আগামী দিনের ‘টাইম বোমা’
১৯৭৫-এর
সহিংস অভ্যুত্থানে একাত্তরের বাংলাদেশ পাল্টে গিয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধীরা
আদর্শের দিক থেকে দেশকে অনেকখানি পিছিয়ে দিয়েছে। তারপর অনেক উত্থান-পতন
ঘটেছে। ২০০৮-এর নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মুক্তিযুদ্ধের
পক্ষশক্তি ক্ষমতায় আরোহণ করে। ২০১৪-এর নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায়
ফাঁকা মাঠে গোল করেছে ক্ষমতাসীন দল। টিকেও থেকেছে। ২০১৮-তে আবার নির্বাচন।
বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু কঠিন ও
সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণে সফল হয়েছে। সংবিধানে রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি
পুনঃসংযোজিত হয়েছে। একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে
এবং হচ্ছে। মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর হয়েছে। দেশব্যাপী সহিংসতা দমনে পুলিশ ও
র্যাবের সক্ষমতা প্রশংসনীয়। অর্থনৈতিক উন্নতিও উল্লেখযোগ্য। জাতীয় আয়ের
প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক ৬ শতাংশ অতিক্রম করে ৭ শতাংশের ওপর পৌঁছে গেছে।
দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে কমবেশি ২০ শতাংশে এসেছে। অতিদরিদ্রের সংখ্যা
হ্রাস পেয়েছে। কৃষি ও শিল্প উভয় ক্ষেত্রের উন্নতি ঈর্ষণীয়। বাহাত্তরে সাড়ে
সাত কোটি মানুষের প্রয়োজনের ৬০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হতো দেশে। এখন ১৬ কোটি
মানুষের প্রয়োজনীয় চাল প্রায় পুরোটাই দেশের কৃষককুল উৎপাদন করে। অন্যদিকে
দেশের পোশাকশিল্প একে একে পাকিস্তান, ভারত ও তুরস্ককে অতিক্রম করে একমাত্র
চীনের পর দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। মাথাপিছু আয় পাকিস্তানকে অতিক্রম
করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো।
বিশ্বব্যাংকের ভ্রুকুটি উপক্ষো করে নিজ সামর্থ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণে হাত
দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মশক্তির এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
এতসব অর্জনের পর দেশের ব্যাংকিং খাতে যে লুণ্ঠন-প্রক্রিয়া সাম্প্রতিক
বছরগুলোতে ঘটেছে, তা অর্জনকেই শুধু ম্লান করেনি, বরং সেই সঙ্গে আগামীর জন্য
টাইম বোমার মতো ওত পেতে আছে। ব্যাংকের স্বাস্থ্য সূচক হলো শ্রেণীকৃত ঋণ,
যা উন্নত দেশে দেড় শতাংশের মধ্যে থাকে। ২ শতাংশ অতিক্রম করলেই শঙ্কা-সংকেত
বেজে ওঠে। আমাদের দেশে ৩ শতাংশের মধ্যে থাকা বাঞ্ছনীয়। ২০১৭ সালের হিসাব
পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের হার গড়ে
৩২ শতাংশ এবং ব্যক্তি খাতের ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের হার ৭ শতাংশ। ১
জানুয়ারির সংবাদপত্রে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার অঙ্ক বেরিয়েছে। এটি আদৌ
লাভের ইঙ্গিত দেয় না। পরিচালন মুনাফা থেকে সঞ্চিতি (প্রভিশন) ও কর কাটা
যাবে। তারপর মিলবে মুনাফার অঙ্ক। সংবাদপত্রে এ কথাগুলোর উল্লেখ নেই। যেহেতু
সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণহারের পার্থক্য অনেক বেশি, সে
জন্য দুই ধরনের ব্যাংকের পৃথক পর্যালোচনা প্রয়োজন। দুইয়ের সমস্যাও এক নয়।
সরকারি ব্যাংকের মালিকানা সরকারের। পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে অর্থ
মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এই বিভাগ চেয়ারম্যান,
পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এখান থেকেই
সমস্যার শুরু। ব্যাংকিং বিভাগই সোনালী ব্যাংকের বোর্ডে নবীন বয়সী সাবেক
ছাত্রনেতাদের নিয়োগ দিয়েছিল। এই বিভাগই বেসিক ব্যাংকে বহুল আলোচিত আবদুল
হাই বাচ্চুকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়। কোনো ‘ফিট অ্যান্ড প্রপার টেস্ট’
না করেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
জনগণের আমানতের নিরাপত্তার খাতিরে বোর্ডে
তাঁদের নিয়োগ দেওয়া উচিত, যাঁদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি অতি উজ্জ্বল এবং
সততা, নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার জন্য নন্দিত। কিন্তু উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের তো
সমাজে সে ধরনের পরিচিতি নেই। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের
শ্রেণীকৃত ঋণ একসময় ৫০ শতাংশ অতিক্রম করল আর বেসিক ব্যাংকের তো সবই লুণ্ঠন
হয়ে গেল। সরকার জনগণের করের টাকা দিয়ে ব্যাংক দুটিকে বাঁচিয়ে রাখছে, যা
অনৈতিক। এতে কি সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হলো? অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি
আবদুল হামিদের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁর নিয়োগে আপত্তি
জানাল। ব্যাংকিং বিভাগ তা সত্ত্বেও তাঁকে নিয়োগদান করল, যা আইনের বরখেলাপ।
ব্যাংকিং বিভাগের এ কর্মকাণ্ড কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? সংসদীয় গণতন্ত্রের
নিয়মে ব্যাংকের এ রকম লুটতরাজের জন্য বিভাগীয় মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় দায়ী।
বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে লুণ্ঠনের ক্ষতিপূরণ করে কি এ দায় মেটানো যায়?
মন্ত্রী তো তখন বলেই বসলেন, ‘চার হাজার কোটি টাকা কী টাকা হলো!’ তাঁর কাছে
না হলেও গরিব জনগণের আমানতের চার হাজার কোটি টাকা অনেক টাকা। আর যে
ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন তখন আট হাজার কোটি টাকা, সে ব্যাংকের চার হাজার
কোটি টাকা লুণ্ঠন ব্যাংকটির জন্য সর্বনাশা!এখন আসা যাক বেসরকারি ব্যাংক
খাতের আলোচনায়। এ ব্যাংকগুলো প্রাথমিক অবস্থা কাটিয়ে গ্রহণযোগ্য অবস্থায়
এসেছিল। নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগে ব্যক্তি খাতের ব্যাংকগুলোর ৩৪ জন
পরিচালককে গুরুতর অনিয়মের জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারাবলে বাংলাদেশ
ব্যাংক সরাসরি অপসারণ করা হয়েছিল এবং একটি বড় ব্যাংকের পর্ষদ বাতিল করে
প্রশাসক বসিয়ে পুনর্গঠন করা হয়েছিল। তারপর ব্যাংকগুলো সুস্থভাবে চলছিল।
কিন্তু সরকারি ব্যাংকে বেপরোয়া দুর্নীতির সহযোগীরা ব্যক্তি খাতেও সংক্রমিত
হতে লাগল। কয়েকটি ব্যাংকে দুর্নীতি বেশ ছড়িয়ে পড়ল। ব্যক্তি খাতের ব্যাংকের
দুর্নীতির হোতা এবং পৃষ্ঠপোষক হলেন মালিকপক্ষ বোর্ড সদস্যবৃন্দ। সেই সঙ্গে
ব্যাংক সম্প্রসারণ নীতি হলো অগ্নিতে ঘৃতাহুতি। অনুক্ত যুক্তি ছিল,
জামায়াত-বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নিজেরা অনেক ব্যাংকের লাইসেন্স নিয়েছে এবং
বিত্তশালী হয়েছে। আওয়ামী লীগেরও অর্থ প্রয়োজন। যুক্তি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু
প্রক্রিয়া অগ্রহণযোগ্য। মন্ত্রী, সাংসদ ও বড় নেতারা ব্যাংক লাইসেন্স পেলেন।
খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কংগ্রেস দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসের
কোনো মন্ত্রী বা মাঝারি নেতাও ভারতের কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা পরিচালক
নেই, ছিলেনও না। কারণ, ব্যবসা বা ব্যাংক পরিচালনা করা উদ্যোক্তা শ্রেণির
মানুষের কাজ। নেতাদের না দিয়ে দলের সমর্থক উদ্যোক্তা শ্রেণির লোকদের ব্যাংক
লাইসেন্স দিলে আজকের সমস্যার উদ্ভব হতো না। ফারমার্স ব্যাংকের
চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতা কি আওয়ামী লীগের
ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে, নাকি নিষ্প্রভ করেছে? ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু
করার ক্ষমতা আইন একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়েছে। সরকারের সঙ্গে
‘কনসালটেশন’-এর একটা সুযোগ আগে ছিল।
ড. ফখরুদ্দীন আহমদ গভর্নর থাকাকালে আইন
সংশোধন করে ‘কনসালটেশন’ রদ করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা এবং ‘ডিউ
ডিলিজেন্সের’ মাধ্যমে ব্যাংক লাইসেন্স প্রদানের লক্ষ্যে। অর্থ মন্ত্রণালয়
বর্তমান সময়ে যেভাবে সুপারিশের নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশ দিচ্ছে, তা
শুধু অনৈতিকই নয়, বরং আইনের লঙ্ঘন। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ্য
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দরখাস্ত আহ্বান করবে এবং পেশাগতভাবে যাচাই-বাছাই করে
শুধু প্রয়োজনীয়সংখ্যক লাইসেন্স ইস্যু করবে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত অন্তত
বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে, আর কিছু না হোক। এবার সেটিও হয়নি। এটি স্বচ্ছতা ও
আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পোস্ট অফিসে
পরিণত করা হয়েছে। এমন চলতে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অকার্যকর হয়ে পড়বে এবং
সুশাসনের স্থানে দখল করবে অপশাসন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সমাধান
প্রয়োজন। গত ডিসেম্বর মাসে জাতীয় সংসদে ব্যাংকিং কোম্পানি আইন সংশোধনের
একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। সংসদে এখনো আলোচনা হয়নি। ব্যাংকের পর্ষদে একই
পরিবারের চারজন (বর্তমানে দুজন) সদস্য নির্বাচন এবং প্রত্যেক পর্ষদ সদস্য
একাদিক্রমে নয় বছর (বর্তমানে ছয় বছর) পদে বহাল থাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সমাজের সব অংশ থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক
‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান’ বিভাগের সচিবকে লেখা ২১.১১.২০১৬ তারিখের
পত্রে এ প্রস্তাবে তাদের আপত্তি জানিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের মতামত উপেক্ষা করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়-বিষয়ক সংসদীয় কমিটি তাদের
বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছিল, কিন্তু রহস্যময় কারণে
অনাপত্তি গিলে ফেলে প্রস্তাবের অক্ষরে অক্ষরে সম্মতি জ্ঞাপন করতে হয়েছে
পরবর্তী সময়ে। এই হচ্ছে সংসদীয় গণতন্ত্র! অর্থশক্তির কাছে সংসদীয় শক্তি
পরাভূত! প্রথম প্রজন্মের ব্যাংক ‘ন্যাশনাল ব্যাংক লি.’-এ যখন আইনানুগভাবে
এক পরিবার থেকে দুজনের বেশি পরিচালক ছিলেন না, তখন ব্যাংকটি ছিল দেশের
সর্বোত্তম চারটি ব্যাংকের অন্যতম। আইন ভঙ্গ করে এ ব্যাংকটিতে এখন একই
পরিবারের পাঁচজন পরিচালক রয়েছেন অনেক দিন যাবৎ। আইনভঙ্গের জন্য শাস্তির
বিধান আইনেই রয়েছে। ব্যাখ্যা তলবের পর বাংলাদেশ ব্যাংক আর অগ্রসর হতে
পারেনি। তারপর আইন ভঙ্গকারীকে শাস্তি না দিয়ে উল্টো আইনকেই সংশোধন করার বিল
সংসদে পেশ করা হয়েছে। একটি পরিবারের জন্য আইন সংশোধন করা হলে আইনের শাসন
কীভাবে কায়েম হবে? আইন সংশোধনী প্রস্তাবটির পক্ষে লবি করছে ব্যাংকের মালিক
সমিতি। ব্যাংক কিন্তু অন্যান্য কোম্পানির মতো নয়। ব্যাংকের চলতি মূলধনে
শেয়ারহোল্ডারদের অংশ ১০ শতাংশের কম। আমানতকারী জনগণের অংশ ৯০ শতাংশের বেশি।
ব্যাংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হলো ব্যাংকে নিয়োজিত সকল পেশাজীবী। এই
তিন পক্ষের মধ্যে মাত্র এক পক্ষের তদবিরে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রস্তাবটি
তাই পক্ষপাতদুষ্ট।
ব্যাংকের বড় অংশী (স্টেকহোল্ডার) আমানতকারী ও পেশাজীবী
ব্যাংকাররা। তাঁদের মতামতের তোয়াক্কা না করে নামমাত্র ১০ শতাংশ অংশীর হাতে
গোনা কয়েকজন তাঁবেদারের সুপারিশে সংশোধনী প্রস্তাব একটি অশনিসংকেত এবং
ব্যাংকিং আইনের ‘গ্রাহক সুরক্ষা’ নীতিমালার লঙ্ঘন। আমার অনুসন্ধানমতে,
শেয়ারহোল্ডারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এই সংশোধনীর বিরোধী। পাকিস্তানে
ব্যাংকভিত্তিক ২২ ধনী পরিবার গড়ে উঠেছিল। তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর দল আওয়ামী লীগ। সংশোধনীটি পাস হলে এক পরিবারের চারজন
পর্ষদে থাকবেন। ওই ব্যাংকের বিশাল আমানত একটি পরিবারের তত্ত্বাবধানে
ব্যবহৃত হবে। একটি পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের কাছে দেশের অধিকাংশ সম্পদ
কেন্দ্রীভূত হবে। এটি বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক ভাবনার বিপরীত এবং সংবিধানের
লঙ্ঘন। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি সমাজতন্ত্রের বাস্তব অর্থ ‘কল্যাণ অর্থনীতি’।
নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড ফ্রান্স, জার্মানিসহ অনেক ইউরোপীয়
দেশেই এটি প্রচলিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিপরীতে পুঁজিবাদী ধনতান্ত্রিক
অর্থনীতির দেশ, যা আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী। আমাদের সংবিধানমতে, সম্পদ
কেন্দ্রীভূতকরণ নয়, বরং কল্যাণ অর্থনীতির মধ্য দিয়ে সুষম বণ্টন
কাম্য—বঙ্গবন্ধুর ভাষায় যা ‘বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা’। এ ব্যবস্থায়
মধ্যবিত্তের সম্প্রসারণ এবং দারিদ্যের সংকোচনই লক্ষ্য। উচ্চবিত্ত আইনের
মধ্য থেকে যোগ্যতা অনুসারে বড় হবে। কিন্তু আইন সংশোধন করে তাদের সম্পদ
সংগ্রহ ও পুঞ্জীভূতকরণের সুযোগ দেওয়া যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে
নিবেদন, বাজেট অধিবেশনে যেভাবে তিনি গণমানুষের স্বার্থবিরোধী ব্যাংক চার্জ ও
ভ্যাট ঠেকিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক ভাবনাবিরোধী ও কল্যাণ
অর্থনীতিবিরোধী ব্যাংক আইনের সংশোধনীটিও সেভাবেই আগামী সংসদ অধিবেশনে
গিলোটিনে তুলে দিন।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: ব্যাংকার, সাবেক ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: ব্যাংকার, সাবেক ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক
No comments