭ম তলার বাম পাশের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে চক্ষু রীতিমত চড়ক গাছ। নতুন ভবনের সঙ্গে জরুরি বিভাগের যে সংযোগ সেতু সেটার প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে আবর্জনার স্তুপ। যেগুলো মশার অভয়ারণ্য। জরুরি বিভাগের মর্গের সামনে ও পেছনে স্থির পানি আর ময়লা স্তুপের মাখামাখি অবস্থা। একদল শ্রমিককে আবর্জনাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করতে দেখলেও নালা ও ড্রেনের স্থির পানিতে নজর নেই তাদের।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, আপনারা ডেঙ্গু নিয়ে এত রিপোর্ট করছেন। আমরা ডাক্তার ও নার্সরা মিলে সম্মিলিতভাবে দিনরাত খেটে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ ঘটনার মূলে আমাদের কারো নজর নেই। যেখানে রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে তার চারপাশেই যদি মশার অভয়ারণ্য হয় তাহলে কি আমরা আদৌ সফল হতে পারবো। হাসপাতালের ভেতরে বাহিরে যে ময়লা আবর্জনা, ড্রেনে জমে থাকা পানি, এগুলো পরিষ্কার করার দায়িত্ব কার। তাহলে হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, বুয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এরা আছে কি কাজে। তারা তো সকাল সন্ধ্যা রোগীদের দালালি করে টাকা কামাতে ব্যস্ত। তাছাড়া রোগী যখন হাসপাতালে আসে তখন এটাকেও তাদের নিজ বাসা মনে করা উচিৎ। রোগী কেনো হাসপাতালকে নিজের বাসা মনে করতে পারছে না। যে যেভাবে পারছে নোংরা করছে। আমাদের কারো মধ্যে পরিচ্ছন্নতা বা সৌন্দর্যবোধ নেই। যেটা আমাদের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ি। আমাদের চারপাশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব সকলের।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ডাক্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে। এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না। নার্স জেসমিন বলেন, এটাতো আমরা দেখি না। পরিচ্ছন্নতা এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভালের দায়িত্ব আয়া, সুপার এবং ওয়ার্ড মাস্টারের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। আরেক নার্স চিত্রা রোজারিও বলেন, হাসপাতালের ভেতরে ময়লা। রোগীরাই এগুলো ফেলে। আগে রোগীদের ময়লা ফেলার বালতি দেয়া হত। এখন আর তা দেয়া হয় না। কারণ বালতি দিলেও তারা ময়লা বাহিরে ফেলে। জানালা, রেলিং, বেলকনি দিয়ে যে যেভাবে পারে ময়লা ছুড়ে ফেলে। ভবনের এমএলএসএস লাভলু বলেন, প্রত্যেকদিনই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু অনেক রোগী আছে যারা গ্রাম থেকে এসেছে। তারা জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে আবার নোংরা করে। হাসপাতালের প্রত্যেকটি গেইটের সামনে এরকম একটি করে পানির ফোয়ারা রয়েছে। যেগুলো কোনোটাই ওভাবে সচল না। ভবনের সামনে পরিত্যক্ত পানির ফোয়ারায় জমে থাকা ময়লা পানি প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা যেহেতু বলেছেন তাই মশার বংশ বিস্তার এবং প্রজনন ব্যবস্থা বন্ধ করার বিষয়ে প্রশাসনকে জানাবো। জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, এটা আমার অংশে পরেনি তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আমাদের ওয়ার্ড মাস্টারদের প্রত্যেকের অংশ ভাগ করা আছে। তবে আমরা মশার স্প্রে করছি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ফগার মেশিন এখন পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি নিজস্ব উদ্যোগে এটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবো। গত তিন দিন ধরে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পরিষ্কারের কাজ করছে। পরিচ্ছন্নতার আসলে শেষ নেই। আমরা সবাই মিলে পরিচ্ছন্নতা উদ্বোধন করলেও এটা তো চলমান কর্মসূচি।
একটু ভেতরে প্রবেশ করতেই আমতলা গেইটের রঙ্গিন পাথরের কারুকার্যের সামনে নারকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতলসহ ময়লার স্তুপ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নারী ও শিশুদের জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সামনে ড্রেনেও একই অবস্থা। পানিতে দলা বেধে আছে মশার লার্ভা। হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে ঠিক মাঝখানটায় রয়েছে পরিত্যক্ত একটি পানির ফোয়ারা। যেটায় পানির কোনো প্রবাহ নেই। পানির কালসিটে রং জানান দেয় অনেক দিন ধরেই ফোয়ারাটি অযত্নে পড়ে আছে। দুটি শিশু পানির খুব কাছে গিয়ে ছবি তুলছে। এসময় পানিতে কয়েকটি মাছের আনাগোনা দেখা যায়। ভেতরে প্রবেশ করে সিঁড়ির নিচে ময়লাভর্তি ট্রলি পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভবনের ৫ম তলায় একপাশে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে অপর পাশে টিনের চালার ওপর ময়লার স্তুপে মশার আনাগোনা। ওয়ার্ডের সামনে মেঝেতে থাকা রোগীর ব্যবহৃত স্যালাইনের প্যাকেট, কলার খোসা, রুটির খালি প্যাকেট, ডিমের খোসা যে যেভাবে পারছে ভবনের সরু ফাঁকা স্থানে ফেলছে। ৭ম তলার বাম পাশের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে চক্ষু রীতিমত চড়ক গাছ। নতুন ভবনের সঙ্গে জরুরি বিভাগের যে সংযোগ সেতু সেটার প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে আবর্জনার স্তুপ। যেগুলো মশার অভয়ারণ্য। জরুরি বিভাগের মর্গের সামনে ও পেছনে স্থির পানি আর ময়লা স্তুপের মাখামাখি অবস্থা। একদল শ্রমিককে আবর্জনাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করতে দেখলেও নালা ও ড্রেনের স্থির পানিতে নজর নেই তাদের।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, আপনারা ডেঙ্গু নিয়ে এত রিপোর্ট করছেন। আমরা ডাক্তার ও নার্সরা মিলে সম্মিলিতভাবে দিনরাত খেটে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ ঘটনার মূলে আমাদের কারো নজর নেই। যেখানে রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে তার চারপাশেই যদি মশার অভয়ারণ্য হয় তাহলে কি আমরা আদৌ সফল হতে পারবো। হাসপাতালের ভেতরে বাহিরে যে ময়লা আবর্জনা, ড্রেনে জমে থাকা পানি, এগুলো পরিষ্কার করার দায়িত্ব কার। তাহলে হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, বুয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এরা আছে কি কাজে। তারা তো সকাল সন্ধ্যা রোগীদের দালালি করে টাকা কামাতে ব্যস্ত। তাছাড়া রোগী যখন হাসপাতালে আসে তখন এটাকেও তাদের নিজ বাসা মনে করা উচিৎ। রোগী কেনো হাসপাতালকে নিজের বাসা মনে করতে পারছে না। যে যেভাবে পারছে নোংরা করছে। আমাদের কারো মধ্যে পরিচ্ছন্নতা বা সৌন্দর্যবোধ নেই। যেটা আমাদের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ি। আমাদের চারপাশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব সকলের।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ডাক্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে। এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না। নার্স জেসমিন বলেন, এটাতো আমরা দেখি না। পরিচ্ছন্নতা এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভালের দায়িত্ব আয়া, সুপার এবং ওয়ার্ড মাস্টারের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। আরেক নার্স চিত্রা রোজারিও বলেন, হাসপাতালের ভেতরে ময়লা। রোগীরাই এগুলো ফেলে। আগে রোগীদের ময়লা ফেলার বালতি দেয়া হত। এখন আর তা দেয়া হয় না। কারণ বালতি দিলেও তারা ময়লা বাহিরে ফেলে। জানালা, রেলিং, বেলকনি দিয়ে যে যেভাবে পারে ময়লা ছুড়ে ফেলে। ভবনের এমএলএসএস লাভলু বলেন, প্রত্যেকদিনই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু অনেক রোগী আছে যারা গ্রাম থেকে এসেছে। তারা জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে আবার নোংরা করে। হাসপাতালের প্রত্যেকটি গেইটের সামনে এরকম একটি করে পানির ফোয়ারা রয়েছে। যেগুলো কোনোটাই ওভাবে সচল না। ভবনের সামনে পরিত্যক্ত পানির ফোয়ারায় জমে থাকা ময়লা পানি প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা যেহেতু বলেছেন তাই মশার বংশ বিস্তার এবং প্রজনন ব্যবস্থা বন্ধ করার বিষয়ে প্রশাসনকে জানাবো। জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, এটা আমার অংশে পরেনি তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আমাদের ওয়ার্ড মাস্টারদের প্রত্যেকের অংশ ভাগ করা আছে। তবে আমরা মশার স্প্রে করছি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ফগার মেশিন এখন পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি নিজস্ব উদ্যোগে এটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবো। গত তিন দিন ধরে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পরিষ্কারের কাজ করছে। পরিচ্ছন্নতার আসলে শেষ নেই। আমরা সবাই মিলে পরিচ্ছন্নতা উদ্বোধন করলেও এটা তো চলমান কর্মসূচি।
No comments