পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে সম্মেলন- পুলিশ বিভাগ গঠনের দাবি
পৃথক পুলিশ বিভাগ গঠনের দাবি উঠেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন থেকে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নিজেই এ দাবি করেছেন। এ ছাড়া পুলিশের শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুরোপুরি বাহিনীর ওপর অর্পণ, অধিদপ্তর নয় দাপ্তরিকভাবে ‘পুলিশ সদর দপ্তর’ ঘোষণা, যানবাহন, আবাসন, ঝুঁকি ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিও উঠেছে সম্মেলন থেকে।
গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনে নিয়মিত কর্মসূচি হিসেবে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘণ্টাব্যাপী সম্মেলন হয়। রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ টেলিকম মিলনায়তনে এই সম্মেলনে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন সব কর্মকর্তা অংশ নেন। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান। এই সম্মেলনকে পুলিশের নীতিনির্ধারণী বৈঠক হিসেবে দেখা হয়।
সম্মেলন শেষে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সম্মেলনে তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, পুলিশের আইজি পদটা জ্যেষ্ঠ সচিবের। কিন্তু বর্তমান আইজিপি জ্যেষ্ঠ সচিব নন। পুলিশে দুটি গ্রেড ওয়ান পদ আছে। একটা হলো অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন), আরেকটি হচ্ছে অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি)। এখন এ দুটি পদের মধ্যে একজন কেবল গ্রেড ওয়ান পদমর্যাদায় রয়েছেন। পুলিশ অনেক দিন থেকেই পৃথক পুলিশ বিভাগের দাবি করে আসছে। পৃথক পুলিশ বিভাগ হলে পুলিশ নিজেদের কাজগুলো নিজেরা দ্রুত করতে পারবে। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়বে না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আলাদা বিভাগ হলে পেশাগত বিষয়গুলো অনেক সহজতর হবে। যে রকম সশস্ত্র বাহিনীর একটা পৃথক বিভাগ রয়েছে। তার একটা যৌক্তিকতা রয়েছে। সেই যৌক্তিকতা পুলিশের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হতে পারে। তবে এটা নিয়ে নির্মোহ আলোচনার প্রয়োজন।
নুরুল হুদা বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই পৃথক পুলিশ বিভাগ আছে, পুলিশ মন্ত্রী আছে। পৃথক বিভাগ হলে পুলিশ সরাসরি মন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে পারবে। এখন পুলিশপ্রধান দেশের অন্য সংস্থাগুলো যেমন মৎস্য অধিদপ্তর, পশুপালন অধিদপ্তরের প্রধানের মতো একজন কর্মকর্তা। কিন্তু আইজিপির তো দায়দায়িত্বের পরিধি অনেক বেশি। যদিও আইজিপির পদমর্যাদা বাড়ানো হয়েছে, পুলিশে দুটি গ্রেড ওয়ান পদও রয়েছে। তাঁর মতে, পৃথক বিভাগ হলে পুলিশের বাজেট, আর্থিক বিষয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত দেওয়া যাবে।
তবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আদলে পৃথক পুলিশ বিভাগ করলে জটিলতা বাড়বে বলে মনে করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা আরও বাড়ানো যেতে পারে। সচিব বাড়ানো যেতে পারে, লোকবল বাড়ানো যেতে পারে।
আরও দাবি: সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের ঝুঁকি ভাতার দাবি তুলে ধরে বলেন, পুলিশ ঝুঁকি ভাতা পায় না। তবে র্যাবে গেলে পুলিশ কর্মকর্তারাই ঝুঁকি ভাতা পান।
কমিশনারের কথার সূত্র ধরে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ডিএমপি কমিশনার ভুল তথ্য দিচ্ছেন। র্যাব ঝুঁকি ভাতা পায় না। র্যাবের আলাদা ভাতা রয়েছে। এখন সেই ভাতাও কমানো হচ্ছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে তার তদন্তের জন্য যে কমিটি করা হয়, তার প্রধান হলেন জেলা প্রশাসক। আর মহানগর এলাকায় এ রকম ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। একটি শৃঙ্খলা বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সংবিধানের ৪৫ ধারায় যা বলা হয়েছে, আইনের এ অংশটুকু তার পরিপন্থী। তিনি আইনের এ অংশে দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।
পরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা পুলিশের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ মানতে চাইছেন না।
সম্মেলনে বিপ্লব কুমারের বক্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পরামর্শে আইনে ওই ধারা রাখা হয়েছিল। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত ওই আইনে কোনো কর্মকর্তাকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। তাহলে এটা নিয়ে অপব্যবহারের আশঙ্কা কেন।
সম্মেলনে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, সরকারের দাপ্তরিক কাগজপত্রে পুলিশ সদর দপ্তরকে পুলিশ অধিদপ্তর হিসেবে লেখা হয়। কিন্তু এমনিতে তা পুলিশ সদর দপ্তর হিসেবেই পরিচিত। তিনি দাপ্তরিক কাগজপত্রে পুলিশ সদর দপ্তর লেখার দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, পুলিশ সদর দপ্তর লেখার কোনো সরকারি আদেশ নেই। পুরোনো কাগজপত্রেও অধিদপ্তর লেখা রয়েছে।
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রযুক্তি দরকার। থানা ও ফাঁড়ির সীমানা দেয়াল নেই। জেলা পর্যায়ে মোবাইল ট্র্যাকার প্রয়োজন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান বলেন, তদন্তের স্বার্থে জাতীয় মনিটরিং সেন্টারের (এনএমসি) বৈধ আড়িপাতা ব্যবস্থায় পিবিআইয়ের প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার কামরুল আহসান পুলিশের যানবাহনের অপর্যাপ্ততার কথা বলেন। তিনি প্রিজন ভ্যান বাড়ানোর কথা বলেন।
এ ছাড়া সম্মেলনে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের জন্য ন্যূনতম ১৫ বছর বেতন ও রেশনের ব্যবস্থা করা, পুলিশের আবাসন সুবিধার উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তাঁর বক্তব্যে পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সব জায়গায় সবাই আপনাদের প্রশংসা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান, সদ্য সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান আপনাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি এরশাদ সাহেবও আপনাদের প্রশংসা করে গেছেন। জানুয়ারি থেকে টানা ৯১ দিন আপনারা যে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন, তার জন্য পুরো দেশবাসী আপনাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। আপনারা পরীক্ষিত। পরীক্ষায় পাস করেছেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা অনেক যৌক্তিক দাবির কথা বলেছেন। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব বিষয়গুলো পরিষ্কার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। গাড়ির যে সমস্যা রয়েছে, তা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
সম্মেলনের ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্বে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমাদের দোষ-ত্রুটি হওয়া সম্ভব। বিচ্যুতি ঘটে। সেগুলো যাতে না ঘটে সে জন্য চেষ্টা চলছে। কিন্তু দু-একজনের বিচ্যুতির জন্য ঢালাওভাবে বলা হয় পুলিশ এটা করেছে, পুলিশ ওটা করেছে। কিন্তু দোষী সব পুলিশের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। এই শাস্তির বিষয় আর গণমাধ্যমে আসে না। আমি বিচ্যুতিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলছি না। কিন্তু দু-একটি বিচ্যুতির জন্য পুরো বাহিনীর গায়ে যেন কালিমা না লাগানো হয়।’
গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনে নিয়মিত কর্মসূচি হিসেবে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘণ্টাব্যাপী সম্মেলন হয়। রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ টেলিকম মিলনায়তনে এই সম্মেলনে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন সব কর্মকর্তা অংশ নেন। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান। এই সম্মেলনকে পুলিশের নীতিনির্ধারণী বৈঠক হিসেবে দেখা হয়।
সম্মেলন শেষে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সম্মেলনে তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, পুলিশের আইজি পদটা জ্যেষ্ঠ সচিবের। কিন্তু বর্তমান আইজিপি জ্যেষ্ঠ সচিব নন। পুলিশে দুটি গ্রেড ওয়ান পদ আছে। একটা হলো অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন), আরেকটি হচ্ছে অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি)। এখন এ দুটি পদের মধ্যে একজন কেবল গ্রেড ওয়ান পদমর্যাদায় রয়েছেন। পুলিশ অনেক দিন থেকেই পৃথক পুলিশ বিভাগের দাবি করে আসছে। পৃথক পুলিশ বিভাগ হলে পুলিশ নিজেদের কাজগুলো নিজেরা দ্রুত করতে পারবে। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়বে না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আলাদা বিভাগ হলে পেশাগত বিষয়গুলো অনেক সহজতর হবে। যে রকম সশস্ত্র বাহিনীর একটা পৃথক বিভাগ রয়েছে। তার একটা যৌক্তিকতা রয়েছে। সেই যৌক্তিকতা পুলিশের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হতে পারে। তবে এটা নিয়ে নির্মোহ আলোচনার প্রয়োজন।
নুরুল হুদা বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই পৃথক পুলিশ বিভাগ আছে, পুলিশ মন্ত্রী আছে। পৃথক বিভাগ হলে পুলিশ সরাসরি মন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে পারবে। এখন পুলিশপ্রধান দেশের অন্য সংস্থাগুলো যেমন মৎস্য অধিদপ্তর, পশুপালন অধিদপ্তরের প্রধানের মতো একজন কর্মকর্তা। কিন্তু আইজিপির তো দায়দায়িত্বের পরিধি অনেক বেশি। যদিও আইজিপির পদমর্যাদা বাড়ানো হয়েছে, পুলিশে দুটি গ্রেড ওয়ান পদও রয়েছে। তাঁর মতে, পৃথক বিভাগ হলে পুলিশের বাজেট, আর্থিক বিষয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত দেওয়া যাবে।
তবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আদলে পৃথক পুলিশ বিভাগ করলে জটিলতা বাড়বে বলে মনে করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা আরও বাড়ানো যেতে পারে। সচিব বাড়ানো যেতে পারে, লোকবল বাড়ানো যেতে পারে।
আরও দাবি: সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের ঝুঁকি ভাতার দাবি তুলে ধরে বলেন, পুলিশ ঝুঁকি ভাতা পায় না। তবে র্যাবে গেলে পুলিশ কর্মকর্তারাই ঝুঁকি ভাতা পান।
কমিশনারের কথার সূত্র ধরে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ডিএমপি কমিশনার ভুল তথ্য দিচ্ছেন। র্যাব ঝুঁকি ভাতা পায় না। র্যাবের আলাদা ভাতা রয়েছে। এখন সেই ভাতাও কমানো হচ্ছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে তার তদন্তের জন্য যে কমিটি করা হয়, তার প্রধান হলেন জেলা প্রশাসক। আর মহানগর এলাকায় এ রকম ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। একটি শৃঙ্খলা বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সংবিধানের ৪৫ ধারায় যা বলা হয়েছে, আইনের এ অংশটুকু তার পরিপন্থী। তিনি আইনের এ অংশে দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।
পরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা পুলিশের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ মানতে চাইছেন না।
সম্মেলনে বিপ্লব কুমারের বক্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পরামর্শে আইনে ওই ধারা রাখা হয়েছিল। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত ওই আইনে কোনো কর্মকর্তাকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। তাহলে এটা নিয়ে অপব্যবহারের আশঙ্কা কেন।
সম্মেলনে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, সরকারের দাপ্তরিক কাগজপত্রে পুলিশ সদর দপ্তরকে পুলিশ অধিদপ্তর হিসেবে লেখা হয়। কিন্তু এমনিতে তা পুলিশ সদর দপ্তর হিসেবেই পরিচিত। তিনি দাপ্তরিক কাগজপত্রে পুলিশ সদর দপ্তর লেখার দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, পুলিশ সদর দপ্তর লেখার কোনো সরকারি আদেশ নেই। পুরোনো কাগজপত্রেও অধিদপ্তর লেখা রয়েছে।
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রযুক্তি দরকার। থানা ও ফাঁড়ির সীমানা দেয়াল নেই। জেলা পর্যায়ে মোবাইল ট্র্যাকার প্রয়োজন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান বলেন, তদন্তের স্বার্থে জাতীয় মনিটরিং সেন্টারের (এনএমসি) বৈধ আড়িপাতা ব্যবস্থায় পিবিআইয়ের প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার কামরুল আহসান পুলিশের যানবাহনের অপর্যাপ্ততার কথা বলেন। তিনি প্রিজন ভ্যান বাড়ানোর কথা বলেন।
এ ছাড়া সম্মেলনে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের জন্য ন্যূনতম ১৫ বছর বেতন ও রেশনের ব্যবস্থা করা, পুলিশের আবাসন সুবিধার উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তাঁর বক্তব্যে পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সব জায়গায় সবাই আপনাদের প্রশংসা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান, সদ্য সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান আপনাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি এরশাদ সাহেবও আপনাদের প্রশংসা করে গেছেন। জানুয়ারি থেকে টানা ৯১ দিন আপনারা যে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন, তার জন্য পুরো দেশবাসী আপনাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। আপনারা পরীক্ষিত। পরীক্ষায় পাস করেছেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা অনেক যৌক্তিক দাবির কথা বলেছেন। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব বিষয়গুলো পরিষ্কার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। গাড়ির যে সমস্যা রয়েছে, তা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
সম্মেলনের ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্বে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমাদের দোষ-ত্রুটি হওয়া সম্ভব। বিচ্যুতি ঘটে। সেগুলো যাতে না ঘটে সে জন্য চেষ্টা চলছে। কিন্তু দু-একজনের বিচ্যুতির জন্য ঢালাওভাবে বলা হয় পুলিশ এটা করেছে, পুলিশ ওটা করেছে। কিন্তু দোষী সব পুলিশের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। এই শাস্তির বিষয় আর গণমাধ্যমে আসে না। আমি বিচ্যুতিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলছি না। কিন্তু দু-একটি বিচ্যুতির জন্য পুরো বাহিনীর গায়ে যেন কালিমা না লাগানো হয়।’
No comments