কালচে পাট হবে সোনালি আঁশ by আশরাফুল ইসলাম
এবার
নামমাত্র খরচে কালচে পাট সোনালি আঁশে রূপান্তর করা যাবে। এর ফলে পাটের
প্রকৃত মূল্য পাওয়ার পাশাপাশি পানি স্বল্পতার কারণে পাটের জাগ দেয়া নিয়ে
কৃষকের দুশ্চিন্তার অবসান হবে। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পাটের
গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে কালচে পাটকে সোনালি আঁশে রূপান্তরের এ প্রক্রিয়া
উদ্ভাবন করেছেন। এ প্রক্রিয়ার উদ্ভাবনকে যুগান্তকারী বলে মনে করছেন কৃষি
বিশেষজ্ঞরাও। স্থানীয় পাটচাষিরা জানান, পর্যাপ্ত পানির অভাবে তারা প্রায়শই
অগভীর পানিতে কাদামাটির সাহায্যে চাপা দিয়ে পাটগাছ জাগ দেন। পচনের পর এসব
পাট সংগ্রহ করে দেখা যায়, পাটগুলো বেশ ময়লা বা কালচে রঙের হয়। এসব পাট
পরিচ্ছন্ন সোনালি পাটের তুলনায় মণপ্রতি চার থেকে পাঁচশত টাকা কম দামে তাদের
বিক্রি করতে হয়।
কিশোরগঞ্জ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, সমান পরিশ্রম আর সমান খরচ করে চাষিদের কালচে পাট ফলানোর বিষয়টি তাকে ব্যথিত করে। ফলে গুণগতমান অক্ষুণ্ন রেখে কালচে পাটকে কিভাবে সোনালি পাটে রূপান্তরিত করা যায়, এ নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করেন। ২০১২ সাল থেকে নিবিষ্ট মনে কালচে ময়লা রঙের পাট সোনালি পাটে রূপান্তরিত করার গবেষণার অংশ হিসেবে প্রথম বছর বগি পাট (অ-২৭) নিয়ে কাজ করেন। প্রথম বছরই ইতিবাচক ফল পেয়ে তিনি সোনালি আঁশের সোনালি ভবিষ্যৎ কল্পনায় দারুণভাবে উদ্বেলিত হন। পরে ২০১৩-১৪ সালে ফাল্গুনী তোষা (অ-৯৮৯৭), দেশী (সিবিএল-১) এবং কেনাফ (এইচসি-৯৫) পাট নিয়ে কাজ করেও অভাবনীয় ফল পান।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, রাসায়নিক রি-এজেন্ট হিসেবে টিএসপি সার নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। পানিতে টিএসপি’র গুঁড়া মিশিয়ে তাতে নির্দিষ্ট সময় পাট ভিজিয়ে রেখে পরীক্ষা করে কিছুটা ইতিবাচক ফল পান। গভীর মনোযোগে পাট, পানি ও টিএসপি’র মাত্রা এবং সময়ের অনুপাতের তারতম্য করে ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল, এই তিন বছর পরীক্ষার মাধ্যমে একটি যুগান্তকারী ফলাফল পেয়েছেন। এই সময়ে পানি, টিএসপি ও পাটের একটি নির্দিষ্ট অনুপাত এবং সময় সম্পর্কেও একটি স্থির মাত্রা নির্ধারণ করতে সক্ষম হন। আশরাফুল আলম জানালেন, ৪০ লিটার পুকুরের পানিতে ২৪০ গ্রাম টিএসপি’র গুঁড়া মিশিয়ে তাতে একমণ কালচে পাট চার মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই ময়লা কেটে গিয়ে পাটগুলো সোনালি হয়ে যায়। পাটের গুণগত মানও অক্ষুণ্ন থাকে। অথচ ২৪০ গ্রাম টিএসপি’র দাম পড়ে মাত্র পাঁচ টাকা ২৮ পয়সা। এই সামান্য খরচে একমণ পাটে কৃষক চারশত থেকে পাঁচশত টাকা বাড়তি পাবেন। এতে দেশও বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হবে।
পাট নিয়ে গবেষণায় এরকম অভাবনীয় সাফল্য পেয়ে আশরাফুল আলম পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নিউ টেক্সটাইল প্রোডাক্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. তারিক হোসেনসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে তার সাফল্যের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেন এবং পাটের নমুনা হস্তান্তর করেন। এছাড়া তার এই নতুন উদ্ভাবনের ওপর ঢাকায় সেমিনার ছাড়াও পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের জার্নালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের কারিগরি ডিভিশন উইংয়ের টেক্সটাইল ফিজিকস অ্যান্ড স্টান্ডার্ডাইজেশন শাখার বিজ্ঞানীরাও নতুন এই উদ্ভাবনের ভাল-মন্দ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। আশরাফুল আলম বলেন, বৈশ্বিক আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে এখন আর আগের মতো বর্ষার পানি হয় না। ফলে পাট কাটার মওসুমে পাটচাষিরা পাট পচানো নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। তারা অগভীর ঘোলা পানিতে মাটিচাপা দিয়ে পাটের জাগ দেন। এতে দেখা যায় পাটের আঁশগুলো কালচে হয়ে যায়। বাজারে এসব পাটের উপযুক্ত দাম পাওয়া যায় না। তার এ উদ্ভাবনের ফলে কৃষককে এসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিবে। সর্বোপরি কৃষকরা এখন আর্থিকভাবেও যথেষ্ট লাভবান হবেন।
পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নিউ টেক্সটাইল প্রোডাক্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. তারিক হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা এর আগে নিজেদের মতো করে নানাভাবে পাটের রঙ পরিষ্কার করার বিষয়ে চেষ্টা করলেও আশরাফুল আলমই প্রথম পদ্ধতিগতভাবে এ কাজে সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ কিছু কিছু দেশে পাটের আবাদ হলেও বাংলাদেশে বিশ্বের প্রায় ৮০ ভাগ পাটের আবাদ হয়। যুগান্তকারী এই উদ্ভাবনের ফলে পাটের গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে সহজে পাট পরিষ্কার করা সম্ভবপর হবে। এতে পাটের ভাল দাম পেয়ে কৃষকেরা পাটচাষে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন।
কিশোরগঞ্জ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, সমান পরিশ্রম আর সমান খরচ করে চাষিদের কালচে পাট ফলানোর বিষয়টি তাকে ব্যথিত করে। ফলে গুণগতমান অক্ষুণ্ন রেখে কালচে পাটকে কিভাবে সোনালি পাটে রূপান্তরিত করা যায়, এ নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করেন। ২০১২ সাল থেকে নিবিষ্ট মনে কালচে ময়লা রঙের পাট সোনালি পাটে রূপান্তরিত করার গবেষণার অংশ হিসেবে প্রথম বছর বগি পাট (অ-২৭) নিয়ে কাজ করেন। প্রথম বছরই ইতিবাচক ফল পেয়ে তিনি সোনালি আঁশের সোনালি ভবিষ্যৎ কল্পনায় দারুণভাবে উদ্বেলিত হন। পরে ২০১৩-১৪ সালে ফাল্গুনী তোষা (অ-৯৮৯৭), দেশী (সিবিএল-১) এবং কেনাফ (এইচসি-৯৫) পাট নিয়ে কাজ করেও অভাবনীয় ফল পান।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, রাসায়নিক রি-এজেন্ট হিসেবে টিএসপি সার নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। পানিতে টিএসপি’র গুঁড়া মিশিয়ে তাতে নির্দিষ্ট সময় পাট ভিজিয়ে রেখে পরীক্ষা করে কিছুটা ইতিবাচক ফল পান। গভীর মনোযোগে পাট, পানি ও টিএসপি’র মাত্রা এবং সময়ের অনুপাতের তারতম্য করে ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল, এই তিন বছর পরীক্ষার মাধ্যমে একটি যুগান্তকারী ফলাফল পেয়েছেন। এই সময়ে পানি, টিএসপি ও পাটের একটি নির্দিষ্ট অনুপাত এবং সময় সম্পর্কেও একটি স্থির মাত্রা নির্ধারণ করতে সক্ষম হন। আশরাফুল আলম জানালেন, ৪০ লিটার পুকুরের পানিতে ২৪০ গ্রাম টিএসপি’র গুঁড়া মিশিয়ে তাতে একমণ কালচে পাট চার মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই ময়লা কেটে গিয়ে পাটগুলো সোনালি হয়ে যায়। পাটের গুণগত মানও অক্ষুণ্ন থাকে। অথচ ২৪০ গ্রাম টিএসপি’র দাম পড়ে মাত্র পাঁচ টাকা ২৮ পয়সা। এই সামান্য খরচে একমণ পাটে কৃষক চারশত থেকে পাঁচশত টাকা বাড়তি পাবেন। এতে দেশও বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হবে।
পাট নিয়ে গবেষণায় এরকম অভাবনীয় সাফল্য পেয়ে আশরাফুল আলম পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নিউ টেক্সটাইল প্রোডাক্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. তারিক হোসেনসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে তার সাফল্যের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেন এবং পাটের নমুনা হস্তান্তর করেন। এছাড়া তার এই নতুন উদ্ভাবনের ওপর ঢাকায় সেমিনার ছাড়াও পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের জার্নালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের কারিগরি ডিভিশন উইংয়ের টেক্সটাইল ফিজিকস অ্যান্ড স্টান্ডার্ডাইজেশন শাখার বিজ্ঞানীরাও নতুন এই উদ্ভাবনের ভাল-মন্দ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। আশরাফুল আলম বলেন, বৈশ্বিক আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে এখন আর আগের মতো বর্ষার পানি হয় না। ফলে পাট কাটার মওসুমে পাটচাষিরা পাট পচানো নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। তারা অগভীর ঘোলা পানিতে মাটিচাপা দিয়ে পাটের জাগ দেন। এতে দেখা যায় পাটের আঁশগুলো কালচে হয়ে যায়। বাজারে এসব পাটের উপযুক্ত দাম পাওয়া যায় না। তার এ উদ্ভাবনের ফলে কৃষককে এসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিবে। সর্বোপরি কৃষকরা এখন আর্থিকভাবেও যথেষ্ট লাভবান হবেন।
পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নিউ টেক্সটাইল প্রোডাক্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. তারিক হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা এর আগে নিজেদের মতো করে নানাভাবে পাটের রঙ পরিষ্কার করার বিষয়ে চেষ্টা করলেও আশরাফুল আলমই প্রথম পদ্ধতিগতভাবে এ কাজে সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ কিছু কিছু দেশে পাটের আবাদ হলেও বাংলাদেশে বিশ্বের প্রায় ৮০ ভাগ পাটের আবাদ হয়। যুগান্তকারী এই উদ্ভাবনের ফলে পাটের গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে সহজে পাট পরিষ্কার করা সম্ভবপর হবে। এতে পাটের ভাল দাম পেয়ে কৃষকেরা পাটচাষে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন।
No comments