উত্তরাঞ্চলে দুই শ’ নদী ও এক হাজার বিল ভরাট- সেচ সঙ্কটে পাঁচ লাখ হেক্টর বোরোজমি
গ্রীষ্মকাল আসার আগেই পানিশূন্য তাড়াশের নন্দকুজা নদী : জাকির আকন্দ |
ভারত
অভিন্ন নদীতে বাঁধসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করে ইচ্ছেমতো পানির প্রবাহ
নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে ভাটির বাংলাদেশের শত শত নদ-নদী, খাল, বিল, হাওর,
বাঁওড়ে পর্যাপ্ত পানির প্রবাহ থাকছে না। বছরের পর বছর পলি জমে সঙ্কুচিত
হচ্ছে বিল ও নদীগুলোর আয়তন। ফলে শুষ্ক মওসুমে উত্তরাঞ্চলের দুই শতাধিক নদী,
শাখানদী, উপনদীসহ এক হাজারের বেশি বিল ভরাট হয়ে আবাদী জমিতে রূপান্তরিত
হয়েছে। এতে নদী ও বিলনির্ভর প্রায় পাঁচ লাখ হেক্টর বোরোজমিতে সেচসঙ্কট দেখা
দিয়েছে।
জানা যায়, ১৯৬৪-৬৫ সালে দেশে হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ শুরু হয়। সেই সময় থেকে সেচের জন্য শ্যালো মেশিন ব্যবহার হয়ে আসছে। তখন নদী, বিল, জলাশয় থেকে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে ফসলি জমিতে সেচ দেয়া হতো। ১৯৭৩ সালের পর থেকে ভারত অভিন্ন নদ-নদীতে নানা অবকাঠামো নির্মাণ করে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ফলে শুষ্ক মওসুমে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ না থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো মরা পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া বছরের পর বছর নদ-নদী, খাল, বিল, জলাশয়ে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেচকার্যক্রম সম্পূর্ণ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভশীল হয়ে পড়েছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের একসময়ের খড়স্রোতা নন্দকুজা, ভদ্রাবতী, সরস্বতী, ইছামতি, গুমানী, আত্রাই, গুড় নদী, করতোয়া, ফুলঝোর, তুলসী, চেঁচুয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা, ঝরঝরিয়া, কাকন, কানেশ্বরী, মুক্তাহার, কাকেশ্বরী, সুতিখালি, গোহালা, গাড়াদহ, স্বতী, ভেটেশ্বর, ধরলা, দুধকুমার, সানিয়াজান, তিস্তা, ঘাগট, ছোটযমুনা, নীলকুমার, বাঙ্গালী, বড়াই, মানস, কুমলাই, সোনাভরা, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম, বুড়িতিস্তা, যমুনেশ্বরী, মহানন্দা, টাঙ্গান, কুমারী, রতœাই, পুনর্ভবা, ত্রিমোহনী, তালমা, ঢেপা, কুরুম, কুলফি, বালাম, ভেরসা, ঘোড়ামারা, মালদহ, চারালকাঁটা, পিছলাসহ দুই শতাধিক নদী, শাখানদী ও উপনদী নব্যতা হারিয়ে মরা নদীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
এ ছাড়া পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার ঘুঘুদহ বিল, গাজনার বিল, শিকর বিল, কাজলকুড়ার বিল, ধলকুড়া বিল, ইটাকাটা বিল, গন্ডার বিল, পাইকশার বিল, বেহুলার বিল, হাড়গিলার বিল, দীঘলাছড়ার বিল, বোছাগাড়ীর বিল, ইউসুফ খাঁর বিল, নাওখোয়া বিল, ঢুবাছরি বিল ও কাঁকড়ার বিলসহ সহস্রাধিক বিল শুকিয়ে সমতলভূমিতে পরিণত হয়েছে। একসময় এসব বিলে সারা বছরই পানি থাকত। আর এখন বছরের নয় মাসই পানি থাকে না। ফলে কৃষকেরা নানা রকম ফসলের আবাদ করছেন।
কুড়িগ্রামের ১৮২টি বিলের মধ্যে দীঘলাছড়ার বিল, বোছাগাড়ীর বিল, ইউসুফ খাঁর বিল, নাওখোয়া বিল, চুবাছরির বিল, কুশ্বার বিল, মেরমেরিয়ার বিল, চাছিয়ার বিল, হবিছরি বিল, পেদিখাওয়া বিল, কয়রার বিলসহ বেশির ভাগ বিলে ফসলের আবাদ হচ্ছে। অন্য বিলগুলোতে বছরের আট মাসের বেশি সময় পানি থাকে না। দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলার বিলগুলোর একই অবস্থা। চলনবিলে এক হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে বেঁচে আছে ৩৬৮ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে মাত্র ৮৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সারা বছর পানি থাকে। পানি শুকিয়ে গেলে বিলগুলো ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হয়।
নদী-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাঁচ লাখ হেক্টর বোরোজমিতে সেচ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষিকাজ হয়ে পড়েছে গভীর-অগভীর নলকূপনির্ভর। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। খনন ও সংস্কারের অভাব, অপরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও বিল রক্ষায় পর্যাপ্ত উদ্যোগ না নেয়ায় উত্তরাঞ্চল থেকে নদী-বিলের অস্তিত্ব এক এক করে মুছে যাচ্ছে।
রাজশাহী ও রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে দুই শতাধিক নদী ও সহস্রাধিক বিল শুকিয়ে যাওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানির অভাবে প্রায় ১২ লাখ হেক্টর এক ফসলি জমি তিন ফসলিতে পরিণত করা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে পাবনা জেলায় এক লাখ ৩৪ হাজার হেক্টর, সিরাজগঞ্জে ৯১ হাজার হেক্টর, রাজশাহী জেলায় ৯০ হাজার হেক্টর, নওগাঁ জেলায় এক লাখ ২০ হাজার হেক্টর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮৭ হাজার হেক্টর, নাটোর জেলায় ৬৬ হাজার হেক্টর, বগুড়া জেলায় ৩১ হাজার হেক্টর, জয়পুরহাট জেলায় ১৪ হাজার হেক্টর, গাইবান্ধায় ৬৯ হাজার হেক্টর, রংপুর জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর, নীলফামারী জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর, লালমনিরহাট জেলায় ৫১ হাজার হেক্টর, কুড়িগ্রাম জেলায় এক লাখ হেক্টর, দিনাজপুর জেলায় এক লাখ ২৫ হাজার হেক্টর, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর এবং পঞ্চগড় জেলায় ৭৯ হাজার হেক্টর এক ফসলি জমি সেচের পানির অভাবে তিন ফসলিতে রূপান্তর করা যাচ্ছে না।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমতার এক জরিপ প্রতিবেদনে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলে বিলের সংখ্যা এক হাজার ৫৬১টি। এর মধ্যে সহস্রাধিক বিলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। পলি জমে বিলের মুখ ভরাট হয়ে যাওয়া এবং পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বছরের বেশির ভাগ সময় এসব বিল শুকনা থাকে। বছরের পর বছর বিলগুলোতে পলি জমছে। গভীরতা হৃাস পাচ্ছে। পরিণত হচ্ছে নিচু সমতল ভূমিতে। দীর্ঘ দিন সংস্কার ও খননের উদ্যোগ না নেয়ায় বিলের পানির নির্দিষ্ট ধারাটিও হারিয়ে যাচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলে বন্যার সময় আসা পলি জমছে বিলে। বন্যার পানি নেমে গেলে থেকে যাচ্ছে পলি। একপর্যায়ে গোটা বিল এলাকাই পরিণত হচ্ছে ধুধু প্রান্তরে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী ড. মো: রেদওয়ানুর রহমানের প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, ২৬ বছর আগেও চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদী, ৩৯টি বিল ও ২২টি খাড়িতে বছরজুড়েই ৬ থেকে ১২ ফুট পানি থাকত। ফলে সারা বছরই নৌচলাচল করত। কিন্তু বছরের পর বছর পলি জমে এসব নদী, বিল ও খাড়ি ভরাট হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ, ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে এবং ১৯৮০-এর দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বড়ালের (পদ্মা) উৎসমুখে স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে চলনবিলের বিভিন্ন নদী বিল জলাশয় ও খাড়িগুলোয় পলি জমে ক্রমে ভরাট হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিলের মাঝ দিয়ে যথেচ্ছভাবে সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ভূমি দখল করে বসতি ও দোকাপাট স্থাপন করায় নদী, বিল ও খাড়িগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ১৯৬৪-৬৫ সালে দেশে হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ শুরু হয়। সেই সময় থেকে সেচের জন্য শ্যালো মেশিন ব্যবহার হয়ে আসছে। তখন নদী, বিল, জলাশয় থেকে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে ফসলি জমিতে সেচ দেয়া হতো। ১৯৭৩ সালের পর থেকে ভারত অভিন্ন নদ-নদীতে নানা অবকাঠামো নির্মাণ করে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ফলে শুষ্ক মওসুমে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ না থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো মরা পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া বছরের পর বছর নদ-নদী, খাল, বিল, জলাশয়ে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেচকার্যক্রম সম্পূর্ণ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভশীল হয়ে পড়েছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের একসময়ের খড়স্রোতা নন্দকুজা, ভদ্রাবতী, সরস্বতী, ইছামতি, গুমানী, আত্রাই, গুড় নদী, করতোয়া, ফুলঝোর, তুলসী, চেঁচুয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা, ঝরঝরিয়া, কাকন, কানেশ্বরী, মুক্তাহার, কাকেশ্বরী, সুতিখালি, গোহালা, গাড়াদহ, স্বতী, ভেটেশ্বর, ধরলা, দুধকুমার, সানিয়াজান, তিস্তা, ঘাগট, ছোটযমুনা, নীলকুমার, বাঙ্গালী, বড়াই, মানস, কুমলাই, সোনাভরা, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম, বুড়িতিস্তা, যমুনেশ্বরী, মহানন্দা, টাঙ্গান, কুমারী, রতœাই, পুনর্ভবা, ত্রিমোহনী, তালমা, ঢেপা, কুরুম, কুলফি, বালাম, ভেরসা, ঘোড়ামারা, মালদহ, চারালকাঁটা, পিছলাসহ দুই শতাধিক নদী, শাখানদী ও উপনদী নব্যতা হারিয়ে মরা নদীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
এ ছাড়া পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার ঘুঘুদহ বিল, গাজনার বিল, শিকর বিল, কাজলকুড়ার বিল, ধলকুড়া বিল, ইটাকাটা বিল, গন্ডার বিল, পাইকশার বিল, বেহুলার বিল, হাড়গিলার বিল, দীঘলাছড়ার বিল, বোছাগাড়ীর বিল, ইউসুফ খাঁর বিল, নাওখোয়া বিল, ঢুবাছরি বিল ও কাঁকড়ার বিলসহ সহস্রাধিক বিল শুকিয়ে সমতলভূমিতে পরিণত হয়েছে। একসময় এসব বিলে সারা বছরই পানি থাকত। আর এখন বছরের নয় মাসই পানি থাকে না। ফলে কৃষকেরা নানা রকম ফসলের আবাদ করছেন।
কুড়িগ্রামের ১৮২টি বিলের মধ্যে দীঘলাছড়ার বিল, বোছাগাড়ীর বিল, ইউসুফ খাঁর বিল, নাওখোয়া বিল, চুবাছরির বিল, কুশ্বার বিল, মেরমেরিয়ার বিল, চাছিয়ার বিল, হবিছরি বিল, পেদিখাওয়া বিল, কয়রার বিলসহ বেশির ভাগ বিলে ফসলের আবাদ হচ্ছে। অন্য বিলগুলোতে বছরের আট মাসের বেশি সময় পানি থাকে না। দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলার বিলগুলোর একই অবস্থা। চলনবিলে এক হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে বেঁচে আছে ৩৬৮ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে মাত্র ৮৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সারা বছর পানি থাকে। পানি শুকিয়ে গেলে বিলগুলো ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হয়।
নদী-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাঁচ লাখ হেক্টর বোরোজমিতে সেচ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষিকাজ হয়ে পড়েছে গভীর-অগভীর নলকূপনির্ভর। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। খনন ও সংস্কারের অভাব, অপরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও বিল রক্ষায় পর্যাপ্ত উদ্যোগ না নেয়ায় উত্তরাঞ্চল থেকে নদী-বিলের অস্তিত্ব এক এক করে মুছে যাচ্ছে।
রাজশাহী ও রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে দুই শতাধিক নদী ও সহস্রাধিক বিল শুকিয়ে যাওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানির অভাবে প্রায় ১২ লাখ হেক্টর এক ফসলি জমি তিন ফসলিতে পরিণত করা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে পাবনা জেলায় এক লাখ ৩৪ হাজার হেক্টর, সিরাজগঞ্জে ৯১ হাজার হেক্টর, রাজশাহী জেলায় ৯০ হাজার হেক্টর, নওগাঁ জেলায় এক লাখ ২০ হাজার হেক্টর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮৭ হাজার হেক্টর, নাটোর জেলায় ৬৬ হাজার হেক্টর, বগুড়া জেলায় ৩১ হাজার হেক্টর, জয়পুরহাট জেলায় ১৪ হাজার হেক্টর, গাইবান্ধায় ৬৯ হাজার হেক্টর, রংপুর জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর, নীলফামারী জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর, লালমনিরহাট জেলায় ৫১ হাজার হেক্টর, কুড়িগ্রাম জেলায় এক লাখ হেক্টর, দিনাজপুর জেলায় এক লাখ ২৫ হাজার হেক্টর, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর এবং পঞ্চগড় জেলায় ৭৯ হাজার হেক্টর এক ফসলি জমি সেচের পানির অভাবে তিন ফসলিতে রূপান্তর করা যাচ্ছে না।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমতার এক জরিপ প্রতিবেদনে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলে বিলের সংখ্যা এক হাজার ৫৬১টি। এর মধ্যে সহস্রাধিক বিলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। পলি জমে বিলের মুখ ভরাট হয়ে যাওয়া এবং পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বছরের বেশির ভাগ সময় এসব বিল শুকনা থাকে। বছরের পর বছর বিলগুলোতে পলি জমছে। গভীরতা হৃাস পাচ্ছে। পরিণত হচ্ছে নিচু সমতল ভূমিতে। দীর্ঘ দিন সংস্কার ও খননের উদ্যোগ না নেয়ায় বিলের পানির নির্দিষ্ট ধারাটিও হারিয়ে যাচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলে বন্যার সময় আসা পলি জমছে বিলে। বন্যার পানি নেমে গেলে থেকে যাচ্ছে পলি। একপর্যায়ে গোটা বিল এলাকাই পরিণত হচ্ছে ধুধু প্রান্তরে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী ড. মো: রেদওয়ানুর রহমানের প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, ২৬ বছর আগেও চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদী, ৩৯টি বিল ও ২২টি খাড়িতে বছরজুড়েই ৬ থেকে ১২ ফুট পানি থাকত। ফলে সারা বছরই নৌচলাচল করত। কিন্তু বছরের পর বছর পলি জমে এসব নদী, বিল ও খাড়ি ভরাট হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ, ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে এবং ১৯৮০-এর দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বড়ালের (পদ্মা) উৎসমুখে স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে চলনবিলের বিভিন্ন নদী বিল জলাশয় ও খাড়িগুলোয় পলি জমে ক্রমে ভরাট হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিলের মাঝ দিয়ে যথেচ্ছভাবে সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ভূমি দখল করে বসতি ও দোকাপাট স্থাপন করায় নদী, বিল ও খাড়িগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে।
No comments