ইরানে বিক্ষোভ ঝিমিয়ে পড়েছে, ছাত্রসহ গ্রেফতার সহস্রাধিক
ইরানে
বিক্ষোভ ঝিমিয়ে পড়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে পাঠানোর
পরই বিক্ষোভ কমে আসতে শুরু করে। স্থানীয় লোকজনকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা
রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। অন্যদিকে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। খবরে জানা
যাচ্ছে, এ পর্যন্ত ইরানে এক হাজার সাত শ' লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর
মধ্যে অন্তত ৯০ জন ছাত্র, অনেককে তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া
হয়েছে। এদের কমপক্ষে ১০ জন কোথায় আছে তা সম্পর্কে তেমন কোনো খবর পাওয়া
যাচ্ছে না। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ শুরু
হলেও পরে তা সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়। বিক্ষোভকারীরা ইরানের
সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনির ছবিও পোড়ায়। তবে বিপ্লবী
গার্ড বাহিনী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে , 'রাষ্ট্রদ্রোহিতা' পরাজিত হয়েছে। আজ
ইরানের কয়েকটি শহরে সরকারের সমর্থনে সমাবেশ হয়, যাতে হাজার হাজার লোক
অংশ নেয়।
তারা আমেরিকা , ইসরাইল ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। যে
ছাত্রদেরকে গ্রেফতার করা হয় তাদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তেহরান
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলেছেন, গ্রেফতার হওয়া ছাত্ররা কোথায়
আছে তা জানতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব
তাদের মুক্তির জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হবে। বিবিসির দেখা
ভিডিওতে তেহরানের কেন্দ্রস্থলে এভিন কারাগারের বাইরে লোকজন জড়ো হয়েছে বলে
দেখা যায় , যারা তাদের প্রিয়জনের খোঁজ নিতে এসেছে। দু'দিন আগেই ইরানের
বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলি জাফারি বলেন,
'রাষ্ট্রদ্রোহিতার' পরাজয় হয়েছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং
জনগণের নজরদারির ফলে শত্রুর পরাজয় ঘটেছে, এবং গার্ড বাহিনীকে মাত্র তিনটি
জায়গায় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। তার কথায় সারা দেশ মিলে বিশৃংখলা
সৃষ্টিকারীর সংখ্যা ১৫ হাজারও ছিল না, এবং একটি জায়গায় সর্বোচ্চ দেড়
হাজার লোক ছিল। এই জেনারেল বলেন, 'সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি
ক্লিনটন-ঘোষিত দাঙ্গা, ষড়যন্ত্র এবং অরাজকতা সৃষ্টিকারী শক্তিরা এবং
প্রতিবিপ্লবী ও শাহ-পন্থীরা' এর জন্য দায়ী। তার কথায় এই শত্রুরা 'ইসলামি
ইরানের প্রতি সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা হুমকি' সৃষ্টি করতে
চেয়েছিল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২২
জন লোক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের কাছে শক্ত
প্রমাণ আছে যে বিক্ষোভকারীদের 'বিদেশ থেকে' নির্দেশ দেয়া হচ্ছিল।
অন্যদিকে ইরানের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে জাতিসঙ্ঘে নিরাপত্তা পরিষদকে জড়িত
করতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতার নিন্দা করেছে রাশিয়া।
No comments