অবরুদ্ধ কাশ্মিরিদের কাছে যা জানতে চাইলেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা:: অনাহারে দিন কাটছে, টাকা নেই
দুনিয়ার
স্বর্গ খ্যাত কাশ্মির যেন এর বাসিন্দাদের কাছে পরিণত হয়েছে জ্বলজ্যান্ত এক
নরকে। স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে রাজ্যটিকে দুই টুকরো করে দিয়েছে ভারত। একে
কেন্দ্র করে পুরো কাশ্মির উপত্যকাজুড়ে অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। বন্ধ
করে দেওয়া হয়েছে হাট-বাজার, দোকান-পাট, স্কুল-কলেজ। মোবাইল সংযোগ এমনকি
ডাকঘরও বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন শত শত মানুষ।
বাসিন্দারা বলছেন, ভারত কাশ্মির দখল করতে চায়; কিন্তু তারা এর বাসিন্দাদের
চায় না। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সরেজমিনে অঞ্চলটি পরিদর্শন করেন ভারতের
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। এ সময় প্রায় অবরুদ্ধ কাশ্মিরের
রাস্তায় দাঁড়িয়ে কয়েকজনের কাছে তিনি চান, ‘সব কেমন চলছে? আপনারা কী
ভাবছেন?’
রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্লেট হাতে খাবার খাচ্ছিলেন আর স্থানীয় কিছু লোকজনের কথা বলছিলেন অজিত দোভাল। তিনি বলেন, সবার শান্তিতে থাকা উচিত। ঈশ্বর যা করেন, ভালো করেন। আপনাদের নিরাপত্তা এবং ভাল রাখাই আমাদের চিন্তা। আমরা আপনাদের উন্নতি ও কল্যাণের জন্য চিন্তা করছি। তবে যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি কথা বলছিলেন, সেখানকার দোকানপাট বন্ধ। এলাকায় কোনও রকম জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকার ক্ষমতায় এতোটাই নিমজ্জিত যে তারা আমাদের মানুষ মনে করছে না। তাদেরকে এই সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হবে না, আমাদেরকেই তা ভোগ করতে হবে।
দক্ষিণ কাশ্মিরের ল্যাঙ্গেট কলেজের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ উনওয়ানি বলেন, কাশ্মির রাজনীতির বারুদের এক আগ্নেয়গিরি। তারা ওমর ও মুফতিকে জেলে পাঠিয়েছে। তারা আমাদের এমএলএ ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা করছে, যে ব্যক্তি আমাদের ইট-পাটকেল ছোড়া থেকে বিরত থাকতে বলতেন। আর এখন এই সিদ্ধান্ত। তারা জ্বলন্ত আগুনে বারুদ ঢেলে দিলো।
জম্মু-কাশ্মিরের পুলিশের মধ্যেও উদ্বেগের ছায়া। একজন কনস্টেবল বলেন, আমি সরকারি কর্মচারি। সরকারের নির্দেশ পালন করি। কিন্তু আমার ছেলের কাছে এর কী ব্যাখ্যা দেবো? তাকে কীভাবে বুঝাবো যে, ভারত রাষ্ট্র তার সম্পর্কে কী ভাবছে এবং কেন তার ইট-পাটকেল ছোড়ায় যুক্ত হওয়া উচিত না। তরুণরা বলাবলি শুরু করছে, যখন মৃত্যু আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে তখন স্কুলে গিয়ে কী হবে? সূত্র: এনডিটিভি।
অনাহারে দিন কাটছে কাশ্মিরিদের
কাশ্মিরে অচলাবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএমগুলোতেও টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কাশ্মিরবাসী। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই তাই দোকানগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে খাবার। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। তিনদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মিরির। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাশ্মিরবাসীর এই দুর্দশা।
সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
এই অচলাবস্থায় সেখানে খাদ্যে স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগও। কারফিউ থাকায় চলাচলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। খাবারের স্বল্পতা ও এটিএম কাজ না করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।
সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, তার কাছে পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি এসে দাবি করেছিল তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মুদির দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিল। মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিল ভিড়। হাজার হাজার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এছাড়া গ্যাস স্টেশনগুলোতেও ছিল গাড়ির লম্বা লাইন। ব্যাংকগুলোতেও টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর উপ-সম্পাদক মুজামিল জলিল টেলিগ্রাফকে বলেন, তারা শ্রীনগরের সব এটিএমেই খোঁজ নিয়ে দেখেছেন টাকা নেই। অনেকেই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্র গোষ্ঠীর কোনও জমা টাকাও নেই।
তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাশ্মির উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুত রয়েছে।
অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহও রয়েছেন। বিরোধী দলের অভিযোগ, সরকার ভারতের জনতাত্ত্বিক নকশাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে।
সানা বলেন, এই অচলাবস্থায় অনেক নৈরাজ্য ও দ্বিধা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি খুবই ভয়াবহ ও দুঃখজনক। বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে সবাই।
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনও সংবাদমাধ্যম।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্লেট হাতে খাবার খাচ্ছিলেন আর স্থানীয় কিছু লোকজনের কথা বলছিলেন অজিত দোভাল। তিনি বলেন, সবার শান্তিতে থাকা উচিত। ঈশ্বর যা করেন, ভালো করেন। আপনাদের নিরাপত্তা এবং ভাল রাখাই আমাদের চিন্তা। আমরা আপনাদের উন্নতি ও কল্যাণের জন্য চিন্তা করছি। তবে যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি কথা বলছিলেন, সেখানকার দোকানপাট বন্ধ। এলাকায় কোনও রকম জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকার ক্ষমতায় এতোটাই নিমজ্জিত যে তারা আমাদের মানুষ মনে করছে না। তাদেরকে এই সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হবে না, আমাদেরকেই তা ভোগ করতে হবে।
দক্ষিণ কাশ্মিরের ল্যাঙ্গেট কলেজের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ উনওয়ানি বলেন, কাশ্মির রাজনীতির বারুদের এক আগ্নেয়গিরি। তারা ওমর ও মুফতিকে জেলে পাঠিয়েছে। তারা আমাদের এমএলএ ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা করছে, যে ব্যক্তি আমাদের ইট-পাটকেল ছোড়া থেকে বিরত থাকতে বলতেন। আর এখন এই সিদ্ধান্ত। তারা জ্বলন্ত আগুনে বারুদ ঢেলে দিলো।
জম্মু-কাশ্মিরের পুলিশের মধ্যেও উদ্বেগের ছায়া। একজন কনস্টেবল বলেন, আমি সরকারি কর্মচারি। সরকারের নির্দেশ পালন করি। কিন্তু আমার ছেলের কাছে এর কী ব্যাখ্যা দেবো? তাকে কীভাবে বুঝাবো যে, ভারত রাষ্ট্র তার সম্পর্কে কী ভাবছে এবং কেন তার ইট-পাটকেল ছোড়ায় যুক্ত হওয়া উচিত না। তরুণরা বলাবলি শুরু করছে, যখন মৃত্যু আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে তখন স্কুলে গিয়ে কী হবে? সূত্র: এনডিটিভি।
অনাহারে দিন কাটছে কাশ্মিরিদের
কাশ্মিরে অচলাবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএমগুলোতেও টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কাশ্মিরবাসী। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই তাই দোকানগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে খাবার। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। তিনদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মিরির। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাশ্মিরবাসীর এই দুর্দশা।
সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
এই অচলাবস্থায় সেখানে খাদ্যে স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগও। কারফিউ থাকায় চলাচলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। খাবারের স্বল্পতা ও এটিএম কাজ না করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।
সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, তার কাছে পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি এসে দাবি করেছিল তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মুদির দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিল। মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিল ভিড়। হাজার হাজার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। এছাড়া গ্যাস স্টেশনগুলোতেও ছিল গাড়ির লম্বা লাইন। ব্যাংকগুলোতেও টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর উপ-সম্পাদক মুজামিল জলিল টেলিগ্রাফকে বলেন, তারা শ্রীনগরের সব এটিএমেই খোঁজ নিয়ে দেখেছেন টাকা নেই। অনেকেই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্র গোষ্ঠীর কোনও জমা টাকাও নেই।
তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাশ্মির উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুত রয়েছে।
অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহও রয়েছেন। বিরোধী দলের অভিযোগ, সরকার ভারতের জনতাত্ত্বিক নকশাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে।
সানা বলেন, এই অচলাবস্থায় অনেক নৈরাজ্য ও দ্বিধা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি খুবই ভয়াবহ ও দুঃখজনক। বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে সবাই।
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনও সংবাদমাধ্যম।
No comments