ইরানের বিক্ষোভের ৫টি ব্যাপার যা আপনার জানা দরকার
সাম্প্রতিক
সময়ে ইরানে চলছে ভয়াবহ বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সহিংস আকার ধারণ করেছে। এতে
কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। তবে বিভিন্ন মিডিয়ায় এ সংখ্যা বিভিন্ন রকম বলে
উল্লেখ করা হচ্ছে। সরকারবিরোধী এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির আনাচে
কানাচে। দেশজুড়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কমপক্ষে ৪০০ জন।
এর মধ্যে রোববার রাতে শুধু রাজধানী তেহরান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে কমপক্ষে ২০০ জনকে। আল জাজিরার মত অনুযায়ী এই বিক্ষোভ সম্পর্কিত পাঁচটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রসঙ্গ নিচে তুলে ধরা হল।
কি হচ্ছে ইরানে?
ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে বৃহস্পতিবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। শুক্রবার তা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী তেহরানে। এরপর বেশ দ্রুতগতিতে আন্দোলন ছড়িয়ে যায় দেশজুড়ে। অবশ্য অনেকে আবার এই বিক্ষোভের কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন ইরানের বিতর্কিত পররাষ্ট্রনীতিকে। বলছেন, আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে ইরানের ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই এই অসন্তোষ। আরেক দল বলছেন, সৌদি জোটের আরোপিত অবরোধের কারণে ইরানের জনগণের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হয়ে তৈরি হয়েছে এই বিক্ষোভের পটভূমি। এ সম্পর্কে স্থানীয় গণমাধ্যম বলেছে, হাজার হাজার মানুষ সরকারের ওপর ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করতে রাজপথে নেমে আসেন। এই বিক্ষোভকে এক দশকের মধ্যে ইরানে সংঘটিত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকার বিরোধী স্লোগান দেন। তাদেরকে প্রতিহত করতে মোতায়েন করা হয় দাঙ্গা পুলিশ। তাদের সঙ্গে ছিল সরকারপন্থি লোকজনও। বেঁধে যায় সংঘর্ষ। ওই সংঘর্ষের একটি ভিডিও টুইটারে আপলোড করে ইরানে অবস্থিত নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস। এতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। অবশ্য ওই ভিডিও চিত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারে নি আল জাজিরা। তবে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স-ও তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে সংঘটিত হওয়া সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
আন্দোলনকারীরা কি চাইছে?
কিছু কিছু আন্দোলনকারী বিক্ষোভে নেমেছেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব সমস্যা এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতার প্রতিবাদে। এমনটি বলছে বার্তা সংস্থা ফার্স এবং সরকার বিরোধী সক্রিয়তাবাদীরা। আবার অনেকেই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন সরকারবিরোধী অভিপ্রায়ে। তারা বর্তমান পররাষ্ট্রনীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন । প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির মৃত্যু চেয়ে দেয়া হচ্ছে স্লোগান। মিছিলে বলা হচ্ছে, ‘ভুলে যাও ফিলিস্তিনকে’ ‘গাজা বা লেবাননের জন্যে নয়, আমার প্রাণ ইরানের জন্যে’। বিক্ষোভের সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ব্রুকিংস দোহা সেন্টারের ভিসিটিং ফেলো আলী ফাতাহুল্লাহ নেজাদ আল জাজিরাকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট রুহানির অর্থনৈতিক নীতি ব্যর্থ প্রতীয়মান হওয়ায় ইরানের জনগণের মনে যে চাপা রোষ ছিল, বিক্ষোভে সেটাই প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। আবার অন্যদিকে, দেশটিতে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন পরিস্থিতিরও উন্নতি হয় নি। তাই একদিকে তৈরি হয়েছে আর্থ-সামাজিক অসন্তোষ। আরেকদিকে রাজনৈতিক অসন্তোষ’। এ প্রসঙ্গে ইরানের একজন গণতন্ত্রপন্থী ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার পটকিন আজারমেহর আল জাজিরাকে নিজের পর্যবেক্ষণ জানিয়ে বলেন, অনেক দলই কিছুদিন ধরে আন্দোলনে জড়িত ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সমন্বিত স্বর আরো জোরালো এবং বৈপ্লবিক হয়ে উঠেছে।
কি বলছে সরকার?
ইরানের সরকার সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির গণমানুষের উদ্বিগ্নতার কথা স্বীকার করেছে। তবে একইসঙ্গে, বিক্ষোভকারীদের কোন রকমের ধ্বংসাÍক আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দলরহমান রাহমানী ফাযলি বলেন, যারাই জনগণের সম্পদ নষ্ট করবে কিংবা আইনভঙ্গ করবে, তাদেরকে নিজের আচরণের মুল্য দিতে হবে। এর আগে দেয়া এক সতর্কবার্তায় তিনি নাগরিকদের বেআইনি জটলা পাকাতে বারণ করেন। ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট এশাক জাহাঙ্গিরি বলেন, কিছু আন্দোলনকারী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিক্ষোভ করলেও, অনেক আন্দোলনকারীই সরকার পতনের বিক্ষোভ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সবকিছু মিলিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিতই দেয়। যদিও কিছু পন্যের দাম বেড়েছে, তবে তা নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাÍক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আরো বলেন, এইসব বিশৃঙ্খলার মূলে কলকাঠি নাড়তে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছে এর মাধ্যমে তারা সরকারকে বিশৃঙ্খল করে তুলতে পারবে। তবে বাস্তবতা হল, সামাজিক আন্দোলন একবার শুরু হয়ে গেলে তা কোনদিকে মোড় নেয় সেটা পুরোপুরি কারোই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। অন্যদিকে, রোববার ইরানের লরিস্তান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর হাবিবোল্লাহ খোজাস্তেপুর বলেন, জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ‘বিদেশী এজেন্টরা’ অংশগ্রহণ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলতে চাইছে। তিনি ইরানের মাশহাদ শহরে পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হবার খবর প্রসঙ্গে বলেন, এটা বিদেশী এজেন্টের কাজ। কারণ, সেখানে পুলিশ জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করে নি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া কি?
ইরানের বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ইরানকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর ধরকপাকড় বারণ করেছে। এই ইস্যুতে কয়েক দফা টুইট করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম টুইটে বলেছেন, ‘নির্যাতনকারী রাষ্ট্র আজীবন টিকে থাকতে পারে না। সারা পৃথিবী দেখছে’! উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যকার সম্পর্কের আরো অবনতি হয়েছে। সিরিয়া এবং ইয়েমেনকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার বৈদেশিক নীতিতে বার বার সংঘর্ষ বেধেছে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি নিয়েও তৈরি হয়েছে বিভেদ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আমরা সকল জাতিকে ইরানের শান্তিকামী মানুষের প্রতি সমর্থন দিতে প্রকাশ্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সেখানে দুর্নীতির অবসান হওয়া দরকার। এছাড়াও, ফ্রান্স এবং জার্মানিতে ইরানের নাগরিকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ছোট ছোট বিক্ষোভ করা হয়।
সামনে কি হতে পারে?
সংঘাত পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হতে থাকায় তা সংশ্লিষ্টদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুমানের চেয়ে অনেক দ্রুত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরান ইন্টারন্যাশনালের সাংবাদিক নেগার মোর্তাজাভি বলেন, প্রথমে এই আন্দোলনকে প্রশাসন এবং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া ছাড়া এর কিছুই ভাবা হয় নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ইরানের জনগণের মনে এতো বেশি চাপা ক্ষোভ ছিল যে, এই আন্দোলন এখন প্রেসিডেন্টকে ছাড়িয়ে দেশটির সর্বচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খোমেনি পর্যন্ত চলে গেছে। যা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এর মধ্যে রোববার রাতে শুধু রাজধানী তেহরান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে কমপক্ষে ২০০ জনকে। আল জাজিরার মত অনুযায়ী এই বিক্ষোভ সম্পর্কিত পাঁচটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রসঙ্গ নিচে তুলে ধরা হল।
কি হচ্ছে ইরানে?
ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে বৃহস্পতিবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। শুক্রবার তা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী তেহরানে। এরপর বেশ দ্রুতগতিতে আন্দোলন ছড়িয়ে যায় দেশজুড়ে। অবশ্য অনেকে আবার এই বিক্ষোভের কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন ইরানের বিতর্কিত পররাষ্ট্রনীতিকে। বলছেন, আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে ইরানের ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই এই অসন্তোষ। আরেক দল বলছেন, সৌদি জোটের আরোপিত অবরোধের কারণে ইরানের জনগণের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হয়ে তৈরি হয়েছে এই বিক্ষোভের পটভূমি। এ সম্পর্কে স্থানীয় গণমাধ্যম বলেছে, হাজার হাজার মানুষ সরকারের ওপর ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করতে রাজপথে নেমে আসেন। এই বিক্ষোভকে এক দশকের মধ্যে ইরানে সংঘটিত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকার বিরোধী স্লোগান দেন। তাদেরকে প্রতিহত করতে মোতায়েন করা হয় দাঙ্গা পুলিশ। তাদের সঙ্গে ছিল সরকারপন্থি লোকজনও। বেঁধে যায় সংঘর্ষ। ওই সংঘর্ষের একটি ভিডিও টুইটারে আপলোড করে ইরানে অবস্থিত নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস। এতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। অবশ্য ওই ভিডিও চিত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারে নি আল জাজিরা। তবে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স-ও তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে সংঘটিত হওয়া সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
আন্দোলনকারীরা কি চাইছে?
কিছু কিছু আন্দোলনকারী বিক্ষোভে নেমেছেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব সমস্যা এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতার প্রতিবাদে। এমনটি বলছে বার্তা সংস্থা ফার্স এবং সরকার বিরোধী সক্রিয়তাবাদীরা। আবার অনেকেই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন সরকারবিরোধী অভিপ্রায়ে। তারা বর্তমান পররাষ্ট্রনীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন । প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির মৃত্যু চেয়ে দেয়া হচ্ছে স্লোগান। মিছিলে বলা হচ্ছে, ‘ভুলে যাও ফিলিস্তিনকে’ ‘গাজা বা লেবাননের জন্যে নয়, আমার প্রাণ ইরানের জন্যে’। বিক্ষোভের সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ব্রুকিংস দোহা সেন্টারের ভিসিটিং ফেলো আলী ফাতাহুল্লাহ নেজাদ আল জাজিরাকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট রুহানির অর্থনৈতিক নীতি ব্যর্থ প্রতীয়মান হওয়ায় ইরানের জনগণের মনে যে চাপা রোষ ছিল, বিক্ষোভে সেটাই প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। আবার অন্যদিকে, দেশটিতে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন পরিস্থিতিরও উন্নতি হয় নি। তাই একদিকে তৈরি হয়েছে আর্থ-সামাজিক অসন্তোষ। আরেকদিকে রাজনৈতিক অসন্তোষ’। এ প্রসঙ্গে ইরানের একজন গণতন্ত্রপন্থী ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার পটকিন আজারমেহর আল জাজিরাকে নিজের পর্যবেক্ষণ জানিয়ে বলেন, অনেক দলই কিছুদিন ধরে আন্দোলনে জড়িত ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সমন্বিত স্বর আরো জোরালো এবং বৈপ্লবিক হয়ে উঠেছে।
কি বলছে সরকার?
ইরানের সরকার সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির গণমানুষের উদ্বিগ্নতার কথা স্বীকার করেছে। তবে একইসঙ্গে, বিক্ষোভকারীদের কোন রকমের ধ্বংসাÍক আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দলরহমান রাহমানী ফাযলি বলেন, যারাই জনগণের সম্পদ নষ্ট করবে কিংবা আইনভঙ্গ করবে, তাদেরকে নিজের আচরণের মুল্য দিতে হবে। এর আগে দেয়া এক সতর্কবার্তায় তিনি নাগরিকদের বেআইনি জটলা পাকাতে বারণ করেন। ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট এশাক জাহাঙ্গিরি বলেন, কিছু আন্দোলনকারী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিক্ষোভ করলেও, অনেক আন্দোলনকারীই সরকার পতনের বিক্ষোভ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সবকিছু মিলিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিতই দেয়। যদিও কিছু পন্যের দাম বেড়েছে, তবে তা নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাÍক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আরো বলেন, এইসব বিশৃঙ্খলার মূলে কলকাঠি নাড়তে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছে এর মাধ্যমে তারা সরকারকে বিশৃঙ্খল করে তুলতে পারবে। তবে বাস্তবতা হল, সামাজিক আন্দোলন একবার শুরু হয়ে গেলে তা কোনদিকে মোড় নেয় সেটা পুরোপুরি কারোই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। অন্যদিকে, রোববার ইরানের লরিস্তান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর হাবিবোল্লাহ খোজাস্তেপুর বলেন, জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ‘বিদেশী এজেন্টরা’ অংশগ্রহণ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলতে চাইছে। তিনি ইরানের মাশহাদ শহরে পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হবার খবর প্রসঙ্গে বলেন, এটা বিদেশী এজেন্টের কাজ। কারণ, সেখানে পুলিশ জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করে নি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া কি?
ইরানের বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ইরানকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর ধরকপাকড় বারণ করেছে। এই ইস্যুতে কয়েক দফা টুইট করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম টুইটে বলেছেন, ‘নির্যাতনকারী রাষ্ট্র আজীবন টিকে থাকতে পারে না। সারা পৃথিবী দেখছে’! উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যকার সম্পর্কের আরো অবনতি হয়েছে। সিরিয়া এবং ইয়েমেনকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার বৈদেশিক নীতিতে বার বার সংঘর্ষ বেধেছে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি নিয়েও তৈরি হয়েছে বিভেদ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আমরা সকল জাতিকে ইরানের শান্তিকামী মানুষের প্রতি সমর্থন দিতে প্রকাশ্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সেখানে দুর্নীতির অবসান হওয়া দরকার। এছাড়াও, ফ্রান্স এবং জার্মানিতে ইরানের নাগরিকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ছোট ছোট বিক্ষোভ করা হয়।
সামনে কি হতে পারে?
সংঘাত পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হতে থাকায় তা সংশ্লিষ্টদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুমানের চেয়ে অনেক দ্রুত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরান ইন্টারন্যাশনালের সাংবাদিক নেগার মোর্তাজাভি বলেন, প্রথমে এই আন্দোলনকে প্রশাসন এবং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া ছাড়া এর কিছুই ভাবা হয় নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ইরানের জনগণের মনে এতো বেশি চাপা ক্ষোভ ছিল যে, এই আন্দোলন এখন প্রেসিডেন্টকে ছাড়িয়ে দেশটির সর্বচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খোমেনি পর্যন্ত চলে গেছে। যা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
No comments