ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক, কাশ্মির বিরোধ নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের
মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন
ধরে বিরাজমান কাশ্মির বিরোধ নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সক্ষমতা নিয়েও কথা বলেন ট্রাম্প।
সংঘাত নিরসনে ট্রাম্পের মধ্যস্থতাকে পাকিস্তান স্বাগত জানাবে বলে খান উল্লেখ করার পর প্রেসিডেন্ট বলেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাকে একই কাজ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন এবং তিনি সানন্দে এই ভূমিকা পালন করতে রাজি আছেন।
ট্রাম্প বলেন, আমি যদি সাহায্য করতে পারি তাহলে আমার মধ্যস্থতাকারী হতেই ভালো লাগবে।
পাকিস্তান ও ভারত উভয়েই মুসলিম সংখ্যাগুরু ভূখণ্ড কাশ্মিরের দাবিদার। ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার সময় এই ভূখণ্ড পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
খান প্রকাশ্যেই বলছেন যে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত যুদ্ধে রূপ নিতে পারতো। কাশ্মিরের বিতর্কিত সীমান্তে পাকিস্তান ও ভারতীয় জঙ্গিবিমান ডগফাইটে লিপ্ত হয়। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিমান ভূপাতিত করার দাবি করে। পাকিস্তান একজন ভারতীয় পাইলটকে আটক করে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বশক্তিগুলো দুই পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানায়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানায়।
সোমবার হোয়াইট হাউজে খানকে স্বাগত জানিয়ে ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেন। বৈঠকে আফগান তালেবানদের যুদ্ধবিরতি ও আফগান সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় রাজি করাতে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শাক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য তালেবানদের আলোচনার টেবিলে আনতে পাকিস্তানের সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে খানের সঙ্গে ট্রাম্পের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার এক মন্তব্যে ট্রাম্প আফগান যুদ্ধের মেয়াদকে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেন। তবে হুমকি দিতেও ছাড়েননি।
তিনি বলেন, আমি এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। পৃথিবী থেকে আফগানিস্তান মুছে যাবে। তবে তিনি লাখ লাখ মানুষকে হতাহত হওয়ার ঝুঁকিতে ঠেলে দিতে চান না বলে জানান।
সতর্ক আশাবাদের নিয়ে সোমবারের বৈঠকের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের প্রাথমিক উদ্যোগের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বলেন: আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে পৌছাতে যাচ্ছি।
কর্মকর্তাটি বলেন, খান ঠিক কথাই বলছেন। তবে তার কথার মধ্যে যে আলাদা কিছু রয়েছে তার প্রমাণ পেতে হবে আমাদের।
খানের সফর সম্পর্কে কর্মকর্তাটি বলেন, এটা হলো আফগান শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তালেবানদের প্রভাবিত করতে পাকিস্তান যেন তার পুরো প্রভাবকে কাজে লাগায় সে জন্য দেশটিকে অনুপ্রাণিত করার একটি সুযোগ।
যুক্তরাষ্ট্র গত বছর তালেবানদের সঙ্গে টেকসই আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর জের ধরে খানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। পাকিস্তানী কর্মকর্তারা বহু বছর ধরেই তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার উপর জোর দিয়ে আসছেন। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌছাতে চান ট্রাম্প, যাতে পুননির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের এক বছর আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেয়া যায়।
ওভাল অফিসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়ার কথা খানের। ওভাল অফিসে খান দুই ঘন্টার কিছু বেশি সময় অবস্থান করেন।
দুই নেতার মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা, জ্বালানি ও নারী ইস্যু নিয়ের কথা হয়। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই সফরকে সম্পর্কে উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দেয়। আফগানিস্তানের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি সইয়ে সহায়তা করতে পাকিস্তানকে রাজি করানোর চেষ্টা করে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু চীনের উপর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির অর্থনৈতিক নির্ভরতা বৃদ্ধি মার্কিন প্রশাসনের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
১৯৯০-এর মাঝামাঝি থেকেই তালেবানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এটা মূলত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তারে বাধা দানের জন্য। তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যে কোন দেশের চেয়ে গভীর।
অনেক দিন ধরে ওয়াশিংটন অভিযোগ করে আসছে যে পাকিস্তানের সহায়তা পাওয়ায় তালেবানকে পরাজিত করা অবসম্ভব হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের সমর্থন লাভের জন্য ওবামা প্রশাসন দেশটিকে প্রতি বছর প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের সামারিক ও অর্থনৈতিক সহায়ত দিয়েছে। কিন্তু তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোন আগ্রহ দেখায়নি পাকিস্তান। চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানকে দেয়া ৭১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা কাটছাট করে ট্রাম্প প্রশাসন।
গত বছর নভেম্বরে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা করার জন্য প্রথম দিকে ট্রাম্প পাকিস্তানের সমালোচনা করেন। এর জবাবে খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানকে অনেক ভুগতে হয়েছে। এখন আমরা আমাদের জনগণ ও আমাদের স্বার্থে যেটা সবচেয়ে ভালো সেটাই করবো।
এর একমাস পর সুর নরম করে ট্রাম্প খানের বক্তব্য স্বীকার করে নেন এবং তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় পাকিস্তানের সহায়তা কামনা করেন।
>>>রেবেকা বালহাউস, সাইদ শাহ
সংঘাত নিরসনে ট্রাম্পের মধ্যস্থতাকে পাকিস্তান স্বাগত জানাবে বলে খান উল্লেখ করার পর প্রেসিডেন্ট বলেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাকে একই কাজ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন এবং তিনি সানন্দে এই ভূমিকা পালন করতে রাজি আছেন।
ট্রাম্প বলেন, আমি যদি সাহায্য করতে পারি তাহলে আমার মধ্যস্থতাকারী হতেই ভালো লাগবে।
পাকিস্তান ও ভারত উভয়েই মুসলিম সংখ্যাগুরু ভূখণ্ড কাশ্মিরের দাবিদার। ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার সময় এই ভূখণ্ড পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
খান প্রকাশ্যেই বলছেন যে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত যুদ্ধে রূপ নিতে পারতো। কাশ্মিরের বিতর্কিত সীমান্তে পাকিস্তান ও ভারতীয় জঙ্গিবিমান ডগফাইটে লিপ্ত হয়। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিমান ভূপাতিত করার দাবি করে। পাকিস্তান একজন ভারতীয় পাইলটকে আটক করে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বশক্তিগুলো দুই পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানায়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানায়।
সোমবার হোয়াইট হাউজে খানকে স্বাগত জানিয়ে ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেন। বৈঠকে আফগান তালেবানদের যুদ্ধবিরতি ও আফগান সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় রাজি করাতে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শাক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য তালেবানদের আলোচনার টেবিলে আনতে পাকিস্তানের সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে খানের সঙ্গে ট্রাম্পের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার এক মন্তব্যে ট্রাম্প আফগান যুদ্ধের মেয়াদকে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেন। তবে হুমকি দিতেও ছাড়েননি।
তিনি বলেন, আমি এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। পৃথিবী থেকে আফগানিস্তান মুছে যাবে। তবে তিনি লাখ লাখ মানুষকে হতাহত হওয়ার ঝুঁকিতে ঠেলে দিতে চান না বলে জানান।
সতর্ক আশাবাদের নিয়ে সোমবারের বৈঠকের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের প্রাথমিক উদ্যোগের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বলেন: আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে পৌছাতে যাচ্ছি।
কর্মকর্তাটি বলেন, খান ঠিক কথাই বলছেন। তবে তার কথার মধ্যে যে আলাদা কিছু রয়েছে তার প্রমাণ পেতে হবে আমাদের।
খানের সফর সম্পর্কে কর্মকর্তাটি বলেন, এটা হলো আফগান শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তালেবানদের প্রভাবিত করতে পাকিস্তান যেন তার পুরো প্রভাবকে কাজে লাগায় সে জন্য দেশটিকে অনুপ্রাণিত করার একটি সুযোগ।
যুক্তরাষ্ট্র গত বছর তালেবানদের সঙ্গে টেকসই আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর জের ধরে খানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। পাকিস্তানী কর্মকর্তারা বহু বছর ধরেই তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার উপর জোর দিয়ে আসছেন। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌছাতে চান ট্রাম্প, যাতে পুননির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের এক বছর আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেয়া যায়।
ওভাল অফিসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়ার কথা খানের। ওভাল অফিসে খান দুই ঘন্টার কিছু বেশি সময় অবস্থান করেন।
দুই নেতার মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা, জ্বালানি ও নারী ইস্যু নিয়ের কথা হয়। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই সফরকে সম্পর্কে উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দেয়। আফগানিস্তানের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি সইয়ে সহায়তা করতে পাকিস্তানকে রাজি করানোর চেষ্টা করে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু চীনের উপর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির অর্থনৈতিক নির্ভরতা বৃদ্ধি মার্কিন প্রশাসনের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
১৯৯০-এর মাঝামাঝি থেকেই তালেবানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এটা মূলত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তারে বাধা দানের জন্য। তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যে কোন দেশের চেয়ে গভীর।
অনেক দিন ধরে ওয়াশিংটন অভিযোগ করে আসছে যে পাকিস্তানের সহায়তা পাওয়ায় তালেবানকে পরাজিত করা অবসম্ভব হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের সমর্থন লাভের জন্য ওবামা প্রশাসন দেশটিকে প্রতি বছর প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের সামারিক ও অর্থনৈতিক সহায়ত দিয়েছে। কিন্তু তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোন আগ্রহ দেখায়নি পাকিস্তান। চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানকে দেয়া ৭১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা কাটছাট করে ট্রাম্প প্রশাসন।
গত বছর নভেম্বরে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা করার জন্য প্রথম দিকে ট্রাম্প পাকিস্তানের সমালোচনা করেন। এর জবাবে খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানকে অনেক ভুগতে হয়েছে। এখন আমরা আমাদের জনগণ ও আমাদের স্বার্থে যেটা সবচেয়ে ভালো সেটাই করবো।
এর একমাস পর সুর নরম করে ট্রাম্প খানের বক্তব্য স্বীকার করে নেন এবং তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় পাকিস্তানের সহায়তা কামনা করেন।
>>>রেবেকা বালহাউস, সাইদ শাহ
সোমবার হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ছবি: এএফপি |
No comments