মোটরসাইকেল যন্ত্রণা ঢাকায়: মামলা দিয়েই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা by শুভ্র দেব
ঢাকার
সড়কে বেপরোয়া দুই চাকার মোটরসাইকেল। যানজট লেগে থাকে এমন সড়কের পাশের
ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে চলারও সুযোগ থাকে না মোটরবাইকের জন্য। সঙ্গে উচ্চ শব্দে
হর্ন। ফুটপাথ দিয়ে চলাচল ঠেকাতে লোহার পাইপ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে
কোথাও কোথাও। আবার গতি রোধকও বসানো হয়েছে। তবুও মোটরসাইকেল চালকদের দাপট
কমছে না।
বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ। ঢাকায় মোট যানবাহনের তিন ভাগের দুই ভাগই মোটরসাইকেল।
তবে নিবন্ধনের বাইরে চলে এই সংখ্যাও অনেক। এসব মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন চালকই বেশি। ট্রাফিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়া চলমান। বানিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে মোটরসাইকেল ব্যবহারের কারণে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ছে বলেও মনে করছেন অনেকে।
বিআরটিএ সূত্রমতে, ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে মোট নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৭৬৭টি। এর মধ্যে শুধু মোটরসাইকেলের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৪টি। একই সময়ে শুধুমাত্র ঢাকায় নিবন্ধন হয়েছে ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬০টি যানবাহন। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৭১টি। এছাড়া ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকায় রেজিষ্ট্রেনকৃত মোটরবাইকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৮১টি। আর ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯০। সাড়ে ৮ বছরের ব্যবধানে এই সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ৭০৮ টি, ২০১২ সালে ৩২ হাজার ৮১০টি, ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ৩৩১টি, ২০১৪ সালে ৩২ হাজার ৮৯৪টি, ২০১৫ সালে ৪৬ হাজার ৭৬৪টি, ২০১৬ সালে ৫৩ হাজার ৭৩৮ টি, ২০১৭ সালে ৭৫ হাজার ২৫১টি, ২০১৮ সালে ১ লাখ ৪ হাজার ৬৪টি ও ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত দেয়া হয়েছে ৪২ হাজার ৮৩০টি মোটরসাইকেলের রেজিষ্ট্রেশন।
এদিকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সারা দেশের রেজিষ্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৭ টি। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৭টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে, ১ লাখ ১৪ হাজার ৬১৬টি, ২০১২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৫৮৮টি, ২০১৩ সালে ৮৫ হাজার ৮০৮টি, ২০১৪ সালে ৯০ হাজার ৬৮৫টি, ২০১৫ সালে ২ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৮টি, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৭টি, ২০১৭ সালে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৫৫০টি, ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৬০৩টি ও মে ২০১৯ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৩২টি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ মোটরসাইকেল। বিগত দিনগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ নিহত হয়েছেন তার বড় একটি অংশ নিহত হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে মোটরসাইকেল জড়িত। বিআরটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন করতে খুব অল্প টাকা লাগে। তাই যে কেউ মোটরসাইকেল কিনে রেজিষ্ট্রেশন করে নিচ্ছে। যদি অন্যান্য দেশের মত রেজিষ্ট্রেশন ফি আরও বাড়ানো হত তবে মানুষ মোটরসাইকেল কিনে রেজিষ্ট্রেশন করতে নিরুৎসাহিত হত। এছাড়া রাইড শেয়ারিং কোম্পানি বাজারে আসার কারণে মোটরসাইকেল বেড়েছে। বানিজ্যিক উদ্দেশ্য মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকার বাইরে থেকে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল এসেছে। বাড়তি ট্রিপের আশায় তারা অনেকেই বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে। বাইরে থেকে আসা অনেক চালকেরই ঢাকার ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা নাই। এজন্য আরও বেশি বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।
সরজমিন গত কয়েকদিন, ঢাকার কাওরানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল, ফকিরাপুল, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ একাধিক এলাকা ঘুরে বেপয়োয়া মোটরসাইকেল চালকদের নানা চিত্র দেখা গেছে। শুক্রবার রাত ৯টা। ফার্মগেট থেকে বাংলমোটর-শাহবাগগামী যানবাহন আটকে আছে কাওরানবাজার ট্রাফিক সিগন্যালে। সড়কের মধ্যে লেগে আছে যানবাহনের লম্বা লাইন। এমন সময় সড়কের বাম পাশের ফুটপাত দিয়ে ছুটে চলে একের পর এক মোটরসাইকেল। ব্যস্ততম এই সড়কের ফুটপাত দিয়ে সবসময়ই পথচারীরা চলাচল করেন। কিন্তু চালকরা উচ্চ শব্দের হর্ন দিয়ে বেপরোয়াভাবে ছুটছেন। এতে করে পথচারিরা হাঁটাতো দুরের কথা দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে অনেকে ফুটপাত থেকে নেমে প্রধান সড়কের ওপর গিয়ে দাঁড়ান। তাদের মধ্যে শিশু বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শায়েলা আক্তার নামের এক নারী। তিনি বলেন, আমরা যাবো কোন দিক দিয়ে। ব্যস্ত এই সড়কে এমনিতেই দ্রুত গতিতে ছুটে যানবাহন। সড়ক দিয়ে হাঁটার কোন উপায় নাই। একমাত্র ভরসা ফুটপাত। এখন যদি ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করে আমরা যাবো কোন দিক দিয়ে। আমির হোসেন নামের আরেক পথচারি বলেন, পথচারীদের চলাচলে যাতে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় এজন্য পুরাতন ফুটপাত ভেঙ্গে পথচারীদের চলাচল উপযোগী ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু এই ফুটপাত দিয়ে চলাচলের কোন উপায় নাই। লোহার খুটি পোতা হয়েছে। অন্ধলোক যাওয়ারতো উপায় নাই, সুস্থ মানুষও হাঁটতে পারছে না।
কাওরানবাজার মোড়ে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সদস্য বলেন, সিগন্যাল মানার বালাই নাই। যখন সিগন্যাল পড়ে তখন ফাঁকফোকড় দিয়ে সবাই লাইনের সামনে চলে আসে। কোনোভাবে যদি একটু সুযোগ পায় তবে সিগন্যালের ছাড়ার অপেক্ষা না করেই সবাই রওয়ানা হয়ে যায়। তখন আর আমাদের কিছু করার থাকে না। সিগন্যাল না মানার জন্য অন্যপাশের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বাংলামোটরে আরেক ট্রাফিক সদস্য বলেন, কয়েক বছর আগেও এমন অবস্থা ছিল না। এই দুই বছরে মোটরসাইকেল অনেক বেড়েছে। এভাবে যদি বাড়তে থাকে তবে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ মানবজমিনকে বলেন, মোটরসাইকেলে অনেক ঝুঁকি আছে। মোটরসাইকেলের মাধ্যমে যেকোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে সহজেই পালানো সম্ভব। আইন অমান্যকারী মোটরসাইকেলকে আমরা মামলা দিচ্ছি। প্রতি মাসে সকল যানবাহনকে এখন প্রায় দেড় লাখ মামলা দেয়া হয়। মোট মামলার ২৫ শতাংশ শুধু মোটরসাইকেলের।
তিনি বলেন, সড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ আনতে হেলমেটবিহীন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। ঢাকায় এখন যাত্রী ও চালক সবাই হেলমেট ব্যবহার করে। যারা করে না তাদের মামলা দেয়া হচ্ছে।
বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ। ঢাকায় মোট যানবাহনের তিন ভাগের দুই ভাগই মোটরসাইকেল।
তবে নিবন্ধনের বাইরে চলে এই সংখ্যাও অনেক। এসব মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন চালকই বেশি। ট্রাফিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়া চলমান। বানিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে মোটরসাইকেল ব্যবহারের কারণে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ছে বলেও মনে করছেন অনেকে।
বিআরটিএ সূত্রমতে, ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে মোট নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৭৬৭টি। এর মধ্যে শুধু মোটরসাইকেলের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৪টি। একই সময়ে শুধুমাত্র ঢাকায় নিবন্ধন হয়েছে ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬০টি যানবাহন। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৭১টি। এছাড়া ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকায় রেজিষ্ট্রেনকৃত মোটরবাইকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৮১টি। আর ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯০। সাড়ে ৮ বছরের ব্যবধানে এই সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ৭০৮ টি, ২০১২ সালে ৩২ হাজার ৮১০টি, ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ৩৩১টি, ২০১৪ সালে ৩২ হাজার ৮৯৪টি, ২০১৫ সালে ৪৬ হাজার ৭৬৪টি, ২০১৬ সালে ৫৩ হাজার ৭৩৮ টি, ২০১৭ সালে ৭৫ হাজার ২৫১টি, ২০১৮ সালে ১ লাখ ৪ হাজার ৬৪টি ও ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত দেয়া হয়েছে ৪২ হাজার ৮৩০টি মোটরসাইকেলের রেজিষ্ট্রেশন।
এদিকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সারা দেশের রেজিষ্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৭ টি। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৭টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে, ১ লাখ ১৪ হাজার ৬১৬টি, ২০১২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৫৮৮টি, ২০১৩ সালে ৮৫ হাজার ৮০৮টি, ২০১৪ সালে ৯০ হাজার ৬৮৫টি, ২০১৫ সালে ২ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৮টি, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৭টি, ২০১৭ সালে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৫৫০টি, ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৬০৩টি ও মে ২০১৯ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৩২টি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ মোটরসাইকেল। বিগত দিনগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ নিহত হয়েছেন তার বড় একটি অংশ নিহত হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে মোটরসাইকেল জড়িত। বিআরটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন করতে খুব অল্প টাকা লাগে। তাই যে কেউ মোটরসাইকেল কিনে রেজিষ্ট্রেশন করে নিচ্ছে। যদি অন্যান্য দেশের মত রেজিষ্ট্রেশন ফি আরও বাড়ানো হত তবে মানুষ মোটরসাইকেল কিনে রেজিষ্ট্রেশন করতে নিরুৎসাহিত হত। এছাড়া রাইড শেয়ারিং কোম্পানি বাজারে আসার কারণে মোটরসাইকেল বেড়েছে। বানিজ্যিক উদ্দেশ্য মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকার বাইরে থেকে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল এসেছে। বাড়তি ট্রিপের আশায় তারা অনেকেই বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে। বাইরে থেকে আসা অনেক চালকেরই ঢাকার ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা নাই। এজন্য আরও বেশি বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।
সরজমিন গত কয়েকদিন, ঢাকার কাওরানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল, ফকিরাপুল, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ একাধিক এলাকা ঘুরে বেপয়োয়া মোটরসাইকেল চালকদের নানা চিত্র দেখা গেছে। শুক্রবার রাত ৯টা। ফার্মগেট থেকে বাংলমোটর-শাহবাগগামী যানবাহন আটকে আছে কাওরানবাজার ট্রাফিক সিগন্যালে। সড়কের মধ্যে লেগে আছে যানবাহনের লম্বা লাইন। এমন সময় সড়কের বাম পাশের ফুটপাত দিয়ে ছুটে চলে একের পর এক মোটরসাইকেল। ব্যস্ততম এই সড়কের ফুটপাত দিয়ে সবসময়ই পথচারীরা চলাচল করেন। কিন্তু চালকরা উচ্চ শব্দের হর্ন দিয়ে বেপরোয়াভাবে ছুটছেন। এতে করে পথচারিরা হাঁটাতো দুরের কথা দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে অনেকে ফুটপাত থেকে নেমে প্রধান সড়কের ওপর গিয়ে দাঁড়ান। তাদের মধ্যে শিশু বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শায়েলা আক্তার নামের এক নারী। তিনি বলেন, আমরা যাবো কোন দিক দিয়ে। ব্যস্ত এই সড়কে এমনিতেই দ্রুত গতিতে ছুটে যানবাহন। সড়ক দিয়ে হাঁটার কোন উপায় নাই। একমাত্র ভরসা ফুটপাত। এখন যদি ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করে আমরা যাবো কোন দিক দিয়ে। আমির হোসেন নামের আরেক পথচারি বলেন, পথচারীদের চলাচলে যাতে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় এজন্য পুরাতন ফুটপাত ভেঙ্গে পথচারীদের চলাচল উপযোগী ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু এই ফুটপাত দিয়ে চলাচলের কোন উপায় নাই। লোহার খুটি পোতা হয়েছে। অন্ধলোক যাওয়ারতো উপায় নাই, সুস্থ মানুষও হাঁটতে পারছে না।
কাওরানবাজার মোড়ে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সদস্য বলেন, সিগন্যাল মানার বালাই নাই। যখন সিগন্যাল পড়ে তখন ফাঁকফোকড় দিয়ে সবাই লাইনের সামনে চলে আসে। কোনোভাবে যদি একটু সুযোগ পায় তবে সিগন্যালের ছাড়ার অপেক্ষা না করেই সবাই রওয়ানা হয়ে যায়। তখন আর আমাদের কিছু করার থাকে না। সিগন্যাল না মানার জন্য অন্যপাশের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বাংলামোটরে আরেক ট্রাফিক সদস্য বলেন, কয়েক বছর আগেও এমন অবস্থা ছিল না। এই দুই বছরে মোটরসাইকেল অনেক বেড়েছে। এভাবে যদি বাড়তে থাকে তবে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ মানবজমিনকে বলেন, মোটরসাইকেলে অনেক ঝুঁকি আছে। মোটরসাইকেলের মাধ্যমে যেকোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে সহজেই পালানো সম্ভব। আইন অমান্যকারী মোটরসাইকেলকে আমরা মামলা দিচ্ছি। প্রতি মাসে সকল যানবাহনকে এখন প্রায় দেড় লাখ মামলা দেয়া হয়। মোট মামলার ২৫ শতাংশ শুধু মোটরসাইকেলের।
তিনি বলেন, সড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ আনতে হেলমেটবিহীন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। ঢাকায় এখন যাত্রী ও চালক সবাই হেলমেট ব্যবহার করে। যারা করে না তাদের মামলা দেয়া হচ্ছে।
No comments